দরিদ্রদের ভাতার ৩৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলো ব্যাংক কর্মকর্তারা by মাহামুদুন নবী
মহম্মদপুর
নাগড়া কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের
সাহায্যের নাম করে মাগুরায় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায়
বরাদ্দকৃত প্রায় ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের নাগড়া বাজারের একমাত্র ব্যাংকটি হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। যেখানে বাবুখালি এবং পার্শ্ববর্তী দিঘা ইউনিয়নের অন্তত ২ হাজার ৩ শত অসহায় বয়স্ক, বিধবা এবং প্রতিবন্ধী মানুষের একাউন্ট রয়েছে। যাদের হিসাবের বিপরীতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা হারে মাসোহারা বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে। যেটি প্রতি তিন মাস পর বয়স্ক ও বিধবা মহিলারা ১৫০০ টাকা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা ২১০০ হারে উত্তোলনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। কিন্তু নানা চাতুরির মাধ্যমে এই দুটি ইউনিয়নের নিবন্ধিত অসহায় বয়স্ক, বিধবা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অনুকূলে চলতি অর্থ বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসের ভাতা ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একেবারেই গায়েব করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এসব ভাতা থেকে বঞ্চিত ভাতাভোগীদের অভিযোগ, গত বছরের এপ্রিল-জুন মেয়াদের ভাতার অর্থ সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ৪ঠা জুলাই/১৭ তারিখে বরাদ্দ দেওয়া হয়। যেটি ভাতাভোগীদের মধ্যে বণ্টনে প্রায় ৩ মাস সময় লাগিয়ে দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এদিকে পরবর্তী জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের টাকা ছয়মাস পার হয়ে যাওয়ার পরও না পাওয়ায় ভাতাভোগি অসহায় মানুষেরা প্রায় প্রতিদিনই ব্যাংকে গিয়ে ধরনা দেন। কিন্তু জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের টাকা তাদের না দিয়ে সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে তাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছে। ওই টাকার আশা না করে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে বলেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। অথচ ১৯ নভেম্বর/১৭ তারিখে জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের টাকা ব্যাংকের অনুকূলে সমাজসেবা অধিদপ্তর বরাদ্দ দিলেও টাকা আসেনি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলে গেছে এমন কথা বলে পুরো টাকাটাই ব্যাংক কর্মকর্তারা তুলে আত্মসাৎ করেছেন।
এদিকে এ বছরের ৬ই মার্চ অক্টোবর-ডিসেম্বর/১৭ মেয়াদের অর্থ বরাদ্দ পেয়ে টাকা বণ্টনের সময় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ভাতা পরিশোধ বইয়ের প্রথম কলামে একই দিনে অপরিশোধিত জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের তিন মাসের হিসাবটিও জুড়ে দেয়া হয়। সেখানে দুটি মেয়াদ উল্লেখ করা হলেও প্রত্যেকের হাতে মাত্র অক্টোবর-ডিসেম্বর মেয়াদের টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয় বলে জানান ভুক্তভোগীরা ।
বাবুখালি ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের বয়স্ক ভাতাভোগী প্রফুল কুমার কির্তনীয়া, একই এলাকার বিধবা ভাতাভোগি কুটিবিবি, কুলি পাড়ার রসমালা বিশ্বাস, চর মাধবপুর গ্রামের মাঝুবিবি, প্রতিবন্ধী ভাতাভোগি রজব আলিসহ আরো অনেকের অভিযোগ, নাগড়া কৃষি ব্যাংকের সেকেন্ড অফিসার প্রণব সাহা, ক্যাশিয়ার আইয়ুব খান, সুবোধ বিশ্বাসসহ এই ব্যাংকের অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারি যোগসাজশে তাদের নামে বরাদ্দকৃত জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আর এই কাজটির বৈধতা দিয়েছেন ব্যাংক ম্যানেজার রতন কুমার সরকার নিজেই।
বয়স্ক ভাতাভোগী প্রফুল্ল কির্তনীয়া বলেন, টাকা নেওয়ার সময় ভাতা বইতে আমাদের টিপসই নেয়া হয়। কিন্তু এ বছরের ১৯শে এপ্রিল তারিখে ভাতা দেওয়ার সময় সেকেন্ড অফিসারের কথা মতো ব্যাংকের কর্মচারী সুবোধ এবং আরো একজন আমাদের কাছ থেকে ভাতার বই নিয়ে নিজেরাই সেখানে দুটি ঘরে টিপসই দিয়েছে। আমার বইতে আরেক জন টিপসই দেবে কেন?
ভাতাভোগী রসমালা বিশ্বাস বলেন, ভাতার কথা জানতি চাইছি বলে ব্যাংকের প্রণব বাবু আমার মাথায় চড় মারতে চলে আসেন। একটি কিস্তির ২১০০ টাকা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রতিবন্ধী রজব আলি। তিনি বলেন, আমরা কষ্টে থাহি। আর আমাগের টাহা কি হরে রোহিঙ্গাদের দিয়ে দেয় বুঝে পাই না। অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, নাগড়া, মহম্মদপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার রতন কুমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রত্যেককেই টাকা দেওয়া হয়েছে। কেউ না পেলে লিখিত অভিযোগ দিলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাগুরা জেলা প্রশাসক মো. আতিকুর রহমান অসহায় ব্যক্তিদের টাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নামে আত্মসাতের খবরে বিস্ময় প্রকাশ করে পুরো বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে তিনি জানান।
মহম্মদপুর উপজেলার দীঘা ইউনিয়নের নাগড়া বাজারের একমাত্র ব্যাংকটি হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। যেখানে বাবুখালি এবং পার্শ্ববর্তী দিঘা ইউনিয়নের অন্তত ২ হাজার ৩ শত অসহায় বয়স্ক, বিধবা এবং প্রতিবন্ধী মানুষের একাউন্ট রয়েছে। যাদের হিসাবের বিপরীতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা হারে মাসোহারা বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে। যেটি প্রতি তিন মাস পর বয়স্ক ও বিধবা মহিলারা ১৫০০ টাকা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা ২১০০ হারে উত্তোলনের সুযোগ পেয়ে থাকেন। কিন্তু নানা চাতুরির মাধ্যমে এই দুটি ইউনিয়নের নিবন্ধিত অসহায় বয়স্ক, বিধবা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অনুকূলে চলতি অর্থ বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর এই তিন মাসের ভাতা ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একেবারেই গায়েব করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এসব ভাতা থেকে বঞ্চিত ভাতাভোগীদের অভিযোগ, গত বছরের এপ্রিল-জুন মেয়াদের ভাতার অর্থ সমাজসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ৪ঠা জুলাই/১৭ তারিখে বরাদ্দ দেওয়া হয়। যেটি ভাতাভোগীদের মধ্যে বণ্টনে প্রায় ৩ মাস সময় লাগিয়ে দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এদিকে পরবর্তী জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের টাকা ছয়মাস পার হয়ে যাওয়ার পরও না পাওয়ায় ভাতাভোগি অসহায় মানুষেরা প্রায় প্রতিদিনই ব্যাংকে গিয়ে ধরনা দেন। কিন্তু জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের টাকা তাদের না দিয়ে সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে তাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছে। ওই টাকার আশা না করে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে বলেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। অথচ ১৯ নভেম্বর/১৭ তারিখে জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের টাকা ব্যাংকের অনুকূলে সমাজসেবা অধিদপ্তর বরাদ্দ দিলেও টাকা আসেনি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলে গেছে এমন কথা বলে পুরো টাকাটাই ব্যাংক কর্মকর্তারা তুলে আত্মসাৎ করেছেন।
এদিকে এ বছরের ৬ই মার্চ অক্টোবর-ডিসেম্বর/১৭ মেয়াদের অর্থ বরাদ্দ পেয়ে টাকা বণ্টনের সময় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ভাতা পরিশোধ বইয়ের প্রথম কলামে একই দিনে অপরিশোধিত জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের তিন মাসের হিসাবটিও জুড়ে দেয়া হয়। সেখানে দুটি মেয়াদ উল্লেখ করা হলেও প্রত্যেকের হাতে মাত্র অক্টোবর-ডিসেম্বর মেয়াদের টাকা বুঝিয়ে দেয়া হয় বলে জানান ভুক্তভোগীরা ।
বাবুখালি ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের বয়স্ক ভাতাভোগী প্রফুল কুমার কির্তনীয়া, একই এলাকার বিধবা ভাতাভোগি কুটিবিবি, কুলি পাড়ার রসমালা বিশ্বাস, চর মাধবপুর গ্রামের মাঝুবিবি, প্রতিবন্ধী ভাতাভোগি রজব আলিসহ আরো অনেকের অভিযোগ, নাগড়া কৃষি ব্যাংকের সেকেন্ড অফিসার প্রণব সাহা, ক্যাশিয়ার আইয়ুব খান, সুবোধ বিশ্বাসসহ এই ব্যাংকের অধিকাংশ কর্মকর্তা কর্মচারি যোগসাজশে তাদের নামে বরাদ্দকৃত জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আর এই কাজটির বৈধতা দিয়েছেন ব্যাংক ম্যানেজার রতন কুমার সরকার নিজেই।
বয়স্ক ভাতাভোগী প্রফুল্ল কির্তনীয়া বলেন, টাকা নেওয়ার সময় ভাতা বইতে আমাদের টিপসই নেয়া হয়। কিন্তু এ বছরের ১৯শে এপ্রিল তারিখে ভাতা দেওয়ার সময় সেকেন্ড অফিসারের কথা মতো ব্যাংকের কর্মচারী সুবোধ এবং আরো একজন আমাদের কাছ থেকে ভাতার বই নিয়ে নিজেরাই সেখানে দুটি ঘরে টিপসই দিয়েছে। আমার বইতে আরেক জন টিপসই দেবে কেন?
ভাতাভোগী রসমালা বিশ্বাস বলেন, ভাতার কথা জানতি চাইছি বলে ব্যাংকের প্রণব বাবু আমার মাথায় চড় মারতে চলে আসেন। একটি কিস্তির ২১০০ টাকা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রতিবন্ধী রজব আলি। তিনি বলেন, আমরা কষ্টে থাহি। আর আমাগের টাহা কি হরে রোহিঙ্গাদের দিয়ে দেয় বুঝে পাই না। অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, নাগড়া, মহম্মদপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার রতন কুমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রত্যেককেই টাকা দেওয়া হয়েছে। কেউ না পেলে লিখিত অভিযোগ দিলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মাগুরা জেলা প্রশাসক মো. আতিকুর রহমান অসহায় ব্যক্তিদের টাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নামে আত্মসাতের খবরে বিস্ময় প্রকাশ করে পুরো বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন। একই সঙ্গে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে তিনি জানান।
No comments