মাকে জড়িয়ে কাঁদলেন আরিফ
আগামীকাল
রোববার আদালতে হাজির করা হচ্ছে সিলেট সিটি করপোরেশনের কারাবন্দি মেয়র
আরিফুল হক চৌধুরীকে। ওই দিন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা
মামলার চার্জগঠন করা হতে পারে। এ কারণেই চার্জগঠনের শুনানির ৪ দিন আগেই
ঢাকা মেডিক্যালের প্রিজন সেল থেকে তাকে সিলেটে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে, আরিফুল
হক চৌধুরীর আইনজীবীরা ইতিমধ্যে মামলা থেকে তাকে বাদ দিতে আদালতে আবেদন
জানিয়েছেন। এই আবেদনের শুনানি না হলে মামলার চার্জগঠন হবে না বলে অভিমত
জানিয়েছেন আইনজীবীরা। দীর্ঘ ৮ মাস পর সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে ফিরেছেন
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি
আরিফুল হক চৌধুরী। গেলো ডিসেম্বরের শেষ দিকে তিনি হবিগঞ্জের আদালতে জামিন
নিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন। এরপর তাকে হবিগঞ্জ থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
সেখানে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালের প্রিজন সেলে রেখে চিকিৎসা
দেয়া হচ্ছিল। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার অধিকতর
তদন্তের চার্জশিট গত বছরে দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। ওই চার্জশিটে
কিবরিয়া হত্যা মামলার আসামি হিসেবে আরিফুল হক চৌধুরীর নাম তালিকাভুক্ত করা
হয়। ওই সময় আরিফুল হক চৌধুরী সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র ছিলেন।
তার নাম চার্জশটের অন্তর্ভুক্তির পর হবিগঞ্জ আদালত থেকে তার বিরুদ্ধে সমন
জারি করা হয়। একই সঙ্গে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। সেই
প্রেক্ষিতে প্রায় দেড় মাস অন্তরালে থাকার পর ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ
সপ্তাহে গিয়ে আদালতে হাজির হন। এ সময় আদালতে আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষে তার
আইনজীবী জামিন প্রার্থনা করেন। কিন্তু আদালত জামিন বাতিল করে তাকে জেল
হাজতে পাঠিয়ে দেন। এদিকে, হবিগঞ্জের আদালত চার্জশিট আমলে নিয়ে মামলার
বিচারিক কার্যক্রম শুরু করতে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মকবুল হোসেনের
আদালতে মামলা স্থানান্তর করেন। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে মামলাটি সিলেটে
আসার পর থেকে চার্জ গঠনের অপেক্ষায় রয়েছে। ইতিমধ্যে চার্জগঠনের জন্য
দশমবারের মতো শুনানি পিছিয়েছে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর,
হবিগঞ্জের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র জিকে গৌছসহ সকল আসামিকে আদালতে হাজির
করা হলেও কেবলমাত্র আরিফুল হক চৌধুরীকে হাজির করা হয়নি। এর কারণ হিসেবে
আরিফুল হক চৌধুরী অসুস্থ বলে আদালতে জানিয়েছিলেন তার আইনজীবীরা। গত ৬ই
সেপ্টেম্বর আদালতে দশম বারের মতো চার্জ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিনই
আরিফুল হক চৌধুরীকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এরপর আদালত আগামীকাল রোববার
মামলার তারিখ নির্ধারণ করেন। এদিকে, কয়েক মাস ধরে ঢাকা মেডিক্যালের প্রিজন
সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার তাকে মেডিক্যাল থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয়
কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্স করে তাকে সিলেট
কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে নিয়ে আসা হয়। সিলেটে আনার পর আরিফুল হক চৌধুরী
পরিবারের লোকজনের সাক্ষাৎ পাচ্ছেন। বুধবার তার স্ত্রী শ্যামা হক চৌধুরী ছোট
মেয়েকে নিয়ে আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেছেন। এদিকে, আরিফুল হক
চৌধুরীর আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে মামলা থেকে আরিফুল হক চৌধুরীকে
অব্যাহতি দিতে আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসার জন্য
তাকে বিদেশ নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানানো হয়। রোববার আরিফুল হক চৌধুরীকে আদালতে
হাজির করলে তারা আবেদনের শুনানি করবেন।
মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ: দীর্ঘ ৮ মাস পর মা রহিমা খাতুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো কারাবন্দি আরিফুল হক চৌধুরীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে মা ও ছেলের সঙ্গে দেখা হয়। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আরিফ এবং তার মা উভয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন। দুপুর ১২টা ৪ মিনিটে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন আরিফের মা ও তার স্ত্রী শ্যামা হক। এর প্রায় ১০ মিনিট পর একটি হুইল চেয়ারে করে আরিফ তাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এ সময় আরিফের পরনে সাদা রঙের শার্ট ও কালো রঙের প্যান্ট ছিল। তার হাতে একটি স্ক্রেচ ছিল। আরিফ তার মাকে পা ছুঁয়ে সালাম করেন। তার মা তাকে জড়িয়ে ধরে আদর করেন। একপর্যায়ে উভয়ই কান্নায় ভেঙে পড়েন। রহিমা খাতুন আরিফুল হক চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার খবর নেন। পরে বেরিয়ে এসে আরিফুল হকের মা রহিমা খাতুন জানিয়েছেন, ৮ মাস আগে তার ছেলের সঙ্গে দেখা হয়েছে। আরিফ বেশ শুকিয়ে গেছে। এবং তার শারীরিক অবস্থা তেমন ভাল নয়। ছেলের জন্য রহিমা খাতুন সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
কাঁদলেন জহির সুফিয়ানের জন্য
বিশেষ প্রতিনিধি, সিলেট থেকে জানান, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাময়িক পদহারা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এখন নিজের শহরে। বাসায় নয়, আছেন মাইলখানেক দূরে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায়। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় পদ হারিয়ে অনেক দিন ধরেই তিনি কারাবন্দি। শরীরের অবস্থা খুব বেশি ভাল না হওয়ায় কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাকে উপস্থিত করতে না পারায় কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জ গঠনও বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে। মামলার কার্যক্রম সচল রাখতে তাই শেষমেষ অসুস্থ অবস্থায়ই তাকে সিলেট কারাগারে নিয়ে আসা হয়েছে। বুধবার ভোর রাতে তিনি সিলেট কারাগারে পৌঁছেন, আছেন ডিভিশন বন্দি হিসেবে।
আরিফুল হক চৌধুরী ভাল নেই। শরীরের অবস্থা তার খুবই খারাপ। বৃহস্পতিবার তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন স্ত্রী শ্যামা হক চৌধুরী। মানবজমিন কথা বলে শ্যামা হকের সঙ্গে। তিনিই জানান, একেবারে ভেঙে পড়েছেন আরিফুল হক। কারও সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারেন না। তিন-চারজনে ধরে হুইল চেয়ারে বসাতে হয় তাকে। গলা ও কোমরে বেল্ট বাঁধা। গলা দিয়ে কথা বেরোতে চায় না। শ্যামা হক জানান, শারীরিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে প্রতিদিন তাকে ফিজিওথেরাপি দেয়া হতো। সিলেট আসার পর থেকে তাও বন্ধ আছে। এ কারণে শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে তার।
শ্যামা হক মানবজমিনকে বলেন, অসুস্থতার মাঝেও আরিফুল হক চৌধুরী নগরবাসীর দিন কেমন কাটছে, কি অবস্থায় আছেন তার কাছ থেকে সে খবরও নিয়েছেন। বৃষ্টিতে নগরীর পথে জল জমেছে কিনা তারও খোঁজ নেন। আরিফুল হক প্রিয় নগরবাসীর কাছে তার জন্য দোয়া চেয়েছেন জানিয়ে শ্যামা হক বলেন, আরিফুল হক বিশ্বাস করেন, যেহেতু তিনি নির্দোষ তাই এ বন্দি অবস্থা থেকে শিগগিরই মুক্তি পাবেন তিনি।
আরিফুল হক চৌধুরী যেদিন সিলেট পৌঁছেন সেদিনই মারা যান সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক আবদুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান। ভিন্ন ঘরানার রাজনীতিবিদ হলেও তার সঙ্গে আরিফুল হকের সুসম্পর্ক ছিল। শ্যামা হক মানবজমিনকে বলেন, আবদুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ানের মৃত্যু সংবাদে ভেঙে পড়েন আরিফুল হক। এতো কাছে থেকেও তার জানাজায় অংশ নিতে না পারায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, সুফিয়ান ভাই আমাকে খুব স্নেহ করতেন, তার স্নেহের মূল্য আমি দিতে পারলাম না।
মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ: দীর্ঘ ৮ মাস পর মা রহিমা খাতুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো কারাবন্দি আরিফুল হক চৌধুরীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে মা ও ছেলের সঙ্গে দেখা হয়। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আরিফ এবং তার মা উভয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন। দুপুর ১২টা ৪ মিনিটে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন আরিফের মা ও তার স্ত্রী শ্যামা হক। এর প্রায় ১০ মিনিট পর একটি হুইল চেয়ারে করে আরিফ তাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এ সময় আরিফের পরনে সাদা রঙের শার্ট ও কালো রঙের প্যান্ট ছিল। তার হাতে একটি স্ক্রেচ ছিল। আরিফ তার মাকে পা ছুঁয়ে সালাম করেন। তার মা তাকে জড়িয়ে ধরে আদর করেন। একপর্যায়ে উভয়ই কান্নায় ভেঙে পড়েন। রহিমা খাতুন আরিফুল হক চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার খবর নেন। পরে বেরিয়ে এসে আরিফুল হকের মা রহিমা খাতুন জানিয়েছেন, ৮ মাস আগে তার ছেলের সঙ্গে দেখা হয়েছে। আরিফ বেশ শুকিয়ে গেছে। এবং তার শারীরিক অবস্থা তেমন ভাল নয়। ছেলের জন্য রহিমা খাতুন সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
কাঁদলেন জহির সুফিয়ানের জন্য
বিশেষ প্রতিনিধি, সিলেট থেকে জানান, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাময়িক পদহারা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এখন নিজের শহরে। বাসায় নয়, আছেন মাইলখানেক দূরে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায়। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় পদ হারিয়ে অনেক দিন ধরেই তিনি কারাবন্দি। শরীরের অবস্থা খুব বেশি ভাল না হওয়ায় কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাকে উপস্থিত করতে না পারায় কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জ গঠনও বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে। মামলার কার্যক্রম সচল রাখতে তাই শেষমেষ অসুস্থ অবস্থায়ই তাকে সিলেট কারাগারে নিয়ে আসা হয়েছে। বুধবার ভোর রাতে তিনি সিলেট কারাগারে পৌঁছেন, আছেন ডিভিশন বন্দি হিসেবে।
আরিফুল হক চৌধুরী ভাল নেই। শরীরের অবস্থা তার খুবই খারাপ। বৃহস্পতিবার তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন স্ত্রী শ্যামা হক চৌধুরী। মানবজমিন কথা বলে শ্যামা হকের সঙ্গে। তিনিই জানান, একেবারে ভেঙে পড়েছেন আরিফুল হক। কারও সাহায্য ছাড়া হাঁটতে পারেন না। তিন-চারজনে ধরে হুইল চেয়ারে বসাতে হয় তাকে। গলা ও কোমরে বেল্ট বাঁধা। গলা দিয়ে কথা বেরোতে চায় না। শ্যামা হক জানান, শারীরিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে প্রতিদিন তাকে ফিজিওথেরাপি দেয়া হতো। সিলেট আসার পর থেকে তাও বন্ধ আছে। এ কারণে শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে তার।
শ্যামা হক মানবজমিনকে বলেন, অসুস্থতার মাঝেও আরিফুল হক চৌধুরী নগরবাসীর দিন কেমন কাটছে, কি অবস্থায় আছেন তার কাছ থেকে সে খবরও নিয়েছেন। বৃষ্টিতে নগরীর পথে জল জমেছে কিনা তারও খোঁজ নেন। আরিফুল হক প্রিয় নগরবাসীর কাছে তার জন্য দোয়া চেয়েছেন জানিয়ে শ্যামা হক বলেন, আরিফুল হক বিশ্বাস করেন, যেহেতু তিনি নির্দোষ তাই এ বন্দি অবস্থা থেকে শিগগিরই মুক্তি পাবেন তিনি।
আরিফুল হক চৌধুরী যেদিন সিলেট পৌঁছেন সেদিনই মারা যান সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক আবদুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান। ভিন্ন ঘরানার রাজনীতিবিদ হলেও তার সঙ্গে আরিফুল হকের সুসম্পর্ক ছিল। শ্যামা হক মানবজমিনকে বলেন, আবদুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ানের মৃত্যু সংবাদে ভেঙে পড়েন আরিফুল হক। এতো কাছে থেকেও তার জানাজায় অংশ নিতে না পারায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, সুফিয়ান ভাই আমাকে খুব স্নেহ করতেন, তার স্নেহের মূল্য আমি দিতে পারলাম না।
No comments