মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর যেকোনো সময়
সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা ও তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলায় হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিন জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে তাঁদের করা আবেদন (রিভিউ) আজ রোববার খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। এখন মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেছেন, এখন রায়ের বিষয়টি আসামিদের জানানো হবে। তাঁরা চাইলে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন। যদি না করেন, তাহলে দু-এক দিনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হতে পারে। কেননা, প্রক্রিয়া আগে থেকে শুরু হয়ে ছিল। আসামিপক্ষের আইনজীবী নিখিল কুমার সাহা বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন কি না, এ বিষয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন। আদালতে মুফতি হান্নানসহ আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নিখিল কুমার সাহা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গিনেতা মুফতি হান্নান,
জঙ্গি শরিফ শাহেদুল ও দেলোয়ার হোসেন রিভিউ করেন। কারাসূত্র বলেছে, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে যান ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী। ফেরার পথে ফটকের কাছে গ্রেনেড হামলায় আনোয়ার চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন, নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল জঙ্গিনেতা মুফতি হান্নান, জঙ্গি শরিফ শাহেদুল ও দেলোয়ারকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন। গত ৭ ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে মুফতি হান্নানসহ তিন জঙ্গির আপিল শুনানি শেষে আপিল বিভাগ খারিজ করেন। গত ১৭ জানুয়ারি আপিল বিভাগের ৬৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়। দণ্ডিত দুই আসামিও কারাগারে আছেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে গ্রেনেড হামলা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টাসহ ১৩টি নাশকতামূলক ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যার পেছনের মূল হোতা হিসেবে মুফতি হান্নানের নাম উঠে আসে। মুফতি হান্নানের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়। ২০০০ সালের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার সভামঞ্চের কাছে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখার ঘটনায় করা মামলারও আসামি মুফতি হান্নান।
No comments