এই মুহূর্তে দেশে ফেরার পরিকল্পনা নেই, জামায়াতের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছিল ভুল -সাক্ষাৎকারে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক
জামায়াতের পদত্যাগী নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, জামায়াত
স্বাধীনতার বিরোধিতার যে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল, তা ভুল ছিল, যার
দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া উচিত। ক্ষমতাসীন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করে
পদত্যাগের ধারণা নাকচ করে তিনি বলেন, এটা পুরোপুরি অসত্য। এই মুহূর্তে তার
বাংলাদেশে ফেরার কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে
ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক এসব কথা বলেন।
প্রশ্ন: আপনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেছেন এই কারণ দেখিয়ে যে, জামায়াত তাদের ’৭১-এর ভূমিকার জন্য জনগণের কাছে জমা চায়নি। কিন্তু আপনার বক্তব্য থেকে এটা পরিষ্কার নয় যে জামায়াত কিসের জন্য ক্ষমা চাইবে?
উত্তর: আমি আমার পদত্যাগপত্রে স্পষ্ট করেই বলেছি, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানাতে ব্যর্থ হয়েছিল। আমার দৃষ্টিতে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামী স্বাধীনতার বিরোধিতার যে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল, তা ভুল ছিল, যার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
প্রশ্ন: প্রশ্ন উঠেছে জামায়াতে ইসলামীর প্রতি আপনার ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতৃবৃন্দের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আপনি যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?
উত্তর: এখানে কোনো রকম অসঙ্গতি নেই। রাজনৈতিকভাবে দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করা আর যুদ্ধাপরাধ করা সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার। একটি রাজনৈতিক ভূমিকা, আরেকটি ফৌজদারি অপরাধ। এই পার্থক্যটা অনেকেই খেয়াল করেন না। জামায়াতে ইসলামীকে আমি তাদের একাত্তরের রাজনৈতিক ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইতে বলেছি।
প্রশ্ন: আপনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করেছেন এই কারণ দেখিয়ে যে, জামায়াত তাদের ’৭১-এর ভূমিকার জন্য জনগণের কাছে জমা চায়নি। কিন্তু আপনার বক্তব্য থেকে এটা পরিষ্কার নয় যে জামায়াত কিসের জন্য ক্ষমা চাইবে?
উত্তর: আমি আমার পদত্যাগপত্রে স্পষ্ট করেই বলেছি, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ জানাতে ব্যর্থ হয়েছিল। আমার দৃষ্টিতে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামী স্বাধীনতার বিরোধিতার যে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল, তা ভুল ছিল, যার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া উচিত।
প্রশ্ন: প্রশ্ন উঠেছে জামায়াতে ইসলামীর প্রতি আপনার ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতৃবৃন্দের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে আপনি যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?
উত্তর: এখানে কোনো রকম অসঙ্গতি নেই। রাজনৈতিকভাবে দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করা আর যুদ্ধাপরাধ করা সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার। একটি রাজনৈতিক ভূমিকা, আরেকটি ফৌজদারি অপরাধ। এই পার্থক্যটা অনেকেই খেয়াল করেন না। জামায়াতে ইসলামীকে আমি তাদের একাত্তরের রাজনৈতিক ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাইতে বলেছি।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান
রাইটস ওয়াচ, ইন্টারন্যাশনাল বার এসোসিয়েশন, ইউকে বার এসোসিয়েশন এবং অন্য
অনেক সংগঠন এই বিচারের উদ্যোগকে সমর্থন করেছিল, কিন্তু এই সবক’টি সংগঠনই
পরবর্তীতে দাবি করেছে যে, সংশ্লিষ্ট আইন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে
অসামঞ্জস্যপূর্ণ, সে কারণে এই বিচারকার্য সর্বত্র প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
এছাড়াও আমি বেশ কয়েকবার বলেছি, যে আইনের অধীনে বিচারকার্য চলছে তা অসাংবিধানিক। ডিফেন্স দলের প্রধান হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও সাক্ষ্য প্রমাণ পর্যালোচনা করার সুযোগ আমার হয়েছিল। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানদণ্ড অনুযায়ী স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিচারকার্য পরিচালিত হলে ট্রাইব্যুনালে আমার সকল মক্কেল নির্দোষ প্রমাণিত হতেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
প্রশ্ন: জামায়াতে ইসলামীর অনেক নেতাকর্মী মনে করেন যে, ১৯৭১-এর ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার মানে হচ্ছে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ স্বীকার করে নেয়া। মন্তব্য করুন।
উত্তর: এটা বড় ধরনের ভুল ধারণা। স্বাধীনতার বিরোধিতা করার জন্য একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমা চাওয়াকে কোনোভাবেই ব্যক্তি বিশেষ কর্তৃক খুন, ধর্ষণ বা যুদ্ধকালীন কোনো ফৌজদারি অপরাধের স্বীকারোক্তি হিসেবে গণ্য করার কোনো সুযোগ নেই।
যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারী অপরাধ প্রমাণ করতে হলে আদালতে অভিযোগের সমর্থনে সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ দাখিল করতে হয়। অতীতে বহুবার বলেছি, জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সমর্থনে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো বস্তুনিষ্ঠ তথ্য-প্রমাণাদি দাখিল করতে পারেনি।
প্রশ্ন: এই মন্তব্য অনেকেই করেছেন যে, জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করলেও আপনি আপনার আদর্শ পরিত্যাগ করেননি। আপনার আদর্শ কি? আপনি কি তা পরিত্যাগ করেছেন?
উত্তর: ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি আমার বিশ্বাস অবশ্যই আমি পরিত্যাগ করিনি। আমি বিশ্বাস করি, একজন মুসলমান হিসেবে সমাজে ইসলামী মূল্যবোধ, অর্থাৎ ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও সহনশীলতা প্রতিষ্ঠা করা আমার দায়িত্ব।
দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম ত্যাগ করার মানে কোনোভাবেই ইসলামী মূল্যবোধ পরিত্যাগ করা নয়। বরং আমি আশা করছি এখন বিভিন্ন ফোরামে সক্রিয় হয়ে আমার দায়িত্বটি ব্যাপক পরিসরে ও আরো ভালোভাবে পালন করতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।
প্রশ্ন: জামায়াতের ইতিহাসে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কারও পদত্যাগ বিরল। জামায়াত থেকে পদত্যাগ মানে ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্যে ও আদর্শ থেকে বিচ্যুতি হিসেবে ধরে নেয়া হয়। আপনি কি মনে করেন যে রাজনীতি থেকে পদত্যাগ করে আপনি ইসলামী আন্দোলন পরিত্যাগ করেছেন?
উত্তর: এটা সঠিক নয়। ইসলামের খেদমত কিংবা একজন মুসলমান হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের জন্য একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে হবে এ রকম কোনো আবশ্যিকতা নেই। আমি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগদান কিংবা একটি নতুন দল গঠন করছি না। তার মানে এই নয়, আমার যে বিশ্বাস ও দায়িত্ব তা আমি পালন করবো না। পৃথিবীব্যাপী অনেক বিজ্ঞানী, পেশাজীবী, শিক্ষক, কবি, লেখক, সাংবাদিক রয়েছেন যারা সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য না হয়েও ইসলামের প্রয়োজনে ও প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।
প্রশ্ন: আপনি কি দেশে ফেরার উদ্দেশ্য সরকারের সাথে যোগাযোগ করে পদত্যাগ করেছেন?
উত্তর: এটা পুরোপুরি অসত্য। আমি বিগত কয়েক বছর ধরে লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত আছি। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ফেরার কোনো পরিকল্পনা আমার নেই।
এছাড়াও আমি বেশ কয়েকবার বলেছি, যে আইনের অধীনে বিচারকার্য চলছে তা অসাংবিধানিক। ডিফেন্স দলের প্রধান হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও সাক্ষ্য প্রমাণ পর্যালোচনা করার সুযোগ আমার হয়েছিল। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানদণ্ড অনুযায়ী স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বিচারকার্য পরিচালিত হলে ট্রাইব্যুনালে আমার সকল মক্কেল নির্দোষ প্রমাণিত হতেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
প্রশ্ন: জামায়াতে ইসলামীর অনেক নেতাকর্মী মনে করেন যে, ১৯৭১-এর ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার মানে হচ্ছে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ স্বীকার করে নেয়া। মন্তব্য করুন।
উত্তর: এটা বড় ধরনের ভুল ধারণা। স্বাধীনতার বিরোধিতা করার জন্য একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমা চাওয়াকে কোনোভাবেই ব্যক্তি বিশেষ কর্তৃক খুন, ধর্ষণ বা যুদ্ধকালীন কোনো ফৌজদারি অপরাধের স্বীকারোক্তি হিসেবে গণ্য করার কোনো সুযোগ নেই।
যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারী অপরাধ প্রমাণ করতে হলে আদালতে অভিযোগের সমর্থনে সুনির্দিষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ দাখিল করতে হয়। অতীতে বহুবার বলেছি, জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সমর্থনে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো বস্তুনিষ্ঠ তথ্য-প্রমাণাদি দাখিল করতে পারেনি।
প্রশ্ন: এই মন্তব্য অনেকেই করেছেন যে, জামায়াতে ইসলামী থেকে পদত্যাগ করলেও আপনি আপনার আদর্শ পরিত্যাগ করেননি। আপনার আদর্শ কি? আপনি কি তা পরিত্যাগ করেছেন?
উত্তর: ইসলামী মূল্যবোধের প্রতি আমার বিশ্বাস অবশ্যই আমি পরিত্যাগ করিনি। আমি বিশ্বাস করি, একজন মুসলমান হিসেবে সমাজে ইসলামী মূল্যবোধ, অর্থাৎ ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও সহনশীলতা প্রতিষ্ঠা করা আমার দায়িত্ব।
দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম ত্যাগ করার মানে কোনোভাবেই ইসলামী মূল্যবোধ পরিত্যাগ করা নয়। বরং আমি আশা করছি এখন বিভিন্ন ফোরামে সক্রিয় হয়ে আমার দায়িত্বটি ব্যাপক পরিসরে ও আরো ভালোভাবে পালন করতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।
প্রশ্ন: জামায়াতের ইতিহাসে শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কারও পদত্যাগ বিরল। জামায়াত থেকে পদত্যাগ মানে ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্যে ও আদর্শ থেকে বিচ্যুতি হিসেবে ধরে নেয়া হয়। আপনি কি মনে করেন যে রাজনীতি থেকে পদত্যাগ করে আপনি ইসলামী আন্দোলন পরিত্যাগ করেছেন?
উত্তর: এটা সঠিক নয়। ইসলামের খেদমত কিংবা একজন মুসলমান হিসেবে আমার দায়িত্ব পালনের জন্য একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে হবে এ রকম কোনো আবশ্যিকতা নেই। আমি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগদান কিংবা একটি নতুন দল গঠন করছি না। তার মানে এই নয়, আমার যে বিশ্বাস ও দায়িত্ব তা আমি পালন করবো না। পৃথিবীব্যাপী অনেক বিজ্ঞানী, পেশাজীবী, শিক্ষক, কবি, লেখক, সাংবাদিক রয়েছেন যারা সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য না হয়েও ইসলামের প্রয়োজনে ও প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন।
প্রশ্ন: আপনি কি দেশে ফেরার উদ্দেশ্য সরকারের সাথে যোগাযোগ করে পদত্যাগ করেছেন?
উত্তর: এটা পুরোপুরি অসত্য। আমি বিগত কয়েক বছর ধরে লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত আছি। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ফেরার কোনো পরিকল্পনা আমার নেই।
No comments