বরগুনায় মাইকিং করে করাতি হাঙর বিক্রি
(বরগুনার মাছের বাজারে বৃহস্পতিবার বিক্রির জন্য তোলা করাতি হাঙর l ছবি: প্রথম আলো) বঙ্গোপসাগরে
গত মঙ্গলবার একদল জেলে বিরল প্রজাতির ১২ মণ ওজনের একটি হাঙর শিকার করে।
পরে হাঙরটি চার লাখ টাকায় কেনেন স্থানীয় এক মৎস্য আড়তদার। গত
বৃহস্পতিবার বরগুনা বাজারে মাইকিং করে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে তা বিক্রি
করা হয়। অথচ বন্য প্রাণী আইন, ২০১২-এর তফসিল-১ অনুযায়ী, করাতি হাঙর
সংরক্ষিত বন্য প্রাণী ও বিরল প্রজাতির। এই হাঙর শিকার ও কাটা সম্পূর্ণ
নিষিদ্ধ। আইনের ৩৭ ধারা অনুযায়ী, এই হাঙর নিধন করা হলে সর্বোচ্চ তিন বছর
বা তিন লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। এ ছাড়া ক্রেতাকেও সর্বোচ্চ এক
বছরের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে। কয়েকজন মৎস্য
ব্যবসায়ী প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় ১৫ ফুট লম্বা হাঙরটির ওজন ১২ মণ।
মঙ্গলবার বিকেলে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে পিরোজপুরের পাড়েরহাট এলাকার মনির
হোসেনের ট্রলারের জেলেদের জালে হাঙরটি আটকা পড়ে। বুধবার সকালে হাঙরটি
বরগুনা মাছ বাজারে আনা হয়। স্থানীয় আড়তদার পান্না মাতুব্বর সেটি কেনেন।
বৃহস্পতিবার সকালে হাঙরটি দেখার জন্য শত শত মানুষ বাজারে ভিড় করেন। পরে
হাঙরটি কেটে টুকরো টুকরো করে প্রতি কেজি ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি করা
হয়। পান্না মাতুব্বর বলেন, ‘মুঠোফোনে আমাকে জানালে আমি হাঙরটি কেনার আগ্রহ
প্রকাশ করি। বুধবার সকালে মাছটি আমার আড়তে আনার পর চার লাখ টাকায় কিনি ও
পরে বিক্রি করি।’ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বঙ্কিম চন্দ্র বিশ্বাস বলেন,
করাতি হাঙর বিরল প্রজাতির। তবে মৎস্য আইনে এটি নিধন করলে কোনো শাস্তির
বিধান নেই। তবে ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) প্রকল্প
ব্যবস্থাপক ও জ্যেষ্ঠ গবেষক জাহাঙ্গীর আলম গতকাল দুপুরে বলেন, এ ধরনের হাঙর
কোনো ক্রমেই ধরা ও বিক্রি করা যাবে না। কারণ, বন্য প্রাণী আইনের তফসিল-১
অনুযায়ী এই হাঙরকে সংরক্ষিত প্রাণী ঘোষণা করা হয়েছে। বন বিভাগের
বরগুনা-পটুয়াখালী জেলার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মিহির কুমার দো
বলেন, ‘বিষয়টি আমাকে আগে কেউ জানায়নি। আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জেলে বলেন, সুন্দরবন থেকে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের ৩০ বাম এলাকায় হাঙরটি শিকার করা হয়।
No comments