নৌমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনায় সুলতানা কামাল
জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স হলে আজ শনিবার সকালে ‘বেপরোয়া দখলে বিপর্যস্ত আদি বুড়িগঙ্গা ও এর ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা। |
আদি
বুড়িগঙ্গা নদীর বেপরোয়া দখল নিয়ে এক আলোচনা সভায় নৌমন্ত্রী শাজাহান
খানের দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা)
সহসভাপতি সুলতানা কামাল। সভায় দখল উচ্ছেদ ও নদী রক্ষায় কিছু ক্ষেত্রে
নিজেদের অসহায় বলে মন্তব্য করেন নৌমন্ত্রী। তাঁর এই বক্তব্যের সমালোচনা
করে সুলতানা কামাল বলেন, ‘যখন ক্ষমতাশালী মানুষ বা সরকারের কোনো মন্ত্রী
নিজেদের অসহায় বলেন, আমরা সেটা মেনে নিতে পারি না।’ আজ শনিবার রাজধানীর
প্রেসক্লাবে বাপা ‘বেপরোয়া দখলে বিপর্যস্ত আদি বুড়িগঙ্গা ও এর ভবিষ্যৎ’
শীর্ষক এক আলোচনাসভার আয়োজন করে। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌমন্ত্রী
বলেন, ‘নদী রক্ষায় আমাদের অনেক চিন্তাভাবনা করে কাজ করতে হচ্ছে। অনেক
ক্ষেত্রে আমরা অসহায়।’ তিনি আরও বলেন, যারা নদী দখল করে, তারা এ কালের
রাজাকার। মুক্তিযুদ্ধে যেমন রাজাকারদের বিরুদ্ধে এ দেশের মানুষ সোচ্চার
হয়েছিল, আজ এই দখলদারদের বিরুদ্ধে সে রকম সোচ্চার হতে হবে। অনেক অবৈধ
স্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আইনগত জটিলতার কারণে অনেক
স্থাপনা উচ্ছেদ করতে পারা যাচ্ছে না। বক্তব্যের পরে নৌমন্ত্রী অনুষ্ঠান
থেকে চলে যান। এরপর সেখানে বক্তব্য দেন বাপার সহসভাপতি ও মানবাধিকারকর্মী
সুলতানা কামাল। তিনি নৌমন্ত্রী অনুষ্ঠানে থাকলে ভালো হতো উল্লেখ করে তাঁর
দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেন। সুলতানা কামাল বলেন, ঢাকা শহরে নির্মমভাবে
বস্তি উচ্ছেদ করা যায়। অথচ নদী দখল করে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদ করা যায়
না। আলোচনা সভায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের
(বিআইডব্লিউটিএ) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রকিবুল ইসলাম তালুকদার নদী রক্ষা
প্রকল্প তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে বুড়িগঙ্গার দ্বিতীয়
শাখাকে হাতিরঝিলের মতো দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে চান তাঁরা। একদিকে
কামরাঙ্গীর চর, অন্যদিকে মোহাম্মদপুর, হাজারীবাগ, লালবাগ, আমলীগোলা নিয়ে
বুড়িগঙ্গার দ্বিতীয় শাখা বা আদি বুড়িগঙ্গাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রকৌশলীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সুলতানা কামাল বলেন, ‘নদীকে আমরা ঝিল
হিসেবে দেখতে চাই না।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা
হাসানও নদীকে হাতির ঝিলে রূপ দেওয়ার পরিকল্পনার সমালোচনা করেন। গবেষক ও
কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, আদি বুড়িগঙ্গা রক্ষায় সরকারকে কার্যকর
পদক্ষেপ নিতে হবে। আলোচনাসভায় স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ইনস্টিটিউট অব
কমার্সের সাধারণ সম্পাদক আখতার মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মূল প্রবন্ধ
উপস্থাপন করেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল।
No comments