রডের পরিবর্তে বাঁশ, খোয়ার স্থলে সুরকি
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের ভবন নির্মাণে রডের পরিবর্তে বাঁশ ও খোয়ার বদলে সুরকি ব্যবহার করা হয়েছে |
চুয়াডাঙ্গার
দর্শনায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ
সংগনিরোধ কেন্দ্রের কার্যালয় ও পরীক্ষাগার (অফিস কাম ল্যাবরেটরি) ভবনের
নির্মাণকাজ চলছে। নির্মাণাধীন ওই ভবনের লুপ ঢালাইয়ে রড না দিয়ে কাটা বাঁশ
(কাবারি বা চটা) এবং খোয়ার পরিবর্তে পরিত্যক্ত সুরকিসহ নিম্নমানের উপকরণ
ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফাইটোসেনেটারি ক্যাপাসিটি শক্তিশালীকরণ
প্রকল্পের পরিচালক (উইং) সৌমেন সাহার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি
গতকাল শুক্রবার সরেজমিন তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে।
কর্তব্যে অবহেলার দায়ে প্রকল্পের সাইট প্রকৌশলী সুব্রত বিশ্বাসকে কারণ
দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের
মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন
হাতে পাওয়ার পর দোষী ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। কর্মকর্তারা
জানান, বিদেশ থেকে আসা কৃষিজাত পণ্যের মান ও রোগ-বালাই যাচাইয়ের জন্য কৃষি
সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্ল্যান্ট প্রোটেকশন উইং এই ভবনটি তৈরির উদ্যোগ
নিয়েছে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয়ে জয়
ইন্টারন্যাশনাল নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভবনটি নির্মাণ করছে
এবং ঢাকার শেওড়াপাড়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্ট লিমিটেড (ইসিএল) কাজটি
তদারকি করছে। গত বছরের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে অর্ধেকের
বেশি শেষ হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা। ইসিএলের ঢাকা
কার্যালয়ের প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভবনটির ভিত্তি,
গ্রেড বিম, বিম ও ছাদ ঢালাইয়ের কাজ আমি নিজে তদারকি করেছি। সেখানে কোনো
অনিয়ম হয়নি। তবে ভবনের লুপ ঢালাইয়ের কাজটি সঠিক ডিজাইন অনুযায়ী হয়নি। লুপে
চিপসের পরিবর্তে সুরকি ব্যবহার ঠিক হয়নি। সবাই মিলে দোষী ব্যক্তিদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ প্রতিষ্ঠানটির উপসহকারী প্রকৌশলী সুব্রত
বিশ্বাস বলেন, ‘গত ২৭ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত আমি ছুটিতে ছিলাম। ওই
সময়ে মিস্ত্রিরা এই অনিয়ম করেছেন।’ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গার
উপপরিচালক নির্মল কুমার দে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রডের
পরিবর্তে বাঁশের চটা ব্যবহারসহ অনিয়ম করা হয়েছে। এ জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত
সুপারভাইজারের গাফিলতি রয়েছে। মহাপরিচালককে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। তাঁর
নির্দেশে নির্মাণকাজ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
No comments