মসজিদ নির্মাণে বরাদ্দ বাড়লেও বদলাচ্ছে না ইমামদের ভাগ্য by সালমান তারেক শাকিল
ধর্ম
খাতে গত অর্থবছরের চেয়ে দ্বিগুণ বরাদ্দ বাড়লেও ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ভাগ্যে
কোনও পরিবর্তন আসছে না। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ধর্ম
মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ ১১৬৮ কোটি টাকা হলেও তার বেশিরভাগই ব্যয় হবে অবকাঠামো
নির্মাণে। গত বছর একনেকে অনুমোদিত ৫৬০টি মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
নির্মাণেই বাজেটের বেশিরভাগ টাকা বরাদ্দ ছিল। সারাদেশের এসব মসজিদ ও অন্য
অবকাঠামো নির্মাণে খরচ হবে ৯ হাজার ৬২ কোটি টাকা। এরমধ্যে ৮ হাজার ১৭০ কোটি
টাকাই দেবে সৌদি সরকার। এত এত মসজিদ নির্মাণ হলেও ইমাম-মুয়াজ্জিনদের
বেতন-ভাতার জন্য তেমন কোনও বরাদ্দ নেই।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণে অনুদান এখনও ছাড় দেয়নি সৌদি আরব সরকার। আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ দেশটির একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এলে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একেকটি মসজিদের জন্য কমবেশি ১৫ কোটি খরচ হবে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ধর্ম খাতে ১১৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা আগের বছরে ছিল ৯৭৫ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বাজেট বক্তব্যে বলেছেন, ‘ধর্ম ও ধর্মীয় মূল্যবোধের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে ও প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন, মসজিদ পাঠাগার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আনিছুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য ট্রাস্টের অধীনে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। যে পরিমাণ বাড়ানো দরকার, সে পরিমাণ বাড়ানো হয়নি। মূলত প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থ বরাদ্দ বেশি হওয়ার কারণ— গত অর্থবছরের (২০১৭-১৮) বাজেটের তুলনায় এবার বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে এবং তা মূলত বিভিন্ন প্রজেক্টের কারণে। এটা ইসলামিক ফাউন্ডেশন ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রেও বাড়বে।’
আনিছুর রহমান আরও বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ মডেল মসজিদ নির্মাণ। এই মসজিদগুলো নির্মাণে প্রথমে সৌদি সরকারের টাকা দেওয়ার কথা ছিল। তারা নিজেরাই এটা বলেছিল। কিন্তু এখনও তাদের অনুদান এসে পৌঁছেনি। এ কারণে আমরা নিজেদের বাজেট থেকেই শুরু করেছি। গত দুই মাস হলো প্রধানমন্ত্রী এটা উদ্বোধন করেছেন। পরে এটা অ্যাডজাস্ট করে নেওয়া হবে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘এ বছরের মধ্যে ১০০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ শেষ হবে। বাকিগুলো পরবর্তী বছরে শুরু হবে। এটাই টার্গেট। এ কারণেই এবারের বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের।’
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, বাজেটে উত্তরোত্তর বরাদ্দ বাড়লেও এতে করে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জীবনে গুণগত কোনও পরিবর্তন আসছে না। বরং প্রস্তাবিত বাজেটে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের কল্যাণ ট্রাস্টে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করা হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় তা করেনি।
সরকারিভাবে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন না দেওয়া হলেও তাদের জন্য ট্রাস্ট রয়েছে। এছাড়া, তাদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে ২০০১ সালের ১ জুলাই সংসদে আইন পাস করা হয়। এরপর হঠন করা হয় ‘ইমাম ও মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট’। ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের কল্যাণে সরকার একটি ট্রাস্ট ফান্ডও গঠন করেছে। ফান্ডের লভ্যাংশ থেকে গত বছর পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ হিসেবে ২১৭০ জনকে ৩৫,১৭,৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে।
সোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইমামরা হচ্ছেন জাতির শিক্ষক। তাদের জীবন-মান উন্নয়নে অবশ্যই সরকারের অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার।’
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্র জানিয়েছে, সারাদেশে চারটি মসজিদ সরকারি বেতন-ভাতা ও সুবিধা ভোগ করে। এগুলো হচ্ছে, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ, আন্দরকিল্লা মসজিদ ও রাজশাহীর হেতেম খাঁ মসজিদ। এছাড়া বঙ্গভবন জামে মসজিদ, গণভবন জামে মসজিদ ও সচিবালয়ের মসজিদটিও কিছু সরকারি সুবিধা পায়। সরকারি মসজিদগুলোয় সুবিধা নিশ্চিত হলেও সারাদেশের মসজিদগুলোয় সরকারি নীতিমালাটি উপেক্ষিত। পালনের বাধ্যবাধকতা না থাকায় কোনও মসজিদেই এ নিয়ম মানা হয় না।
জানতে চাইলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আনিছুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইমাম-মুয়াজ্জিন ট্রাস্টের অধীনে কয়েক কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। তাদের জন্য আসলে যেভাবে করা দরকার, সেভাবে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সাড়া পাচ্ছি না। আমি নিজেও বলেছি, ইমাম-মুয়াজ্জিনরা অত্যন্ত নিগৃহীত। তাদের তো এখনও বেতন দেওয়া হয় না। কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে তাদের অনুদান হিসেবে তাদের সহায়তা করা হয়।’
গত ২০১৫-১৬ অর্থবছর পর্যন্ত ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টে ৩০ কোটি ৪০ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে মুঞ্জুরি দিয়েছে সরকার। ইমাম-মুয়াজ্জিনরা বার্ধক্যজনিত কারণে অক্ষম, আর্থিক অনটনে পড়লে অফেরতযোগ্যভাবে তাদের সহায়তা দেওয়া হয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণে অনুদান এখনও ছাড় দেয়নি সৌদি আরব সরকার। আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ দেশটির একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এলে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে বলে জানান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একেকটি মসজিদের জন্য কমবেশি ১৫ কোটি খরচ হবে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ধর্ম খাতে ১১৬৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা আগের বছরে ছিল ৯৭৫ কোটি টাকা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বাজেট বক্তব্যে বলেছেন, ‘ধর্ম ও ধর্মীয় মূল্যবোধের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে ও প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন, মসজিদ পাঠাগার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আনিছুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য ট্রাস্টের অধীনে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। যে পরিমাণ বাড়ানো দরকার, সে পরিমাণ বাড়ানো হয়নি। মূলত প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থ বরাদ্দ বেশি হওয়ার কারণ— গত অর্থবছরের (২০১৭-১৮) বাজেটের তুলনায় এবার বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে এবং তা মূলত বিভিন্ন প্রজেক্টের কারণে। এটা ইসলামিক ফাউন্ডেশন ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রেও বাড়বে।’
আনিছুর রহমান আরও বলেন, ‘চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ বেশি হওয়ার আরেকটি কারণ মডেল মসজিদ নির্মাণ। এই মসজিদগুলো নির্মাণে প্রথমে সৌদি সরকারের টাকা দেওয়ার কথা ছিল। তারা নিজেরাই এটা বলেছিল। কিন্তু এখনও তাদের অনুদান এসে পৌঁছেনি। এ কারণে আমরা নিজেদের বাজেট থেকেই শুরু করেছি। গত দুই মাস হলো প্রধানমন্ত্রী এটা উদ্বোধন করেছেন। পরে এটা অ্যাডজাস্ট করে নেওয়া হবে।’
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘এ বছরের মধ্যে ১০০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ শেষ হবে। বাকিগুলো পরবর্তী বছরে শুরু হবে। এটাই টার্গেট। এ কারণেই এবারের বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের।’
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, বাজেটে উত্তরোত্তর বরাদ্দ বাড়লেও এতে করে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জীবনে গুণগত কোনও পরিবর্তন আসছে না। বরং প্রস্তাবিত বাজেটে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের কল্যাণ ট্রাস্টে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করা হলেও অর্থ মন্ত্রণালয় তা করেনি।
সরকারিভাবে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন না দেওয়া হলেও তাদের জন্য ট্রাস্ট রয়েছে। এছাড়া, তাদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে ২০০১ সালের ১ জুলাই সংসদে আইন পাস করা হয়। এরপর হঠন করা হয় ‘ইমাম ও মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট’। ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের কল্যাণে সরকার একটি ট্রাস্ট ফান্ডও গঠন করেছে। ফান্ডের লভ্যাংশ থেকে গত বছর পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ হিসেবে ২১৭০ জনকে ৩৫,১৭,৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে।
সোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইমামরা হচ্ছেন জাতির শিক্ষক। তাদের জীবন-মান উন্নয়নে অবশ্যই সরকারের অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া দরকার।’
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্র জানিয়েছে, সারাদেশে চারটি মসজিদ সরকারি বেতন-ভাতা ও সুবিধা ভোগ করে। এগুলো হচ্ছে, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ, আন্দরকিল্লা মসজিদ ও রাজশাহীর হেতেম খাঁ মসজিদ। এছাড়া বঙ্গভবন জামে মসজিদ, গণভবন জামে মসজিদ ও সচিবালয়ের মসজিদটিও কিছু সরকারি সুবিধা পায়। সরকারি মসজিদগুলোয় সুবিধা নিশ্চিত হলেও সারাদেশের মসজিদগুলোয় সরকারি নীতিমালাটি উপেক্ষিত। পালনের বাধ্যবাধকতা না থাকায় কোনও মসজিদেই এ নিয়ম মানা হয় না।
জানতে চাইলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আনিছুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইমাম-মুয়াজ্জিন ট্রাস্টের অধীনে কয়েক কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। তাদের জন্য আসলে যেভাবে করা দরকার, সেভাবে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সাড়া পাচ্ছি না। আমি নিজেও বলেছি, ইমাম-মুয়াজ্জিনরা অত্যন্ত নিগৃহীত। তাদের তো এখনও বেতন দেওয়া হয় না। কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে তাদের অনুদান হিসেবে তাদের সহায়তা করা হয়।’
গত ২০১৫-১৬ অর্থবছর পর্যন্ত ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টে ৩০ কোটি ৪০ লাখ টাকা অনুদান হিসেবে মুঞ্জুরি দিয়েছে সরকার। ইমাম-মুয়াজ্জিনরা বার্ধক্যজনিত কারণে অক্ষম, আর্থিক অনটনে পড়লে অফেরতযোগ্যভাবে তাদের সহায়তা দেওয়া হয়।
No comments