বাংলাদেশের জন্য জাপানের সবচেয়ে বড় ঋণ–সহায়তা by মাসাতো ওয়াতানাবে
মাসাতো ওয়াতানাবে |
বাংলাদেশকে প্রায় ৮ হাজার ৬০০ কোটি টাকা
দিচ্ছে জাপান। আজ এই ঋণচুক্তি সই হচ্ছে। এ উপলক্ষে প্রথম আলোর পাঠকদের
জন্য লেখাটি পাঠিয়েছেন ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে
প্রিয় ফুল শাপলা ও সাকুরার নামে, কিংবা পতাকার নকশায় সাদৃশ্যের মতো আরও নানা আঙ্গিকে অন্তর্নিহিত আছে জাপান ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব, যা কোনো কার্যকারণ ছাড়াই স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্তরিক। আরও গভীরে দেখলে, আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর তেনশিন ওকাকুরার প্রগাঢ় সাংস্কৃতিক বিনিময়ের উত্তরাধিকার, যা মানুষে মানুষে আত্মিক সংযোগ ঘটায় এবং হৃদয়ে এক অতুলনীয় কোমল জায়গা তৈরি করে, যাতে এখন আমরা নিজেদের মাঝে অনেক সাদৃশ্য খুঁজে পাই।
গত বছর বাংলাদেশ ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীদের দ্বিপক্ষীয় সফরের সময় শুরু হওয়া ‘সমন্বিত অংশীদারত্ব’ দুই দেশের পরীক্ষিত বন্ধুত্বকে আরও বৃহৎ পরিসরে নতুন করে উজ্জীবিত করেছে, যাতে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে ‘বিগ-বি’ বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্টের আওতায় আরও জোরদার দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা।
আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে জাপান সরকার তার ৩৬তম জাপানি ইয়েন ঋণ প্রকল্প ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার আওতায় ছয়টি প্রকল্পের জন্য সর্বমোট বরাদ্দ ১৩ হাজার ৩২৬ দশমিক ৫ কোটি ইয়েন (১১১.১ কোটি মার্কিন ডলার), যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। নিঃসন্দেহে এযাবৎকালের বাংলাদেশের জন্য জাপানের সবচেয়ে বড় ঋণ-সহায়তা। এ ক্ষেত্রে ঋণের শর্তগুলো অতীব রেয়াতি, যার সুদের হার এবং পরিশোধকাল যথাক্রমে বার্ষিক ০.০১% এবং ৪০ বছর। এই ছয়টি প্রকল্প হলো: ১. প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধিকরণ; ২. ঢাকা-চট্টগ্রাম পাওয়ার গ্রিড শক্তিশালীকরণ; ৩. শহুরে ভবনের নিরাপত্তা উন্নয়ন; ৪. সেতু উন্নয়ন; ৫. মাতৃস্বাস্থ্য, নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং ৬. স্থানীয় শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম পাওয়ার গ্রিড শক্তিশালীকরণ প্রকল্প মাতারবাড়ী সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রকে পরিপূর্ণ করবে, যা সারা দেশের বৃহত্তম শহরগুলোতে দক্ষ জ্বালানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রেরণে সহায়তা করবে। প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে, যা উৎপাদন খাতের বিবর্তন ত্বরান্বিত করবে এবং যা একটি উচ্চ মানসম্পন্ন আঞ্চলিক সরবরাহ কেন্দ্র হবে। সংক্ষিপ্ত আকারে, ৩৬তম ইয়েন ঋণ প্রকল্প, বিগ-বি পদক্ষেপের উন্নয়নের মাধ্যমে সহায়তা করবে, যা আমাদের ব্যাপক অংশীদারত্ব যৌথ পদক্ষেপ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে এবং বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে এবং মর্যাদা অর্জনে সহায়তা করবে।
এই আকাঙ্ক্ষা পূরণ বাংলাদেশের জন্য তার সামাজিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। স্বাস্থ্য খাতে জাপান মা ও শিশুস্বাস্থ্যের ওপর জোর দিয়েছে। এই ক্ষেত্রে ‘মা, নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প’ এমন একটি পদ্ধতি, যা প্রশাসন ও নাগরিক উভয়কে সচল করবে। ‘উপজেলা সরকার ও উন্নয়ন প্রকল্প’ স্থানীয় সরকারের পক্ষে স্থানীয় অধিবাসীদের আরও ক্ষমতাবান করবে, যা সরকারকে মাঠপর্যায়ে কাজ করার জন্য আরও দ্রুত সাড়া দিতে ও সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করবে।
এই প্রকল্পগুলো সামগ্রিকভাবে স্ব স্ব ক্ষেত্রে গুরুত্বের দাবিদার। এবং সুসমন্বিত হলে বিগ-বির সমান্তরালে একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবে, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে নগর ও বেসরকারি খাতে উন্নয়ন উৎসাহিত করতে যোগাযোগ ও স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহের উন্নতি করা।
বাংলাদেশের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এগিয়ে চলা দীর্ঘ সফরে সুসময়ে-দুঃসময়ে জাপান সব সময় পাশে থাকবে। আমি নিশ্চিত, ৩৬তম ইয়েন লোন প্যাকেজ বাংলাদেশকে কবিগুরুর দেশপ্রেমে সিক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় আরও একধাপ এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
প্রিয় ফুল শাপলা ও সাকুরার নামে, কিংবা পতাকার নকশায় সাদৃশ্যের মতো আরও নানা আঙ্গিকে অন্তর্নিহিত আছে জাপান ও বাংলাদেশের বন্ধুত্ব, যা কোনো কার্যকারণ ছাড়াই স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্তরিক। আরও গভীরে দেখলে, আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর তেনশিন ওকাকুরার প্রগাঢ় সাংস্কৃতিক বিনিময়ের উত্তরাধিকার, যা মানুষে মানুষে আত্মিক সংযোগ ঘটায় এবং হৃদয়ে এক অতুলনীয় কোমল জায়গা তৈরি করে, যাতে এখন আমরা নিজেদের মাঝে অনেক সাদৃশ্য খুঁজে পাই।
গত বছর বাংলাদেশ ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীদের দ্বিপক্ষীয় সফরের সময় শুরু হওয়া ‘সমন্বিত অংশীদারত্ব’ দুই দেশের পরীক্ষিত বন্ধুত্বকে আরও বৃহৎ পরিসরে নতুন করে উজ্জীবিত করেছে, যাতে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে ‘বিগ-বি’ বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্টের আওতায় আরও জোরদার দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা।
আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে জাপান সরকার তার ৩৬তম জাপানি ইয়েন ঋণ প্রকল্প ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার আওতায় ছয়টি প্রকল্পের জন্য সর্বমোট বরাদ্দ ১৩ হাজার ৩২৬ দশমিক ৫ কোটি ইয়েন (১১১.১ কোটি মার্কিন ডলার), যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। নিঃসন্দেহে এযাবৎকালের বাংলাদেশের জন্য জাপানের সবচেয়ে বড় ঋণ-সহায়তা। এ ক্ষেত্রে ঋণের শর্তগুলো অতীব রেয়াতি, যার সুদের হার এবং পরিশোধকাল যথাক্রমে বার্ষিক ০.০১% এবং ৪০ বছর। এই ছয়টি প্রকল্প হলো: ১. প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধিকরণ; ২. ঢাকা-চট্টগ্রাম পাওয়ার গ্রিড শক্তিশালীকরণ; ৩. শহুরে ভবনের নিরাপত্তা উন্নয়ন; ৪. সেতু উন্নয়ন; ৫. মাতৃস্বাস্থ্য, নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং ৬. স্থানীয় শাসনব্যবস্থা উন্নয়ন।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম পাওয়ার গ্রিড শক্তিশালীকরণ প্রকল্প মাতারবাড়ী সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রকে পরিপূর্ণ করবে, যা সারা দেশের বৃহত্তম শহরগুলোতে দক্ষ জ্বালানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রেরণে সহায়তা করবে। প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করবে, যা উৎপাদন খাতের বিবর্তন ত্বরান্বিত করবে এবং যা একটি উচ্চ মানসম্পন্ন আঞ্চলিক সরবরাহ কেন্দ্র হবে। সংক্ষিপ্ত আকারে, ৩৬তম ইয়েন ঋণ প্রকল্প, বিগ-বি পদক্ষেপের উন্নয়নের মাধ্যমে সহায়তা করবে, যা আমাদের ব্যাপক অংশীদারত্ব যৌথ পদক্ষেপ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে এবং বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে এবং মর্যাদা অর্জনে সহায়তা করবে।
এই আকাঙ্ক্ষা পূরণ বাংলাদেশের জন্য তার সামাজিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। স্বাস্থ্য খাতে জাপান মা ও শিশুস্বাস্থ্যের ওপর জোর দিয়েছে। এই ক্ষেত্রে ‘মা, নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প’ এমন একটি পদ্ধতি, যা প্রশাসন ও নাগরিক উভয়কে সচল করবে। ‘উপজেলা সরকার ও উন্নয়ন প্রকল্প’ স্থানীয় সরকারের পক্ষে স্থানীয় অধিবাসীদের আরও ক্ষমতাবান করবে, যা সরকারকে মাঠপর্যায়ে কাজ করার জন্য আরও দ্রুত সাড়া দিতে ও সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করবে।
এই প্রকল্পগুলো সামগ্রিকভাবে স্ব স্ব ক্ষেত্রে গুরুত্বের দাবিদার। এবং সুসমন্বিত হলে বিগ-বির সমান্তরালে একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবে, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে নগর ও বেসরকারি খাতে উন্নয়ন উৎসাহিত করতে যোগাযোগ ও স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহের উন্নতি করা।
বাংলাদেশের নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এগিয়ে চলা দীর্ঘ সফরে সুসময়ে-দুঃসময়ে জাপান সব সময় পাশে থাকবে। আমি নিশ্চিত, ৩৬তম ইয়েন লোন প্যাকেজ বাংলাদেশকে কবিগুরুর দেশপ্রেমে সিক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় আরও একধাপ এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
No comments