অগ্নিপরীক্ষার সামনে সুদানি প্রেসিডেন্ট বশির
সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশিরের ২১ বছরের শাসনামল দ্বন্দ্বমুখর ও ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ। ওই সময় তাঁকে টানা গৃহযুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানার প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হয়েছে। কিন্তু এসব তাঁকে মোটেও দমাতে পারেনি। বরং সবকিছু ছাপিয়ে এবারকার নির্বাচনই তাঁর জন্য তৈরি করেছে অনিশ্চয়তার কঠোর এক ঘেরাটোপ। এএফপি।
বশির গত শনিবার জাঁকজমকের সঙ্গে তাঁর নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। এ প্রচারে নিজ শাসনামলের গুণকীর্তনের পাশাপাশি দেশের ঐক্যের ব্যাপারেও তাঁর অঙ্গীকার ধ্বনিত হয়েছে।
খার্তুমের টুইন সিটি কামদুরমানে হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখন সবকিছুই ছিল বিশৃঙ্খল। জনগণ রুটি ও পেট্রলের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করত। কিন্তু এখন রুটিই মানুষের জন্য অপেক্ষা করে।’
বশিরকে আগামী এপ্রিলে প্রথম ও মূল নির্বাচনী পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হবে। এ সময় তাঁকে বিরোধী ১১ জন প্রার্থীকে মোকাবিলা করতে হবে। তাঁদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী সাদিক আল মাহদি ও বিদ্রোহী নেতা ইয়াসির আরমানও রয়েছেন।
বৃহত্তম বিরোধী দল উম্মার নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাহদি। দেশের উত্তরাঞ্চলে রয়েছে তাঁর ব্যাপক জনসমর্থন। এ ছাড়া ১৯৮৯ সালে বশিরের সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় তিনি নিজেকে দেশের বৈধ নেতা হিসেবে মনে করেন।
আরমান উত্তরাঞ্চলের অসাম্প্রদায়িক মুসলিম। তিনি দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্রোহী গ্রুপ পিপলস লিবারেশন মুভমেন্টের হয়ে নির্বাচনে লড়াই করবেন। ধারণা করা হচ্ছে, দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ খ্রিষ্টানের ভোট পাবেন তিনি। এ এলাকাতেই মুসলিম ও খ্রিষ্টানদের মধ্যে ২২ বছর ধরে গৃহযুদ্ধ চলে।
সুদানের বিদ্রোহকবলিত দারফুর অঞ্চলে কথিত যুদ্ধাপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা সত্ত্বেও বশির নিজের বিজয় সম্পর্কে নিরুদ্বিগ্ন রয়েছেন। বিরোধী কর্মকর্তারা বলছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর আতঙ্কিত সদস্যরা বশিরের প্রতি অনুগত। তাঁরা হস্তক্ষেপ করলে বশিরের জয় হবে সুনিশ্চিত।
জাতিসংঘ বলছে, দেশটি ব্যাপকভাবে দারিদ্র্য ও সহিংসপীড়িত। বিদ্রোহীরা ২০০৩ সালে হাতে অস্ত্র তুলে নেওয়ার পর দারফুরে এ পর্যন্ত তিন লাখ লোক নিহত হয়েছে। গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত দেশটিকে প্রত্যন্ত এলাকায় ভোটের সরঞ্জাম পৌঁছে দিতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। আর এ জন্য তাদের জাতিসংঘ হেলিকপ্টার ব্যবহারের প্রয়োজন হবে।
গত সপ্তাহে সুদান সফরকালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও অভিজ্ঞ নির্বাচনী পর্যবেক্ষক জিমি কার্টার আভাস দিয়েছেন, নির্বাচনের প্রথম পর্বেই বাশার হয়তো কুপোকাত হতে পারেন।
No comments