নির্দলীয় অম্বিকেশের চাপে কোণঠাসা কলকাতার মেয়র
কলকাতা
পৌর করপোরেশনের মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মতো শক্তিশালী প্রার্থীকে
চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছেন এক স্বতন্ত্র প্রার্থী। তিনি যাদবপুর
বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র। ক্ষমতাসীন তৃণমূল
সরকারের নিগ্রহের শিকার হওয়া এই অধ্যাপকই এবার মেয়রের আতঙ্ক। ২০১২ সালের
১৪ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ দলীয় দুই নেতার ছবির সঙ্গে
ছোট্ট দুটি কথা দিয়ে একটি কার্টুন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট করা হয়।
আর সেটি পোস্ট হয় অম্বিকেশের নামে। ওই দিন তৃণমূলের একদল সমর্থক চড়াও হন
তাঁর ওপর। তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পর পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা
করে তাঁকে পাঠিয়ে দেয় কারাগারে। পরের দিন জামিনে মুক্তি পান ওই অধ্যাপক। এই
ঘটনার পর গোটা রাজ্যে তোলপাড় শুরু হয়। ধিক্কার জানানো হয় মুখ্যমন্ত্রীকে।
মানবাধিকারকর্মীরা রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের শরণাপন্ন হওয়ার পর কমিশন
অম্বিকেশকে হেনস্তা করার জন্য রাজ্য সরকারকে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দিতে
বলে। হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও রাজ্য সরকার সেই অর্থ দেয়নি অধ্যাপককে।
এই ঘটনার রেশ ধরে কলকাতায় ‘আমরা আক্রান্ত’ নামের এটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ
ঘটে। মমতার আমলে বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিরা এই সংগঠনের
সদস্য হন। সেই সংগঠনের ডাকে এবার অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র প্রার্থী হন
কলকাতার বেহালা পূর্ব আসন থেকে। আর অম্বিকেশকে সমর্থন জানিয়ে এবার এই আসনে
প্রার্থী দেয়নি কংগ্রেস-বাম জোট। ফলে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছেন
মেয়র। বৃহস্পতিবার সকালে অম্বিকেশ মহাপাত্র প্রথম আলোকে বলেন, ‘“আমরা
আক্রান্ত” আমাকে প্রার্থী করেছে। আমি কোনো দলের প্রার্থী নই। বামফ্রন্ট ও
জাতীয় কংগ্রেস এই আসনে প্রার্থী না দিয়ে বরং আমাকে সমর্থনের কথা ঘোষণা
করেছে। আমার এলাকার মানুষজনও মনে করে, এই আসনের নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ এবং
অবাধ হয়, তবে আমাকে আটকানো যাবে না।’সম্প্রতি নারদ কেলেঙ্কারিতে মেয়র শোভন
দেবের অর্থ গ্রহণের ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে অম্বিকেশ বলেন,
‘মেয়রের ভিডিও দেখেছে কলকাতাবাসী। তারা নিশ্চয়ই বর্তমান মেয়রকে আর এই আসনে
দেখতে চাইবে না।’ তবে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় আগেই বলেছেন, তাঁর জয়ের পথ
কেউ আটকাতে পারবে না। তাঁর কাজ দেখে এলাকার মানুষই তাঁর জয়ের পথকে প্রশস্ত
করে রেখেছে।
No comments