নয় বছর বয়সে কলেজছাত্র খাইরান
মাত্র
৯ বছর বয়সে কলেজে ভর্তি হয়ে মার্কিন মুলুকে তো বটেই, বিশ্বে এক চমক সৃষ্টি
করেছে খাইরান আমান কাজী। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সে ভর্তি হয়েছে কলেজে।
তার মা জুলিয়া কাজী। বাবা মুস্তাহিদ কাজী। খাইরান আমারন কাজীর কাছে স্কুলের
পড়াশুনাই যথেষ্ট ছিল না। এক সেমিস্টারের পড়া সে দুই সপ্তাহেই শেষ করে
ফেলতো। শিক্ষকরা ব্ল্যাকবোর্ডে অঙ্ক লেখার সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করে ফেলে সে।
কাজের মধ্যেই ব্যস্ত থাকতে চায় খাইরান।
নয়বছর বয়সে সে পদার্থ বিদ্যার সূত্র অনুসরণ করে গবেষণা করে, অর্থনীতির সূত্র জেনে বাজেট পরিকল্পনা করে। এই প্রখর মেধাবী শিশুকে অগত্যা ওর বাবা-মা কলেজে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। খাইরান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন আমেরিকান।
নিউ ইয়র্ক সিটিতে বাংলা ভাষায় যারা পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করেছিলেন তাদের একজন পথিকৃৎ গজনফর আলী। তার মেয়ে জুলিয়া কাজী, তার একমাত্র সন্তান। দুইবছর বয়সে বাংলাদেশের মৌলভীবাজার থেকে আমেরিকা গিয়ে প্রথমে নিউ ইয়র্ক শহরেই থাকতেন জুলিয়া। এস্টোরিয়া-জ্যামাইকায় বড় হয়েছেন। পরে মুস্তাহিদ কাজীকে বিয়ে করে সানফ্রান্সিসকো বে’তে থিতু হন। ২০০৯ সালের ২৭শে জানুয়ারি জন্ম হয় খাইরানের। জাপানি মিথলোজি থেকে ছেলের নাম রাখা হয় খাইরান। যার মানে সাগরের নিচে এক দরজা থেকে আরেক দরজা খুলে যাওয়া।
সেই খাইরান ফোর্থ গ্রেডে উঠতেই কলেজে পড়ার সুযোগ পেলো। এখনও সেখানে গণিত ও রসায়ন এই দুই বিষয়ে এসোসিয়েট করছে। তবে ওর শিশুসুলভ চপলতা যাতে হারিয়ে না যায়, সেজন্য স্কুলের পড়াও অব্যাহত রাখা হয়েছে। দিনে হিলিয়স গিফটেড স্কুল, রাতে লাস পসিটাস কলেজ। তারপর সপ্তাহান্তে পিয়ানো বাদন, মান্দারিন ভাষা শেখা, কারাতের ব্ল্যাক বেল্ট স্কুল আছে। নয়বছর বয়সে সে বারোটি কম্পিউটার কোডিং ল্যাংগুয়েজ শিখে ফেলেছে।
খাইরান ভালো বাংলা বলতে পারে। তার প্রিয় টিভি প্রোগ্রাম হলো ‘ইয়াং চিলড্রেন’। প্রিয় রং নীল। প্রিয় অভিনেতা হ্যারি পটার সিরিজের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যিনি, সেই ড্যানিয়েল র্যাডক্লিফ। প্রিয় খেলা- বাস্কেটবল।
বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষ নিয়ে ভাবে খাইরান। বিশেষত রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশা ওর মনকে আবেগ আক্রান্ত করে। ওর মা জুলিয়া কাজী বলেছেন, তার ছেলের আবেগ খুব বেশি। ওর যখন আড়াই বছর বয়স তখন মিশরে ‘আরব বসন্ত’ আন্দোলন চলছে। অতটুকু ছেলে সেই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেল। এবং ওর প্রাইমারি ডাক্তারকে এই বিষয় নিয়ে ওর ভাবনার কথা বললো। যে বয়সে বেশির ভাগ শিশু একটা বাক্য সম্পূর্ণ বলতে পারে না, তখন সে অন্য দেশের আন্দোলন নিয়ে নিজের চিন্তাকে প্রকাশ করছে, ভাবা যায়! ডাক্তার সেদিন আমাকে আর ওর বাবাকে ডেকে বললেন, দেখুন, ‘আপনার ছেলে অতি মেধাবী। এমন শিশু দশ লাখে একজন পাওয়া যায়। আপনাদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। কারণ ওর মতো প্রখর মেধাসম্পন্ন মানুষকে গাইড করা সহজ নয়।’
জুলিয়া কাজী পেশায় ওয়াল স্ট্রিট এক্সিকিউটিভ। স্বামী মুস্তাহিদ কাজী বাংলাদেশের মানিকগঞ্জের ছেলে। উনি একজন ইঞ্জিনিয়ার। দু’জনের আয় যথেষ্ট ভালো। আর যদি সেটা ভালো না হতো, তাহলে কিভাবে এই কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেন, জানেন না তারা। আমেরিকায় অটিস্টিক, মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের বলে ‘স্পেশাল’। তাদের জন্য প্রচুর সুযোগ-সুবিধা দেয় সরকার। এক অর্থে খাইরান কাজীও এক ধরনের ‘স্পেশাল’। কারণ সে অতি মেধাবী। কিন্তু তার মেধা কিভাবে বিকশিত হবে এইজন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্য পাওয়া যায় না।
খাইরান কাজীকে আড়াই বছর বয়সে নানা ধরনের পরীক্ষা করে বোঝা গেল, ওর যে শুধু ‘আই কিউ’ বেশি তা নয়, ওর ‘ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স’ও খুব বেশি। যে কোনো ঘটনায় খুব বেশি আক্রান্ত হয় সে। সেই অর্থে সামাজিক নয়। কারো সঙ্গে কথা বলতে বা চোখে চোখ রাখতে পছন্দ করে না।
ডাক্তারের পরামর্শে খাইরানকে আড়াই বছর বয়সেই স্কুলে ভর্তি করান ওর বাবা-মা। টিচারদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হতো ওকে। শিক্ষকরা বোর্ডে লেখার সঙ্গে সঙ্গে সে বুঝে ফেলে। স্কুল ওর কাছে ‘বোরিং’ লাগতে লাগল। জুলিয়া কাজী জানালেন, ‘ওর মতো শিশুদের মস্তিষ্ক সারাক্ষণ চলতে থাকে। এক টপিক থেকে আরেক টপিকে চলে যায়। তাই অনেক সময় ওকে থেরাপি দেয়া হতো স্কুলে। কিংবা জিমে নিয়ে গিয়ে দৌড়াতে বলা হতো। থার্ড গ্রেড শেষ হওয়ার পরে ওকে এখন যে স্কুলটাতে দিয়েছি সেটা গিফটেড স্কুল। ওখানে বেশির ভাগ মেধাবী শিশুই পড়ে। আর রাতে তো কলেজ আছেই।
খাইরানের প্রিয় বিষয় হলো গণিত। সে ভবিষ্যতে দিনে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সে কাজ করতে চায়। আর রাতে কলেজে পড়ানোর ইচ্ছা রাখে। আর অবশ্যই সে গণিতের শিক্ষক হতে চায়।
নয়বছর বয়সে সে পদার্থ বিদ্যার সূত্র অনুসরণ করে গবেষণা করে, অর্থনীতির সূত্র জেনে বাজেট পরিকল্পনা করে। এই প্রখর মেধাবী শিশুকে অগত্যা ওর বাবা-মা কলেজে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। খাইরান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন আমেরিকান।
নিউ ইয়র্ক সিটিতে বাংলা ভাষায় যারা পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করেছিলেন তাদের একজন পথিকৃৎ গজনফর আলী। তার মেয়ে জুলিয়া কাজী, তার একমাত্র সন্তান। দুইবছর বয়সে বাংলাদেশের মৌলভীবাজার থেকে আমেরিকা গিয়ে প্রথমে নিউ ইয়র্ক শহরেই থাকতেন জুলিয়া। এস্টোরিয়া-জ্যামাইকায় বড় হয়েছেন। পরে মুস্তাহিদ কাজীকে বিয়ে করে সানফ্রান্সিসকো বে’তে থিতু হন। ২০০৯ সালের ২৭শে জানুয়ারি জন্ম হয় খাইরানের। জাপানি মিথলোজি থেকে ছেলের নাম রাখা হয় খাইরান। যার মানে সাগরের নিচে এক দরজা থেকে আরেক দরজা খুলে যাওয়া।
সেই খাইরান ফোর্থ গ্রেডে উঠতেই কলেজে পড়ার সুযোগ পেলো। এখনও সেখানে গণিত ও রসায়ন এই দুই বিষয়ে এসোসিয়েট করছে। তবে ওর শিশুসুলভ চপলতা যাতে হারিয়ে না যায়, সেজন্য স্কুলের পড়াও অব্যাহত রাখা হয়েছে। দিনে হিলিয়স গিফটেড স্কুল, রাতে লাস পসিটাস কলেজ। তারপর সপ্তাহান্তে পিয়ানো বাদন, মান্দারিন ভাষা শেখা, কারাতের ব্ল্যাক বেল্ট স্কুল আছে। নয়বছর বয়সে সে বারোটি কম্পিউটার কোডিং ল্যাংগুয়েজ শিখে ফেলেছে।
খাইরান ভালো বাংলা বলতে পারে। তার প্রিয় টিভি প্রোগ্রাম হলো ‘ইয়াং চিলড্রেন’। প্রিয় রং নীল। প্রিয় অভিনেতা হ্যারি পটার সিরিজের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন যিনি, সেই ড্যানিয়েল র্যাডক্লিফ। প্রিয় খেলা- বাস্কেটবল।
বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষ নিয়ে ভাবে খাইরান। বিশেষত রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশা ওর মনকে আবেগ আক্রান্ত করে। ওর মা জুলিয়া কাজী বলেছেন, তার ছেলের আবেগ খুব বেশি। ওর যখন আড়াই বছর বয়স তখন মিশরে ‘আরব বসন্ত’ আন্দোলন চলছে। অতটুকু ছেলে সেই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেল। এবং ওর প্রাইমারি ডাক্তারকে এই বিষয় নিয়ে ওর ভাবনার কথা বললো। যে বয়সে বেশির ভাগ শিশু একটা বাক্য সম্পূর্ণ বলতে পারে না, তখন সে অন্য দেশের আন্দোলন নিয়ে নিজের চিন্তাকে প্রকাশ করছে, ভাবা যায়! ডাক্তার সেদিন আমাকে আর ওর বাবাকে ডেকে বললেন, দেখুন, ‘আপনার ছেলে অতি মেধাবী। এমন শিশু দশ লাখে একজন পাওয়া যায়। আপনাদের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। কারণ ওর মতো প্রখর মেধাসম্পন্ন মানুষকে গাইড করা সহজ নয়।’
জুলিয়া কাজী পেশায় ওয়াল স্ট্রিট এক্সিকিউটিভ। স্বামী মুস্তাহিদ কাজী বাংলাদেশের মানিকগঞ্জের ছেলে। উনি একজন ইঞ্জিনিয়ার। দু’জনের আয় যথেষ্ট ভালো। আর যদি সেটা ভালো না হতো, তাহলে কিভাবে এই কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেন, জানেন না তারা। আমেরিকায় অটিস্টিক, মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের বলে ‘স্পেশাল’। তাদের জন্য প্রচুর সুযোগ-সুবিধা দেয় সরকার। এক অর্থে খাইরান কাজীও এক ধরনের ‘স্পেশাল’। কারণ সে অতি মেধাবী। কিন্তু তার মেধা কিভাবে বিকশিত হবে এইজন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাহায্য পাওয়া যায় না।
খাইরান কাজীকে আড়াই বছর বয়সে নানা ধরনের পরীক্ষা করে বোঝা গেল, ওর যে শুধু ‘আই কিউ’ বেশি তা নয়, ওর ‘ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স’ও খুব বেশি। যে কোনো ঘটনায় খুব বেশি আক্রান্ত হয় সে। সেই অর্থে সামাজিক নয়। কারো সঙ্গে কথা বলতে বা চোখে চোখ রাখতে পছন্দ করে না।
ডাক্তারের পরামর্শে খাইরানকে আড়াই বছর বয়সেই স্কুলে ভর্তি করান ওর বাবা-মা। টিচারদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হতো ওকে। শিক্ষকরা বোর্ডে লেখার সঙ্গে সঙ্গে সে বুঝে ফেলে। স্কুল ওর কাছে ‘বোরিং’ লাগতে লাগল। জুলিয়া কাজী জানালেন, ‘ওর মতো শিশুদের মস্তিষ্ক সারাক্ষণ চলতে থাকে। এক টপিক থেকে আরেক টপিকে চলে যায়। তাই অনেক সময় ওকে থেরাপি দেয়া হতো স্কুলে। কিংবা জিমে নিয়ে গিয়ে দৌড়াতে বলা হতো। থার্ড গ্রেড শেষ হওয়ার পরে ওকে এখন যে স্কুলটাতে দিয়েছি সেটা গিফটেড স্কুল। ওখানে বেশির ভাগ মেধাবী শিশুই পড়ে। আর রাতে তো কলেজ আছেই।
খাইরানের প্রিয় বিষয় হলো গণিত। সে ভবিষ্যতে দিনে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সে কাজ করতে চায়। আর রাতে কলেজে পড়ানোর ইচ্ছা রাখে। আর অবশ্যই সে গণিতের শিক্ষক হতে চায়।
No comments