বছর না ঘুরতেই পুরোনো চিত্র
বর্ষায়
এলাকা জলাবদ্ধতামুক্ত রাখতে গত বছর কাটাসুর খাল খনন করেছিল ঢাকা ওয়াসা।
কিন্তু বছর না ঘুরতেই সেই খাল আবার প্রায় আগের মতো হয়ে গেছে। খালের বিভিন্ন
অংশ ভরে গেছে ময়লা-আবর্জনায়। গত শনিবার খালটি ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
খালটির শুরু রায়েরবাজার পুলপাড় এলাকা থেকে। এঁকেবেঁকে খালটি গিয়ে মিশেছে রামচন্দ্রপুর খালের সঙ্গে। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালে বর্ষায় রায়েরবাজার ও মোহাম্মদপুর এলাকার পানি এসে পড়ে।
স্থানীয় লোকজন জানান, খালটির কারণে বর্ষায় মোহাম্মদপুরের কাটাসুর এলাকায় পানি জমে না। কিন্তু ভারী বৃষ্টি হলে রায়েরবাজারের পুলপাড় এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিত। এ অবস্থায় গত বছর খালটি পুনঃখনন করে ঢাকা ওয়াসা। খননের পরপর খালের অবস্থা অনেক ভালো ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সেটি আবার আগের অবস্থায় চলে এসেছে।
ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, গত বছর খালটির প্রায় দুই কিলোমিটার অংশ খনন করা হয়েছিল। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা।
শনিবার খালটি ঘুরে দেখা গেছে, খালের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কাটাসুর কাঁচাবাজারের পাশে। এই অংশে খালের ওপর তৈরি সরু কালভার্টগুলোর নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় না বললেই চলে। কালভার্টের চারপাশজুড়ে জমেছে বারোয়ারি বর্জ্য। এ ছাড়া খালের বিভিন্ন অংশে পয়োনিষ্কাশনের নালা, অবৈধ পানি ও গ্যাসের লাইন দেখা গেছে।
খালটির এই অবস্থার জন্য স্থানীয় লোকজন সিটি করপোরেশন ও ওয়াসা—দুই সংস্থাকেই দুষছেন। তাঁরা বলেন, খালের দুই পাশে নিম্ন আয়ের মানুষের বাস। তাঁরা গৃহস্থালির সব বর্জ্যই খালে ফেলেন। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এসব বাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহের তেমন তৎপরতা নেই। দুই পাশের বাসিন্দারা খাল রক্ষায় সচেতনও নয়। অন্যদিকে খাল রক্ষার দায়িত্বে থাকা ওয়াসারও নিয়মিত কোনো তদারকি নেই। পাশাপাশি এই এলাকায় ওয়াসার পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা না থাকায় আশপাশের বাড়ি থেকে পয়োবর্জ্য ফেলা হয় খালে। এতে খালের পানি নোংরা হয়ে যায়। পানি থেকে আসে কটু গন্ধ।
খালটি ঘুরে দেখা গেছে, খালটির দুই পাড়ের বড় অংশই বাঁধাই করা। খাল রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন যাতে খালের পাড় ধরে হাঁটতে পারে, সে জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে খালটির পাড় বাঁধাই করেছিল ওয়াসা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, খালের নোংরা পানি, দুর্গন্ধ, দৃষ্টিকটুভাবে পড়ে থাকা আবর্জনা, দৃশ্যমান পয়োনিষ্কাশনের নালার সংযোগ—এসব কারণে সাধারণ মানুষ পাড় দিয়ে হাঁটতে আগ্রহ দেখায় না। স্থানীয় বাসিন্দা মেফতাহুল জান্নাত বলেন, খালের যে অবস্থা, তাতে কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে পাড় ধরে হাঁটা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, কয়েক মাস আগে একবার তিনি খালের পাড়ে হাঁটতে গিয়েছিলেন। কিন্তু নোংরা পরিবেশ দেখে দ্রুত সেখান থেকে চলে আসেন। তিনি বলেন, খালটি আবর্জনামুক্ত ও খালের সঙ্গে যুক্ত পয়োনালাগুলো বন্ধ করে দিলে খালের পানি ও পরিবেশের উন্নতি হতো। তখন বর্ষায় জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির পাশাপাশি খালের পাড়ে হাঁটাচলারও সুযোগ পেত স্থানীয় লোকজন।
জানতে চাইলে ওয়াসার পরিচালক (কারিগরি) এ কে এম সহিদ উদ্দিন বলেন, ‘কঠিন বর্জ্য তো খালে ফেলার কথা নয়। এটি দেখার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। আমরা সিটি করপোরেশনকে বারবার বলেছি, খালে যাতে বর্জ্য ফেলা না হয়, তা নিশ্চিত করতে। খাল খননের পর বছরজুড়ে সেখানে কঠিন বর্জ্য ফেললে পরের বছর আর খননকাজে আসার কথা নয়।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা (অঞ্চল-৫) মফিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘খালে ময়লা না ফেলতে আমরা সব সময় নিরুৎসাহিত করি। ময়লা ফেলার জন্য আমাদের এসটিএস, কনটেইনার আছে। তারপরও অনেকেই খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলে। খালে ফেলা ময়লা ওয়াসাকেই সরাতে হবে। কারণ, খালের মালিক ওয়াসা। এটির রক্ষণাবেক্ষণ ও যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব ওয়াসার।’
এমন অবস্থায় কীভাবে খাল রক্ষা করা যায়, জানতে চাইলে নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, খাল রক্ষা ও খালের পরিবেশ উন্নয়নে স্থানীয় লোকজনকে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, যাতে তারা খালে কাউকে ময়লা ফেলতে না দেয় এবং নিজেরাও ময়লা না ফেলে। প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক সংগঠন গড়তে হবে, যারা খাল দেখভাল করবে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে এ দায়িত্ব নিতে হবে। না হলে বছরে একবার খনন করে খাল রক্ষা করা যাবে না।
খালটির শুরু রায়েরবাজার পুলপাড় এলাকা থেকে। এঁকেবেঁকে খালটি গিয়ে মিশেছে রামচন্দ্রপুর খালের সঙ্গে। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালে বর্ষায় রায়েরবাজার ও মোহাম্মদপুর এলাকার পানি এসে পড়ে।
স্থানীয় লোকজন জানান, খালটির কারণে বর্ষায় মোহাম্মদপুরের কাটাসুর এলাকায় পানি জমে না। কিন্তু ভারী বৃষ্টি হলে রায়েরবাজারের পুলপাড় এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিত। এ অবস্থায় গত বছর খালটি পুনঃখনন করে ঢাকা ওয়াসা। খননের পরপর খালের অবস্থা অনেক ভালো ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সেটি আবার আগের অবস্থায় চলে এসেছে।
ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, গত বছর খালটির প্রায় দুই কিলোমিটার অংশ খনন করা হয়েছিল। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা।
শনিবার খালটি ঘুরে দেখা গেছে, খালের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কাটাসুর কাঁচাবাজারের পাশে। এই অংশে খালের ওপর তৈরি সরু কালভার্টগুলোর নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় না বললেই চলে। কালভার্টের চারপাশজুড়ে জমেছে বারোয়ারি বর্জ্য। এ ছাড়া খালের বিভিন্ন অংশে পয়োনিষ্কাশনের নালা, অবৈধ পানি ও গ্যাসের লাইন দেখা গেছে।
খালটির এই অবস্থার জন্য স্থানীয় লোকজন সিটি করপোরেশন ও ওয়াসা—দুই সংস্থাকেই দুষছেন। তাঁরা বলেন, খালের দুই পাশে নিম্ন আয়ের মানুষের বাস। তাঁরা গৃহস্থালির সব বর্জ্যই খালে ফেলেন। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে এসব বাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহের তেমন তৎপরতা নেই। দুই পাশের বাসিন্দারা খাল রক্ষায় সচেতনও নয়। অন্যদিকে খাল রক্ষার দায়িত্বে থাকা ওয়াসারও নিয়মিত কোনো তদারকি নেই। পাশাপাশি এই এলাকায় ওয়াসার পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা না থাকায় আশপাশের বাড়ি থেকে পয়োবর্জ্য ফেলা হয় খালে। এতে খালের পানি নোংরা হয়ে যায়। পানি থেকে আসে কটু গন্ধ।
খালটি ঘুরে দেখা গেছে, খালটির দুই পাড়ের বড় অংশই বাঁধাই করা। খাল রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন যাতে খালের পাড় ধরে হাঁটতে পারে, সে জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে খালটির পাড় বাঁধাই করেছিল ওয়াসা।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, খালের নোংরা পানি, দুর্গন্ধ, দৃষ্টিকটুভাবে পড়ে থাকা আবর্জনা, দৃশ্যমান পয়োনিষ্কাশনের নালার সংযোগ—এসব কারণে সাধারণ মানুষ পাড় দিয়ে হাঁটতে আগ্রহ দেখায় না। স্থানীয় বাসিন্দা মেফতাহুল জান্নাত বলেন, খালের যে অবস্থা, তাতে কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে পাড় ধরে হাঁটা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, কয়েক মাস আগে একবার তিনি খালের পাড়ে হাঁটতে গিয়েছিলেন। কিন্তু নোংরা পরিবেশ দেখে দ্রুত সেখান থেকে চলে আসেন। তিনি বলেন, খালটি আবর্জনামুক্ত ও খালের সঙ্গে যুক্ত পয়োনালাগুলো বন্ধ করে দিলে খালের পানি ও পরিবেশের উন্নতি হতো। তখন বর্ষায় জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির পাশাপাশি খালের পাড়ে হাঁটাচলারও সুযোগ পেত স্থানীয় লোকজন।
জানতে চাইলে ওয়াসার পরিচালক (কারিগরি) এ কে এম সহিদ উদ্দিন বলেন, ‘কঠিন বর্জ্য তো খালে ফেলার কথা নয়। এটি দেখার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। আমরা সিটি করপোরেশনকে বারবার বলেছি, খালে যাতে বর্জ্য ফেলা না হয়, তা নিশ্চিত করতে। খাল খননের পর বছরজুড়ে সেখানে কঠিন বর্জ্য ফেললে পরের বছর আর খননকাজে আসার কথা নয়।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা (অঞ্চল-৫) মফিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘খালে ময়লা না ফেলতে আমরা সব সময় নিরুৎসাহিত করি। ময়লা ফেলার জন্য আমাদের এসটিএস, কনটেইনার আছে। তারপরও অনেকেই খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলে। খালে ফেলা ময়লা ওয়াসাকেই সরাতে হবে। কারণ, খালের মালিক ওয়াসা। এটির রক্ষণাবেক্ষণ ও যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব ওয়াসার।’
এমন অবস্থায় কীভাবে খাল রক্ষা করা যায়, জানতে চাইলে নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, খাল রক্ষা ও খালের পরিবেশ উন্নয়নে স্থানীয় লোকজনকে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, যাতে তারা খালে কাউকে ময়লা ফেলতে না দেয় এবং নিজেরাও ময়লা না ফেলে। প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক সংগঠন গড়তে হবে, যারা খাল দেখভাল করবে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে এ দায়িত্ব নিতে হবে। না হলে বছরে একবার খনন করে খাল রক্ষা করা যাবে না।
No comments