উলুবনে মুক্তা ছড়ানো প্রধানমন্ত্রীর মিষ্টি কথায় চিঁড়া ভিজবে না
ছাত্রলীগের ছেলেদের চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজির খবর পত্রিকায় পড়ে কষ্ট লাগার কথা প্রধানমন্ত্রী যখন বলছিলেন, তখন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ-সমর্থিত দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের খবর আসছিল। একই সময় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ভাঙচুর চালান। চুয়াডাঙ্গায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা মঙ্গলবার কয়েকটি পত্রিকায় আগুন দেয় ও ভাঙচুর করে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে গত সোমবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আয়োজকদের সদুপদেশ দিতে গিয়ে তাঁর মনোবেদনার কথা বলছিলেন। কিন্তু আলোচ্য ঘটনাগুলো স্মরণ করিয়ে দিল যে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের অপকর্মের তালিকায় আরও অনেক কিছু আছে। শেখ হাসিনার সেটা অজানা নয়। তাই তিনি তাঁদের বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে হবে! এরপর তাঁদের গুরুদায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, ছাত্রলীগকে তার জন্য কাজ করতে হবে। আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার নেতৃত্ব দিতে হবে ছাত্রলীগকে।’
যেখানে প্রায় প্রতিদিন ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্যোগে চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-দখলবাজি-মারপিট-ভাঙচুরের খবর পত্রিকায় ছাপা হয় এবং প্রতিকারের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সংবাদ পাওয়া যায় না, তখন প্রধানমন্ত্রীর এই সব সুন্দর কথা পরিহাসের মতো শোনায়। যদি কেউ ভাবেন, প্রধানমন্ত্রীর সুবচনে মুগ্ধ হয়ে ওই সব দুর্বিনীত নেতা-কর্মী ভালো হয়ে যাবেন, তাহলে তাঁরা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। যে বাঘ একবার রক্তের স্বাদ পায়, মাথায়-পিঠে হাত বুলিয়ে তাকে বশে রাখা যায় না। ক্ষমতাসীন দলের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে ছাত্রলীগের যেসব নেতা-কর্মী চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজিসহ যাবতীয় অপরাধকর্মে হাত পাকিয়েছেন, তাঁদের কানে আদর্শের বাণী ঢুকবে না। তাঁদের জন্য একমাত্র ওষুধ হলো আইনের নিরপেক্ষ ও কঠোর প্রয়োগ। প্রশাসনকে নির্ভয়ে ও হস্তক্ষেপমুক্তভাবে কাজ করতে দিলে এই সব অপরাধীকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা যায়, প্রশাসন কাজ করছে না, পুলিশ নির্লিপ্ত। ছাত্রলীগের গন্ধ পেলে তাদের অন্যায় অপকর্মের বিরুদ্ধে থানা মামলা নিতে চায় না।
প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই তাঁদের ভালো হয়ে যেতে বলবেন। কিন্তু সেই সঙ্গে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া উচিত যে তাঁরা চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি থেকে দূরে না থাকলে পরিণতি শুভ হবে না। এর আগে সরকার বিভিন্ন সময় বলেছে, অপরাধীর কোনো দলীয় পরিচয় নেই। সব সরকারই এ রকম কথা বলে। কিন্তু এবার বিশেষ পরিস্থিতি। নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের সময় ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দলীয় রাজনৈতিক সংস্রব আনুষ্ঠানিকভাবে ত্যাগ করা হয়েছে। এর পরও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রশাসন ও পুলিশের চোখে কীভাবে সাবেকি রাজকীয় মর্যাদা পান, সে বিষয়ে অনুসন্ধান দরকার। ওই সব উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মী যেন ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালীদের প্রশ্রয় লাভ করতে না পারেন, সে জন্যই তো ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে অঙ্গসংগঠনের মর্যাদা দেওয়া হয়নি। এই বিধান যদি কাজে না লাগে, তাহলে তো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের একটি উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সচেতন থাকা দরকার।
ছাত্রলীগকে প্রধানমন্ত্রীর হিতোপদেশ বিতরণ আসলে উলুবনে মুক্তা ছড়ানোর মতো ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এই সব মিষ্টি কথায় চিঁড়া ভিজবে না। ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি বন্ধে ‘দুষ্টের দমন’ নীতি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হোক
যেখানে প্রায় প্রতিদিন ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্যোগে চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-দখলবাজি-মারপিট-ভাঙচুরের খবর পত্রিকায় ছাপা হয় এবং প্রতিকারের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার সংবাদ পাওয়া যায় না, তখন প্রধানমন্ত্রীর এই সব সুন্দর কথা পরিহাসের মতো শোনায়। যদি কেউ ভাবেন, প্রধানমন্ত্রীর সুবচনে মুগ্ধ হয়ে ওই সব দুর্বিনীত নেতা-কর্মী ভালো হয়ে যাবেন, তাহলে তাঁরা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। যে বাঘ একবার রক্তের স্বাদ পায়, মাথায়-পিঠে হাত বুলিয়ে তাকে বশে রাখা যায় না। ক্ষমতাসীন দলের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে ছাত্রলীগের যেসব নেতা-কর্মী চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজিসহ যাবতীয় অপরাধকর্মে হাত পাকিয়েছেন, তাঁদের কানে আদর্শের বাণী ঢুকবে না। তাঁদের জন্য একমাত্র ওষুধ হলো আইনের নিরপেক্ষ ও কঠোর প্রয়োগ। প্রশাসনকে নির্ভয়ে ও হস্তক্ষেপমুক্তভাবে কাজ করতে দিলে এই সব অপরাধীকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা যায়, প্রশাসন কাজ করছে না, পুলিশ নির্লিপ্ত। ছাত্রলীগের গন্ধ পেলে তাদের অন্যায় অপকর্মের বিরুদ্ধে থানা মামলা নিতে চায় না।
প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই তাঁদের ভালো হয়ে যেতে বলবেন। কিন্তু সেই সঙ্গে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া উচিত যে তাঁরা চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি থেকে দূরে না থাকলে পরিণতি শুভ হবে না। এর আগে সরকার বিভিন্ন সময় বলেছে, অপরাধীর কোনো দলীয় পরিচয় নেই। সব সরকারই এ রকম কথা বলে। কিন্তু এবার বিশেষ পরিস্থিতি। নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের সময় ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দলীয় রাজনৈতিক সংস্রব আনুষ্ঠানিকভাবে ত্যাগ করা হয়েছে। এর পরও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রশাসন ও পুলিশের চোখে কীভাবে সাবেকি রাজকীয় মর্যাদা পান, সে বিষয়ে অনুসন্ধান দরকার। ওই সব উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মী যেন ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালীদের প্রশ্রয় লাভ করতে না পারেন, সে জন্যই তো ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনগুলোকে অঙ্গসংগঠনের মর্যাদা দেওয়া হয়নি। এই বিধান যদি কাজে না লাগে, তাহলে তো রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের একটি উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সচেতন থাকা দরকার।
ছাত্রলীগকে প্রধানমন্ত্রীর হিতোপদেশ বিতরণ আসলে উলুবনে মুক্তা ছড়ানোর মতো ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এই সব মিষ্টি কথায় চিঁড়া ভিজবে না। ছাত্রলীগের টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি বন্ধে ‘দুষ্টের দমন’ নীতি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হোক
No comments