পরকীয়ায় সব হারালেন শ্যামলী by রুদ্র মিজান
শ্যামলী
সরকারি চাকরি করেন। স্কুল পড়ুয়া একমাত্র সন্তানকে নিয়ে রাজধানীর ইন্দ্রিরা
রোডে থাকতেন তিনি। তার স্বামী থাকতেন মধ্যপ্রাচ্যে। স্বামীর এই দূরত্বটাই
কাল হয়ে দাঁড়ায় শ্যামলীর জীবনে। কারণ এই সুযোগে তার জীবনে জড়িয়ে যায় আনিস।
দীর্ঘদিন ছুটিয়ে প্রেম করেছেন আনিসের সঙ্গে। এই আনিসের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েই
জীবনের সর্বনাশ ঘটিয়েছেন এই নারী। এখন তার স্বামী নেই, আনিসও নেই। এখন
একলা চলছেন তিনি।
শুরুটা ছিলো স্মরণীয়। সময়টা ২০০৭ সাল। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পুড়ুয়া মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যেতেন তিনি। আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই দেখা হতো এক যুবকের সঙ্গে। সুঠামদেহী এই যুবক অপলক তার দিকে তাকিয়ে থাকতেন। কিছু একটা বোঝাতে চেষ্টা করতেন শ্যামলীকে। সুযোগ পেলেই এই যুবক যে তার সঙ্গে কথা বলবে এতে কোন সন্দেহ নেই। ত্রিশোর্ধ শ্যামলী তা বেশ উপভোগ করতেন। কিন্তু এসবে জড়ানোর কোন ইচ্ছে ছিলো না তখন। যুবকের আচরণে কলেজ জীবনের প্রথম বর্ষের দিনগুলো মনে পড়তো খুব। কিন্তু এখন সেই সময়, অবস্থান নেই। শ্যামলীর স্বামী আছে। সন্তান আছে। তিনি জড়াতে চান না কিছুতেই। যদিও যুবককের সঙ্গে কখনও কখনও দেখা না হলে কিছু খারাপ লাগে- তা অনুভব করেন। তবু তাকে পাত্তা দিতে রাজি না তিনি।
কিন্তু যুবক নাছোড়বান্দা। একদিন একদম কাছাকাছি দুজন। সেদিন বাসে চড়ে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে গুলশানে যাচ্ছিলেন তিনি। বাসে প্রচন্ড ভীড়। এরমধ্যেই তাকে উঠতে হয়। নারী সীটগুলো যাত্রীতে পূর্ণ দাঁড়িয়ে থাকেন। পাশে একটি সীট ছেড়ে যাত্রী নামেন। তাড়াহুড়া করে বসতেই দেখেন পাশের জন সেই যুবক। যুবকও চমকে উঠেন। তিনিও ভাবতে পারেননি এভাবে এই নারীর কাছাকাছি বসার সৌভাগ্য হবে তার। পথচলতে বারবার দেখার সুবাধে যুবকই জিজ্ঞাসা করেন, কেমন আছেন? তারপর পুরো পরিচয়, পরিবারে কে কে থাকেন.. কিছুই বাদ যায়নি তাদের আলাপচারিতায়। এই যুবকের নাম আনিস। কাজ করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মতিঝিলে। মহাখালীতে যানজটে আটকে যায় বাস। আনিস মুচকি হাসেন। ভালোই হলো, আপনার সঙ্গে আরও কিছু সময় কাটানো যাবে। নিজের অজান্তেই মিষ্টি হাসির আভা ছড়িয়ে যায় শ্যামলীর ঠোঁট থেকে। আনিস তাতেই আপ্লুত। শ্যামলীর ছোট্ট মেয়েটির গাল টেনে আদর করে দেন আনিস। গুলশান-১ নেমে যান শ্যামলী। আনিস জানালা দিয়ে হাত নেড়ে বিদায় জানান। জবাবে শ্যামলী মিষ্টি হাসি দেন।
এর দিন পরে মেয়েকে স্কুলে দিতে গেলে দেখা হয় আনিসের সঙ্গে। সেদিন পাশের কফি হাউসে বসেন দুজন। কফি পান করেন। ওই দিনই ফোন নম্বর চেয়ে নেন আনিস। তারপর থেকেই শ্যামলীর প্রতি দায়িত্বশীল আনিস। প্রতিদিনই ফোনে খোঁজ-খবর নেন। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে। প্রথমে অল্প সময়। পরে আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা পর্যন্ত। দীর্ঘ সময় কথা হয় তাদের। হাসি-তামাশা হয়। এরমধ্যেই প্রবাসী স্বামী কল দিয়ে ফোন ব্যস্ত পান দীর্ঘ সময়। পরে মিথ্যা কথা বলে রক্ষা পান শ্যামলী। বিষয়টি আনিসের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। পরবর্তীতে নতুন সংযোগসহ শ্যামলীকে একটি মোবাইলফোন উপহার দেন আনিস। ওই ফোনেই কথা হয় দুজনের। এই ফোনটি শুধুই আনিসের জন্য। আগের মোবাইলফোনে স্বামীসহ অন্যান্যরা কথা বলেন। আনিসের সঙ্গে কথা হয় গভীর রাত পর্যন্ত। বিশেষ করে বন্ধের দিনের আগের পুরো রাতই কথা বলে পার করে দেন তারা।
মোটরসাইকেলে করে শ্যামলীকে অফিসে পৌঁছে দেন। আবার বাসায় নিয়ে যান। বন্ধের দিন ছোট্ট মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তারা বেড়াতে যান বিভিন্নস্থানে। এভাবে আর ভালো লাগে না। কাছে পেতে ইচ্ছে করে দুজনকে দুজনেরই। অবিবাহিত আনিস জানান, শ্যামলীর স্বামী-সন্তান না থাকলে তাকে বিয়ে করতেন তিনি। এভাবে থাকা খুব কষ্টকর। তারপর থেকে মাঝে মাঝে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় সময় কাটাতেন আনিস ও শ্যামলী। বিশেষ করে শ্যামলীর মেয়েটি যখন স্কুল থাকতো। ওই সময়টাই বেছে নিতেন তারা। এভাবে চলতে থাকে কয়েক মাস। পরে কখনও কখনও রাতেও একসঙ্গে থাকতেন তারা। বিষয়টি বাড়ির প্রহরীর দৃষ্টি এড়াতে পারেনি। এক বিকালে শ্যামলীর কাছে জানতে চান, ম্যাডাম ওই লোকটি প্রায়ই বাসায় আসেন। তিনি কি হোন আপনার?
শ্যামলীর গলা শুকিয়ে যায়। অবশ্য সময় নেননি। ছটফট বলে দেন- আমার খালাতো ভাই। ঢাকাতেই থাকেন। আমার স্বামী এলে এ বাসাতেই থাকবেন তিনি। তারপর গতি বেড়ে যায় আনিস-শ্যামলীর প্রেমের। এরমধ্যে কক্সবাজারে দুই দিন ছিলেন তারা। অফিসের সহকর্মীদের সঙ্গে ভ্রমনে যাচ্ছেন অজুহাতে সন্তানকে বোনের বাসায় রেখে যান। সম্পর্কের বিষয়টি বেশি দিন গোপন কথা গোপন রাখতে পারেননি তিনি। ২০১০ সালে আসে বড় ঝড়টি। স্বামী তখন দেশে। স্বামীকে নিয়ে ব্যস্ত শ্যামলী। আনিসকে সময় দেওয়ার মতো সুযোগ কম। মাঝে-মাঝে অফিসের পাশে দেখা হয় তাদের। তা অল্প সময়ের জন্য। এমন পরিস্থিতি মেনে নিতে পারেন না আনিস। এরমধ্যেই গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন শ্যামলীর স্বামী। আনিসকে ফোনে খবরটি জানান শ্যামলী। দ্রুত শ্যামলীর বাসায় ছুটে যান আনিস। এর কিছু সময়ের মধ্যেই হঠাৎ ডাকা বাস ধর্মঘটের কারণে বাসায় ফিরে কলিং বেল চাপেন শ্যামলীর স্বামী। কিন্তু দরজা খোলা হয় না। আবার বেল চাপেন। এভাবে কয়েক মিনিট। তারপর দরজা খোলে দেন শ্যামলী। ড্রয়িংরুমে মেহমানের মতো বসে আছেন আনিস। চোখ বড় বড় হয়ে যায় শ্যামলীর স্বামীর। জানতে চান কে? সহকর্মী বলে পরিচয় দেন তিনি। তারপর ভেতরের কক্ষে গিয়ে এলোমেলো বিছানাটা চোখে পড়ে তার। বাসা থেকে বের হওয়ার আগেও যা গোছানো ছিলো। তারপর স্বামীর মুখে কোন রাঁ নেই।
এরমধ্যেই শ্যামলীর স্বামী খোঁজ নিতে শুরু করেন। পরদিন কথা বলেন বাড়ির প্রহরীর সঙ্গে। ওই রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রচন্ড বাকবিতন্ডা হয়। বাসা থেকে বের হয়ে ভাইয়ের বাসায় চয়ে যান। এর কিছুদিনের মধ্যেই শ্যামলীকে ডিভোর্স দেন তার স্বামী। ডিভোর্স লেটার হাতে পেয়ে আনিসের সঙ্গে দেখা করে তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন শ্যামলী। আনিস আমতা আমতা করেন। মাথা ঠান্ডা রাখতে বলেন। তারপর থেকেই আনিসের ফোন বন্ধ। যে বাসায় থাকতেন আনিস সেই বাসাতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। বাসার মালিক জানিয়েছেন কয়েক দিন আগেই বাসা ছেড়েছেন তিনি। আনিসের বাড়ি বরিশালের পটুয়াখালীতে। এরচেয়ে বেশি জানা নেই শ্যামলীর। আনিসের কর্মস্থল মতিঝিলে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের নাম কখনও জানতে চাননি তিনি।
এখন একমাত্র কন্যাকে নিয়ে ধানমন্ডির শঙ্করে বাস করেন এই নারী। তার প্রাক্তন স্বামী নতুন বিয়ে করেছেন। মেয়ের জন্য নির্দিষ্ট টাকা পাঠান তিনি। অন্যদিকে এখন আর আনিসকে খুঁজেন না শ্যামলী। শুধু চোখের জলে সিক্ত হন নিজের ভুলের কথা স্মরণ করে। স্বপ্ন দেখেন মেয়েকে নিয়ে। বলেন, আমার জীবন আমিই নষ্ট করেছি। আমার নিজেকে নিয়ে কোন স্বপ্ন নেই। আনিসের মতো ব্যক্তির খপ্পড়ে যেন কেউ না পড়েন এই কামনাই করেন তিনি। এ বিষয়ে হিইম্যান রিসোর্স এন্ড হেল্থ ফাউন্ডেশনের মহাসচিব আলমগীর সেলিম বলেন, প্রবাসীর স্ত্রী শুনলেই এক শ্রেণীর পুরুষ ওই নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়াতে চান। এটা অবশ্যয়ই ভালো উদ্দেশ্য না। মূলত জৈবিক উদ্দেশ্য থেকেই এটা হয়। এ থেকে সাবধান এবং সচেতন থাকতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার বন্ধন দৃঢ় হতে হবে। প্রবাসে থাকলেও স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগে সক্রিয় থাকা উচিত। দীর্ঘদিন দূরে না থাকাই ভালো বলে মনে করেন তিনি।
শুরুটা ছিলো স্মরণীয়। সময়টা ২০০৭ সাল। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পুড়ুয়া মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যেতেন তিনি। আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই দেখা হতো এক যুবকের সঙ্গে। সুঠামদেহী এই যুবক অপলক তার দিকে তাকিয়ে থাকতেন। কিছু একটা বোঝাতে চেষ্টা করতেন শ্যামলীকে। সুযোগ পেলেই এই যুবক যে তার সঙ্গে কথা বলবে এতে কোন সন্দেহ নেই। ত্রিশোর্ধ শ্যামলী তা বেশ উপভোগ করতেন। কিন্তু এসবে জড়ানোর কোন ইচ্ছে ছিলো না তখন। যুবকের আচরণে কলেজ জীবনের প্রথম বর্ষের দিনগুলো মনে পড়তো খুব। কিন্তু এখন সেই সময়, অবস্থান নেই। শ্যামলীর স্বামী আছে। সন্তান আছে। তিনি জড়াতে চান না কিছুতেই। যদিও যুবককের সঙ্গে কখনও কখনও দেখা না হলে কিছু খারাপ লাগে- তা অনুভব করেন। তবু তাকে পাত্তা দিতে রাজি না তিনি।
কিন্তু যুবক নাছোড়বান্দা। একদিন একদম কাছাকাছি দুজন। সেদিন বাসে চড়ে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে গুলশানে যাচ্ছিলেন তিনি। বাসে প্রচন্ড ভীড়। এরমধ্যেই তাকে উঠতে হয়। নারী সীটগুলো যাত্রীতে পূর্ণ দাঁড়িয়ে থাকেন। পাশে একটি সীট ছেড়ে যাত্রী নামেন। তাড়াহুড়া করে বসতেই দেখেন পাশের জন সেই যুবক। যুবকও চমকে উঠেন। তিনিও ভাবতে পারেননি এভাবে এই নারীর কাছাকাছি বসার সৌভাগ্য হবে তার। পথচলতে বারবার দেখার সুবাধে যুবকই জিজ্ঞাসা করেন, কেমন আছেন? তারপর পুরো পরিচয়, পরিবারে কে কে থাকেন.. কিছুই বাদ যায়নি তাদের আলাপচারিতায়। এই যুবকের নাম আনিস। কাজ করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মতিঝিলে। মহাখালীতে যানজটে আটকে যায় বাস। আনিস মুচকি হাসেন। ভালোই হলো, আপনার সঙ্গে আরও কিছু সময় কাটানো যাবে। নিজের অজান্তেই মিষ্টি হাসির আভা ছড়িয়ে যায় শ্যামলীর ঠোঁট থেকে। আনিস তাতেই আপ্লুত। শ্যামলীর ছোট্ট মেয়েটির গাল টেনে আদর করে দেন আনিস। গুলশান-১ নেমে যান শ্যামলী। আনিস জানালা দিয়ে হাত নেড়ে বিদায় জানান। জবাবে শ্যামলী মিষ্টি হাসি দেন।
এর দিন পরে মেয়েকে স্কুলে দিতে গেলে দেখা হয় আনিসের সঙ্গে। সেদিন পাশের কফি হাউসে বসেন দুজন। কফি পান করেন। ওই দিনই ফোন নম্বর চেয়ে নেন আনিস। তারপর থেকেই শ্যামলীর প্রতি দায়িত্বশীল আনিস। প্রতিদিনই ফোনে খোঁজ-খবর নেন। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে। প্রথমে অল্প সময়। পরে আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা পর্যন্ত। দীর্ঘ সময় কথা হয় তাদের। হাসি-তামাশা হয়। এরমধ্যেই প্রবাসী স্বামী কল দিয়ে ফোন ব্যস্ত পান দীর্ঘ সময়। পরে মিথ্যা কথা বলে রক্ষা পান শ্যামলী। বিষয়টি আনিসের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। পরবর্তীতে নতুন সংযোগসহ শ্যামলীকে একটি মোবাইলফোন উপহার দেন আনিস। ওই ফোনেই কথা হয় দুজনের। এই ফোনটি শুধুই আনিসের জন্য। আগের মোবাইলফোনে স্বামীসহ অন্যান্যরা কথা বলেন। আনিসের সঙ্গে কথা হয় গভীর রাত পর্যন্ত। বিশেষ করে বন্ধের দিনের আগের পুরো রাতই কথা বলে পার করে দেন তারা।
মোটরসাইকেলে করে শ্যামলীকে অফিসে পৌঁছে দেন। আবার বাসায় নিয়ে যান। বন্ধের দিন ছোট্ট মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তারা বেড়াতে যান বিভিন্নস্থানে। এভাবে আর ভালো লাগে না। কাছে পেতে ইচ্ছে করে দুজনকে দুজনেরই। অবিবাহিত আনিস জানান, শ্যামলীর স্বামী-সন্তান না থাকলে তাকে বিয়ে করতেন তিনি। এভাবে থাকা খুব কষ্টকর। তারপর থেকে মাঝে মাঝে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় সময় কাটাতেন আনিস ও শ্যামলী। বিশেষ করে শ্যামলীর মেয়েটি যখন স্কুল থাকতো। ওই সময়টাই বেছে নিতেন তারা। এভাবে চলতে থাকে কয়েক মাস। পরে কখনও কখনও রাতেও একসঙ্গে থাকতেন তারা। বিষয়টি বাড়ির প্রহরীর দৃষ্টি এড়াতে পারেনি। এক বিকালে শ্যামলীর কাছে জানতে চান, ম্যাডাম ওই লোকটি প্রায়ই বাসায় আসেন। তিনি কি হোন আপনার?
শ্যামলীর গলা শুকিয়ে যায়। অবশ্য সময় নেননি। ছটফট বলে দেন- আমার খালাতো ভাই। ঢাকাতেই থাকেন। আমার স্বামী এলে এ বাসাতেই থাকবেন তিনি। তারপর গতি বেড়ে যায় আনিস-শ্যামলীর প্রেমের। এরমধ্যে কক্সবাজারে দুই দিন ছিলেন তারা। অফিসের সহকর্মীদের সঙ্গে ভ্রমনে যাচ্ছেন অজুহাতে সন্তানকে বোনের বাসায় রেখে যান। সম্পর্কের বিষয়টি বেশি দিন গোপন কথা গোপন রাখতে পারেননি তিনি। ২০১০ সালে আসে বড় ঝড়টি। স্বামী তখন দেশে। স্বামীকে নিয়ে ব্যস্ত শ্যামলী। আনিসকে সময় দেওয়ার মতো সুযোগ কম। মাঝে-মাঝে অফিসের পাশে দেখা হয় তাদের। তা অল্প সময়ের জন্য। এমন পরিস্থিতি মেনে নিতে পারেন না আনিস। এরমধ্যেই গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন শ্যামলীর স্বামী। আনিসকে ফোনে খবরটি জানান শ্যামলী। দ্রুত শ্যামলীর বাসায় ছুটে যান আনিস। এর কিছু সময়ের মধ্যেই হঠাৎ ডাকা বাস ধর্মঘটের কারণে বাসায় ফিরে কলিং বেল চাপেন শ্যামলীর স্বামী। কিন্তু দরজা খোলা হয় না। আবার বেল চাপেন। এভাবে কয়েক মিনিট। তারপর দরজা খোলে দেন শ্যামলী। ড্রয়িংরুমে মেহমানের মতো বসে আছেন আনিস। চোখ বড় বড় হয়ে যায় শ্যামলীর স্বামীর। জানতে চান কে? সহকর্মী বলে পরিচয় দেন তিনি। তারপর ভেতরের কক্ষে গিয়ে এলোমেলো বিছানাটা চোখে পড়ে তার। বাসা থেকে বের হওয়ার আগেও যা গোছানো ছিলো। তারপর স্বামীর মুখে কোন রাঁ নেই।
এরমধ্যেই শ্যামলীর স্বামী খোঁজ নিতে শুরু করেন। পরদিন কথা বলেন বাড়ির প্রহরীর সঙ্গে। ওই রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রচন্ড বাকবিতন্ডা হয়। বাসা থেকে বের হয়ে ভাইয়ের বাসায় চয়ে যান। এর কিছুদিনের মধ্যেই শ্যামলীকে ডিভোর্স দেন তার স্বামী। ডিভোর্স লেটার হাতে পেয়ে আনিসের সঙ্গে দেখা করে তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন শ্যামলী। আনিস আমতা আমতা করেন। মাথা ঠান্ডা রাখতে বলেন। তারপর থেকেই আনিসের ফোন বন্ধ। যে বাসায় থাকতেন আনিস সেই বাসাতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। বাসার মালিক জানিয়েছেন কয়েক দিন আগেই বাসা ছেড়েছেন তিনি। আনিসের বাড়ি বরিশালের পটুয়াখালীতে। এরচেয়ে বেশি জানা নেই শ্যামলীর। আনিসের কর্মস্থল মতিঝিলে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের নাম কখনও জানতে চাননি তিনি।
এখন একমাত্র কন্যাকে নিয়ে ধানমন্ডির শঙ্করে বাস করেন এই নারী। তার প্রাক্তন স্বামী নতুন বিয়ে করেছেন। মেয়ের জন্য নির্দিষ্ট টাকা পাঠান তিনি। অন্যদিকে এখন আর আনিসকে খুঁজেন না শ্যামলী। শুধু চোখের জলে সিক্ত হন নিজের ভুলের কথা স্মরণ করে। স্বপ্ন দেখেন মেয়েকে নিয়ে। বলেন, আমার জীবন আমিই নষ্ট করেছি। আমার নিজেকে নিয়ে কোন স্বপ্ন নেই। আনিসের মতো ব্যক্তির খপ্পড়ে যেন কেউ না পড়েন এই কামনাই করেন তিনি। এ বিষয়ে হিইম্যান রিসোর্স এন্ড হেল্থ ফাউন্ডেশনের মহাসচিব আলমগীর সেলিম বলেন, প্রবাসীর স্ত্রী শুনলেই এক শ্রেণীর পুরুষ ওই নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়াতে চান। এটা অবশ্যয়ই ভালো উদ্দেশ্য না। মূলত জৈবিক উদ্দেশ্য থেকেই এটা হয়। এ থেকে সাবধান এবং সচেতন থাকতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসার বন্ধন দৃঢ় হতে হবে। প্রবাসে থাকলেও স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগে সক্রিয় থাকা উচিত। দীর্ঘদিন দূরে না থাকাই ভালো বলে মনে করেন তিনি।
No comments