সিলেটে শাকিলের জবানবন্দি- ‘চাকু কেড়ে নিয়ে সোহাগের গলা কাটি’ by ওয়েছ খছরু
‘বন্ধু
সোহাগের কাছ থেকে চাকু কেড়ে নিয়ে তার গলা কাটি। এরপর তার শরীরে এলোপাতাড়ি
ঘা দেই। এক সময় সোহাগ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরে বন্ধুরা এসে দেখে সোহাগ মারা
গেছে। এরপর পরিকল্পনা করে তার লাশ বস্তায় ভরে ছড়ায় ফেলে দেই।’ সিলেটের
ঘাষিটুলায় বন্ধু সোহাগ খুনের লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় ঘাতক বন্ধু শাকিল আহমদ।
সিলেটের মর্মান্তিক এ খুনের ঘটনার দুইদিনের মাথায় গতকাল কোতোয়ালি থানা
পুলিশ আলোচিত এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করলো। গোয়েন্দা সোর্সের মাধ্যমে পুলিশ
গতকাল দুপুরে ঘাষিটুলা এলাকা থেকে শাকিলকে গ্রেপ্তার করে। প্রথমে শাকিল
কোতোয়ালি থানা পুলিশের কাছে খুনের ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। গতকাল
বুধবার বিকালে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হরিদাস কুমারের
আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে খুনের বিবরণ দিয়েছে।
শাকিল প্রথমে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এবং পরবর্তীতে আদালতের কাছে জানিয়েছে মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বের জের ধরে সে খুন করেছে শাকিলকে। ঘটনার দিন শুক্রবার রাতে ঘাষিটুলা এলাকার বালুর মাঠে আসে সোহাগ। আগে থেকেই সেখানে বন্ধুদের নিয়ে অবস্থান করছিলো শাকিল। এরপর জরুরি কথা বলার জন্য শাকিল ও সোহাগ চলে আসে এলজিইডি অফিসের কাছে। তাদের বন্ধুরাও পিছু পিছু আসে। মাদক বিক্রির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে প্রথমে নিহত সোহাগের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় শাকিলের। উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর হঠাৎ করে সোহাগ বন্ধু শাকিলকে থাপ্পড় মারে। এরপর সোহাগ পকেট থেকে চাকু বের করে শাকিলকে মারতে আসে। এ সময় শাকিল চাকু কেড়ে নিয়ে সোহাগের গলায় আঘাত করে। এতে সোহাগের গলা কেটে রক্ত ফিনকি দিয়ে বের হচ্ছিল। শাকিল সোহাগকে এরপর উপর্যুপরি কয়েকটি ঘা দিলে সোহাগ মারা যায়। পরে বন্ধুদের সহযোগিতায় তারা সোহাগের লাশ বস্তার ভরে গাভিয়ার খালে ফেলে দিয়ে চলে আসে। নিহত সোহাগ (১৭) বগুড়া সদর থানার ঝোপগাড়ী (পূর্বপাড়া অলিরবাজার)’র আশরাফের পুত্র। বর্তমানে তারা নগরীর মজুমদারপাড়া ময়না মিয়ার কলোনিতে বসবাস করে আসছিল। পাশাপাশি সোহাগ কাজিরবাজার মাছের আড়তে কাজ করতো। সে টোকাই হিসেবে পরিচিত ছিল জানিয়েছেন কাজিরবাজারের মৎস্য আড়তদাররা। প্রতিদিন সকালে সে ব্যাগ নিয়ে বাজারে আসতো। মাছ কুড়িয়ে বিকালে বিক্রি করতো।
ছোটকাল থেকে এ পেশায় নিয়োজিত ছিল সোহাগ। তরুণ বয়সে সে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। আর খুনি শাকিলের মূল বাড়ি ঘাষিটুলায়। তার পিতা মঈন উদ্দিন। সোহাগের বয়সী শাকিল। শাকিল স্থানীয় হওয়ার কারণে এলাকায় সে সোহাগ, সায়েম, আজউদ্দিন, ইমন সহ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে তরুণ অপরাধ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছিল। সকাল থেকে তারা আড্ডা জমাতো ঘাষিটুলার গোরস্থান রোডে। ওই রোডে তারা মাদক আস্তানাও গড়ে তুলেছে। ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা সহ নানা ধরনের মাদক বিক্রি করতো তারা। সোহাগ রাতের বেলা মাদক আস্তানা পরিচালনা করতো। আর শাকিল গ্রুপ প্রধান হিসেবে সে ওই মাদক বিক্রির হিসাব রাখতো। ওই সিন্ডিকেটের বেশিরভাগ ছিল টোকাই। এলাকার কিছু মাদকসেবকরা তাদের সুনজরে দেখতো। সাম্প্রতিক সময়ে তারা রাজনৈতিক লেবাস পরেছে। এর সুবাদে এলাকার মানুষের কাছে শাকিল ও ইমনের গ্রুপটি ছিল আতঙ্কের। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলেন না। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কয়েক দিন আগে অনিক নামের এক যুবককে বিনা কারণে তারা কুপিয়েছে। এতে অনিক গুরুতর আহত হয়। আর নারীদের উত্ত্যক্ত, ছিনতাই করা তাদের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রাতের বেলা এলাকার কেউ ভয়ে মাদরাসা থেকে গোরস্থান সড়কে যেতেন না। শাকিল-ইমনের গ্রুপের কর্মীরা চাকু দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতো সব। নিহত সোহাগের পিতা আশরাফ জানিয়েছেন, পহেলা বৈশাখের আগের দিন সোহাগ নিজ বাসা থেকে বৈশাখের নতুন কাপড় কিনতে বের হয়। রাতে সে বাসায় ফিরেনি। তাকে পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন শনিবারও খুঁজেন কিন্তু পাননি। সোমবার দুপুরে এলাকার ছেলে এলজিইডির পাশে ক্রিকেট খেলছিলো। এ সময় তাদের বল উড়ে গিয়ে পড়ে ছড়ায়। এক শিশু বল আনতে গিয়ে দেখে একটি বস্তা রাখা। আর ওই বস্তা থেকে রক্ত ঝরছে। সে এলাকার মানুষকে বিষয়টি জানায়। পরবর্তীতে পুলিশ গিয়ে ওই বস্তা উদ্ধার করে দেখে ভেতরে রক্তাক্ত লাশ। বস্তা খোলার পর স্থানীয়রা লাশটি সোহাগের বলে জানায়। এদিকে লাশ উদ্ধারের পরপরই পুলিশ ওই এলাকায় সোর্স নিয়োগ করে। খোঁজ মিলে শাকিল সহ কয়েকজনের। পুলিশের নজরে আসে মাদক ব্যবসার বিষয়টিও। অনেকটা নিশ্চিত হওয়ার পর গতকাল বুধবার দুপুরে কোতোয়ালি থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার এসআই ফয়েজ সহ পুলিশ দল ঘাষিটুলায় অভিযান চালায়। এ সময় সেখান থেকে তারা শাকিল সহ ৩ জনকে আটক করে নিয়ে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল পুলিশের কাছে খুনের ঘটনা স্বীকার করে। এরপর শাকিলকে আদালতে হাজির করা হলে সে ঘটনার দায় স্বীকার করে।
সিলেটের কোতোয়ালি থানার ওসি গৌসুল হোসেন জানিয়েছেন, মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বের জের ধরে সোহাগকে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে শাকিল। খুনের ঘটনার সময় তার সঙ্গে আরো কয়েকজন ছিল। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, পুলিশ নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুসন্ধান চালিয়ে আলোচিত এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে। কোতোয়ালি থানার এসআই রোকেয়া খানম জানিয়েছেন, নিহত সোহাগ প্রথমে শাকিলকে থাপ্পড় মারে। পরে চাকু বের করে। শাকিল চাকু কেড়ে নিয়ে সোহাগের গলা কাটে বলে স্বীকার করেছে। তিনি বলেন, শাকিল ও সোহাগ বন্ধু। তারা এক সঙ্গে থাকে এবং এলাকায় আড্ডা দেয়। নিজেদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ার কারণে সোহাগকে তারা খুন করেছে।
শাকিল প্রথমে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এবং পরবর্তীতে আদালতের কাছে জানিয়েছে মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বের জের ধরে সে খুন করেছে শাকিলকে। ঘটনার দিন শুক্রবার রাতে ঘাষিটুলা এলাকার বালুর মাঠে আসে সোহাগ। আগে থেকেই সেখানে বন্ধুদের নিয়ে অবস্থান করছিলো শাকিল। এরপর জরুরি কথা বলার জন্য শাকিল ও সোহাগ চলে আসে এলজিইডি অফিসের কাছে। তাদের বন্ধুরাও পিছু পিছু আসে। মাদক বিক্রির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে প্রথমে নিহত সোহাগের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় শাকিলের। উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর হঠাৎ করে সোহাগ বন্ধু শাকিলকে থাপ্পড় মারে। এরপর সোহাগ পকেট থেকে চাকু বের করে শাকিলকে মারতে আসে। এ সময় শাকিল চাকু কেড়ে নিয়ে সোহাগের গলায় আঘাত করে। এতে সোহাগের গলা কেটে রক্ত ফিনকি দিয়ে বের হচ্ছিল। শাকিল সোহাগকে এরপর উপর্যুপরি কয়েকটি ঘা দিলে সোহাগ মারা যায়। পরে বন্ধুদের সহযোগিতায় তারা সোহাগের লাশ বস্তার ভরে গাভিয়ার খালে ফেলে দিয়ে চলে আসে। নিহত সোহাগ (১৭) বগুড়া সদর থানার ঝোপগাড়ী (পূর্বপাড়া অলিরবাজার)’র আশরাফের পুত্র। বর্তমানে তারা নগরীর মজুমদারপাড়া ময়না মিয়ার কলোনিতে বসবাস করে আসছিল। পাশাপাশি সোহাগ কাজিরবাজার মাছের আড়তে কাজ করতো। সে টোকাই হিসেবে পরিচিত ছিল জানিয়েছেন কাজিরবাজারের মৎস্য আড়তদাররা। প্রতিদিন সকালে সে ব্যাগ নিয়ে বাজারে আসতো। মাছ কুড়িয়ে বিকালে বিক্রি করতো।
ছোটকাল থেকে এ পেশায় নিয়োজিত ছিল সোহাগ। তরুণ বয়সে সে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। আর খুনি শাকিলের মূল বাড়ি ঘাষিটুলায়। তার পিতা মঈন উদ্দিন। সোহাগের বয়সী শাকিল। শাকিল স্থানীয় হওয়ার কারণে এলাকায় সে সোহাগ, সায়েম, আজউদ্দিন, ইমন সহ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে তরুণ অপরাধ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছিল। সকাল থেকে তারা আড্ডা জমাতো ঘাষিটুলার গোরস্থান রোডে। ওই রোডে তারা মাদক আস্তানাও গড়ে তুলেছে। ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা সহ নানা ধরনের মাদক বিক্রি করতো তারা। সোহাগ রাতের বেলা মাদক আস্তানা পরিচালনা করতো। আর শাকিল গ্রুপ প্রধান হিসেবে সে ওই মাদক বিক্রির হিসাব রাখতো। ওই সিন্ডিকেটের বেশিরভাগ ছিল টোকাই। এলাকার কিছু মাদকসেবকরা তাদের সুনজরে দেখতো। সাম্প্রতিক সময়ে তারা রাজনৈতিক লেবাস পরেছে। এর সুবাদে এলাকার মানুষের কাছে শাকিল ও ইমনের গ্রুপটি ছিল আতঙ্কের। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলেন না। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কয়েক দিন আগে অনিক নামের এক যুবককে বিনা কারণে তারা কুপিয়েছে। এতে অনিক গুরুতর আহত হয়। আর নারীদের উত্ত্যক্ত, ছিনতাই করা তাদের পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রাতের বেলা এলাকার কেউ ভয়ে মাদরাসা থেকে গোরস্থান সড়কে যেতেন না। শাকিল-ইমনের গ্রুপের কর্মীরা চাকু দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতো সব। নিহত সোহাগের পিতা আশরাফ জানিয়েছেন, পহেলা বৈশাখের আগের দিন সোহাগ নিজ বাসা থেকে বৈশাখের নতুন কাপড় কিনতে বের হয়। রাতে সে বাসায় ফিরেনি। তাকে পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন শনিবারও খুঁজেন কিন্তু পাননি। সোমবার দুপুরে এলাকার ছেলে এলজিইডির পাশে ক্রিকেট খেলছিলো। এ সময় তাদের বল উড়ে গিয়ে পড়ে ছড়ায়। এক শিশু বল আনতে গিয়ে দেখে একটি বস্তা রাখা। আর ওই বস্তা থেকে রক্ত ঝরছে। সে এলাকার মানুষকে বিষয়টি জানায়। পরবর্তীতে পুলিশ গিয়ে ওই বস্তা উদ্ধার করে দেখে ভেতরে রক্তাক্ত লাশ। বস্তা খোলার পর স্থানীয়রা লাশটি সোহাগের বলে জানায়। এদিকে লাশ উদ্ধারের পরপরই পুলিশ ওই এলাকায় সোর্স নিয়োগ করে। খোঁজ মিলে শাকিল সহ কয়েকজনের। পুলিশের নজরে আসে মাদক ব্যবসার বিষয়টিও। অনেকটা নিশ্চিত হওয়ার পর গতকাল বুধবার দুপুরে কোতোয়ালি থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার এসআই ফয়েজ সহ পুলিশ দল ঘাষিটুলায় অভিযান চালায়। এ সময় সেখান থেকে তারা শাকিল সহ ৩ জনকে আটক করে নিয়ে আসে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাকিল পুলিশের কাছে খুনের ঘটনা স্বীকার করে। এরপর শাকিলকে আদালতে হাজির করা হলে সে ঘটনার দায় স্বীকার করে।
সিলেটের কোতোয়ালি থানার ওসি গৌসুল হোসেন জানিয়েছেন, মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বের জের ধরে সোহাগকে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে শাকিল। খুনের ঘটনার সময় তার সঙ্গে আরো কয়েকজন ছিল। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তিনি বলেন, পুলিশ নিজস্ব নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনুসন্ধান চালিয়ে আলোচিত এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে। কোতোয়ালি থানার এসআই রোকেয়া খানম জানিয়েছেন, নিহত সোহাগ প্রথমে শাকিলকে থাপ্পড় মারে। পরে চাকু বের করে। শাকিল চাকু কেড়ে নিয়ে সোহাগের গলা কাটে বলে স্বীকার করেছে। তিনি বলেন, শাকিল ও সোহাগ বন্ধু। তারা এক সঙ্গে থাকে এবং এলাকায় আড্ডা দেয়। নিজেদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ার কারণে সোহাগকে তারা খুন করেছে।
No comments