উপমহাদেশের রাজনীতিতে মেরূকরণ আসন্ন
সব
ঠিকঠাক থাকলে উপমহাদেশের রাজনীতিতে মেরূকরণ আসন্ন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদি ১৯তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে পাকিস্তান যাবেন বলে
ভারত তার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। তবে কূটনৈতিক সূত্রের মতে বাংলাদেশ এখনও
সিদ্ধান্ত নেয়নি। কারণ পাকিস্তান বাংলাদেশের কাছে এখনও পর্যন্ত
আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেনি। যদিও গত ৫ই নভেম্বর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছিলেন, সার্ক বৈঠক কখন হবে তার দিনক্ষণ এখনও
চূড়ান্ত হয়নি। তবে সার্ক সচিবালয়ের মাধ্যমে ভারতসহ সকল সদস্য রাষ্ট্রের
কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আফগানিস্তান ইতিমধ্যে এতে যোগদানের সিদ্ধান্ত
জানিয়ে দিয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে ওই বৈঠক হতে পারে বলেও কূটনৈতিক সূত্র
আভাস দিয়েছে।
ঢাকার কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সংঘটিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার বিষয়ে সাম্প্রতিক পাকিস্তানি মিথ্যাচারের পটভূমিতে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে যখন টানাপড়েন চলছে তখন ইসলামাবাদ থেকে কাকতালীয়ভাবে গত সপ্তাহে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ঘোষণা দেন যে, মোদি পাকিস্তান সফর করবেন। এটা লক্ষণীয় যে, ভারত এবারে গোড়া থেকেই সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে চলেছে। গত জুলাইয়ে রাশিয়ার উফ শহরে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) এর শীর্ষ সম্মেলনকালে মোদি-নওয়াজ বৈঠকে মিলিত হন। ১০ই জুলাই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস. জয়শঙ্কর এবং তার পাকিস্তানি প্রতিপক্ষ আজিজ আহমেদ চৌধুরী এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয় যে, সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে নওয়াজের আমন্ত্রণ মোদি গ্রহণ করেছেন।
গত ৮ই ডিসেম্বর পাকিস্তান সফররত ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ‘‘শুরুটা ভারতের প্রধানমন্ত্রীই করছেন। আগামী বছরেই তিনি যাচ্ছেন পাকিস্তান সফরে ‘সার্ক’ সম্মেলনে যোগ দিতে। ওই সময় আমিও আসবো প্রধানমন্ত্রীজীর সঙ্গে।’’
উল্লেখ্য, সার্ক সনদ অনুযায়ী কোনো একটি দেশের সরকার বা নির্বাহী প্রধান সম্মেলনে যোগ দিতে অস্বীকার করলে সার্ক শীর্ষ বৈঠক করা সম্ভব নয়। ২০০৪ সালে ‘সার্ক’ জোটের সম্মেলনে যোগ দিতেই ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন ভারতের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। সেটাই ছিল কোনো ভারতীয় শীর্ষ নেতার শেষ পাকিস্তান সফর।
ভারতের মিডিয়া বলেছে, বন্ধুত্বের হাতটা ভারতই প্রথম বাড়িয়ে দিতে চাইলো এই উপমহাদেশে শান্তির জন্য। দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তোলাই এর লক্ষ্য। আগামী বছরেই পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১৫ বছর পর এই প্রথম কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন পাকিস্তানে। ‘সার্ক’ জোটের সম্মেলনে যোগ দিতে।
বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ইসলামাবাদে গিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি জোর দিয়েছেন ভারতীয় উপমহাদেশ সহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করার ওপরে। আর সেই লক্ষ্যে আগামী বছরেই পাকিস্তান, চীন, আফগানিস্তান সহ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর বিদেশমন্ত্রীদের ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানালেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। ইসলামাবাদে সুষমা টুইট করেছেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উন্নয়নের তাগিদ দিয়ে।
আফগানিস্তানের উন্নয়ন নিয়ে গত সপ্তাহে ইসলামাবাদে ১৪টি দেশের অংশগ্রহণে ‘হার্ট অফ এশিয়া সম্মেলনে’র পঞ্চম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ভারতের বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘দীর্ঘ সময়ের মধ্য দিয়ে গিয়ে আমরা এখন অনেক পরিণত হয়েছি। আমাদের আত্মবিশ্বাসও অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরাই প্রস্তাব দিচ্ছি, পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তোলার জন্য যা যা করণীয়, তা করা হোক। সেটা যত দ্রুত করা যায় ততই ভালো। তবে আমাদের কোনো ব্যস্ততা নেই। পাকিস্তান তার জন্য যতটা সময় চায়, আমরা সেই সময় দিতে রাজি আছি। দক্ষিণ এশিয়ায় সবক’টি দেশের মধ্যেই পণ্যের আদান-প্রদান ও ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বাড়ানো প্রয়োজন। তার জন্য যে সব বাধা রয়েছে, সেগুলো সরানোর জন্য এই অঞ্চলের সবক’টি দেশকেই আন্তরিক ভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’’ তিনি আন্তঃসার্ক কানেকটিভিটি ও ট্রানজিটের ওপর জোর দিয়েছেন।
পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান থেকে ভারতে পণ্য আসার ব্যাপারে ইসলামাবাদ যাতে আপত্তি না করে, তার জন্যও এ দিন অনুরোধ জানান ভারতের বিদেশমন্ত্রী।
আফগানিস্তান নিয়ে ‘হার্ট অফ এশিয়া সম্মেলন’-এর পঞ্চম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে গত ৮ই ডিসেম্বর ইসলামাবাদে পৌঁছান ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। অতিথিদের সম্মানে দেয়া নৈশভোজে গতকাল ভারতের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বেশকিছু ক্ষণ আলোচনা হয় পাক বিদেশমন্ত্রী সরতাজ আজিজের। পরে ওই সম্মেলনে সুষমার পাশের আসনটিতে বসে থাকতে দেখা যায় পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীকে। তিন বছর পর এই প্রথম ভারতের কোনো বিদেশমন্ত্রী গেলেন ইসলামাবাদে।
ওই সম্মেলন চলার সময়ে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গেও আলাদা ভাবে কথা বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। সূত্রের খবর, কাশ্মীরের মতো কয়েকটি বিতর্কিত ইস্যু নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ঢাকার পর্যবেক্ষকরা বলেন, বিজেপি সরকারের আমলে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে এরকম শান্তিপূর্ণ আলোচনা অত্যন্ত বিরল। নব্বইয়ের দশকে একাধিকবার এই কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করেই দুই দেশ মুখ দেখাদেখি বন্ধ রেখেছে। এবার বিরাট ব্যতিক্রম।
উল্লেখ্য যে, ১৯৮৫ সালে প্রথম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হয়। এই কাশ্মীর প্রশ্নে অন্তত ৫টি সার্ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। গত ৩১ বছরে সার্ক সামিট হওয়ার কথা ৩১টি। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ১৮টি। এক ডজন সার্ক সম্মেলন প্রধানত দুই দেশের বৈরিতায় ভেস্তে গেছে।
সুষমা বলেছেন, ‘‘দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও জোরদার করা আর সেই প্রয়াসকে আরও দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়েই আমি ইসলামাবাদে এসেছি।’’
কিছু দিন থমকে থাকার পর মূলত ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগেই সম্প্রতি দু’দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক হয় ব্যাংককে। সেই বৈঠকে জম্মু-কাশ্মীর, সীমান্ত সমস্যা, সন্ত্রাস দমনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে ঘণ্টা চারেকের বৈঠক হয় দু’দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে। পরে তা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে যৌথ বিবৃতিও দেয়া হয়।
ঢাকার পর্যবেক্ষকরা বলেন, দুই দেশের দুই দক্ষিণপন্থি সরকারের মধ্যকার এরকম দহরম মহরম দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের মধ্যে সামনের দিনগুলোতে কি প্রভাব ফেলে সেটা দেখার জন্য অনেকেই আগ্রহী থাকবেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক আপাতত সব থেকে নিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে বলে মনে করা হয়। অনেকে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও বলছেন।
ঢাকার কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সংঘটিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার বিষয়ে সাম্প্রতিক পাকিস্তানি মিথ্যাচারের পটভূমিতে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে যখন টানাপড়েন চলছে তখন ইসলামাবাদ থেকে কাকতালীয়ভাবে গত সপ্তাহে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ঘোষণা দেন যে, মোদি পাকিস্তান সফর করবেন। এটা লক্ষণীয় যে, ভারত এবারে গোড়া থেকেই সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে চলেছে। গত জুলাইয়ে রাশিয়ার উফ শহরে অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) এর শীর্ষ সম্মেলনকালে মোদি-নওয়াজ বৈঠকে মিলিত হন। ১০ই জুলাই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস. জয়শঙ্কর এবং তার পাকিস্তানি প্রতিপক্ষ আজিজ আহমেদ চৌধুরী এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয় যে, সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে নওয়াজের আমন্ত্রণ মোদি গ্রহণ করেছেন।
গত ৮ই ডিসেম্বর পাকিস্তান সফররত ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ‘‘শুরুটা ভারতের প্রধানমন্ত্রীই করছেন। আগামী বছরেই তিনি যাচ্ছেন পাকিস্তান সফরে ‘সার্ক’ সম্মেলনে যোগ দিতে। ওই সময় আমিও আসবো প্রধানমন্ত্রীজীর সঙ্গে।’’
উল্লেখ্য, সার্ক সনদ অনুযায়ী কোনো একটি দেশের সরকার বা নির্বাহী প্রধান সম্মেলনে যোগ দিতে অস্বীকার করলে সার্ক শীর্ষ বৈঠক করা সম্ভব নয়। ২০০৪ সালে ‘সার্ক’ জোটের সম্মেলনে যোগ দিতেই ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন ভারতের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। সেটাই ছিল কোনো ভারতীয় শীর্ষ নেতার শেষ পাকিস্তান সফর।
ভারতের মিডিয়া বলেছে, বন্ধুত্বের হাতটা ভারতই প্রথম বাড়িয়ে দিতে চাইলো এই উপমহাদেশে শান্তির জন্য। দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তোলাই এর লক্ষ্য। আগামী বছরেই পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১৫ বছর পর এই প্রথম কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন পাকিস্তানে। ‘সার্ক’ জোটের সম্মেলনে যোগ দিতে।
বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ইসলামাবাদে গিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি জোর দিয়েছেন ভারতীয় উপমহাদেশ সহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করার ওপরে। আর সেই লক্ষ্যে আগামী বছরেই পাকিস্তান, চীন, আফগানিস্তান সহ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর বিদেশমন্ত্রীদের ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানালেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। ইসলামাবাদে সুষমা টুইট করেছেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উন্নয়নের তাগিদ দিয়ে।
আফগানিস্তানের উন্নয়ন নিয়ে গত সপ্তাহে ইসলামাবাদে ১৪টি দেশের অংশগ্রহণে ‘হার্ট অফ এশিয়া সম্মেলনে’র পঞ্চম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ভারতের বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘দীর্ঘ সময়ের মধ্য দিয়ে গিয়ে আমরা এখন অনেক পরিণত হয়েছি। আমাদের আত্মবিশ্বাসও অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরাই প্রস্তাব দিচ্ছি, পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তোলার জন্য যা যা করণীয়, তা করা হোক। সেটা যত দ্রুত করা যায় ততই ভালো। তবে আমাদের কোনো ব্যস্ততা নেই। পাকিস্তান তার জন্য যতটা সময় চায়, আমরা সেই সময় দিতে রাজি আছি। দক্ষিণ এশিয়ায় সবক’টি দেশের মধ্যেই পণ্যের আদান-প্রদান ও ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বাড়ানো প্রয়োজন। তার জন্য যে সব বাধা রয়েছে, সেগুলো সরানোর জন্য এই অঞ্চলের সবক’টি দেশকেই আন্তরিক ভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’’ তিনি আন্তঃসার্ক কানেকটিভিটি ও ট্রানজিটের ওপর জোর দিয়েছেন।
পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তান থেকে ভারতে পণ্য আসার ব্যাপারে ইসলামাবাদ যাতে আপত্তি না করে, তার জন্যও এ দিন অনুরোধ জানান ভারতের বিদেশমন্ত্রী।
আফগানিস্তান নিয়ে ‘হার্ট অফ এশিয়া সম্মেলন’-এর পঞ্চম মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে গত ৮ই ডিসেম্বর ইসলামাবাদে পৌঁছান ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। অতিথিদের সম্মানে দেয়া নৈশভোজে গতকাল ভারতের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বেশকিছু ক্ষণ আলোচনা হয় পাক বিদেশমন্ত্রী সরতাজ আজিজের। পরে ওই সম্মেলনে সুষমার পাশের আসনটিতে বসে থাকতে দেখা যায় পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীকে। তিন বছর পর এই প্রথম ভারতের কোনো বিদেশমন্ত্রী গেলেন ইসলামাবাদে।
ওই সম্মেলন চলার সময়ে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গেও আলাদা ভাবে কথা বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। সূত্রের খবর, কাশ্মীরের মতো কয়েকটি বিতর্কিত ইস্যু নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ঢাকার পর্যবেক্ষকরা বলেন, বিজেপি সরকারের আমলে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে এরকম শান্তিপূর্ণ আলোচনা অত্যন্ত বিরল। নব্বইয়ের দশকে একাধিকবার এই কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করেই দুই দেশ মুখ দেখাদেখি বন্ধ রেখেছে। এবার বিরাট ব্যতিক্রম।
উল্লেখ্য যে, ১৯৮৫ সালে প্রথম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হয়। এই কাশ্মীর প্রশ্নে অন্তত ৫টি সার্ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। গত ৩১ বছরে সার্ক সামিট হওয়ার কথা ৩১টি। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ১৮টি। এক ডজন সার্ক সম্মেলন প্রধানত দুই দেশের বৈরিতায় ভেস্তে গেছে।
সুষমা বলেছেন, ‘‘দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও জোরদার করা আর সেই প্রয়াসকে আরও দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়েই আমি ইসলামাবাদে এসেছি।’’
কিছু দিন থমকে থাকার পর মূলত ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগেই সম্প্রতি দু’দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক হয় ব্যাংককে। সেই বৈঠকে জম্মু-কাশ্মীর, সীমান্ত সমস্যা, সন্ত্রাস দমনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে ঘণ্টা চারেকের বৈঠক হয় দু’দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে। পরে তা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে যৌথ বিবৃতিও দেয়া হয়।
ঢাকার পর্যবেক্ষকরা বলেন, দুই দেশের দুই দক্ষিণপন্থি সরকারের মধ্যকার এরকম দহরম মহরম দক্ষিণ এশীয় প্রতিবেশীদের মধ্যে সামনের দিনগুলোতে কি প্রভাব ফেলে সেটা দেখার জন্য অনেকেই আগ্রহী থাকবেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক আপাতত সব থেকে নিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে বলে মনে করা হয়। অনেকে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও বলছেন।
No comments