জামদানি পল্লীতে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা by জয়নাল আবেদীন জয়
ঈদ
দরজায় কড়া নাড়লেও রূপগঞ্জের জামদানি পল্লীতে তাঁতিদের কর্মব্যস্ততা কমেনি।
কাকডাকা ভোর থেকে মধ্য রাত অবধি এখনো চলছে অভিজাত এ বস্ত্র বুননের
ব্যস্ততা। নাওয়া-খাওয়া ভুলে বছরের সবচেয়ে চাহিদার সময়টাতে একটু বাড়তি
পরিশ্রম করে দু’পয়সা উপার্জনে ব্যস্ত সবাই। জামদানি পল্লীতেও রয়েছে
ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। চলতি ঈদ মৌসুমে দেশের বাইরেও রপ্তানি হয়েছে
প্রত্যাশা অনুসারে। শীতলক্ষ্যা পাড়ের বাতাসের অবাক যাদুর পরশেই তৈরি হয়েছে
বিশ্ব মাতানো এ জামদানি কাপড়। তাঁতিরা খুশি কাঙ্ক্ষিত বিক্রি-বাট্টায়। খুশি
মহাজন আর জামদানি সংশ্লিষ্টরা। এবারের ঈদে শত কোটি টাকার জামদানি কাপড়
বিক্রি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। এখনো পল্লীতে আগমন ঘটছে সব
ক্রেতাদের।
বিসিকের হিসাব মতে কেবল চলতি ঈদকে সামনে রেখে দেশের বাইরে রপ্তানি হয়েছে অন্তত ৪০-৪৫ কোটি টাকার জামদানি শাড়ি।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের শেষ সময়েও কর্মমুখর নোয়াপাড়ার জামদানি পল্লী। এছাড়া পার্শ্ববর্তী কাজীপাড়া, দক্ষিণ রূপসী, বরাব, খালপাড়, পবনকুল, মোগরাকুল, সাদিপুর, বেহাকুর, মৈকুলী, নাওরা ভিটা, খাদুন, রূপসী, গন্ধর্বপুর, মুড়াপাড়া, ব্রাহ্মণগাঁও, গঙ্গানগরসহ আশেপাশের গ্রামগুলোতে ঈদকে ঘিরে চলছে তাঁতিদের ব্যস্ততা। নাওয়া-খাওয়া ভুলে শিল্পীরা এখন কাপড় বুনে যাচ্ছেন এক মনে। এবারের ঈদে দেশের বিভিন্ন বিপনী বিতান ও বিদেশে আগের তুলনায় দ্বিগুণ কাপড় যাচ্ছে তাদের। কারো হাতে ফুসরত নেই, নেই কথা বলার দোদণ্ড সময়। একেকটি কাপড় শেষ করার পরই হাতে আসছে নতুন অর্ডার। যত কাজ তত উপার্জন নীতিতে কাজ করে যাচ্ছে কারিগরেরা। ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্পের স্থানীয় দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঈদে বাড়তি আকর্ষণ জুড়তে কারিগরেরা জামদানির ডিজাইনে এনেছেন নতুনত্ব। তৈরি হচ্ছে চোখ জুড়ানো ফুলতেরছি, ছিটার তেরছি, ছিটার জাল, সুই জাল, হাঁটু ভাঙ্গা, ডালম তেরছি, পার্টিরজাল, পান তেরছি, গোলাপ ফুল, জুঁই ফুল, পোনা ফুল, শাপলা ফুল, গুটি ফুল, মদন পাইরসহ প্রায় শতাধিক নকশার জামদানি। এগুলোর মধ্যে ছিটার জাল, সুই জাল ও পার্টির জাল জামদানির মূল্যে সব চেয়ে বেশি। এসব জামদানি শাড়ির দাম পড়ে ৩০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। এবারের ঈদে দেশের বাজারের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, সৌদি আরব, লন্ডনসহ বিভিন্ন দেশে জামদানি শাড়ি রপ্তানি হয়েছে। ঈদ সামনে রেখে জামদানির মেলা বসেছে রাজধানীর কয়েকটি জায়গায়সহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলায়, ইসলামাবাদ, করাচি, লাহোর ও ইউরোপের ৩-৪টি দেশে। শুধু এই ঈদেই রূপগঞ্জ থেকে অন্তত ৪০-৪৫ কোটি টাকার জামদানি রপ্তানি হয়েছে বলে ধারণা করছে বিসিক। এছাড়া নোয়াপাড়া জামদানি প্রজেক্টের ভিতরের এবং ডেমরা বাজারের সাপ্তাহিক দুটি হাটেও ক্রেতাদের ছিল উপড়ে পরা ভিড়। এসব হাটে অন্তত আরো ৪০-৫০ কোটি টাকার বিক্রিবাট্টা হয়েছে বলে ধারণা বিসিক ও জামদানি ব্যবসায়ীদের।
কাউসার জামদানি উইভিংয়ের মালিক হামিদুল্লাহ মিয়া জানান, এবারের ঈদের বেচাকেনায় সন্তুষ্ট তিনিসহ স্থানীয় জামদানি ব্যবসায়ীরা। কিন্ত জামদানি তার অতীতের গৌরব অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছেন উল্লেখ্য করে তিনি বলেন জামদানিতে সরকারি নজরদারি বাড়িয়ে তাঁতি এবং ব্যবসায়ীদের সুযোগ সুবিধা দিলে এ শিল্পটি আবার স্বরুপে ফিরবে আসবে। রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, রপ্তানি বেশ ভালোই হয়েছে। কিন্ত দেশের ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পকে বিকাশ করা জন্য আমরা যারা দেশের বাইরে মেলায় অংশগ্রহণ করে জামদানিকে বিকাশের চেষ্টা করছি। আমাদের কাস্টমসে অনেক হয়রানির শিকার হতে হয়। এ কারণে ব্যবসায়ীরা বিদেশে গিয়ে মেলা করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। আরেক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখন জামদানির আদলে তৈরি হচ্ছে নকল জামদানি। আমাদের একটি সস্তা শাড়ি তৈরি করতে সপ্তাহখানেক সময় লেগে যায় সেখানে ভারত থেকে আমদানি করা সস্তা মানের সুতোয় আর মেশিনে একটি নকল জামদানি তৈরি হয়ে যায় মাত্র কয়েক ঘণ্টায়। এতে করে বদনাম হচ্ছে জামদানি শাড়ির।
কথা হয় জামদানি শিল্প নগরী বিসিকের উপব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, জামদানি এ দেশের ঐতিহ্য। এ শিল্পকে বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ইতোমধ্যে জামদানি প্লট কল্যাণ সমিতি ৮ দফা দাবি পেশ করে আবেদন করেছেন। এসব জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া প্রকৃত জামদানি তাঁতি আর ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছ থেকে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। আমরা কারিগরদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অভিজাত জামদানিতে এনেছি নতুনত্ব। এ কারনে বর্তমানে দেশ বিদেশে চাহিদা বাড়বে জামদানির। চলতি ঈদে দেশ বিদেশে প্রায় ১০০ কোটি টাকার মতো জামদানি শাড়ি কেনাবেচা হবে বলে আমাদের ধারণা। যা বিগত সময়ের চেয়ে বেশি। এটাই আমাদের সফলতা।
বিসিকের হিসাব মতে কেবল চলতি ঈদকে সামনে রেখে দেশের বাইরে রপ্তানি হয়েছে অন্তত ৪০-৪৫ কোটি টাকার জামদানি শাড়ি।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের শেষ সময়েও কর্মমুখর নোয়াপাড়ার জামদানি পল্লী। এছাড়া পার্শ্ববর্তী কাজীপাড়া, দক্ষিণ রূপসী, বরাব, খালপাড়, পবনকুল, মোগরাকুল, সাদিপুর, বেহাকুর, মৈকুলী, নাওরা ভিটা, খাদুন, রূপসী, গন্ধর্বপুর, মুড়াপাড়া, ব্রাহ্মণগাঁও, গঙ্গানগরসহ আশেপাশের গ্রামগুলোতে ঈদকে ঘিরে চলছে তাঁতিদের ব্যস্ততা। নাওয়া-খাওয়া ভুলে শিল্পীরা এখন কাপড় বুনে যাচ্ছেন এক মনে। এবারের ঈদে দেশের বিভিন্ন বিপনী বিতান ও বিদেশে আগের তুলনায় দ্বিগুণ কাপড় যাচ্ছে তাদের। কারো হাতে ফুসরত নেই, নেই কথা বলার দোদণ্ড সময়। একেকটি কাপড় শেষ করার পরই হাতে আসছে নতুন অর্ডার। যত কাজ তত উপার্জন নীতিতে কাজ করে যাচ্ছে কারিগরেরা। ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্পের স্থানীয় দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঈদে বাড়তি আকর্ষণ জুড়তে কারিগরেরা জামদানির ডিজাইনে এনেছেন নতুনত্ব। তৈরি হচ্ছে চোখ জুড়ানো ফুলতেরছি, ছিটার তেরছি, ছিটার জাল, সুই জাল, হাঁটু ভাঙ্গা, ডালম তেরছি, পার্টিরজাল, পান তেরছি, গোলাপ ফুল, জুঁই ফুল, পোনা ফুল, শাপলা ফুল, গুটি ফুল, মদন পাইরসহ প্রায় শতাধিক নকশার জামদানি। এগুলোর মধ্যে ছিটার জাল, সুই জাল ও পার্টির জাল জামদানির মূল্যে সব চেয়ে বেশি। এসব জামদানি শাড়ির দাম পড়ে ৩০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। এবারের ঈদে দেশের বাজারের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, সৌদি আরব, লন্ডনসহ বিভিন্ন দেশে জামদানি শাড়ি রপ্তানি হয়েছে। ঈদ সামনে রেখে জামদানির মেলা বসেছে রাজধানীর কয়েকটি জায়গায়সহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলায়, ইসলামাবাদ, করাচি, লাহোর ও ইউরোপের ৩-৪টি দেশে। শুধু এই ঈদেই রূপগঞ্জ থেকে অন্তত ৪০-৪৫ কোটি টাকার জামদানি রপ্তানি হয়েছে বলে ধারণা করছে বিসিক। এছাড়া নোয়াপাড়া জামদানি প্রজেক্টের ভিতরের এবং ডেমরা বাজারের সাপ্তাহিক দুটি হাটেও ক্রেতাদের ছিল উপড়ে পরা ভিড়। এসব হাটে অন্তত আরো ৪০-৫০ কোটি টাকার বিক্রিবাট্টা হয়েছে বলে ধারণা বিসিক ও জামদানি ব্যবসায়ীদের।
কাউসার জামদানি উইভিংয়ের মালিক হামিদুল্লাহ মিয়া জানান, এবারের ঈদের বেচাকেনায় সন্তুষ্ট তিনিসহ স্থানীয় জামদানি ব্যবসায়ীরা। কিন্ত জামদানি তার অতীতের গৌরব অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছেন উল্লেখ্য করে তিনি বলেন জামদানিতে সরকারি নজরদারি বাড়িয়ে তাঁতি এবং ব্যবসায়ীদের সুযোগ সুবিধা দিলে এ শিল্পটি আবার স্বরুপে ফিরবে আসবে। রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, রপ্তানি বেশ ভালোই হয়েছে। কিন্ত দেশের ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পকে বিকাশ করা জন্য আমরা যারা দেশের বাইরে মেলায় অংশগ্রহণ করে জামদানিকে বিকাশের চেষ্টা করছি। আমাদের কাস্টমসে অনেক হয়রানির শিকার হতে হয়। এ কারণে ব্যবসায়ীরা বিদেশে গিয়ে মেলা করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। আরেক ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখন জামদানির আদলে তৈরি হচ্ছে নকল জামদানি। আমাদের একটি সস্তা শাড়ি তৈরি করতে সপ্তাহখানেক সময় লেগে যায় সেখানে ভারত থেকে আমদানি করা সস্তা মানের সুতোয় আর মেশিনে একটি নকল জামদানি তৈরি হয়ে যায় মাত্র কয়েক ঘণ্টায়। এতে করে বদনাম হচ্ছে জামদানি শাড়ির।
কথা হয় জামদানি শিল্প নগরী বিসিকের উপব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, জামদানি এ দেশের ঐতিহ্য। এ শিল্পকে বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ইতোমধ্যে জামদানি প্লট কল্যাণ সমিতি ৮ দফা দাবি পেশ করে আবেদন করেছেন। এসব জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়া প্রকৃত জামদানি তাঁতি আর ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছ থেকে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। আমরা কারিগরদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অভিজাত জামদানিতে এনেছি নতুনত্ব। এ কারনে বর্তমানে দেশ বিদেশে চাহিদা বাড়বে জামদানির। চলতি ঈদে দেশ বিদেশে প্রায় ১০০ কোটি টাকার মতো জামদানি শাড়ি কেনাবেচা হবে বলে আমাদের ধারণা। যা বিগত সময়ের চেয়ে বেশি। এটাই আমাদের সফলতা।
No comments