পোড়া বস্তিতে উচ্ছেদের আগুন?
আদালতের
নিষেধাজ্ঞায় গত বৃহস্পতিবার উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পরদিন গতকাল
শুক্রবার সকালে রাজধানীর কল্যাণপুর পোড়া বস্তির একটি অংশে আগুনে বেশ কিছু
ঘর ও দোকান পুড়ে গেছে। আগুন নেভাতে যাওয়ার সময় বাধা দেওয়া হয়েছে ফায়ার
সার্ভিসের কর্মীদের।
বস্তিবাসীর অভিযোগ, বস্তি উচ্ছেদ করতে ব্যর্থ হয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই আগুন লাগানো হয়েছে। এ জন্য তাঁরা স্থানীয় সাংসদ আসলামুল হকের লোকজনকে দায়ী করেছেন। তবে সাংসদ আসলামুল তা অস্বীকার করেছেন।
হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জায়গায় গড়ে ওঠা এই বস্তি উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার পুলিশের সঙ্গে বস্তিবাসীর কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন আহত হন। পরে দুপুরে হাইকোর্ট ওই বস্তি উচ্ছেদ কার্যক্রমে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিলে আংশিক উচ্ছেদ করে ফিরে যান ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও পুলিশ। এই ইনস্টিটিউট গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংস্থা।
বস্তিবাসীরা বলেছেন, বস্তির ৮ নম্বর অংশের একটি টিনের ঘর থেকে গতকাল সকাল পৌনে ১০টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা আশপাশের ঘর ও দোকানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে বস্তিবাসীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ফায়ার সার্ভিসকেও খবর দেওয়া হয়। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের মিরপুর স্টেশন থেকে দুটি ইউনিট এলেও বস্তিতে ঢোকার মুখে বাধা পায়। মাথায় লাল কাপড় বাঁধা একদল তরুণ গাড়ি দুটিকে ঢুকতে বাধা দেন। পরে বেলা ১১টার দিকে গাড়ি দুটি ঢুকে আগুন নেভায়। কিন্তু এরই মধ্যে বস্তির ২১টি ঘর ও ৯টি দোকান পুড়ে যায়। আগুন লাগার পরপরই বাসিন্দাদের অনেকে ঘরে ঢুকে মালামাল বের করে আনেন।
বস্তির কমিউনিটি বেসড অর্গানাইজেশনের (সিবিও) সাধারণ সম্পাদক মো. হান্নান আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, বস্তি উচ্ছেদ করতে ব্যর্থ হয়ে পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেউ এই আগুন লাগিয়েছে বলে তাঁদের সন্দেহ।
আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি ঘরের বাসিন্দা মো. ইউসুফ বলেন, বস্তিতে ঢোকার মুখে মাথায় লাল কাপড় বাঁধা কিছু তরুণ বাধা না দিলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আরও আগে আসতে পারত। এতে ক্ষয়ক্ষতি কম হতো।
ঘটনাস্থলে যাওয়ার সময় বাধা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের মিরপুর স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল আরেফিন। তবে কারা বাধা দিয়েছেন, তা জানাতে পারেননি তিনি।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘর ও দোকানের টিন কুঁকড়ে আছে। বেড়ার বাঁশের কিছু পোড়া অংশ পড়ে আছে। পোড়া জিনিসপত্র থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত কেউ কেউ পুড়ে যাওয়া জিনিসপত্রের মধ্যে অক্ষত জিনিস খুঁজছিলেন। কেউ কেউ মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে আহাজারি করছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, আগুন লাগিয়ে তাঁদের থাকার ঘর কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আগুন থেকে রক্ষা পাওয়া মালামাল খোলা আকাশের নিচে রয়েছে। অনেকে সেগুলোর পাশে বসে আছেন। তাঁদেরই একজন জ্যোৎস্না বেগম, কোলে তাঁর শিশুসন্তান।
বস্তিবাসীর অভিযোগ, উচ্ছেদ করতে ব্যর্থ হয়ে আগুন লাগানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বস্তিতে ঢুকতে বাধা দেয় একদল তরুণ।
পুড়ে যাওয়া একটি ঘরে থাকতেন হাজেরা বিবি। বাসাবাড়ির ময়লা টানার কাজ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘কোর্ট মানা করছে, তাই ভাঙল না। ভাবছিলাম, মাথা গোঁজার ঠাঁই রক্ষা পাইছে। কিন্তু আগুনে সব শ্যাষ।’
বস্তির বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, পুলিশ ও হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্থানীয় সাংসদ আসলামুল হকের লোকজন বৃহস্পতিবার উচ্ছেদে অংশ নিয়েছিলেন। ওই লোকজনই বস্তিতে আগুন দিয়েছেন।
এই অভিযোগ অস্বীকার করে সাংসদ আসলামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বস্তির জায়গা একটি সরকারি সংস্থার। তারা উচ্ছেদ করছে। এখানে আমার তো কোনো সম্পর্ক নেই। অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে, বললেই হবে না। বস্তির লোকজন যে অভিযোগ করেছে, তা ভিত্তিহীন।’
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ বলেছে, কীভাবে আগুনের সূত্রপাত, সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ভূঁইয়া মাহাবুব হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ১০টার দিকে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ঘটনাস্থলে যেতে কেউ বাধা দিয়েছে কি না, পুলিশের তা জানা নেই। যদি কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে লাগিয়ে থাকে, তাদের ধরা হবে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং দুই বস্তিবাসী এই মামলার বাদী এবং গত বৃহস্পতিবার ড. কামাল হোসেন ও সারা হোসেন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। তাঁদের সঙ্গে থাকা আইনজীবী আবু ওবায়দুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহ থেকে বলা যায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের লোকজন মিলে বস্তিবাসীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ড গড়েছেন। আদালত স্থগিতাদেশ দেওয়ার বিষয়টি আইনজীবীর মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের তাৎক্ষণিক অবহিত করতে বলেছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নির্দেশ দিলেও পাঁচটা পর্যন্ত উচ্ছেদ চলে। আবার শুক্রবার রহস্যজনক আগুনের পর ফায়ার সার্ভিসের লোকজনকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এর আগে বস্তিবাসীদের থানায় তুলে নেওয়া, মুচলেকা আদায় এবং স্থানীয় সাংসদের ভূমিকা, পুলিশের নিষ্ক্রিয় অবস্থান—সবকিছু মিলে সহজে বোঝা যায় সেখানে কী ঘটছে। ওই আইনজীবী আরও বলেন, সুকৌশলে আদালতের নির্দেশ অবমাননা হয়েছে।
বস্তিবাসীর অভিযোগ, বস্তি উচ্ছেদ করতে ব্যর্থ হয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই আগুন লাগানো হয়েছে। এ জন্য তাঁরা স্থানীয় সাংসদ আসলামুল হকের লোকজনকে দায়ী করেছেন। তবে সাংসদ আসলামুল তা অস্বীকার করেছেন।
হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জায়গায় গড়ে ওঠা এই বস্তি উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার পুলিশের সঙ্গে বস্তিবাসীর কয়েক দফা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে কয়েকজন আহত হন। পরে দুপুরে হাইকোর্ট ওই বস্তি উচ্ছেদ কার্যক্রমে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দিলে আংশিক উচ্ছেদ করে ফিরে যান ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও পুলিশ। এই ইনস্টিটিউট গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংস্থা।
বস্তিবাসীরা বলেছেন, বস্তির ৮ নম্বর অংশের একটি টিনের ঘর থেকে গতকাল সকাল পৌনে ১০টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা আশপাশের ঘর ও দোকানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে বস্তিবাসীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ফায়ার সার্ভিসকেও খবর দেওয়া হয়। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের মিরপুর স্টেশন থেকে দুটি ইউনিট এলেও বস্তিতে ঢোকার মুখে বাধা পায়। মাথায় লাল কাপড় বাঁধা একদল তরুণ গাড়ি দুটিকে ঢুকতে বাধা দেন। পরে বেলা ১১টার দিকে গাড়ি দুটি ঢুকে আগুন নেভায়। কিন্তু এরই মধ্যে বস্তির ২১টি ঘর ও ৯টি দোকান পুড়ে যায়। আগুন লাগার পরপরই বাসিন্দাদের অনেকে ঘরে ঢুকে মালামাল বের করে আনেন।
বস্তির কমিউনিটি বেসড অর্গানাইজেশনের (সিবিও) সাধারণ সম্পাদক মো. হান্নান আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, বস্তি উচ্ছেদ করতে ব্যর্থ হয়ে পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কেউ এই আগুন লাগিয়েছে বলে তাঁদের সন্দেহ।
আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি ঘরের বাসিন্দা মো. ইউসুফ বলেন, বস্তিতে ঢোকার মুখে মাথায় লাল কাপড় বাঁধা কিছু তরুণ বাধা না দিলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আরও আগে আসতে পারত। এতে ক্ষয়ক্ষতি কম হতো।
ঘটনাস্থলে যাওয়ার সময় বাধা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের মিরপুর স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল আরেফিন। তবে কারা বাধা দিয়েছেন, তা জানাতে পারেননি তিনি।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘর ও দোকানের টিন কুঁকড়ে আছে। বেড়ার বাঁশের কিছু পোড়া অংশ পড়ে আছে। পোড়া জিনিসপত্র থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত কেউ কেউ পুড়ে যাওয়া জিনিসপত্রের মধ্যে অক্ষত জিনিস খুঁজছিলেন। কেউ কেউ মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে আহাজারি করছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, আগুন লাগিয়ে তাঁদের থাকার ঘর কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আগুন থেকে রক্ষা পাওয়া মালামাল খোলা আকাশের নিচে রয়েছে। অনেকে সেগুলোর পাশে বসে আছেন। তাঁদেরই একজন জ্যোৎস্না বেগম, কোলে তাঁর শিশুসন্তান।
বস্তিবাসীর অভিযোগ, উচ্ছেদ করতে ব্যর্থ হয়ে আগুন লাগানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের বস্তিতে ঢুকতে বাধা দেয় একদল তরুণ।
পুড়ে যাওয়া একটি ঘরে থাকতেন হাজেরা বিবি। বাসাবাড়ির ময়লা টানার কাজ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘কোর্ট মানা করছে, তাই ভাঙল না। ভাবছিলাম, মাথা গোঁজার ঠাঁই রক্ষা পাইছে। কিন্তু আগুনে সব শ্যাষ।’
বস্তির বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, পুলিশ ও হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্থানীয় সাংসদ আসলামুল হকের লোকজন বৃহস্পতিবার উচ্ছেদে অংশ নিয়েছিলেন। ওই লোকজনই বস্তিতে আগুন দিয়েছেন।
এই অভিযোগ অস্বীকার করে সাংসদ আসলামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বস্তির জায়গা একটি সরকারি সংস্থার। তারা উচ্ছেদ করছে। এখানে আমার তো কোনো সম্পর্ক নেই। অনেকে অনেক কিছু বলতে পারে, বললেই হবে না। বস্তির লোকজন যে অভিযোগ করেছে, তা ভিত্তিহীন।’
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষ বলেছে, কীভাবে আগুনের সূত্রপাত, সে বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ভূঁইয়া মাহাবুব হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ১০টার দিকে তাঁরা আগুন লাগার খবর পান। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ঘটনাস্থলে যেতে কেউ বাধা দিয়েছে কি না, পুলিশের তা জানা নেই। যদি কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে লাগিয়ে থাকে, তাদের ধরা হবে।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং দুই বস্তিবাসী এই মামলার বাদী এবং গত বৃহস্পতিবার ড. কামাল হোসেন ও সারা হোসেন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। তাঁদের সঙ্গে থাকা আইনজীবী আবু ওবায়দুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহ থেকে বলা যায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের লোকজন মিলে বস্তিবাসীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ড গড়েছেন। আদালত স্থগিতাদেশ দেওয়ার বিষয়টি আইনজীবীর মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের তাৎক্ষণিক অবহিত করতে বলেছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নির্দেশ দিলেও পাঁচটা পর্যন্ত উচ্ছেদ চলে। আবার শুক্রবার রহস্যজনক আগুনের পর ফায়ার সার্ভিসের লোকজনকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এর আগে বস্তিবাসীদের থানায় তুলে নেওয়া, মুচলেকা আদায় এবং স্থানীয় সাংসদের ভূমিকা, পুলিশের নিষ্ক্রিয় অবস্থান—সবকিছু মিলে সহজে বোঝা যায় সেখানে কী ঘটছে। ওই আইনজীবী আরও বলেন, সুকৌশলে আদালতের নির্দেশ অবমাননা হয়েছে।
No comments