এতিমের অধিকার প্রতিষ্ঠা by মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান
ইসলাম ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজজীবনে এতিমদের অধিকারকে সুনিশ্চিত করেছে। যে মা-বাবা তাঁর সন্তানদের অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় রেখে মৃত্যুবরণ করেন, দৈনন্দিন জীবনে তাদের অপরিসীম দুঃখ-কষ্ট ও দুর্বলতা বৃদ্ধি পায়। মা-বাবার আকস্মিক মৃত্যু অপ্রত্যাশিতভাবে এসে কারও কারও পার্থিব জীবনে দুর্দশা অনেক বাড়িয়ে দেয়। এমতাবস্থায় পরিবারে তারা অনাথ-এতিম হিসেবে চিহ্নিত হয়। এদের সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তারা তোমাকে এতিম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে, তুমি বলে দাও তাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে গুছিয়ে দেওয়া উত্তম। যদি তাদের ব্যয়ভার নিজেদের সঙ্গে একত্র করো, তাহলে মনে করবে তারা তোমাদের ভাই।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ২২০) পূর্ববর্তী উম্মতদেরও এতিমদের সঙ্গে উত্তম ব্যবহারের ব্যাপারে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, ‘যখন বনী ইসরাঈলদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে তোমরা আল্লাহ ছাড়া কারও ইবাদত করবে না, পিতা-মাতা, নিকট-আত্মীয়, এতিম দীন-দরিদ্রদের সাথে সত্ ব্যবহার করবে।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ৮৩)
ইসলাম এতিমের অধিকার রক্ষায় সুন্দর সুন্দর উত্সাহ দেওয়ার পাশাপাশি সদাচরণের জন্য জোরালো তাগিদ দিয়েছে। সামর্থ্যবান মুসলমান ব্যক্তি ও প্রশাসকদের এতিমের অধিকার আদায় করার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা আপন সন্তানসন্ততির মতো ধর্মীয় শিক্ষা, সুন্দর সংস্কৃতিমান ও আদর্শ চরিত্রবানরূপে এতিমদের গড়ে তোলার কাজে যথার্থ ভূমিকা নিতে পারেন। প্রাক-ইসলামি যুগে এতিম-মিসকিনদের জান-মালের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। তাই এতিমের ধন-সম্পদ লুটেপুটে খাওয়ার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ঘোষিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই যারা অন্যায়ভাবে এতিমের ধন-সম্পদ ভোগ করে, তারা নিজেদের পাকস্থলীকে অগ্নি দ্বারা পূর্ণ করে এবং অতিসত্বর তারা অগ্নিতেই প্রবেশ করবে।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত-১০)
এতিমদের ধন-সম্পদ রক্ষার সার্বিক বিষয়ে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন, ‘আর এতিমদের প্রতি বিশেষ লক্ষ রাখবে, যে পর্যন্ত না তারা বিয়ের বয়সে পৌঁছে। যদি তাদের মধ্যে বুদ্ধি-বিবেচনার উদ্ভব আঁচ করতে পার, তবে তাদের সম্পদ তাদের হাতে অর্পণ করতে পারবে। এতিমের সম্পদ প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ কোরো না অথবা তারা বড় হয়ে যাবে মনে করে তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো না। যারা সম্পদশালী তারা অবশ্যই এতিমের সম্পদ ব্যয় করা থেকে বিরত থাকবে। আর যে অভাবগ্রস্ত সে সংগত পরিমাণ খেতে পারবে। যখন তাদের কাছে তাদের সম্পদ সোপর্দ করবে তখন সাক্ষী রাখবে। অবশ্যই আল্লাহ হিসাব নেওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬)
আল্লাহ তাআলা এতিমের জীবনযাত্রায় সার্বিক বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। যদি কোনো উচ্চবংশের সুন্দরী যুবতী মহিলা বিধবা হয়ে যায় এবং তার ছোট সন্তানসন্ততি থাকে, তাহলে সে যদি নিষ্কলঙ্ক অবস্থায় তার এতিম সন্তানদের লালন-পালনে জীবন কাটিয়ে দেয় এবং অন্য স্বামী গ্রহণ না করে, তাহলে সে জান্নাতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পাশাপাশি থাকতে পারবে। এ সম্পর্কে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ! আমি দুই ধরনের দুর্বল লোকের অধিকারকে পবিত্র বলে ঘোষণা করছি। তাদের একজন এতিম ও অপরজন নারী। এতিম ছেলেমেয়ের প্রতিপালনের জন্য অন্য স্বামী গ্রহণ না করা মহিলাদের বিশেষ মর্যাদার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি এবং রোদে পোড়া দুই গাল মহিলা অর্থাত্ বিবর্ণ চেহারার মহিলা কিয়ামতের দিন এ দুটো আঙুলের ন্যায় থাকব (তিনি তাঁর তর্জনী ও মধ্যম আঙুল ইশারা করলেন), যে সম্ভ্রান্ত বংশীয়া সুন্দরী যুবতীর স্বামী মারা গেছে এবং সে স্বামীর ঔরসজাত এতিম সন্তানদের লালন-পালনে নিয়োজিত রয়েছে, যতক্ষণ না তার সন্তানেরা প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে।’ (নাসায়ী)
রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও এতিম অসহায় ছিলেন। তাই তিনি এতিমের দুঃখ-কষ্ট যথার্থ অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। এতিমদের পরিচর্যায় তিনি ছিলেন উদারতার মূর্ত প্রতীক। একদা ঈদের দিনে রাসূলুল্লাহ (সা.) হঠাত্ দেখতে পেলেন, ঈদগাহের এককোণে বসে একটি অনাথ ছেলে কাঁদছে। তিনি শিশুটির কাছে গেলেন এবং মাথায় হাত বুলিয়ে এ আনন্দের দিনে তার কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করলে ছেলেটি বলল, তার বাবা যুদ্ধে মারা গেছেন এবং তার মা অন্যত্র বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কোমল হূদয় বেদনায় পরিপূর্ণ হলো এবং তিনি শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে এলেন। এরপর হজরত আয়েশা (রা.)-কে ডেকে বললেন, ‘হে আয়েশা! তোমার জন্য একটি ছেলে এনেছি।’ তিনি ছেলেটিকে বললেন, ‘এখন থেকে আমি তোমার পিতা, আর আয়েশা তোমার মাতা এবং ফাতেমা তোমার বোন।’ এরপর তাকে নতুন জামা কিনে দিলেন, এতিম ছেলেটির মনের সব দুঃখ মুছে গেল।
ইসলামের দৃষ্টিতে এতিমের প্রতি দয়ার্দ্র ও সহানুভূতিশীল হওয়া একটি অত্যন্ত মহত্ কাজ। এতিম, নিঃস্ব, হতদরিদ্র, অসহায়, বিধবা ও অভাবগ্রস্তদের সহযোগিতা করা সুনিশ্চিতভাবে নেক কাজের অন্তর্ভুক্ত। এর মধ্যে সার্বিক সহযোগিতা, সদাচরণ, দয়া, সেবা-যত্ন ও বিপদ-আপদ লাঘবে এতিমরা সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এতিমদের মাথায় শুধু আল্লাহর উদ্দেশ্যে হাত বুলায়, তবে যেসব চুলের ওপর দিয়ে হাত বুলিয়েছে তার প্রত্যেকটি চুলের বিনিময়ে কয়েকটি করে নেকি লাভ করবে।’ নবী করিম (সা.) সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘মুসলমানদের মধ্যে সর্বোত্তম ঘর হলো যে ঘরে এতিমদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা হয়, আর মুসলমানদের মধ্যে নিকৃষ্টতম ঘর হলো যে ঘরে এতিম বসবাস করে কিন্তু তার সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়।’
সারা দেশে ছিন্নমূল মা-বাবাহারা অগণিত এতিম ও অসংখ্য এতিমখানা রয়েছে। এই এতিমদের চলাফেরা ও যাতায়াতের সুবিধার্থে সব ধরনের গাড়ি ভাড়া মওকুফের জন্য সুব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে ব্যক্তিমালিকানাধীন সরকারি যানবাহন বাস, নৌযান, রেলগাড়ি প্রভৃতি যন্ত্রচালিত গাড়িতে এতিমদের চলাচলের ক্ষেত্রে ভাড়া মওকুফ করা হলে অতি মহত্ মানবিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। অতএব, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে আশপাশে যেসব এতিম অসহায় লোক বসবাস করে, মুসলমানদের উচিত তাদের লালন-পালন, ভরণ-পোষণ ও রক্ষণাবেক্ষণে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে নেক কাজের দরজা উন্মুক্ত রাখা। তাহলেই ইসলামের সাম্যবাদিতার আদর্শ শিক্ষা অনুযায়ী এতিমের দুঃখ-কষ্ট মোচন হয়ে মানবসমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হবে।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান, সহকারী অধ্যাপক, ইসলামিক একাডেমী, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়।
dr.munimkhan@yahoo.com
ইসলাম এতিমের অধিকার রক্ষায় সুন্দর সুন্দর উত্সাহ দেওয়ার পাশাপাশি সদাচরণের জন্য জোরালো তাগিদ দিয়েছে। সামর্থ্যবান মুসলমান ব্যক্তি ও প্রশাসকদের এতিমের অধিকার আদায় করার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা আপন সন্তানসন্ততির মতো ধর্মীয় শিক্ষা, সুন্দর সংস্কৃতিমান ও আদর্শ চরিত্রবানরূপে এতিমদের গড়ে তোলার কাজে যথার্থ ভূমিকা নিতে পারেন। প্রাক-ইসলামি যুগে এতিম-মিসকিনদের জান-মালের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। তাই এতিমের ধন-সম্পদ লুটেপুটে খাওয়ার বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ঘোষিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই যারা অন্যায়ভাবে এতিমের ধন-সম্পদ ভোগ করে, তারা নিজেদের পাকস্থলীকে অগ্নি দ্বারা পূর্ণ করে এবং অতিসত্বর তারা অগ্নিতেই প্রবেশ করবে।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত-১০)
এতিমদের ধন-সম্পদ রক্ষার সার্বিক বিষয়ে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেন, ‘আর এতিমদের প্রতি বিশেষ লক্ষ রাখবে, যে পর্যন্ত না তারা বিয়ের বয়সে পৌঁছে। যদি তাদের মধ্যে বুদ্ধি-বিবেচনার উদ্ভব আঁচ করতে পার, তবে তাদের সম্পদ তাদের হাতে অর্পণ করতে পারবে। এতিমের সম্পদ প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচ কোরো না অথবা তারা বড় হয়ে যাবে মনে করে তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেলো না। যারা সম্পদশালী তারা অবশ্যই এতিমের সম্পদ ব্যয় করা থেকে বিরত থাকবে। আর যে অভাবগ্রস্ত সে সংগত পরিমাণ খেতে পারবে। যখন তাদের কাছে তাদের সম্পদ সোপর্দ করবে তখন সাক্ষী রাখবে। অবশ্যই আল্লাহ হিসাব নেওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ৬)
আল্লাহ তাআলা এতিমের জীবনযাত্রায় সার্বিক বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। যদি কোনো উচ্চবংশের সুন্দরী যুবতী মহিলা বিধবা হয়ে যায় এবং তার ছোট সন্তানসন্ততি থাকে, তাহলে সে যদি নিষ্কলঙ্ক অবস্থায় তার এতিম সন্তানদের লালন-পালনে জীবন কাটিয়ে দেয় এবং অন্য স্বামী গ্রহণ না করে, তাহলে সে জান্নাতে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পাশাপাশি থাকতে পারবে। এ সম্পর্কে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ! আমি দুই ধরনের দুর্বল লোকের অধিকারকে পবিত্র বলে ঘোষণা করছি। তাদের একজন এতিম ও অপরজন নারী। এতিম ছেলেমেয়ের প্রতিপালনের জন্য অন্য স্বামী গ্রহণ না করা মহিলাদের বিশেষ মর্যাদার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমি এবং রোদে পোড়া দুই গাল মহিলা অর্থাত্ বিবর্ণ চেহারার মহিলা কিয়ামতের দিন এ দুটো আঙুলের ন্যায় থাকব (তিনি তাঁর তর্জনী ও মধ্যম আঙুল ইশারা করলেন), যে সম্ভ্রান্ত বংশীয়া সুন্দরী যুবতীর স্বামী মারা গেছে এবং সে স্বামীর ঔরসজাত এতিম সন্তানদের লালন-পালনে নিয়োজিত রয়েছে, যতক্ষণ না তার সন্তানেরা প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে।’ (নাসায়ী)
রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও এতিম অসহায় ছিলেন। তাই তিনি এতিমের দুঃখ-কষ্ট যথার্থ অনুধাবন করতে পেরেছিলেন। এতিমদের পরিচর্যায় তিনি ছিলেন উদারতার মূর্ত প্রতীক। একদা ঈদের দিনে রাসূলুল্লাহ (সা.) হঠাত্ দেখতে পেলেন, ঈদগাহের এককোণে বসে একটি অনাথ ছেলে কাঁদছে। তিনি শিশুটির কাছে গেলেন এবং মাথায় হাত বুলিয়ে এ আনন্দের দিনে তার কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করলে ছেলেটি বলল, তার বাবা যুদ্ধে মারা গেছেন এবং তার মা অন্যত্র বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কোমল হূদয় বেদনায় পরিপূর্ণ হলো এবং তিনি শিশুটিকে বাড়িতে নিয়ে এলেন। এরপর হজরত আয়েশা (রা.)-কে ডেকে বললেন, ‘হে আয়েশা! তোমার জন্য একটি ছেলে এনেছি।’ তিনি ছেলেটিকে বললেন, ‘এখন থেকে আমি তোমার পিতা, আর আয়েশা তোমার মাতা এবং ফাতেমা তোমার বোন।’ এরপর তাকে নতুন জামা কিনে দিলেন, এতিম ছেলেটির মনের সব দুঃখ মুছে গেল।
ইসলামের দৃষ্টিতে এতিমের প্রতি দয়ার্দ্র ও সহানুভূতিশীল হওয়া একটি অত্যন্ত মহত্ কাজ। এতিম, নিঃস্ব, হতদরিদ্র, অসহায়, বিধবা ও অভাবগ্রস্তদের সহযোগিতা করা সুনিশ্চিতভাবে নেক কাজের অন্তর্ভুক্ত। এর মধ্যে সার্বিক সহযোগিতা, সদাচরণ, দয়া, সেবা-যত্ন ও বিপদ-আপদ লাঘবে এতিমরা সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এতিমদের মাথায় শুধু আল্লাহর উদ্দেশ্যে হাত বুলায়, তবে যেসব চুলের ওপর দিয়ে হাত বুলিয়েছে তার প্রত্যেকটি চুলের বিনিময়ে কয়েকটি করে নেকি লাভ করবে।’ নবী করিম (সা.) সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘মুসলমানদের মধ্যে সর্বোত্তম ঘর হলো যে ঘরে এতিমদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা হয়, আর মুসলমানদের মধ্যে নিকৃষ্টতম ঘর হলো যে ঘরে এতিম বসবাস করে কিন্তু তার সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়।’
সারা দেশে ছিন্নমূল মা-বাবাহারা অগণিত এতিম ও অসংখ্য এতিমখানা রয়েছে। এই এতিমদের চলাফেরা ও যাতায়াতের সুবিধার্থে সব ধরনের গাড়ি ভাড়া মওকুফের জন্য সুব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে ব্যক্তিমালিকানাধীন সরকারি যানবাহন বাস, নৌযান, রেলগাড়ি প্রভৃতি যন্ত্রচালিত গাড়িতে এতিমদের চলাচলের ক্ষেত্রে ভাড়া মওকুফ করা হলে অতি মহত্ মানবিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। অতএব, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে আশপাশে যেসব এতিম অসহায় লোক বসবাস করে, মুসলমানদের উচিত তাদের লালন-পালন, ভরণ-পোষণ ও রক্ষণাবেক্ষণে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে নেক কাজের দরজা উন্মুক্ত রাখা। তাহলেই ইসলামের সাম্যবাদিতার আদর্শ শিক্ষা অনুযায়ী এতিমের দুঃখ-কষ্ট মোচন হয়ে মানবসমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হবে।
ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান, সহকারী অধ্যাপক, ইসলামিক একাডেমী, দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়।
dr.munimkhan@yahoo.com
No comments