এক সড়কে এত দুর্ভোগ by হাফিজ মুহাম্মদ
গতকাল
দুপুর। মিরপুর রোকেয়া সরণির কাজীপাড়া এলাকা। সড়কে পানি আটকে জলাবদ্ধতা
সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাই দেখা যাচ্ছে না। কোথায় গর্ত আর কোন অংশে ভালো।
ডুবন্ত রাস্তায় বড় যান চলাচলে বেগ না পেলেও সিএনজি, প্রাইভেটকার,
রিকশা-ভ্যান চলতে হিমশিম খাচ্ছে। এ সময় দেখা যায়, সড়কের মাঝে পানির মধ্যে
একটি সিএনজি গর্তে আটকে গেছে। পেছনে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজট। মেট্রোরেলের
কারণে রাস্তা সরু হয়ে এক লেন বাকি আছে যানবাহন চলাচলের জন্য। সেখানেও এ
অবস্থা। সিএনজিচালক পানির ভেতরে নেমে সেটি সরানোর জন্য বারবার চেষ্টা করেও
ব্যর্থ হচ্ছে। অপরদিকে পেছনের গাড়ি থেকে দেয়া হচ্ছে গালিগালাজ। কেন সিএনজি
চলছে না। শেষে আরেকটি সিএনজিরচালক এসে তার সিএনজিটিকে গর্ত থেকে তুলে পাশে
সরিয়ে নেয়। এ সিএনজি চালক বলেন, এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা আর নিজেকে বলি
দেয়া সমান। একবার ঢুকলে দুই-তিন ঘণ্টায় অন্যমাথায় বের হওয়া যায় না। আর
বৃষ্টি হলে তো মরণ। এমন গর্তে পড়ে অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। সিএনজির নানা
সমস্যা হয়। মেরামতের জন্য মালিককে ক্ষতিপূরণও দিতে হয়। গতকালের এ চিত্র যেন
সড়কের প্রতিদিনের রূপ।
রাজধানীর বেগম রোকেয়া সরণি। আগারগাঁও থেকে মিরপুর-১২ নম্বর সড়ক। এ সড়কের মাঝের অংশে বেরিকেড দিয়ে চলছে মেট্রোরেলের কাজ। তাও প্রায় দুই বছরের বেশি সময় পার হয়েছে। রাস্তা সংকুচিত হয়ে উভয় পাশে এক লেন পরিমাণ জায়গা রয়েছে যানবাহন চলাচলের জন্য। বর্তমানে যে অংশ দিয়ে যান চলছে সেখানেও রয়েছে খানাখন্দকে ভরা। পুরো রাস্তায় রয়েছে বড় বড় গর্ত। অনেকাংশে কার্পেট নষ্ট হয়ে গেছে। রাস্তা এবড়োথেবড়ো হওয়ায় মাঝেমাঝেই পানি জমে শুরু হয় জলাবদ্ধতা। বৃষ্টি মৌসুমের শুরুতেই জলাবদ্ধতা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে শুরু করেছে। ১০/২০ মিনিট বৃষ্টি হলেই রোকেয়া সরণির কাজীপাড়া অংশের উভয় পাশ ডুবে যায়। যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। আর এক-দুই ঘণ্টা বৃষ্টি হলে ট্রাফিক পুলিশই সড়কটি বন্ধ করে দেয়। তখন যান চলাচল করে বিকল্প সড়ক ধরে।
গতকাল সরজমিন দেখা যায়, মিরপুর ১২ নম্বর থেকে শুরু হয়ে ১০ নম্বর গোল চত্বর পর্যন্ত সড়কে অনেক স্থানে রয়েছে ছোট বড় গর্ত। এরমধ্যে মিরপুর সাড়ে ১১-এর রাস্তার একটা অংশ ভেঙে ড্রেনের সুয়ারেজের সঙ্গে দেবে গেছে। এখান থেকে কোনোভাবে একটি বাস চলতে পারছে। এ ছাড়াও কালসী, ইয়ানতাই রেস্টুরেন্ট, বেনারসি পল্লীর মাথায় রাস্তার অনেক জায়গায় রয়েছে গর্ত। ইনডোর পৃষ্ঠা ২ কলাম ২
স্টেডিয়ামের সামনে যেখান রাস্তা কেটে ওয়াসা পানির পাইপ বসিয়েছিল সেখানে যে কার্পেট দেয়া হয়েছে তা উঠে গেছে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে। এখানেও অনেকগুলো গর্ত দেখা যায়।মিরপুর-১০ গোলচত্বর থেকে কাজীপাড়া অংশ। বেগম রোকেয়া সরণির সবথেকে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয় এ অংশে।
মূলত এখান থেকেই যানজটের সূত্রপাত। সড়ক সরু হয়ে এক লেন ধরে গাড়ি চলাচল করে। আর বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতার কারণে সে এক লেনও যায় বন্ধ হয়ে। পানি সড়তে সময় লেগে যায় দুই-তিন দিন। সড়কে উপরে রয়েছে অনেক গর্ত। যেগুলো বৃষ্টির পানি জমলে আর দেখা যায় না। মাঝে ড্রেনের ঢাকনা ভেঙে রডগুলো উপরের দিকে বের হয়ে রয়েছে। তার উপর দিয়ে ছোট যানবাহন তো দূরে থাক বাস উঠতেই সাহস করছে না। তাদের টায়ার ফুটো হয়ে যায় কি না সে ভয় কাজ করছে। সড়কের এ অবস্থায় ছোট যানবাহনের চলাচল করা আরো কঠিন। মিরপুরের সেনপাড়া পর্বতা আর পূর্ব মনিপুরীপাড়া পার হতে পারলেই যেন এ যানবাহনগুলোর মুক্তি মিলে।
কাজীপাড়া থেকে শেওড়াপাড়া অংশ। এখানেও রয়েছে ছোট-বড় একাধিক খানা-খন্দক। রাস্তার পাশে বৃষ্টির পনি জমে থাকতেও দেখা যায়। কিছু কিছু জায়গায় রাস্তার পাশ ভেঙে তৈরি হয়েছে বড় গর্ত। যেখান থেকে যানবাহন চলতে বেগ পেতে হয়। আর শেওড়াপাড়া থেকে তালতলা অংশের চিত্র তুলনামূলক কিছুটা ভালো। রাস্তা সরু থাকলেও ভাঙাচোরা কম। এখানে যানজটও তুলনামূলক কম হয়। তালতলা থেকে আগারগাঁও অংশে মাঝেমাঝে খানাখন্দক রয়েছে। সেসব জায়গাতেও পানি জমে যায়। এ সমস্যাটা সড়কের পশ্চিম পাশেই বেশি। সবসময় যানজট না থাকলেও এখানে রাতের বেলা দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়তে হয় সাধারণ মানুষের। অন্যদিকে মিরপুর-১২ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সড়কের মাঝে মাঝে দেখা যায় ময়লা আবর্জনার স্তূপ করে রাখতে। এমনি এক লেনের সড়কে এটাও যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় বলে জানান গাড়ি চালকরা।
রোকেয়া সরণি হয়ে মিরপুর-সদরঘাট রুটে চলাচল করে বিহঙ্গ পরিবহন। এ পরিবহনের চালক আরশাদ বলেন, দিনের বেশিরভাগ সময় কেটে যায় কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়া থেকে বের হতে। আবার বৃষ্টি হলে তো এ ১ নম্বর হয়ে চলাচল করতে হয়। এ বছর রাস্তার অনেক জায়গা ভাঙাচোড়া থাকায় ভয় লাগে কখন বাসটি দুর্ঘটানায় পড়ে।
জাহনারা বেগম। মিরপুরের বেনারসি পল্লীর বাসিন্দা। পড়াশোনা করেন আগারগাঁও গ্রিন ইউনিভার্সিটির ইংলিশ বিভাগে। সপ্তাহের চারদিন তার ক্লাস থাকে। এ পথ পাড়ি দিয়ে কিভাবে যাতায়াত করেন জানতে চাইলে এ শিক্ষার্থী বলেন, এ বছর আমার তৃতীয় বর্ষ চলছে। গত দুই বছর ধরে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে কি যন্ত্রণাটাই না পোহাতে হয়েছে। মেট্রোরেলের মাটির নিচে বিদ্যুতের লাইন নেয়ার সময় থেকেই এ দুর্ভোগের শুরু। কবে শেষ হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। দুই বছর থেকেই হাতে দুই ঘণ্টা সময় নিয়ে বের হতে হয়। অথচ পথ মাত্র ১৫ মিনিটের। এরপরেও অনেকসময় একটা ক্লাস ছুটে যায়। গতকালও বৃষ্টি হওয়ায় কাজীপাড়ায় এসে আটকে পরি যানজটে। প্রায় দুই ঘণ্টা লেগে যায় আসতে। হেঁটে আসারও কোনো উপায় নেই। ফুটপাথ পর্যন্ত তলিয়ে যায় পানিতে। আর রিকশায় উঠি না দেবে যাওয়ার ভয়ে। কখন যে বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়ি সে দুঃশ্চিন্তা নিয়েই প্রতিদিন এ পথে আসা-যাওয়া করি।
কাজীপাড়ার ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো. আল-আমিনের মুখেও হতাশার ছাপ। একে তো ব্যবসায় ধস। তার মাঝে দুই-এক ঘণ্টা বৃষ্টি হলেই পানি চলে যায় দোকানের ফ্লোরে। আল-আমিন বলেন, গত দুই বছর পর্যন্ত খুব খারাপ অবস্থায় আছি। দোকানের সামনে মাল লোড-আনলোড করতে পারি না। ক্রেতা এখন আর এ রোডে আসেন না। মানুষ চলতেই কষ্ট মালামাল কিনবেন কিভাবে তারা। আামদের তো যাওয়ার জায়গা নেই তা কোনোমতে টিকে আছি।
বেগম রোকেয়া সরণির এ বেহাল দশার কথা জানা আছে সাধারণ মানুষের। অনেকে দিনের বেশিরভাগ সময় এ রাস্তায় ব্যয় করতে চান না। তাই তারা রুট পরিবর্তন করে ইতিমধ্যে ভিন্ন পথ দিয়ে যাতায়াত শুরু করেছেন। তবে এ সড়কের মাঝ এলাকার বাসিন্দাদের সে সুযোগ নেই। আবার যেসব অভিবাকরা তাদের সন্তানদের এখানকার স্কুল কলেজে ভর্তি করেছেন তারাও আছেন বিপদে। উপায়ান্তর না পেয়ে ভোগান্তি বয়ে বেড়াচ্ছেন। অন্যদিকে এ সড়কে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ ও ডিএমপি পশ্চিম বিভাগ সব ধরনের রিকশা-ভ্যান ও ঠেলাগাড়ি নিষিদ্ধ করলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি কয়েকমাসেও। এসব রিকশা-ভ্যান চলছে হরদমে। এ কারণেও যানজট লাগছে এবং মাঝেমধ্যে দুর্ঘটানা ঘটে বলে এখাকার লোকজনের। এ সড়ক ধরে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষ এবং এলাকাবাসীর কবে নাগাদ মুক্তি মিলবে তারও কোনো হিসেব নেই।
রাজধানীর বেগম রোকেয়া সরণি। আগারগাঁও থেকে মিরপুর-১২ নম্বর সড়ক। এ সড়কের মাঝের অংশে বেরিকেড দিয়ে চলছে মেট্রোরেলের কাজ। তাও প্রায় দুই বছরের বেশি সময় পার হয়েছে। রাস্তা সংকুচিত হয়ে উভয় পাশে এক লেন পরিমাণ জায়গা রয়েছে যানবাহন চলাচলের জন্য। বর্তমানে যে অংশ দিয়ে যান চলছে সেখানেও রয়েছে খানাখন্দকে ভরা। পুরো রাস্তায় রয়েছে বড় বড় গর্ত। অনেকাংশে কার্পেট নষ্ট হয়ে গেছে। রাস্তা এবড়োথেবড়ো হওয়ায় মাঝেমাঝেই পানি জমে শুরু হয় জলাবদ্ধতা। বৃষ্টি মৌসুমের শুরুতেই জলাবদ্ধতা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে শুরু করেছে। ১০/২০ মিনিট বৃষ্টি হলেই রোকেয়া সরণির কাজীপাড়া অংশের উভয় পাশ ডুবে যায়। যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। আর এক-দুই ঘণ্টা বৃষ্টি হলে ট্রাফিক পুলিশই সড়কটি বন্ধ করে দেয়। তখন যান চলাচল করে বিকল্প সড়ক ধরে।
গতকাল সরজমিন দেখা যায়, মিরপুর ১২ নম্বর থেকে শুরু হয়ে ১০ নম্বর গোল চত্বর পর্যন্ত সড়কে অনেক স্থানে রয়েছে ছোট বড় গর্ত। এরমধ্যে মিরপুর সাড়ে ১১-এর রাস্তার একটা অংশ ভেঙে ড্রেনের সুয়ারেজের সঙ্গে দেবে গেছে। এখান থেকে কোনোভাবে একটি বাস চলতে পারছে। এ ছাড়াও কালসী, ইয়ানতাই রেস্টুরেন্ট, বেনারসি পল্লীর মাথায় রাস্তার অনেক জায়গায় রয়েছে গর্ত। ইনডোর পৃষ্ঠা ২ কলাম ২
স্টেডিয়ামের সামনে যেখান রাস্তা কেটে ওয়াসা পানির পাইপ বসিয়েছিল সেখানে যে কার্পেট দেয়া হয়েছে তা উঠে গেছে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে। এখানেও অনেকগুলো গর্ত দেখা যায়।মিরপুর-১০ গোলচত্বর থেকে কাজীপাড়া অংশ। বেগম রোকেয়া সরণির সবথেকে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয় এ অংশে।
মূলত এখান থেকেই যানজটের সূত্রপাত। সড়ক সরু হয়ে এক লেন ধরে গাড়ি চলাচল করে। আর বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতার কারণে সে এক লেনও যায় বন্ধ হয়ে। পানি সড়তে সময় লেগে যায় দুই-তিন দিন। সড়কে উপরে রয়েছে অনেক গর্ত। যেগুলো বৃষ্টির পানি জমলে আর দেখা যায় না। মাঝে ড্রেনের ঢাকনা ভেঙে রডগুলো উপরের দিকে বের হয়ে রয়েছে। তার উপর দিয়ে ছোট যানবাহন তো দূরে থাক বাস উঠতেই সাহস করছে না। তাদের টায়ার ফুটো হয়ে যায় কি না সে ভয় কাজ করছে। সড়কের এ অবস্থায় ছোট যানবাহনের চলাচল করা আরো কঠিন। মিরপুরের সেনপাড়া পর্বতা আর পূর্ব মনিপুরীপাড়া পার হতে পারলেই যেন এ যানবাহনগুলোর মুক্তি মিলে।
কাজীপাড়া থেকে শেওড়াপাড়া অংশ। এখানেও রয়েছে ছোট-বড় একাধিক খানা-খন্দক। রাস্তার পাশে বৃষ্টির পনি জমে থাকতেও দেখা যায়। কিছু কিছু জায়গায় রাস্তার পাশ ভেঙে তৈরি হয়েছে বড় গর্ত। যেখান থেকে যানবাহন চলতে বেগ পেতে হয়। আর শেওড়াপাড়া থেকে তালতলা অংশের চিত্র তুলনামূলক কিছুটা ভালো। রাস্তা সরু থাকলেও ভাঙাচোরা কম। এখানে যানজটও তুলনামূলক কম হয়। তালতলা থেকে আগারগাঁও অংশে মাঝেমাঝে খানাখন্দক রয়েছে। সেসব জায়গাতেও পানি জমে যায়। এ সমস্যাটা সড়কের পশ্চিম পাশেই বেশি। সবসময় যানজট না থাকলেও এখানে রাতের বেলা দীর্ঘ যানজটের কবলে পড়তে হয় সাধারণ মানুষের। অন্যদিকে মিরপুর-১২ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সড়কের মাঝে মাঝে দেখা যায় ময়লা আবর্জনার স্তূপ করে রাখতে। এমনি এক লেনের সড়কে এটাও যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় বলে জানান গাড়ি চালকরা।
রোকেয়া সরণি হয়ে মিরপুর-সদরঘাট রুটে চলাচল করে বিহঙ্গ পরিবহন। এ পরিবহনের চালক আরশাদ বলেন, দিনের বেশিরভাগ সময় কেটে যায় কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়া থেকে বের হতে। আবার বৃষ্টি হলে তো এ ১ নম্বর হয়ে চলাচল করতে হয়। এ বছর রাস্তার অনেক জায়গা ভাঙাচোড়া থাকায় ভয় লাগে কখন বাসটি দুর্ঘটানায় পড়ে।
জাহনারা বেগম। মিরপুরের বেনারসি পল্লীর বাসিন্দা। পড়াশোনা করেন আগারগাঁও গ্রিন ইউনিভার্সিটির ইংলিশ বিভাগে। সপ্তাহের চারদিন তার ক্লাস থাকে। এ পথ পাড়ি দিয়ে কিভাবে যাতায়াত করেন জানতে চাইলে এ শিক্ষার্থী বলেন, এ বছর আমার তৃতীয় বর্ষ চলছে। গত দুই বছর ধরে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে কি যন্ত্রণাটাই না পোহাতে হয়েছে। মেট্রোরেলের মাটির নিচে বিদ্যুতের লাইন নেয়ার সময় থেকেই এ দুর্ভোগের শুরু। কবে শেষ হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। দুই বছর থেকেই হাতে দুই ঘণ্টা সময় নিয়ে বের হতে হয়। অথচ পথ মাত্র ১৫ মিনিটের। এরপরেও অনেকসময় একটা ক্লাস ছুটে যায়। গতকালও বৃষ্টি হওয়ায় কাজীপাড়ায় এসে আটকে পরি যানজটে। প্রায় দুই ঘণ্টা লেগে যায় আসতে। হেঁটে আসারও কোনো উপায় নেই। ফুটপাথ পর্যন্ত তলিয়ে যায় পানিতে। আর রিকশায় উঠি না দেবে যাওয়ার ভয়ে। কখন যে বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়ি সে দুঃশ্চিন্তা নিয়েই প্রতিদিন এ পথে আসা-যাওয়া করি।
কাজীপাড়ার ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো. আল-আমিনের মুখেও হতাশার ছাপ। একে তো ব্যবসায় ধস। তার মাঝে দুই-এক ঘণ্টা বৃষ্টি হলেই পানি চলে যায় দোকানের ফ্লোরে। আল-আমিন বলেন, গত দুই বছর পর্যন্ত খুব খারাপ অবস্থায় আছি। দোকানের সামনে মাল লোড-আনলোড করতে পারি না। ক্রেতা এখন আর এ রোডে আসেন না। মানুষ চলতেই কষ্ট মালামাল কিনবেন কিভাবে তারা। আামদের তো যাওয়ার জায়গা নেই তা কোনোমতে টিকে আছি।
বেগম রোকেয়া সরণির এ বেহাল দশার কথা জানা আছে সাধারণ মানুষের। অনেকে দিনের বেশিরভাগ সময় এ রাস্তায় ব্যয় করতে চান না। তাই তারা রুট পরিবর্তন করে ইতিমধ্যে ভিন্ন পথ দিয়ে যাতায়াত শুরু করেছেন। তবে এ সড়কের মাঝ এলাকার বাসিন্দাদের সে সুযোগ নেই। আবার যেসব অভিবাকরা তাদের সন্তানদের এখানকার স্কুল কলেজে ভর্তি করেছেন তারাও আছেন বিপদে। উপায়ান্তর না পেয়ে ভোগান্তি বয়ে বেড়াচ্ছেন। অন্যদিকে এ সড়কে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ ও ডিএমপি পশ্চিম বিভাগ সব ধরনের রিকশা-ভ্যান ও ঠেলাগাড়ি নিষিদ্ধ করলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি কয়েকমাসেও। এসব রিকশা-ভ্যান চলছে হরদমে। এ কারণেও যানজট লাগছে এবং মাঝেমধ্যে দুর্ঘটানা ঘটে বলে এখাকার লোকজনের। এ সড়ক ধরে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষ এবং এলাকাবাসীর কবে নাগাদ মুক্তি মিলবে তারও কোনো হিসেব নেই।
No comments