চরমপন্থীদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা আগের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন
দেশের বিভিন্ন জেলায় সক্রিয় চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানের কথা শোনা যাচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরে। এখন তাদের প্রতি আত্মসমর্পণের আহ্বান ও প্রয়োজনে সাধারণ ক্ষমার বিষয়টি বিবেচনা করারও ঘোষণা পাওয়া গেল স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কাছ থেকে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চরমপন্থীদের তত্পরতা, অর্থাত্ খুনাখুনি, চাঁদাবাজি—এসব বেড়ে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে। এমন পরিস্থিতিতে কার্যকর কিছু করা যে দরকার হয়ে পড়েছে, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। চরমপন্থীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা এবং তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা এর আগেও হয়েছে। আমরা মনে করি, বর্তমানে এ ধরনের কিছু করার ক্ষেত্রে আগের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নেওয়া জরুরি।
আওয়ামী লীগ গত মেয়াদে যখন ক্ষমতাসীন ছিল, তখন মাওবাদী দাবিদার ও সাধারণভাবে চরমপন্থী হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৯ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে আড়াই হাজারের বেশি চরমপন্থী আত্মসমর্পণ করেছিল। অস্ত্র জমা পড়েছিল দুই হাজার ৭৭টি। আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে ৭৮০ জনকে আনসারে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। উদ্যোগটি ভালো ছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই; কিন্তু সফল যে হয়নি, তার প্রমাণ চরমপন্থীদের বর্তমান তত্পরতা। সরকার যদি আন্তরিকভাবে এই সমস্যার একটি সমাধান চায়, তাহলে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয়ে নজর দিতে হবে।
সমাজের শোষিত শ্রেণীর অধিকার রক্ষায় শ্রেণীশত্রু খতম ও সমাজ পরিবর্তনের রাজনৈতিক স্লোগান নিয়ে একসময় এ ধারার রাজনীতির সূচনা হলেও বর্তমানে তা স্রেফ চাঁদাবাজির রাজনীতিতে পরিণত হয়েছে। আর চাঁদাবাজির কর্তৃত্ব এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে ঘটে চলেছে খুনাখুনির ঘটনা। সবচেয়ে বড় কথা, দেশের মূলধারার বড় বড় রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতারা চরমপন্থী হিসেবে পরিচয় পাওয়া এই গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে আসছেন নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে—কখনো প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে, কখনো নির্বাচনে জিততে, কখনো এলাকায় নিজের ক্ষমতা, প্রভাব ও শক্তি ধরে রাখতে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অনেক স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে চরমপন্থীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও তাদের ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। চরমপন্থীদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের এই সংস্কৃতি বন্ধ না হলে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ কখনো সফল হবে না। সরকারি দল হিসেবে আওয়ামী লীগকেই প্রথম এ ব্যাপারে তাদের সদিচ্ছার প্রমাণ রাখতে হবে। আওয়ামী লীগকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের দলের কোনো নেতা চরমপন্থীদের নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে আশ্রয়-প্রশ্রয় ও ব্যবহার করবেন না। এই বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলে বাকি কাজ অনেক সহজ হয়ে আসবে।
আগেরবার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর যাদের আনসারে চাকরি দেওয়া হয়েছিল, পরে তাদের মধ্যে ১৩৭ জন বিভিন্ন সময় চাকরি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তাদের অনেকেই আবার চরমপন্থী দলের সঙ্গে জড়িত হয়েছে বলে জানা গেছে। বোঝা যায় যে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা ও কয়েকজনের চাকরি দিয়েই সরকার তার দায়িত্ব শেষ বলে মনে করেছিল। বিষয়টির যে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে, সে বিবেচনা ছিল বলে মনে হয় না।
আমরা চরমপন্থীদের সাধারণ ক্ষমা বা এ ধরনের যেকোনো উদ্যোগের মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই। তবে এর আগে দেশের মূল রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের স্বার্থে চরমপন্থীদের ব্যবহার না করার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং তারা যাতে কোনো হতাশা থেকে আবার চরমপন্থার পথে ফিরে যেতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই কেবল সরকারের এ ধরনের উদ্যোগ সফল হতে পারে।
আওয়ামী লীগ গত মেয়াদে যখন ক্ষমতাসীন ছিল, তখন মাওবাদী দাবিদার ও সাধারণভাবে চরমপন্থী হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৯ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়ে আড়াই হাজারের বেশি চরমপন্থী আত্মসমর্পণ করেছিল। অস্ত্র জমা পড়েছিল দুই হাজার ৭৭টি। আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে ৭৮০ জনকে আনসারে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। উদ্যোগটি ভালো ছিল, তাতে কোনো সন্দেহ নেই; কিন্তু সফল যে হয়নি, তার প্রমাণ চরমপন্থীদের বর্তমান তত্পরতা। সরকার যদি আন্তরিকভাবে এই সমস্যার একটি সমাধান চায়, তাহলে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয়ে নজর দিতে হবে।
সমাজের শোষিত শ্রেণীর অধিকার রক্ষায় শ্রেণীশত্রু খতম ও সমাজ পরিবর্তনের রাজনৈতিক স্লোগান নিয়ে একসময় এ ধারার রাজনীতির সূচনা হলেও বর্তমানে তা স্রেফ চাঁদাবাজির রাজনীতিতে পরিণত হয়েছে। আর চাঁদাবাজির কর্তৃত্ব এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে ঘটে চলেছে খুনাখুনির ঘটনা। সবচেয়ে বড় কথা, দেশের মূলধারার বড় বড় রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতারা চরমপন্থী হিসেবে পরিচয় পাওয়া এই গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে আসছেন নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে—কখনো প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে, কখনো নির্বাচনে জিততে, কখনো এলাকায় নিজের ক্ষমতা, প্রভাব ও শক্তি ধরে রাখতে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অনেক স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে চরমপন্থীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ও তাদের ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। চরমপন্থীদের রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের এই সংস্কৃতি বন্ধ না হলে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ কখনো সফল হবে না। সরকারি দল হিসেবে আওয়ামী লীগকেই প্রথম এ ব্যাপারে তাদের সদিচ্ছার প্রমাণ রাখতে হবে। আওয়ামী লীগকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের দলের কোনো নেতা চরমপন্থীদের নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে আশ্রয়-প্রশ্রয় ও ব্যবহার করবেন না। এই বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলে বাকি কাজ অনেক সহজ হয়ে আসবে।
আগেরবার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর যাদের আনসারে চাকরি দেওয়া হয়েছিল, পরে তাদের মধ্যে ১৩৭ জন বিভিন্ন সময় চাকরি ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তাদের অনেকেই আবার চরমপন্থী দলের সঙ্গে জড়িত হয়েছে বলে জানা গেছে। বোঝা যায় যে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা ও কয়েকজনের চাকরি দিয়েই সরকার তার দায়িত্ব শেষ বলে মনে করেছিল। বিষয়টির যে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে, সে বিবেচনা ছিল বলে মনে হয় না।
আমরা চরমপন্থীদের সাধারণ ক্ষমা বা এ ধরনের যেকোনো উদ্যোগের মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই। তবে এর আগে দেশের মূল রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের স্বার্থে চরমপন্থীদের ব্যবহার না করার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা এবং তারা যাতে কোনো হতাশা থেকে আবার চরমপন্থার পথে ফিরে যেতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই কেবল সরকারের এ ধরনের উদ্যোগ সফল হতে পারে।
No comments