প্রেমের বলি ইবি শিক্ষার্থী

বাবু তোমাকে অনেক ভালোবাসি। জীবনের প্রতিটি মোড়ে তোমাকে চাই। তুমি কোনো দিন হয়তো আমার হবে না- অন্য কারো হবে। তোমায় আমার থেকে কেউ কোনো দিন বেশি ভালোবাসতে পারবে না- জেনে নিও।’- রক্তমাখা এ খোলা চিঠি লিখে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্র্থী সায়েম খান। মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী একটি মেস থেকে পুলিশ তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
সূত্রমতে, নিহত সায়েম ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের আজিয়া গ্রামের আজম খানের ছেলে। তিনি এ বছর ইবির ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। প্রেমিকার সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছে। গলায় দড়ি নেয়ার আগে প্রেমিকাকে উদ্দেশ্য করে একটি ডায়েরিতে বেশ কিছু কথা লিখে যান সায়েম। সেখানে নিজেই আত্মহত্যা করেছেন বলে রক্তমাখা ওই চিরকুটে লেখা রয়েছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সায়েম ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া বাজারে ‘মা মঞ্জিল’ নামে একটি মেসে সিঙ্গেল রুমে থাকতেন। প্রায় সময়ই তিনি একা থাকতেন বলে তার বন্ধুরা জানিয়েছেন। তবে তার প্রেমের বিষয়ে বন্ধুরা তেমন কিছুই জানতেন না বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার বিভাগে ক্লাস শেষ করে তিনি রুমে প্রবেশ করেন। সন্ধ্যার পরও তিনি রুম থেকে বের না হওয়ায় মেসমেটদের সন্দেহ হয়। রাত ৮টার দিকে প্রক্টর ড. মাহবুবর রহমানকে বিষয়টি জানালে তিনি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে আসেন। পরে শৈলকুপা থানার ওসি আলমগীর হোসেন তার সহযোগীসহ দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। তার বিছানায় একটি ডায়েরিতে তিন পাতার সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশ শিক্ষার্থী শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েন। পরে লাশ ময়নাতদন্ত করে সায়েমের বাবা আজম খানের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। কোনো শিক্ষার্থী যেন তার জীবনে এ রকম কাজ না করে।’ শৈলকুপা থানার ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘দরজা ভেঙে সায়েমের কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করা হয়েছে। এতে বোঝা যায়, সায়েম আত্মহত্যা করেছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে দিয়েছি।’

No comments

Powered by Blogger.