শ্রীলঙ্কার মুসলমানরা আতঙ্কে
শ্রীলঙ্কায়
গত রোববার গির্জা ও বিলাসবহুল হোটেলসহ আটটি স্থানে হামলার সময় ঘর থেকে
বেরিয়েছিলেন মোহামেদ হাসান। এখন তিনি হামলার ভয়ে আছেন। কারণ তিনি মুসলমান।
একটি প্রিন্টিং প্রেসে কাজ করেন হাসান। রাজধানী কলম্বোর দেমাতাগোদা এলাকার জুমা মসজিদের পাশে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। ৪১ বছর বয়সী এই ব্যক্তিকে বাইরে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে তাঁর পরিবার। হাসান বলেন, ‘তারা ভয় পাচ্ছে, যদি আমি বাইরে যাই তাহলে কি আর জীবিত ফিরতে পারব?’
রোববারের এই হামলায় এ পর্যন্ত ৩৫৯ জন মারা গেছে। আহত হয়েছে কয়েক শ মানুষ। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এ ছাড়া ভয়ংকর এই হামলার জন্য সরকারও উগ্রপন্থী ইসলামি গোষ্ঠীকে দায়ী করেছে। এরপর থেকে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা।
এমন একজন মুসলিম নারী জরিনা বেগম (৬০)। তিনি বলেন, ওই হামলার পর থেকে এখনো তিনি ঠিকঠাক ঘুমাতে পারেননি। জরিনা আরও বলেন, ‘আমি জানি মানুষ মুসলমানদের ওপর ক্ষিপ্ত। যাঁরা ঘৃণা করেন, তাঁরা এখন আরও বেশি ঘৃণা করবেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বাড়িতে গাদাগাদি করে থাকছি। আমরা বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছি।’
শ্রীলঙ্কার মোট জনসংখ্যা ১০ শতাংশ মুসলমান এবং ৭ শতাংশ খ্রিষ্টান। দেশটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলিরা বৌদ্ধ। আর দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো হিন্দু সম্প্রদায়। দেশটির ধর্মীয় এবং জাতিসত্তার মানুষদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। কট্টরপন্থী বৌদ্ধরা ২০১৩ সালে এবং ২০১৮ সালে মুসমানদের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছিল। যদিও রোববার এই হামলার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা সাধারণ মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে জুমা মসজিদের ওই এলাকায় গিয়ে দেখে গেল, সেখানকার মুসলমানরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা আশা করছেন, এ রকম সংকটময় সময় পুলিশ তাঁদের রক্ষা করবে।
শ্রীলঙ্কার মুসলিম কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিলমি আহমেদ বলেন, ‘আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, মুসলমানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। পুরো মুসলিম সম্প্রদায় এই হামলা চালায়নি।’
নিরাপত্তার বড় ঘাটতি ছিল
এদিকে শ্রীলঙ্কা সরকার গতকাল বুধবার স্বীকার করেছে, বড় ধরনের গোয়েন্দা সতর্কবার্তা থাকার পরও ওই ভয়ংকর হামলা ঠেকানোর ক্ষেত্রে বড় ঘাটতি ছিল। যদিও সরকার ওই সতর্কবার্তাকে প্রশাসন আমলে নেয়নি। এই সতর্কবার্তা আমলে না নেওয়ার ফলে রোষের মুখে পড়েছে সরকার।
এদিকে জরুরি অবস্থা জারির পর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী তাদের নতুন ক্ষমতাকে কাজে লাগাচ্ছে। ওই হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ গত মঙ্গলবার রাতেও ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই শ্রীলঙ্কার নাগরিক।
দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারির পর থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া গতকালও বোম স্কোয়াড সন্দেহভাজন কয়েকটি স্থানে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
এর আগে গুরুত্বপূর্ণ চার্চে আত্মঘাতী বোমা হামলার ব্যাপারে সতর্কতা দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কা পুলিশের প্রধান। ন্যাশনাল তৌহিদ জামায়াত হয়তো এই হামলা চালাতে পারে বলে সতর্কতায় উল্লেখ করা হয়েছিল। বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন তিনি। সরকার বলেছে, এই তথ্য সরকারের প্রধানমন্ত্রী বা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের জানানো হয়নি। এ প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান বিজেওয়ার্দেনে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এটা তথ্য ভাগাভাগির ক্ষেত্রে বড় ঘাটতি। সরকারকে এই দায় নিতে হবে।’
এদিকে সরকারের কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, আরও হামলার আশঙ্কা আছে। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলেছেন, ওই সন্দেহভাজন হামলাকারীরা পলাতক রয়েছেন। ফলে হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
একটি প্রিন্টিং প্রেসে কাজ করেন হাসান। রাজধানী কলম্বোর দেমাতাগোদা এলাকার জুমা মসজিদের পাশে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। ৪১ বছর বয়সী এই ব্যক্তিকে বাইরে না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছে তাঁর পরিবার। হাসান বলেন, ‘তারা ভয় পাচ্ছে, যদি আমি বাইরে যাই তাহলে কি আর জীবিত ফিরতে পারব?’
রোববারের এই হামলায় এ পর্যন্ত ৩৫৯ জন মারা গেছে। আহত হয়েছে কয়েক শ মানুষ। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এ ছাড়া ভয়ংকর এই হামলার জন্য সরকারও উগ্রপন্থী ইসলামি গোষ্ঠীকে দায়ী করেছে। এরপর থেকে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা।
এমন একজন মুসলিম নারী জরিনা বেগম (৬০)। তিনি বলেন, ওই হামলার পর থেকে এখনো তিনি ঠিকঠাক ঘুমাতে পারেননি। জরিনা আরও বলেন, ‘আমি জানি মানুষ মুসলমানদের ওপর ক্ষিপ্ত। যাঁরা ঘৃণা করেন, তাঁরা এখন আরও বেশি ঘৃণা করবেন।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বাড়িতে গাদাগাদি করে থাকছি। আমরা বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছি।’
শ্রীলঙ্কার মোট জনসংখ্যা ১০ শতাংশ মুসলমান এবং ৭ শতাংশ খ্রিষ্টান। দেশটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহলিরা বৌদ্ধ। আর দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো হিন্দু সম্প্রদায়। দেশটির ধর্মীয় এবং জাতিসত্তার মানুষদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। কট্টরপন্থী বৌদ্ধরা ২০১৩ সালে এবং ২০১৮ সালে মুসমানদের বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছিল। যদিও রোববার এই হামলার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা সাধারণ মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে জুমা মসজিদের ওই এলাকায় গিয়ে দেখে গেল, সেখানকার মুসলমানরা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা আশা করছেন, এ রকম সংকটময় সময় পুলিশ তাঁদের রক্ষা করবে।
শ্রীলঙ্কার মুসলিম কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিলমি আহমেদ বলেন, ‘আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, মুসলমানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। পুরো মুসলিম সম্প্রদায় এই হামলা চালায়নি।’
নিরাপত্তার বড় ঘাটতি ছিল
এদিকে শ্রীলঙ্কা সরকার গতকাল বুধবার স্বীকার করেছে, বড় ধরনের গোয়েন্দা সতর্কবার্তা থাকার পরও ওই ভয়ংকর হামলা ঠেকানোর ক্ষেত্রে বড় ঘাটতি ছিল। যদিও সরকার ওই সতর্কবার্তাকে প্রশাসন আমলে নেয়নি। এই সতর্কবার্তা আমলে না নেওয়ার ফলে রোষের মুখে পড়েছে সরকার।
এদিকে জরুরি অবস্থা জারির পর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী তাদের নতুন ক্ষমতাকে কাজে লাগাচ্ছে। ওই হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ গত মঙ্গলবার রাতেও ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই শ্রীলঙ্কার নাগরিক।
দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারির পর থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া গতকালও বোম স্কোয়াড সন্দেহভাজন কয়েকটি স্থানে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
এর আগে গুরুত্বপূর্ণ চার্চে আত্মঘাতী বোমা হামলার ব্যাপারে সতর্কতা দিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কা পুলিশের প্রধান। ন্যাশনাল তৌহিদ জামায়াত হয়তো এই হামলা চালাতে পারে বলে সতর্কতায় উল্লেখ করা হয়েছিল। বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন তিনি। সরকার বলেছে, এই তথ্য সরকারের প্রধানমন্ত্রী বা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের জানানো হয়নি। এ প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান বিজেওয়ার্দেনে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এটা তথ্য ভাগাভাগির ক্ষেত্রে বড় ঘাটতি। সরকারকে এই দায় নিতে হবে।’
এদিকে সরকারের কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, আরও হামলার আশঙ্কা আছে। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলেছেন, ওই সন্দেহভাজন হামলাকারীরা পলাতক রয়েছেন। ফলে হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
No comments