এক্স-রে যন্ত্র তিন বছর ধরে নষ্ট থাকে কীভাবে?
উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। বিশেষ করে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর নানা সমস্যা ও অব্যবস্থাপনার খবর পত্রিকার আঞ্চলিক পাতাগুলোতে নিয়মিতই মিলছে। প্রথম আলোর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঠকদের জন্য প্রকাশিত নিয়মিত আয়োজন ‘আমার চট্টগ্রাম’-এ একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে সাতকানিয়া উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে। সেখানকার এক্স-রে যন্ত্রটি তিন বছর ধরে নষ্ট হয়ে রয়েছে। এটা একটি উপজেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তথ্য হলেও এর মধ্য দিয়ে সামগ্রিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্যচিত্র ও চিকিৎসাসেবা সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া যায়। উপজেলা পর্যায়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠী সাধারণভাবে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা সরকারি চিকিৎসাসেবার ওপর নির্ভরশীল। এখানে কম অর্থে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার কথা। কিন্তু একটি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এক্স-রে যন্ত্রের মতো একটি জরুরি চিকিৎসা-সহায়ক যন্ত্র নষ্ট থাকলে জনগণকে বাধ্য হয়ে বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রে গিয়ে কাজটি সারতে হয়। একটি এক্স-রে যন্ত্র নষ্ট হতেই পারে, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তা তিন বছর ধরে নষ্ট অবস্থায় থাকে কী করে?
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৪ সালে এক্স-রে যন্ত্রটি চালু হওয়ার প্রায় পাঁচ বছর পর প্রথম বিকল হয়। এরপর দ্বিতীয় দফা নষ্ট হয় ২০১৩ সালে। এরপর বেশ কয়েক দফা চেষ্টা করেও যন্ত্রটিকে আর চালু করা যায়নি। তিন বছর ধরে মেশিনটি কক্ষে তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার জবাব হচ্ছে, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হয়েছে কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, এক্স-রে যন্ত্রের মতো রোগনির্ণয়ের একটি প্রাথমিক যন্ত্র ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলতে পারে না। সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের যন্ত্রটি হয় মেরামত করতে হবে, অথবা যদি তা মেরামত অযোগ্য বিবেচিত হয়, তবে নতুন এক্স-রে যন্ত্রের ব্যবস্থা করতে হবে। হতাশার ব্যাপার হচ্ছে, তিন বছর ধরে বিষয়টি ঝুলে রয়েছে এবং দুটি পদক্ষেপের একটিও কার্যকর হয়নি। এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ‘ঊর্ধ্বতন’ কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে কি?
No comments