‘মাথা ঠান্ডা’ রাখতে হবে
উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘মাথা ঠান্ডা রাখার’ পরামর্শ দিয়েছে চীন। বেইজিং সফররত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনকে গতকাল শনিবার এ পরামর্শ দেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন বলেন, উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচির কারণে সৃষ্ট উত্তেজনা ‘বিপজ্জনক স্তরে’ পৌঁছে গেছে। এ সময় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, পরিস্থিতি ‘চূড়ান্ত’ পর্যায়ে পৌঁছালেও এর সূত্র ধরে সংঘাত সৃষ্টি হতে দেওয়া যাবে না। এ সময় দুই নেতা উত্তর কোরিয়ার কারণে সৃষ্ট হুমকি নিরূপণে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন, চীন তার ‘দুর্বৃত্ত’ প্রতিবেশীকে নিয়ন্ত্রণে কিছুই করছে না। বেইজিং তখন পাল্টা অভিযোগ করে বলেছিল, ওয়াশিংটন এই অঞ্চলে সংঘাতে উসকানি দিচ্ছে। এমন পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পরও দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ বৈঠককে তাই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে কয়েকজন বিশ্লেষক মনে করছেন, আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের যুক্তরাষ্ট্র সফর সামনে রেখেই হয়তো দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক এমন হৃদ্যতাপূর্ণ হয়েছে। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা যে চরমে উঠেছে, সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন একমত। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার সরকারকে পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরিয়ে আনতে এবং সঠিক পথে পরিচালিত করতে চেষ্টা করার ব্যাপারে তাঁরা একমত হয়েছেন। ওয়াং ই বলেন, চীন আশা করছে,
যুক্তরাষ্ট্রসহ সব কটি পক্ষ ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে এবং একটা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে। তবে দুই নেতার কেউই আগামী দিনে কোনো সুনির্দিষ্ট জোরদার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কি না, তা নিয়ে কোনো কথা বলেননি। এমনকি বেইজিংয়ের প্রস্তাব মেনে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারেও কোনো কথা বলেননি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওয়াশিংটন এর আগে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল। এর আগে গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টুইট করে বলেন, উত্তর কোরিয়া খুব খারাপ আচরণ করছে। তারা বছরের পর বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘খেলছে’। কিন্তু চীন এ ব্যাপারে কোনো সহায়তা করেনি বললেই চলে। দক্ষিণ কোরিয়া সফরের সময় একই দিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেন, উত্তর কোরিয়া যদি দক্ষিণ কোরিয়া বা মার্কিন বাহিনীকে ক্রমাগত হুমকি দিতেই থাকে, তাহলে সেনা অভিযানের বিষয়টি ভাবতে বাধ্য হবে তাঁর দেশ। উত্তর কোরিয়া বেশ কিছুদিন ধরে জাতিসংঘ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে। ৬ মার্চও তারা চারটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে। জাপান তখন দাবি করে, এর মধ্যে কয়েকটি দেশ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলের মাত্র ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে পড়ে। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী দাবি করে, উৎক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো হয়তো আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম)।
No comments