বাংলাদেশী কর্মকর্তাদের নিন্দা ও সেনাবাহিনীকে অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে বলেছে আসু
চীন
ও পাকিস্তানের মদদে আসামে তথাকথিত বাংলাদেশীদের অনুপ্রবেশ বিষয়ে ভারতের
সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের মন্তব্যে ভারতের বিভিন্ন মহলে ঝড় বইছে। এর
মধ্যে অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ) এর
প্রেসিডডেন্ট বদরুদ্দীন আজমল বলেছেন, আমরা সেনা প্রধানকে শ্রদ্ধা করি।
কিন্তু এই বিষয়ে তাঁকে ভুল তথ্য দিয়ে ভুল পথে পরিচালনা করা হয়েছে। আমরাই
একমাত্র দল যারা বলছে, আমাদের সীমান্তে কেউ অনুপ্রবেশ করে তাহলে গুলি করে
তা বন্ধ করা উচিত। রাওয়াত দাবি করেছেন, আসামে শাসক বিজেপির চেয়ে বদরুদ্দিন
আজমলের অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ)-এর প্রভাব
বাড়ছে। ভারতকে অস্থির করতে পাকিস্তান ও চীন জোট বেধে বাংলাদেশ থেকে
মুসলমানদের আসামে ঢোকাচ্ছে। তিনি অবশ্য সরাসরি চীন ও পাকিস্তানের নাম
নেননি।
এদিকে ‘বাংলাদেশী খেদাও’ আন্দোলনের মূল নেতৃত্বদানকারীদের অন্যতম সংগঠন অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু) গতকাল গৌহাটিতে এক মিশ্র বিবৃতিতে বলেছে, আসামে অনুপ্রবেশ বন্ধে সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্য আংশিক সমর্থনের পাশাপাশি বিরোধীতাও করেছে। আবার পৃথক এক বিবৃতিতে তারা জাতীয় নিবন্ধন সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার বিষয়ে ঢাকায় বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মন্তব্যের সমালোচনা করেছে। গতকাল আসাম ট্রিবিউন এই খবর দিয়ে বলেছে, আসু বাংলাদেশী কর্মকর্তাদের নিন্দা করে বলেছে, ঢাকার তরফে এধরণের মন্তব্য গ্রহনযাগ্য নয়। আসু মনে করে বাঙলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ বন্ধে সেনাবাহিনীর একটি ভূমিকা আছে। সীমান্ত জুড়ে এবিষয়ে তাঁর উচিত তবে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, পৃকৃত সত্য হলো প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অনুপ্রবেশ ইস্যুতে একটি সেমিনার আয়োজন করেছিল। এবং সেখানে সেনাবাহিনী প্রধান কিছু উৎসাহব্যঞ্জক পর্যবেক্সণ তুলে ধরেছিলেন। আমরা তার বিবৃতিকে ইতিবাচক অগ্রগতি বলে মনে করি। আবার সেনা প্রধান যেভাবে অভেধ অভিাবাসীদের সঙ্গে সমন্বয় করার বিষয়ে যে বক্কব্য রেখেছেন, তার আমরা বিরোধীতা করি। সেনা প্রধান অবৈথ অভিবাসনের সমস্যার বিষয়ে বাংলাদেশের ভূমি সংকটের উল্লেখ করেছেন, কিন্তু তিনি দৃশ্যত ভুলে গেছেন যে, যা ঘটছে তা অভেদ অভিাসন। আর সেটা বন্ধ করতে সংবিধান অনুযায়ী তাদেরই দায়িত্ব পালন করার কথা। সেনা প্রধান যেন বলতে চাইছেন যে, ভূমি সংকটের কারণে বাংলাদেশ থেকে মানুষ আসছে সেহেতু আসাম যদি ত্রিপুরায় পরিণত হয় তাহলেও আসামবাসীর উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সেনা প্রধানের মুখে এধরণের মন্তব্য কেবল সীসান্ত জুড়ে অভেধ অভিাসনকেই আরো উৎসাহিত করতে পারে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সেনা প্রধান বলেছেন, ইন্ডয়ানস এবং নন-ইন্ডয়ানসের মধ্যে কোনো পার্থক্য তৈরি করা উচিত নয়। এধরণের উপদেশ গ্রহণযোগ্য নয়।
আসু আরো বলেছে, ৮৫৫ জন শহীদের রক্তের বিনিময়ে আসাম চুক্তি হয়েছে, সুতরাং অনুপ্রবেশ সমস্যা এই আসাম চুক্তির আলোকে নিষ্পন্ন হতে হবে। তারা বলেছে, আইএম(ডিটি) অ্যাক্ট বাতিল হওয়ার পরে এআইডিএফ এর জন্ম হয়েছে। সুতরাং এটা সবারাই জানা যে, এই সংগঠনটি সবসময় অনুপ্রবেশকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে আসছে।
এদিকে বিশিষ্ট ভারতীয় ভাষ্যকার মনোজ যোশী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় লিখেছেন, জেনারেল রাওয়াতের বক্তব্য নিঃসন্দেহে এখতিয়ারবহির্ভূত, এমনকি তা অজ্ঞতাপ্রসূত। আসামের রাজনীতিতে কে কত জনপ্রিয় তা নিয়ে তাঁর মন্তব্য করা তার সাজে না। একটি দল অন্যটির চেয়ে দ্রুত জনপ্রিয় হওয়ার নানা কারণ থাকতে পারে। মনোজ যোশী পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, গত তিন বছরের নির্বাচনী ফলাফলে (আসাম বিধানসভার) দেখা যায়, এআইইউডিএফ ও বিজেপি কংগ্রেস এই তিন দলেরই আসন বেড়েছে বা কমেছে। ২০০৬, ২০১১ ও ২০১৬ সালের নির্বাচনে এআইএইউডিএফ পেয়েছিল যথাক্রমে ৯, ১২.৬ ও ১৩ শতাংশ, বিজেপি পেয়েছিল যথাক্রমে ৯, ১২ ও সাড়ে ২৯ শতাংশ ভোট। আসামে কংগ্রেস কখনও ৪০ ভাগ ভোটও পায়নি। কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৩১, ৩৯ ও ৩১ শতাংশ ভোট। একসময়ের বড় দল বিজিপির জনপ্রিয়তা কমে ২০০৬ সালে ২০ শতাংশে, ২০১১ সালে ১৬ শতাংশে এবং ২০১৬ সালে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। অন্যান্য দলের জনপ্রিয়তাও নিম্মমুখী, কমিউনিস্ট পাটির্র অস্তিত্বই বিলীন হতে চলেছে।
এমন প্রমাণ নেই যা দিয়ে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত অথবা অন্য কেউ দাবি করতে পারেন যে, বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান ও চীন আসামে লোক ঢোকাচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্তের পুরোটাই কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা এবং এরপরও যদি সেনাপ্রধান নিরাপত্তাসংকটের আশঙ্কা করলে তিনি বিএসএফ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে পারেন। জেনারেল রাওয়াত আগেও বিতর্কিত কথাবার্তা বলেছেন। মনে হচ্ছে তিনি রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে কৌতূক করছেন। মনে হচ্ছে, সরকার তাঁকে ঠিকমতো তদারকি করছে না। আবার অবসরের পরে রাজনীতিতে আসার লোভ তিনি সামলাতে পারছেন না। ভারতের জন্য এমন কিছুই ভালো ফল বয়ে আনবে না।
মনোজ যোশী তাঁর নিবন্ধে অবশ্য বলেছেন, বর্তমানে এমন কোনো অবস্থা বিরাজমান নেই, যাতে বাংলাদেশ আসামের এই তথাকথিত অভিবাসীদের নিতে রাজি হবে। সেনাপ্রধান রাওয়াত তাঁর বক্তব্যে অবশ্য এটাও কবুল করেছেন যে, তাদের আর বের করে দেওয়া সম্ভব নয়,তাই তাদের মূল স্রোতে একীভূত করা এবং যারা সমস্যা সৃষ্টিকারী তাদের আলাদা করা দরকার।
আসামে অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করার কাজ এখন বেশ ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে। কিন্তু এর সঙ্গে সেনাবাহিনীর কাজের কোনো যোগসূত্র নেই। কাজটি কীভাবে করা হবে, তা সেনাবাহিনীর পরিধিতে পড়ে না। এবিষয়ে ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন মন্তব্য’ না করে বিষয়টিকে সংবেদনশীলভাবে মোকাবেলা করা জরুরি বলেও তিনি মত দেন।
এদিকে ‘বাংলাদেশী খেদাও’ আন্দোলনের মূল নেতৃত্বদানকারীদের অন্যতম সংগঠন অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু) গতকাল গৌহাটিতে এক মিশ্র বিবৃতিতে বলেছে, আসামে অনুপ্রবেশ বন্ধে সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্য আংশিক সমর্থনের পাশাপাশি বিরোধীতাও করেছে। আবার পৃথক এক বিবৃতিতে তারা জাতীয় নিবন্ধন সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার বিষয়ে ঢাকায় বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মন্তব্যের সমালোচনা করেছে। গতকাল আসাম ট্রিবিউন এই খবর দিয়ে বলেছে, আসু বাংলাদেশী কর্মকর্তাদের নিন্দা করে বলেছে, ঢাকার তরফে এধরণের মন্তব্য গ্রহনযাগ্য নয়। আসু মনে করে বাঙলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ বন্ধে সেনাবাহিনীর একটি ভূমিকা আছে। সীমান্ত জুড়ে এবিষয়ে তাঁর উচিত তবে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, পৃকৃত সত্য হলো প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অনুপ্রবেশ ইস্যুতে একটি সেমিনার আয়োজন করেছিল। এবং সেখানে সেনাবাহিনী প্রধান কিছু উৎসাহব্যঞ্জক পর্যবেক্সণ তুলে ধরেছিলেন। আমরা তার বিবৃতিকে ইতিবাচক অগ্রগতি বলে মনে করি। আবার সেনা প্রধান যেভাবে অভেধ অভিাবাসীদের সঙ্গে সমন্বয় করার বিষয়ে যে বক্কব্য রেখেছেন, তার আমরা বিরোধীতা করি। সেনা প্রধান অবৈথ অভিবাসনের সমস্যার বিষয়ে বাংলাদেশের ভূমি সংকটের উল্লেখ করেছেন, কিন্তু তিনি দৃশ্যত ভুলে গেছেন যে, যা ঘটছে তা অভেদ অভিাসন। আর সেটা বন্ধ করতে সংবিধান অনুযায়ী তাদেরই দায়িত্ব পালন করার কথা। সেনা প্রধান যেন বলতে চাইছেন যে, ভূমি সংকটের কারণে বাংলাদেশ থেকে মানুষ আসছে সেহেতু আসাম যদি ত্রিপুরায় পরিণত হয় তাহলেও আসামবাসীর উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সেনা প্রধানের মুখে এধরণের মন্তব্য কেবল সীসান্ত জুড়ে অভেধ অভিাসনকেই আরো উৎসাহিত করতে পারে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সেনা প্রধান বলেছেন, ইন্ডয়ানস এবং নন-ইন্ডয়ানসের মধ্যে কোনো পার্থক্য তৈরি করা উচিত নয়। এধরণের উপদেশ গ্রহণযোগ্য নয়।
আসু আরো বলেছে, ৮৫৫ জন শহীদের রক্তের বিনিময়ে আসাম চুক্তি হয়েছে, সুতরাং অনুপ্রবেশ সমস্যা এই আসাম চুক্তির আলোকে নিষ্পন্ন হতে হবে। তারা বলেছে, আইএম(ডিটি) অ্যাক্ট বাতিল হওয়ার পরে এআইডিএফ এর জন্ম হয়েছে। সুতরাং এটা সবারাই জানা যে, এই সংগঠনটি সবসময় অনুপ্রবেশকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে আসছে।
এদিকে বিশিষ্ট ভারতীয় ভাষ্যকার মনোজ যোশী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় লিখেছেন, জেনারেল রাওয়াতের বক্তব্য নিঃসন্দেহে এখতিয়ারবহির্ভূত, এমনকি তা অজ্ঞতাপ্রসূত। আসামের রাজনীতিতে কে কত জনপ্রিয় তা নিয়ে তাঁর মন্তব্য করা তার সাজে না। একটি দল অন্যটির চেয়ে দ্রুত জনপ্রিয় হওয়ার নানা কারণ থাকতে পারে। মনোজ যোশী পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, গত তিন বছরের নির্বাচনী ফলাফলে (আসাম বিধানসভার) দেখা যায়, এআইইউডিএফ ও বিজেপি কংগ্রেস এই তিন দলেরই আসন বেড়েছে বা কমেছে। ২০০৬, ২০১১ ও ২০১৬ সালের নির্বাচনে এআইএইউডিএফ পেয়েছিল যথাক্রমে ৯, ১২.৬ ও ১৩ শতাংশ, বিজেপি পেয়েছিল যথাক্রমে ৯, ১২ ও সাড়ে ২৯ শতাংশ ভোট। আসামে কংগ্রেস কখনও ৪০ ভাগ ভোটও পায়নি। কংগ্রেস পেয়েছে যথাক্রমে ৩১, ৩৯ ও ৩১ শতাংশ ভোট। একসময়ের বড় দল বিজিপির জনপ্রিয়তা কমে ২০০৬ সালে ২০ শতাংশে, ২০১১ সালে ১৬ শতাংশে এবং ২০১৬ সালে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে। অন্যান্য দলের জনপ্রিয়তাও নিম্মমুখী, কমিউনিস্ট পাটির্র অস্তিত্বই বিলীন হতে চলেছে।
এমন প্রমাণ নেই যা দিয়ে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত অথবা অন্য কেউ দাবি করতে পারেন যে, বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তান ও চীন আসামে লোক ঢোকাচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্তের পুরোটাই কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা এবং এরপরও যদি সেনাপ্রধান নিরাপত্তাসংকটের আশঙ্কা করলে তিনি বিএসএফ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে পারেন। জেনারেল রাওয়াত আগেও বিতর্কিত কথাবার্তা বলেছেন। মনে হচ্ছে তিনি রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে কৌতূক করছেন। মনে হচ্ছে, সরকার তাঁকে ঠিকমতো তদারকি করছে না। আবার অবসরের পরে রাজনীতিতে আসার লোভ তিনি সামলাতে পারছেন না। ভারতের জন্য এমন কিছুই ভালো ফল বয়ে আনবে না।
মনোজ যোশী তাঁর নিবন্ধে অবশ্য বলেছেন, বর্তমানে এমন কোনো অবস্থা বিরাজমান নেই, যাতে বাংলাদেশ আসামের এই তথাকথিত অভিবাসীদের নিতে রাজি হবে। সেনাপ্রধান রাওয়াত তাঁর বক্তব্যে অবশ্য এটাও কবুল করেছেন যে, তাদের আর বের করে দেওয়া সম্ভব নয়,তাই তাদের মূল স্রোতে একীভূত করা এবং যারা সমস্যা সৃষ্টিকারী তাদের আলাদা করা দরকার।
আসামে অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করার কাজ এখন বেশ ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলছে। কিন্তু এর সঙ্গে সেনাবাহিনীর কাজের কোনো যোগসূত্র নেই। কাজটি কীভাবে করা হবে, তা সেনাবাহিনীর পরিধিতে পড়ে না। এবিষয়ে ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন মন্তব্য’ না করে বিষয়টিকে সংবেদনশীলভাবে মোকাবেলা করা জরুরি বলেও তিনি মত দেন।
No comments