বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্য সমন্বয় ও শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান চায় উন্নয়ন-সহযোগীরা
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য সমন্বয় এবং এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) মতো নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষমতায়ন চায় বাংলাদেশের উন্নয়ন-সহযোগীরা। তাদের এই চাওয়ার সঙ্গে সরকারও একমত পোষণ করছে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) সভায় গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের আলোচনায় উন্নয়ন-সহযোগীরা বলেছে, এই খাতে আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও টেকসই উন্নয়ন করতে হলে মূল্য সমন্বয় (ট্যারিফ রেশনালাইজেশন, প্রায় সব ক্ষেত্রেই যার অপর নাম মূল্যবৃদ্ধি) অপরিহার্য।
একই সঙ্গে, এ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বিইআরসির মতো নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা দরকার। এটা করা না হলে সরকার ও জনগণের মধ্যে এই খাতের নীতি ও কানুনের বিষয়ে যোগসূত্র স্থাপন করা কঠিন হবে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বর্তমান অবস্থা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও বর্তমান সরকারের পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করে সরকারের অবস্থানপত্র উপস্থাপন করেন বিদ্যুৎসচিব আবুল কালাম আজাদ।
এতে বলা হয়, বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা ২২০ কোটি ঘনফুট। আর উৎপাদিত হচ্ছে ১৯৭ কোটি ঘনফুট। সরকার জরুরি ভিত্তিতে গ্যাস উত্তোলন বাড়ানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে ২০১২ সালের মধ্যে ৩০ কোটি ঘনফুট উৎপাদন বাড়বে। এ ছাড়া সমুদ্রবক্ষের তেল-গ্যাস ক্ষেত্রে অনুসন্ধানসহ দীর্ঘমেয়াদি যেসব পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে গ্যাস উত্তোলন বাড়বে আরও ৩০ থেকে ৫০ কোটি ঘনফুট। ২০১৩ সালের মধ্যে একটি এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) টার্মিনাল স্থাপন করা হবে চট্টগ্রামে। জাতীয় গ্যাস সঞ্চালন লাইনে তিনটি কমপ্রেসার বসানো হবে সারা দেশে গ্যাসের প্রয়োজনীয় চাপ ঠিক রাখার জন্য। সর্বোপরি, উপ-আঞ্চলিক জ্বালানি সহযোগিতা গড়ে তোলার জন্য ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সরকার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমিয়ে আনার জন্য জ্বালানি বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে কয়লা, তেল (ডিজের ও ফার্নেস) এবং পরমাণু শক্তিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
অবস্থানপত্রে বলা হয়, সরকারি, বেসরকারি এবং সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৮০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত ব্যবধান অব্যাহত থাকবে। এই ব্যবধান ঘুচাতে আগামী পাঁচ বছরে নয় হাজার মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে।
এই উদ্যোগের পাশাপাশি সরকার ভারতের সঙ্গে আন্তসীমান্ত বিদ্যুৎ কেনাবেচার একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এর অধীনে আগামী দুই বছরের মধ্যে ২৫০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনা-নেওয়া যাবে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন প্রসঙ্গে অবস্থানপত্রে বলা হয়, সৌর ও বায়ুচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের উন্নয়নে গঠিত ‘সাসটেইনেবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এসইডিএ)’ সক্রিয় করা হচ্ছে। বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচিও অবস্থানপত্রে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া শিগগিরই সারা দেশে গ্রাহকদের মধ্যে জ্বালানিসাশ্রয়ী বাল্ব বিতরণ, সন্ধ্যার পর নির্দিষ্ট সময় দোকানপাট বন্ধ করা, বছরের একটা সময় দিনের আলো বেশি ব্যবহার, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক ছুটি ভাগ করে দেওয়া প্রভৃতি কার্যক্রমের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রয়োজন অনুযায়ী গ্যাস ও কয়লার উৎপাদন বাড়ানো; তরল জ্বালানি মজুদের ক্ষমতা বাড়ানো; জ্বালানির দামে অস্থিতিশীলতা প্রভৃতি।
সভায় উন্নয়ন-সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা সমুদ্রবক্ষে গ্যাস অনুসন্ধান, সমুদ্রসীমা নির্ধারণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির বিষয়ে সভায় বিভিন্ন প্রশ্ন করেন।
সভাশেষে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী দাবি করেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা ও পদক্ষেপকে উন্নয়ন-সহযোগীরা সামগ্রিকভাবে সমর্থন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমানও একই কথা বলেন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক বলেন, ‘আমরা নিজেদের করণীয় সম্পর্কে বলার পাশাপাশি উন্নয়ন-সহযোগীরা কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে তা নির্ধারণের অনুরোধ করেছি।’
সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত বাংলাদেশে ডিএফআইডির কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্রিস অস্টিন বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য সমন্বয় এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ক্ষমতায়ন চাই। আর একাধিক উন্নয়ন-সহযোগী মিল একটি ‘উন্নয়ন ব্যাংক বা তহবিল করার কথা ভাবছি, যেখান থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিশেষ করে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগের প্রকল্পসমূহে অর্থায়ন করা যায়।’
বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) সভায় গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের আলোচনায় উন্নয়ন-সহযোগীরা বলেছে, এই খাতে আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও টেকসই উন্নয়ন করতে হলে মূল্য সমন্বয় (ট্যারিফ রেশনালাইজেশন, প্রায় সব ক্ষেত্রেই যার অপর নাম মূল্যবৃদ্ধি) অপরিহার্য।
একই সঙ্গে, এ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বিইআরসির মতো নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা দরকার। এটা করা না হলে সরকার ও জনগণের মধ্যে এই খাতের নীতি ও কানুনের বিষয়ে যোগসূত্র স্থাপন করা কঠিন হবে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বর্তমান অবস্থা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও বর্তমান সরকারের পদক্ষেপগুলো উল্লেখ করে সরকারের অবস্থানপত্র উপস্থাপন করেন বিদ্যুৎসচিব আবুল কালাম আজাদ।
এতে বলা হয়, বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদা ২২০ কোটি ঘনফুট। আর উৎপাদিত হচ্ছে ১৯৭ কোটি ঘনফুট। সরকার জরুরি ভিত্তিতে গ্যাস উত্তোলন বাড়ানোর যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে ২০১২ সালের মধ্যে ৩০ কোটি ঘনফুট উৎপাদন বাড়বে। এ ছাড়া সমুদ্রবক্ষের তেল-গ্যাস ক্ষেত্রে অনুসন্ধানসহ দীর্ঘমেয়াদি যেসব পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে গ্যাস উত্তোলন বাড়বে আরও ৩০ থেকে ৫০ কোটি ঘনফুট। ২০১৩ সালের মধ্যে একটি এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) টার্মিনাল স্থাপন করা হবে চট্টগ্রামে। জাতীয় গ্যাস সঞ্চালন লাইনে তিনটি কমপ্রেসার বসানো হবে সারা দেশে গ্যাসের প্রয়োজনীয় চাপ ঠিক রাখার জন্য। সর্বোপরি, উপ-আঞ্চলিক জ্বালানি সহযোগিতা গড়ে তোলার জন্য ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সরকার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমিয়ে আনার জন্য জ্বালানি বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে কয়লা, তেল (ডিজের ও ফার্নেস) এবং পরমাণু শক্তিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
অবস্থানপত্রে বলা হয়, সরকারি, বেসরকারি এবং সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৮০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত ব্যবধান অব্যাহত থাকবে। এই ব্যবধান ঘুচাতে আগামী পাঁচ বছরে নয় হাজার মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে।
এই উদ্যোগের পাশাপাশি সরকার ভারতের সঙ্গে আন্তসীমান্ত বিদ্যুৎ কেনাবেচার একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এর অধীনে আগামী দুই বছরের মধ্যে ২৫০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনা-নেওয়া যাবে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন প্রসঙ্গে অবস্থানপত্রে বলা হয়, সৌর ও বায়ুচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের উন্নয়নে গঠিত ‘সাসটেইনেবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এসইডিএ)’ সক্রিয় করা হচ্ছে। বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন কর্মসূচিও অবস্থানপত্রে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া শিগগিরই সারা দেশে গ্রাহকদের মধ্যে জ্বালানিসাশ্রয়ী বাল্ব বিতরণ, সন্ধ্যার পর নির্দিষ্ট সময় দোকানপাট বন্ধ করা, বছরের একটা সময় দিনের আলো বেশি ব্যবহার, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সাপ্তাহিক ছুটি ভাগ করে দেওয়া প্রভৃতি কার্যক্রমের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রয়োজন অনুযায়ী গ্যাস ও কয়লার উৎপাদন বাড়ানো; তরল জ্বালানি মজুদের ক্ষমতা বাড়ানো; জ্বালানির দামে অস্থিতিশীলতা প্রভৃতি।
সভায় উন্নয়ন-সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা সমুদ্রবক্ষে গ্যাস অনুসন্ধান, সমুদ্রসীমা নির্ধারণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির বিষয়ে সভায় বিভিন্ন প্রশ্ন করেন।
সভাশেষে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী দাবি করেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা ও পদক্ষেপকে উন্নয়ন-সহযোগীরা সামগ্রিকভাবে সমর্থন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমানও একই কথা বলেন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক বলেন, ‘আমরা নিজেদের করণীয় সম্পর্কে বলার পাশাপাশি উন্নয়ন-সহযোগীরা কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে তা নির্ধারণের অনুরোধ করেছি।’
সংবাদ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত বাংলাদেশে ডিএফআইডির কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্রিস অস্টিন বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য সমন্বয় এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ক্ষমতায়ন চাই। আর একাধিক উন্নয়ন-সহযোগী মিল একটি ‘উন্নয়ন ব্যাংক বা তহবিল করার কথা ভাবছি, যেখান থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিশেষ করে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগের প্রকল্পসমূহে অর্থায়ন করা যায়।’
No comments