নিঃসঙ্গ শেরপা
‘বঙ্গবন্ধু
পুরো জাতির নেতা, সকল মানুষের ও সকল রাজনৈতিক দলের। আমরাই কিন্তু
বঙ্গবন্ধুকে বিভক্ত করেছি; আর বঙ্গবন্ধুকে বিভক্ত করে নিজেদেরই খাটো করেছি।
আমাদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে আটকে রাখা ঠিক হচ্ছে না। মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে
ভারতে কোন বিতর্ক নেই, পাকিস্তানে জিন্নাহকে নিয়ে কোন বিতর্ক নেই, আমেরিকায়
ওয়াশিংটনকে নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। তাহলে কেন বঙ্গবন্ধু একটি রাজনৈতিক দলের
মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবেন?’
আপনি অবাক হতে পারেন? কিন্তু এই বক্তব্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলামেরই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। নানা কারণেই বাংলাদেশের রাজনীতির এক ব্যতিক্রম চরিত্র। জাতীয় চার নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের রক্ত তার ধমনিতে প্রবাহিত। যে রক্ত কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করে না। পিতার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতিতে আসা। ঐতিহ্যবাহী সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবেই অভিষেক। নেতৃত্ব দিয়েছেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত। ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর কারাগারে তার পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর দেশ ত্যাগ করেন তিনি। চলে যান বৃটেনে। তবে প্রবাসেও রাজনীতি তাকে ছাড়েনি। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার চেষ্টা করে যান তিনি। দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে ১৯৯৬ সালে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন এবং জয়ী হন সৈয়দ আশরাফ। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তবে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সবচেয়ে বেশি লাইম লাইটে আসেন জরুরি জমানায়। সেসময় জিল্লুর রহমানের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আওয়ামী লীগের কাণ্ডারির ভূমিকা পালন করেন তিনি। দলের দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের বাঘা বাঘা নেতারা যখন মাইনাস ফর্মুলা বাস্তবায়নে ব্যস্ত সেসময় দলীয় সভানেত্রীর পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন আশরাফ। মূলত পর্দার অন্তরালে আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রধান ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। এর পুরস্কারও পান। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পড়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ওপর। পরবর্তী সময়ে অবশ্য দলের ভেতরে দুটি অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। বলা হয়, তিনি মন্ত্রণালয়ে এবং দলে সময় দেন না। যদিও সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পক্ষে অনেকে যুক্তি দেন মূলত তদবিরবাজদের কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্যই তিনি মন্ত্রণালয়ে অনিয়মিত ছিলেন। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের আগ মুহূর্তে সংকটময় পরিস্থিতির সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। যদিও তার সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি। সে গল্প আলাদা।
দলীয় ও সরকারি কার্যক্রমে গড় হাজিরের অভিযোগের মধ্যে গত ৭ই জুলাই একনেকের বৈঠকের পর সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে নিয়ে শুরু হয় নানা নাটকীয়তা। গুঞ্জন শুরু হয় তাকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। গুঞ্জনকে সত্যি করে ৯ই জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাকে দপ্তরবিহীন করা হয়। অনেক বিতর্কিত মন্ত্রীকে বহাল রেখে সৈয়দ আশরাফকে অপসারণের এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের ভেতর-বাইরে তোলপাড় তৈরি হয়। সবাই একবাক্যে বলেন, যাই হোক সৈয়দ আশরাফতো আর বিতর্কিত ছিলেন না। মন্ত্রিসভার বৈঠকে তার গরহাজিরের অভিযোগেরও সত্যতা মিলেনি। বরং জানা যায়, সব বিষয়েই সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল তার। যদিও মন্ত্রণালয়ে তিনি কম যেতেন। তবে এ কারণে মন্ত্রণালয়ের কাজে কখনও স্থবিরতা আসেনি। সব প্রকার ফাইলেই তার সই মিলেছে। তবে তদবিরকারীরা তাকে না পেয়ে হয়তো হতাশ হতেন। তার বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতির অভিযোগ ছিল না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন দুর্নীতির অভিযুক্ত মুক্ত রাজনীতিবিদ কমই। তবে পদ হারানোর পরও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সরব রাখেন আশরাফ। লম্বা ছুটিতে লন্ডন চলে যাওয়ার কথা থাকলেও সে সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। অনেকটা নাটকীয়ভাবেই আবারও প্রভাবশালী মন্ত্রীর পদ পান তিনি। ১৬ই জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে।
পুনরায় মন্ত্রী হওয়ার পর সরকার এবং দল- দুই জায়গাতেই পূর্বের তুলনায় বহুগুণ সক্রিয় হয়েছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। প্রতিদিনই দল এবং সরকারের কোন না কোন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ৪০তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ৪০ দিন ব্যাপি বৃহৎ কর্মসূচি পালনে সৈয়দ আশরাফ সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ‘বঙ্গবন্ধু কোন দলের নন, তিনি সকলের’ এ আপ্তবাক্যকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুকে ‘সার্বজনীন’ করতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছেন তিনি। সকলে মিলে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকী পালনেরও আহ্বান জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ভিন্ন মতাবলম্বী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ তার এই ইতিবাচক উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন। গত ২৩শে জুলাই সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সৈয়দ আশরাফ। সাংবাদিকরা তাকে পরামর্শ দেন বঙ্গবন্ধুকে যেন দলের গণ্ডির বাইরে নিয়ে আসা হয়। এরপর এক মাসের বেশি সময় ধরে জাতীয় শোকদিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে ক্লান্তিহীন ছুটে গেছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি আশাপ্রকাশ করেছেন, আগামী শোকদিবস সকল দল মিলে পালন করতে পারবেন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতির পট পরিক্রমায় সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম চিন্তা-চেতনায়-মননে নিজেকে আলাদা করেছেন অন্যদের থেকে। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির এক নিঃসঙ্গ শেরপা।
আপনি অবাক হতে পারেন? কিন্তু এই বক্তব্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলামেরই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। নানা কারণেই বাংলাদেশের রাজনীতির এক ব্যতিক্রম চরিত্র। জাতীয় চার নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের রক্ত তার ধমনিতে প্রবাহিত। যে রক্ত কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করে না। পিতার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতিতে আসা। ঐতিহ্যবাহী সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবেই অভিষেক। নেতৃত্ব দিয়েছেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত। ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর কারাগারে তার পিতা সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জাতীয় চার নেতার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর দেশ ত্যাগ করেন তিনি। চলে যান বৃটেনে। তবে প্রবাসেও রাজনীতি তাকে ছাড়েনি। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার চেষ্টা করে যান তিনি। দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে ১৯৯৬ সালে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন এবং জয়ী হন সৈয়দ আশরাফ। ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তবে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সবচেয়ে বেশি লাইম লাইটে আসেন জরুরি জমানায়। সেসময় জিল্লুর রহমানের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আওয়ামী লীগের কাণ্ডারির ভূমিকা পালন করেন তিনি। দলের দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের বাঘা বাঘা নেতারা যখন মাইনাস ফর্মুলা বাস্তবায়নে ব্যস্ত সেসময় দলীয় সভানেত্রীর পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেন আশরাফ। মূলত পর্দার অন্তরালে আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রধান ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। এর পুরস্কারও পান। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পড়ে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ওপর। পরবর্তী সময়ে অবশ্য দলের ভেতরে দুটি অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। বলা হয়, তিনি মন্ত্রণালয়ে এবং দলে সময় দেন না। যদিও সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পক্ষে অনেকে যুক্তি দেন মূলত তদবিরবাজদের কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্যই তিনি মন্ত্রণালয়ে অনিয়মিত ছিলেন। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের আগ মুহূর্তে সংকটময় পরিস্থিতির সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। যদিও তার সে প্রচেষ্টা সফল হয়নি। সে গল্প আলাদা।
দলীয় ও সরকারি কার্যক্রমে গড় হাজিরের অভিযোগের মধ্যে গত ৭ই জুলাই একনেকের বৈঠকের পর সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে নিয়ে শুরু হয় নানা নাটকীয়তা। গুঞ্জন শুরু হয় তাকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। গুঞ্জনকে সত্যি করে ৯ই জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাকে দপ্তরবিহীন করা হয়। অনেক বিতর্কিত মন্ত্রীকে বহাল রেখে সৈয়দ আশরাফকে অপসারণের এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের ভেতর-বাইরে তোলপাড় তৈরি হয়। সবাই একবাক্যে বলেন, যাই হোক সৈয়দ আশরাফতো আর বিতর্কিত ছিলেন না। মন্ত্রিসভার বৈঠকে তার গরহাজিরের অভিযোগেরও সত্যতা মিলেনি। বরং জানা যায়, সব বিষয়েই সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল তার। যদিও মন্ত্রণালয়ে তিনি কম যেতেন। তবে এ কারণে মন্ত্রণালয়ের কাজে কখনও স্থবিরতা আসেনি। সব প্রকার ফাইলেই তার সই মিলেছে। তবে তদবিরকারীরা তাকে না পেয়ে হয়তো হতাশ হতেন। তার বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতির অভিযোগ ছিল না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন দুর্নীতির অভিযুক্ত মুক্ত রাজনীতিবিদ কমই। তবে পদ হারানোর পরও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সরব রাখেন আশরাফ। লম্বা ছুটিতে লন্ডন চলে যাওয়ার কথা থাকলেও সে সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। অনেকটা নাটকীয়ভাবেই আবারও প্রভাবশালী মন্ত্রীর পদ পান তিনি। ১৬ই জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে।
পুনরায় মন্ত্রী হওয়ার পর সরকার এবং দল- দুই জায়গাতেই পূর্বের তুলনায় বহুগুণ সক্রিয় হয়েছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। প্রতিদিনই দল এবং সরকারের কোন না কোন কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর ৪০তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ৪০ দিন ব্যাপি বৃহৎ কর্মসূচি পালনে সৈয়দ আশরাফ সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ‘বঙ্গবন্ধু কোন দলের নন, তিনি সকলের’ এ আপ্তবাক্যকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুকে ‘সার্বজনীন’ করতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছেন তিনি। সকলে মিলে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকী পালনেরও আহ্বান জানাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ভিন্ন মতাবলম্বী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ তার এই ইতিবাচক উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন। গত ২৩শে জুলাই সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সৈয়দ আশরাফ। সাংবাদিকরা তাকে পরামর্শ দেন বঙ্গবন্ধুকে যেন দলের গণ্ডির বাইরে নিয়ে আসা হয়। এরপর এক মাসের বেশি সময় ধরে জাতীয় শোকদিবসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে ক্লান্তিহীন ছুটে গেছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি আশাপ্রকাশ করেছেন, আগামী শোকদিবস সকল দল মিলে পালন করতে পারবেন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতির পট পরিক্রমায় সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম চিন্তা-চেতনায়-মননে নিজেকে আলাদা করেছেন অন্যদের থেকে। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির এক নিঃসঙ্গ শেরপা।
No comments