ভৈরবে মোকামে নতুন ধান ন্যায্য দাম নিয়ে হতাশায় কৃষক by মো. রফিকুল ইসলাম
দেশের
বন্দরনগরী ভৈরবের ধানের মোকামে নতুন ধান আমদানি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে
হাওরে প্রায় ৮০ শতাংশ জমির বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। ফলে আড়তগুলোতে
প্রতিদিন হাওর থেকে নৌ-পথে হাজার হাজার মণ ধান আসছে। কিন্তু বাজারে ধানের
ন্যায্য দাম না পেয়ে হতাশ প্রান্তিক কৃষকরা। কৃষকদের দাবি, অকাল বন্যায় গেল
বছর ফসল ভেসে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। আর এ বছর জমিতে অধিক ফলন উৎপাদন
হলেও বাজারে ন্যায্য দাম না থাকায় লোকসান যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না।
তাছাড়া গেল সপ্তাহে বৈরী আবহাওয়ার কারণেও প্রায় ২০ শতাংশ জমির ফসল বিনষ্ট
হয়েছে। ফলে দিন দিন কৃষকের ঘাড়ে বাড়ছে দেনার বোঝা। জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের
হাওরাঞ্চল অষ্টগ্রাম, মিঠামইন, ইটনাসহ হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা ও সিলেট জেলার
বিভিন্ন এলাকা থেকে নদীপথে ভৈরবের আড়তগুলোতে প্রতিদিন হাজার হাজার মণ ধান
আসছে। এসব ধান প্রতিমণ (মোটা) ৪৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর
(চিকিন) প্রতিমণ ধান ৫৫০ টাকা থেকে ৬শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষকরা জানায়, প্রতিবিঘা জমিতে উৎপাদন বাবদ বীজ রোপণ, পরিচর্যা, সার, কীটনাশক ও সেচের জ্বালানি তেলসহ সব মিলিয়ে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর বিঘাপ্রতি গড়ে ১৫ থেকে ১৮ মণ ধান উৎপাদন হয়। ফলে প্রতিমণ ধান ৬শ’ টাকা থেকে ৭শ’ টাকা দর জমিতেই পড়েছে। কিন্তু বাজারে সেই ধান তার চেয়েও কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ বছর বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্য দাম না পেয়ে ফের লোকসানের মুখে পড়েছে প্রান্তিক কৃষক। এ ছাড়া এক মণ ধানের দাম দিয়ে একজন শ্রমিকের মাত্র এক দিনের মজুরি পরিশোধ করতে পারেন তারা। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এদিকে বাজারে প্রচুর পরিমাণে নতুন চাল আমদানি হওয়ায়, চালের দামও কমে গেছে। ফলে ধানের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভৈরব বাজারে প্রায় শতাধিক ধানের আড়ত রয়েছে। সব সময়ের মতো আড়ত মালিকরা কমিশনের মাধ্যমে কৃষক ও পাইকারদের কাছ থেকে আমদানি করা ধান রাইস মিল মালিকদের কাছে বিক্রি করে আসছেন। গত দু’মাস আগেও পুরান ধান ১ হাজার টাকা থেকে ১১শ’ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারে নতুন ধান আমদানির সঙ্গে সঙ্গে প্রতিমণে ৪শ’ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা দাম কমে গেছে। বাজারে দাম কমার পেছনের কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানিকৃত বেশিরভাগ নতুন ধান ভেজা থাকায় পরে ধানের ওজন কমে যায়। ফলে চাল ব্যবসায়ীরা কম দামে ধান কিনতে চান। এদিকে সরকার এবারো ধান-চাল কিনতে প্রতিকেজি ধান ২৬ টাকা অর্থাৎ প্রতি মণ ১ হাজার ৪০ টাকা আর চাল ৩৮ টাকা দরে অর্থাৎ প্রতিমণ ১ হাজার ৫২০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করেছে। তবে, সরকারি খাদ্যগুদামে শুকনা ধান সরবরাহ করতে হবে। স্থানীয় গুদামগুলোতে এখনো ধান-চাল কেনা শুরু হয়নি। আগামী মাস থেকে সরকার ধান-চাল ক্রয় করবে বলে জানায় গুদাম সংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া কৃষকের উৎপাদিত সব ধান সরকার কিনতে পারবে না। একই সঙ্গে সরকারি গুদামে সিন্ডিকেটের কারণে ধান দিতে পারবে না তারা। এক কথায়, কৃষকের প্রয়োজনের সময় সরকার ধান কিনবে না। ফলে বেশিরভাগ কৃষকই বাজারে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়। আর প্রতিবছরই কখনো চোখের সামনে স্বপ্নের ফসল পানিতে তলিয়ে আবার কখনো শুকনায় প্রখর রোদে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে গোলায় ধান তুলেও বাজারে ধানের ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকসানের মুখে পড়েন প্রান্তিক কৃষক। এ ব্যাপারে ভৈরব সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, সিদ্ধ ও আতব চাল সংগ্রহের লক্ষে আমরা সরকারি নির্দেশনা পেলেও এখনো কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের জন্য কোনো নিদের্শনা পাওয়া যায়নি। চাহিদা ও নির্দেশনা পেলেই ধান সংগ্রহ শুরু হবে। এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. শরীফ মোল্লা জানান, সরকার এবারো প্রতিকেজি ধান ২৬ টাকা অর্থাৎ প্রতিমণ ১ হাজার ৪০ টাকা নির্ধারণ করছেন। আর সিদ্ধ চাল ৩৮ টাকা এবং আতব চাল ৩৭ টাকা মূল্য নির্ধারণ করেছে। স্থানীয় গুদামগুলোতে কয়েকদিনের মধ্যেই চাল কেনা শুরু হবে। কিন্তু কখন থেকে সরকার ধান কিনবে বা সংগ্রহ করবে এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না। তবে, নিদের্শনা পেলেই আমরা কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু করব। জানতে চাইলে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন বলেন, এদেশের হাওরাঞ্চলের অধিকাংশ কৃষকই গরিব মানুষ। তারা ধার-দেনা বোরো ধান আবাদ করে থাকেন। ফলে তাদের বৈশাখ মাসের শুরুতেই ধান বিক্রি করতে হয়। কয়েকদিন পর বিক্রি করলে কৃষকরা ভালো দামে ধান বিক্রি করতে পারতেন। এছাড়া সরকারি গুদামে বেশি বেশি ধান কিনলেও কৃষকরা ন্যায্যদাম থেকে বঞ্চিত হতো না।
এদিকে অকাল বন্যায় ফসল তলিয়ে কিংবা বাজারে ন্যায্য দাম না পেয়ে প্রতিবছরই যেন লোকসানের মুখে পড়তে না হয় প্রান্তিক কৃষকদের সেদিকে সু-নজর দেবে সরকার। আর্থিক অনুদানসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়াবে এমনটাই প্রত্যাশা এ হাওরাঞ্চলের হাজার হাজার কৃষকদের।
কৃষকরা জানায়, প্রতিবিঘা জমিতে উৎপাদন বাবদ বীজ রোপণ, পরিচর্যা, সার, কীটনাশক ও সেচের জ্বালানি তেলসহ সব মিলিয়ে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। আর বিঘাপ্রতি গড়ে ১৫ থেকে ১৮ মণ ধান উৎপাদন হয়। ফলে প্রতিমণ ধান ৬শ’ টাকা থেকে ৭শ’ টাকা দর জমিতেই পড়েছে। কিন্তু বাজারে সেই ধান তার চেয়েও কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ বছর বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্য দাম না পেয়ে ফের লোকসানের মুখে পড়েছে প্রান্তিক কৃষক। এ ছাড়া এক মণ ধানের দাম দিয়ে একজন শ্রমিকের মাত্র এক দিনের মজুরি পরিশোধ করতে পারেন তারা। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। এদিকে বাজারে প্রচুর পরিমাণে নতুন চাল আমদানি হওয়ায়, চালের দামও কমে গেছে। ফলে ধানের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ভৈরব বাজারে প্রায় শতাধিক ধানের আড়ত রয়েছে। সব সময়ের মতো আড়ত মালিকরা কমিশনের মাধ্যমে কৃষক ও পাইকারদের কাছ থেকে আমদানি করা ধান রাইস মিল মালিকদের কাছে বিক্রি করে আসছেন। গত দু’মাস আগেও পুরান ধান ১ হাজার টাকা থেকে ১১শ’ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বাজারে নতুন ধান আমদানির সঙ্গে সঙ্গে প্রতিমণে ৪শ’ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা দাম কমে গেছে। বাজারে দাম কমার পেছনের কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, আমদানিকৃত বেশিরভাগ নতুন ধান ভেজা থাকায় পরে ধানের ওজন কমে যায়। ফলে চাল ব্যবসায়ীরা কম দামে ধান কিনতে চান। এদিকে সরকার এবারো ধান-চাল কিনতে প্রতিকেজি ধান ২৬ টাকা অর্থাৎ প্রতি মণ ১ হাজার ৪০ টাকা আর চাল ৩৮ টাকা দরে অর্থাৎ প্রতিমণ ১ হাজার ৫২০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করেছে। তবে, সরকারি খাদ্যগুদামে শুকনা ধান সরবরাহ করতে হবে। স্থানীয় গুদামগুলোতে এখনো ধান-চাল কেনা শুরু হয়নি। আগামী মাস থেকে সরকার ধান-চাল ক্রয় করবে বলে জানায় গুদাম সংশ্লিষ্টরা। তাছাড়া কৃষকের উৎপাদিত সব ধান সরকার কিনতে পারবে না। একই সঙ্গে সরকারি গুদামে সিন্ডিকেটের কারণে ধান দিতে পারবে না তারা। এক কথায়, কৃষকের প্রয়োজনের সময় সরকার ধান কিনবে না। ফলে বেশিরভাগ কৃষকই বাজারে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়। আর প্রতিবছরই কখনো চোখের সামনে স্বপ্নের ফসল পানিতে তলিয়ে আবার কখনো শুকনায় প্রখর রোদে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে গোলায় ধান তুলেও বাজারে ধানের ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকসানের মুখে পড়েন প্রান্তিক কৃষক। এ ব্যাপারে ভৈরব সরকারি খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ খোরশেদ আলম বলেন, সিদ্ধ ও আতব চাল সংগ্রহের লক্ষে আমরা সরকারি নির্দেশনা পেলেও এখনো কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের জন্য কোনো নিদের্শনা পাওয়া যায়নি। চাহিদা ও নির্দেশনা পেলেই ধান সংগ্রহ শুরু হবে। এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. শরীফ মোল্লা জানান, সরকার এবারো প্রতিকেজি ধান ২৬ টাকা অর্থাৎ প্রতিমণ ১ হাজার ৪০ টাকা নির্ধারণ করছেন। আর সিদ্ধ চাল ৩৮ টাকা এবং আতব চাল ৩৭ টাকা মূল্য নির্ধারণ করেছে। স্থানীয় গুদামগুলোতে কয়েকদিনের মধ্যেই চাল কেনা শুরু হবে। কিন্তু কখন থেকে সরকার ধান কিনবে বা সংগ্রহ করবে এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না। তবে, নিদের্শনা পেলেই আমরা কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু করব। জানতে চাইলে ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন বলেন, এদেশের হাওরাঞ্চলের অধিকাংশ কৃষকই গরিব মানুষ। তারা ধার-দেনা বোরো ধান আবাদ করে থাকেন। ফলে তাদের বৈশাখ মাসের শুরুতেই ধান বিক্রি করতে হয়। কয়েকদিন পর বিক্রি করলে কৃষকরা ভালো দামে ধান বিক্রি করতে পারতেন। এছাড়া সরকারি গুদামে বেশি বেশি ধান কিনলেও কৃষকরা ন্যায্যদাম থেকে বঞ্চিত হতো না।
এদিকে অকাল বন্যায় ফসল তলিয়ে কিংবা বাজারে ন্যায্য দাম না পেয়ে প্রতিবছরই যেন লোকসানের মুখে পড়তে না হয় প্রান্তিক কৃষকদের সেদিকে সু-নজর দেবে সরকার। আর্থিক অনুদানসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়াবে এমনটাই প্রত্যাশা এ হাওরাঞ্চলের হাজার হাজার কৃষকদের।
No comments