আগাম নির্বাচনের ঘোষণা কেন তুরস্কের প্রেসিডেন্টের?
বিস্মিত
তুরস্কের জনগণ। কারণ, আচমকা আগাম নির্বাচন ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ
তাইয়্যিপ এরদোগান। বুধবার তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন। সে অনুযায়ী আগামী জুনে
সেখানে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। এখন সেখানে চলছে জরুরি অবস্থা।
আন্তর্জাতিক মিত্রদের সঙ্গে জোট বাঁধার ক্ষেত্রে নতুন পট পরিবর্তন ঘটেছে
দেশটির। সিরিয়া যুদ্ধে ক্রমশ বেশি থেকে বেশি হারে যুক্ত হচ্ছে তুরস্ক। ঠিক এ
সময় আচমকা প্রেসিডেন্ট এরদোগান কেন নির্বাচন ঘোষণা দিলেন তা নিয়ে শুরু
হয়েছে নানা বিশ্লেষণ। কেউ কেউ বলছেন, দেশে সচল থাকা জরুরি অবস্থার মধ্যে
নির্বাচন করে ফসল ঘরে তুলতে চান তিনি। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের
সামনে এখনও ক্ষমতার মেয়াদ আছে প্রায় দেড় বছর। তার দেশে কোনো রাজনৈতিক
অস্থির পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয় নি। তাহলে কেন এই আগাম নির্বাচন। এরদোগানের
প্রধান মিত্র কট্টর ডানপন্থি নেতা দেভলেত বাহসেলি আগাম নির্বাচন দাবি করার
এক দিনের মধ্যে ওই ঘোষণা দিয়েছেন এরদোগান। তাই আগামী ২৪ শে জুন জাতীয়
নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এখন বিষয়টি নিশ্চিত করবে সেদেশের
নির্বাচন পরিষদ। নির্বাচন পরিষদ বা নির্বাচন কমিশন অনুমোদন দিলে এবারই
প্রথমবারের মতো সেখানে একই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে।
নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার অধীনে এতে অধিকতর ক্ষমতা পাবেন এরদোগান। কারণ,
২০১৭ সালের এপ্রিলে তুরস্কে সংবিধান সংশোধনের গণভোট হয়। তাতে সামান্য ভোটের
ব্যবধানে ‘হ্যাঁ’ ভোট বিজয়ী হয়। এর ফলে তুরস্কের সংসদীয় গণতন্ত্র চলে যায়
প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতার অধীনে। এর মাধ্যমে আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠেন
এরদোগান। সাংবিধানিক ওই পরিবর্তন প্রযোজ্য হবে নতুন নির্বাচিত সরকারের
ক্ষেত্রে। নির্বাচিত এমন প্রেসিডেন্ট কারো সঙ্গে কোনো পরামর্শ ছাড়া ভাইস
প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রীপরিষদ, উচ্চ পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও
সিনিয়র জজদের নিয়োগ দিতে পারবেন। এ ছাড়া নির্বাহী আদেশ ও জরুরি অবস্থা জারি
করে তিনি বিলুপ্ত করতে পারবেন পার্লামেন্ট। এত সব ক্ষমতা যে প্রেসিডেন্ট
পাবেন তিনি তা কিভাবে ব্যবহার করবেন তা রাজনৈতিক সচেতন যেকোনো ব্যক্তিই
আন্দাজ করতে পারেন। হয়তো সেই ক্ষমতা হাতের নাগালে পাওয়ার জন্যই কোনো কারণ
ছাড়া প্রেসিডেন্ট এরদোগান নতুন নির্বাচন ঘোষণা করেছেন। তিনি ক্ষমতাসীন
জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) নেতা। ঘোষণায় বলেছে,
তুরস্কের সঙ্কটকালীন সময়ে একজন নির্বাহী প্রেসিডেন্টের খুবই প্রয়োজন।
টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে তিনে বলেন, যদিও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও সরকার যতটা
পারছে ততটা সম্প্রীতির সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে তবুও প্রতিটি পদক্ষেপে পুরনো
সিস্টেমের সঙ্গে সংঘাতময় এক অবস্থার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সিরিয়ার
ঘটনাপ্রবাহ এবং অন্যান্য স্থানের ঘটনাগুলো এখন এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি
করেছে যেখানে নতুন নির্বাহী ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে
পড়েছে। যাতে আমরা শক্ত মানসিকতা নিয়ে আমাদের দেশের ভবিষ্যত পদক্ষেপে
অগ্রসর হতে পারি। ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টির (এমএইচপি) নেতা বাহসেলির
সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, জানুয়ারির শেষের দিকে সিরিয়ার আফ্রিন প্রদেশে সামরিক অভিযান শুরু করে তুরস্কের সেনাবাহিনী ও ফ্রি সিরিয়ান আর্মির যোদ্ধারা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ওই এলাকা থেকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থনপুষ্ট কুর্দি যোদ্ধাদের সরিয়ে দেয়া। এসব কুর্দি যোদ্ধা পিপলস প্রটেকশন ইউনিটস নামে পরিচিত। আঙ্কারা মনে করে সিরিয়ার কুর্দি ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টি এবং তাদের সশস্ত্র থাখা যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত ওয়াইপিজি হলো সন্ত্রাসী গ্রুপ। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আছে নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে)। এই ওয়াইপিজির বিরুদ্ধে তুরস্কের অভিযানে ক্ষুব্ধ হয়েছে ওয়াশিংটন। তুরস্ক ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত। এ জোটের মিত্ররা যখন ওয়াইপিজেকে সমর্থন দেয়া শুরু করলো তখন হতাশ হয়ে পড়ে তুরস্ক। এরই মধ্যে সিরিয়া যুদ্ধ শেষ করতে ইরান ও রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করা শুরু করে তুরস্ক। জ্বালানি থেকে প্রতিরক্ষা সহ বহুবিধ ইস্যুতে মস্কোকে সহযোগিতা বাড়িয়ে দেয় তুরস্ক।
উল্লেখ্য, জানুয়ারির শেষের দিকে সিরিয়ার আফ্রিন প্রদেশে সামরিক অভিযান শুরু করে তুরস্কের সেনাবাহিনী ও ফ্রি সিরিয়ান আর্মির যোদ্ধারা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ওই এলাকা থেকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থনপুষ্ট কুর্দি যোদ্ধাদের সরিয়ে দেয়া। এসব কুর্দি যোদ্ধা পিপলস প্রটেকশন ইউনিটস নামে পরিচিত। আঙ্কারা মনে করে সিরিয়ার কুর্দি ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন পার্টি এবং তাদের সশস্ত্র থাখা যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত ওয়াইপিজি হলো সন্ত্রাসী গ্রুপ। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আছে নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে)। এই ওয়াইপিজির বিরুদ্ধে তুরস্কের অভিযানে ক্ষুব্ধ হয়েছে ওয়াশিংটন। তুরস্ক ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত। এ জোটের মিত্ররা যখন ওয়াইপিজেকে সমর্থন দেয়া শুরু করলো তখন হতাশ হয়ে পড়ে তুরস্ক। এরই মধ্যে সিরিয়া যুদ্ধ শেষ করতে ইরান ও রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করা শুরু করে তুরস্ক। জ্বালানি থেকে প্রতিরক্ষা সহ বহুবিধ ইস্যুতে মস্কোকে সহযোগিতা বাড়িয়ে দেয় তুরস্ক।
No comments