আসাম পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ঢাকা by মিজানুর রহমান
আসাম
পরিস্থিতির উপর ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখছে বাংলাদেশ। তবে এ নিয়ে এখনই কোনো
প্রতিক্রিয়া দেখাতে চায় না সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল
প্রতিনিধিরা বলছেন, দিল্লির তরফে আসাম প্রশ্নে বিশেষ করে সেখানে ‘অবৈধ
বাংলাদেশি’ রয়েছেন মর্মে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি।
দিল্লির কোনো বক্তব্য বা যোগাযোগ না থাকায় আসামের ঘটনাগুলোকে দেশটির
অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবেই মনে করছেন তারা। স্পর্শকাতর এ ইস্যুতে মাঠ
পর্যায়ের পরিস্থিতি নিয়ে নয়াদিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং আসামের
গোয়াহাটিস্থ সহকারী হাইকমিশনকে বিস্তারিত প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে এবং
তারা নিয়মিত তা-ই করছেন। মিশনের রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে ঢাকার দায়িত্বশীল
এক কর্মকর্তা গতকাল মানবজমিনকে বলেন, আসামের নাগরিকদের নিয়ে একটি তালিকা
প্রকাশ করা হয়েছে।
যা নিয়ে দেশটির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয়ভাবে বিতর্ক চলছে। এ নিয়ে আগ বাড়িয়ে বাংলাদেশকে কিছু বলা কী সমীচীন হবে?’ ওই কর্মকর্তার মতে, তারা যে রিপোর্ট পেয়েছেন তাতে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। এটি চলমান রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স দু’দিন আগে জানিয়েছে, আসামে যা হচ্ছে তা নিয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশকে কিছুই জানায়নি। টানটান উত্তেজনার মধ্যে গত রোববার মধ্যরাতে ভারতের আসাম রাজ্যের নাগরিকদের একটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। রাজ্য সরকার প্রকাশিত ওই তালিকা নিয়ে গোটা ভারতজুড়ে বিতর্ক চলছে। প্রকাশিত তালিকা থেকে নাম বাদ পড়েছে প্রায় ১ কোটি ৩৯ লাখ বাসিন্দার। স্থান পেয়েছেন ১ কোটি ৯০ লাখ। রাজ্যের প্রায় অর্ধেক বাসিন্দার নাম বাদ পড়ায় সর্বত্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বিজিপি সরকারের ওই তালিকা থেকে রাজ্যের সাবেক অনেক নেতা, এমপি ও বিধায়ক বাদ পড়েছেন। এছাড়া বিরোধী দল কংগ্রেসের কয়েকজন এমপি ও সাবেক মন্ত্রীর নামও স্থান পায়নি তালিকায়। বিজিপি বলছে, আসাম রাজ্য থেকে কথিত ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের’ বের করে দেয়ার লক্ষ্যেই ওই নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আসামের মুসলিম নেতারা তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, নাগরিকদের নিয়ে বিতর্কিত তালিকাটি করা হচ্ছে রাজ্যের মুসলিমদের রোহিঙ্গাদের মতো রাষ্ট্রবিহীন করার জন্য। রাজ্য সরকারের দায়িত্বশীলরা অবশ্য জানিয়েছে, নাগরিকদের মধ্যে যাদের যাচাই প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে তাদের নিয়ে প্রথম খণ্ডিত খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বাকিদের নাম বিভিন্নভাবে যাচাই করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই শেষ হলে আরেকটি তালিকা প্রকাশ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল গত বছর রাজ্য ক্ষমতায় আসার পর অবৈধ বা অনুপ্রবেশকারীদের খেদানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। যাতে বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমরা টার্গেটে পড়ে যান। রাজ্য সরকারের এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নাগরিকদের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়। এটি সমন্বয়ের দায়িত্ব পান আসামের অর্থমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এই তালিকা তৈরির উদ্দেশ্য অবৈধ লোকজনকে ‘বাংলাদেশিদের’ চিহ্নিত করা। শাসক দল বিজেপি’র নেতারা সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, রাজ্যে প্রায় বিশ লাখ মুসলিমের মধ্যে যারা ১৯৭১ সালের ২৪শে মার্চের আগে থেকে এখানে রয়েছেন মর্মে দলিল-প্রমাণ হাজির করতে পারবেন তারা ভারতের নাগরিক হিসেবে গণ্য হবেন। অন্যদের বের করে দেয়া হবে। রাজ্যের মুসলিম নেতারা বিজেপির এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন। আসামের লোকজনের নাগরিকত্বের সংজ্ঞা ও অন্যান্য প্রশ্ন নিয়ে এ পর্যন্ত ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ৪০টির বেশি শুনানি হয়েছে। সেই সব শুনানিতে যে পর্যবেক্ষণ এসেছে তার ভিত্তিতেই ২০১৭ সালের ৩১শে ডিসেম্বর নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল শৈলেশ বলেছেন, যাদের নাম প্রথম তালিকায় ওঠেনি, তাদের আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। অন্য নামগুলোও পরীক্ষার বিভিন্ন স্তরে রয়েছে। নথিপত্র খতিয়ে দেখা শেষ হলে আবার একটি তালিকা প্রকাশ করা হবে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালও বলেছেন, প্রথম তালিকা দেখেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যারা প্রকৃত নাগরিক, তাদের নাম তালিকায় থাকবেই। তালিকা প্রকাশের আগে থেকে আসামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সেখানে প্রায় ২০ হাজার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৫১ সালে ভারতে একটি নাগরিক তালিকা তৈরি হয়েছিল। তারপর এমন অভিযান আর হয়নি। তাছাড়া আসামের নাগরিকত্ব প্রশ্নে আগামী এপ্রিলে উচ্চ আদালতে একটি শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
যা নিয়ে দেশটির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয়ভাবে বিতর্ক চলছে। এ নিয়ে আগ বাড়িয়ে বাংলাদেশকে কিছু বলা কী সমীচীন হবে?’ ওই কর্মকর্তার মতে, তারা যে রিপোর্ট পেয়েছেন তাতে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। এটি চলমান রয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স দু’দিন আগে জানিয়েছে, আসামে যা হচ্ছে তা নিয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশকে কিছুই জানায়নি। টানটান উত্তেজনার মধ্যে গত রোববার মধ্যরাতে ভারতের আসাম রাজ্যের নাগরিকদের একটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। রাজ্য সরকার প্রকাশিত ওই তালিকা নিয়ে গোটা ভারতজুড়ে বিতর্ক চলছে। প্রকাশিত তালিকা থেকে নাম বাদ পড়েছে প্রায় ১ কোটি ৩৯ লাখ বাসিন্দার। স্থান পেয়েছেন ১ কোটি ৯০ লাখ। রাজ্যের প্রায় অর্ধেক বাসিন্দার নাম বাদ পড়ায় সর্বত্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বিজিপি সরকারের ওই তালিকা থেকে রাজ্যের সাবেক অনেক নেতা, এমপি ও বিধায়ক বাদ পড়েছেন। এছাড়া বিরোধী দল কংগ্রেসের কয়েকজন এমপি ও সাবেক মন্ত্রীর নামও স্থান পায়নি তালিকায়। বিজিপি বলছে, আসাম রাজ্য থেকে কথিত ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের’ বের করে দেয়ার লক্ষ্যেই ওই নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আসামের মুসলিম নেতারা তালিকা তৈরির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, নাগরিকদের নিয়ে বিতর্কিত তালিকাটি করা হচ্ছে রাজ্যের মুসলিমদের রোহিঙ্গাদের মতো রাষ্ট্রবিহীন করার জন্য। রাজ্য সরকারের দায়িত্বশীলরা অবশ্য জানিয়েছে, নাগরিকদের মধ্যে যাদের যাচাই প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে তাদের নিয়ে প্রথম খণ্ডিত খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বাকিদের নাম বিভিন্নভাবে যাচাই করা হচ্ছে। যাচাই-বাছাই শেষ হলে আরেকটি তালিকা প্রকাশ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল গত বছর রাজ্য ক্ষমতায় আসার পর অবৈধ বা অনুপ্রবেশকারীদের খেদানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। যাতে বাংলা ভাষাভাষী মুসলিমরা টার্গেটে পড়ে যান। রাজ্য সরকারের এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নাগরিকদের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়। এটি সমন্বয়ের দায়িত্ব পান আসামের অর্থমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, এই তালিকা তৈরির উদ্দেশ্য অবৈধ লোকজনকে ‘বাংলাদেশিদের’ চিহ্নিত করা। শাসক দল বিজেপি’র নেতারা সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, রাজ্যে প্রায় বিশ লাখ মুসলিমের মধ্যে যারা ১৯৭১ সালের ২৪শে মার্চের আগে থেকে এখানে রয়েছেন মর্মে দলিল-প্রমাণ হাজির করতে পারবেন তারা ভারতের নাগরিক হিসেবে গণ্য হবেন। অন্যদের বের করে দেয়া হবে। রাজ্যের মুসলিম নেতারা বিজেপির এমন বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন। আসামের লোকজনের নাগরিকত্বের সংজ্ঞা ও অন্যান্য প্রশ্ন নিয়ে এ পর্যন্ত ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ৪০টির বেশি শুনানি হয়েছে। সেই সব শুনানিতে যে পর্যবেক্ষণ এসেছে তার ভিত্তিতেই ২০১৭ সালের ৩১শে ডিসেম্বর নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল শৈলেশ বলেছেন, যাদের নাম প্রথম তালিকায় ওঠেনি, তাদের আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। অন্য নামগুলোও পরীক্ষার বিভিন্ন স্তরে রয়েছে। নথিপত্র খতিয়ে দেখা শেষ হলে আবার একটি তালিকা প্রকাশ করা হবে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালও বলেছেন, প্রথম তালিকা দেখেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যারা প্রকৃত নাগরিক, তাদের নাম তালিকায় থাকবেই। তালিকা প্রকাশের আগে থেকে আসামে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সেখানে প্রায় ২০ হাজার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৫১ সালে ভারতে একটি নাগরিক তালিকা তৈরি হয়েছিল। তারপর এমন অভিযান আর হয়নি। তাছাড়া আসামের নাগরিকত্ব প্রশ্নে আগামী এপ্রিলে উচ্চ আদালতে একটি শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
No comments