পাম সু’তে মজেছেন নারীরা
পাম সু, হাইহিল, বোস্টন হিল ও হাই নাইক- এবারের ঈদ কেনাকাটায় এসব জুতা নারীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। পুরুষদের পছন্দের তালিকায় আছে স্লিপার, লোফার ও কনভার্স টাইপের জুতা। বাচ্চাদের জন্য অভিভাবকদের পছন্দ বেল্টের বিভিন্ন রংয়ের চামড়ার জুতা। ইতিমধ্যে যারা ঈদের পোশাক কিনে ফেলেছেন তারা পোশাকের সঙ্গে ম্যাচ করে জুতা কিনতে এ মার্কেট-ও মার্কেট ছুটছেন। আবার অন্য চিত্রও দেখা গেছে। যমুনা ফিউচার পার্কের মতো বড় বড় শপিংমলে দেশীয় ব্র্যান্ড ও অভিজাত শোরুমগুলোতে পোশাকের পাশাপাশি জুতাও বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা এসব শোরুম থেকে পোশাক ও জুতা ম্যাচ করে কিনছেন। শুক্রবার যমুনা ফিউচার পার্কসহ রাজধানীর কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ঈদের কেনাকাটা আগেভাগেই সারতে অনেকে শপিংয়ে বেরিয়ে পড়েন। এতে মার্কেটগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ইতিমধ্যেই যাদের পোশাকের কেনাকাটা শেষ তারা এসেছেন ম্যাচ করে জুতা কিনতে। এবারের ঈদে জুতা বৈচিত্র্যে ভরপুর। মেয়েদের জুতার ডিজাইনে এবার হাইহিল, হিল, পাম সুসহ সব ধরনের জুতায় চুমকি, পুঁতি, পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। পুরুষদের জুতার ডিজাইনে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি।
বাচ্চাদের জুতার ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। কনভার্স, লোফার ও বেল্টের স্লিপার জুতাও এবার আছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় ব্র্যান্ড ও বিদেশ থেকে আমদানি করা জুতার ডিজাইনের মধ্যে পার্থক্য ছিল খুব কম। যমুনা ফিউচার পার্কের ট্রাস্ট মার্ট শোরুমের বিক্রয় কর্মী সম্রাট হোসেন বলেন, বিদেশি নাগরা, হাইহিল, হাই নাইক, পাম সু, বোস্টন হিলের কদর বেশি। এবার সব জুতায় স্টোনের কাজ করা। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে কালারফুল হাইহিল আর পাম সু। শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং করে লাল, কালো, গোলাপী, গ্রিন ও গোল্ডেন কালারের হাইহিল কিনছেন নারীরা। তরুণী-যুবতীরা জিন্সের সঙ্গে পরার জন্য কিনছেন হাই নাইক। আর পাম সু কিনছেন মধ্য বয়স্কসহ সব বয়সী নারীরা। নিকেতনের বাসিন্দা হোসনে আরা বেগম বলেন, যমুনা ফিউচার পার্কে কেনাকাটা করতে আসার একটা কারণ, এখানে সব পোশাক, জুতার ব্রান্ডের শোরুম আছে। এছাড়া অন্য শোরুমগুলোর পণ্যও অরিজিলান। তাই নিশ্চিন্তে কেনাকাটা করতে পারি। গতবারও পুরো পরিবারের ঈদ কেনাকাটা এখান থেকে করেছি। এবারও এখান থেকে করব। যমুনা ফিউচার পার্ক ঘুরে দেখা গেছে, বাটা, এপেক্স, ওরিয়ন ছাড়াও অন্য সব দেশীয় ব্র্যান্ডের জুতার শোরুম আছে। ট্রাস্ট মার্ট, ব্রান্ড কিউ, ক্যাটস আই, ইনফিনিটি ও এক্সট্যাসির মতো পোশাকের ব্রান্ডগুলোও আলাদা কাউন্টারে নিজস্ব ডিজাইনের জুতা বিক্রি করছে। এছাড়া ইমরানি, প্যারিস গ্যালারির মতো লাক্সারিয়াস শোরুমে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, চীন থেকে আমদানি করা উন্নতমানের জুতা বিক্রি হচ্ছে। এর বেশির ভাগের ডিজাইনেরই পোশাকের ডিজাইনের সঙ্গে মিল আছে। এছাড়াও আছে ব্রান্ডহীন জুতার শোরুম। যেগুলো বিদেশ থেকে আমদানি করা উন্নতমানের জুতা বিক্রি করছে। এপেক্সের শোরুমে খিলক্ষেত থেকে ঈদ কেনাকাটা করতে আসা সুরাইয়া আক্তারের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, শেষ দিকে ভিড় বেশি থাকায় আগেভাগেই নিজের ও বাচ্চাদের ঈদের পোশাক কেনাকাটা শেষ করেছেন। এখন জুতা কিনতে মার্কেটে এসেছেন। এক ছাদের নিচে সব দেশীয় ব্রান্ডের জুতার শোরুম থাকায় যমুনা ফিউচার পার্কে এসেছেন। তিনি বলেন, রাস্তার পাশের মার্কেটগুলো আকারে ছোট।
অল্প ভিড় হলেই এসি কাজ করে না। তাছাড়া সব ব্রান্ডের শোরুমও থাকে না। যমুনা ফিউচার পার্কের আয়তন বড় হওয়ায় হাঁটাচলা করে স্বস্তি পাওয়া যায়। পর্যাপ্ত জায়গা থাকায় ঈদের সময়ও লোকজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি লাগে না। খোলামেলা পরিবেশে বাচ্চাদের হাঁটাহাঁটি করতে অসুবিধা হয় না। তাছাড়া বিক্রয়কর্মীদের আচরণও বেশ ভালো। পাশাপাশি সব ব্রান্ডের শোরুম আছে। তাই অন্য মার্কেটে দৌড়াদৌড়ি করা লাগে না। এখানে ক্লান্তিহীন স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করা যায়। ৪র্থ তলায় এপেক্স শোরুমের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঈদ উপলক্ষে ৫শ’র বেশি নতুন ডিজাইনের জুতা আনা হয়েছে। এছাড়া ঈদে ক্রেতাদের ভালো সার্ভিস দিতে নিজস্ব সেলসম্যানের অতিরিক্ত ৫৫ জন সাপোর্টিং স্টাফ এক মাসের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এখন বেশিরভাগ জুতা বিক্রি হচ্ছে বাচ্চা ও মহিলাদের। ২০ রমজানের পর থেকে পুরুষদের জুতা বিক্রি বাড়বে। নিচ তলায় ফ্যাশন হাউস ক্যাটস আইয়ের ম্যানেজার সাইফ উদ্দিন বলেন, এবার ঈদ উপলক্ষে নতুন ডিজাইনের এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি, প্রিন্টের শার্ট, মেয়েদের টপস আনা হয়েছে। এছাড়া ক্যাটস আইয়ের ফরমাল শার্ট আছে ছেলেদের জন্য। আর নির্দিষ্ট আইটেমের জুতার ওপর ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়া হচ্ছে।
No comments