অবরোধের যাঁতাকলে পিষ্ট অর্থনীতি- ৫৫০০০ কোটি টাকার ক্ষতি by এমএম মাসুদ
টানা
অবরোধ-হরতালে বিপর্যস্ত অর্থনীতি। টালমাটাল উৎপাদন ব্যবস্থা ও বাণিজ্য
খাত। পণ্য পরিবহনে চলছে অচলাবস্থা। কৃষি ও পর্যটন খাতে পড়তে শুরু করেছে
নেতিবাচক প্রভাব। শঙ্কায় পড়েছে সামগ্রিক অর্থনীতি। ব্যবসা ও বিনিয়োগ
পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা ইতিমধ্যে রাস্তায় নেমেছেন রাজনৈতিক সমঝোতার
দাবিতে। নিজ নিজ অবস্থানে থেকে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে ব্যবসায়ী ও শিল্প
মালিকদের সংগঠনগুলো। চলমান অবরোধ ও হরতালে আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে চলছে নানা
হিসাব। তবে অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, দৃশত যে ক্ষতি হচ্ছে এর চেয়ে বেশি
ক্ষতি হবে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি। যা এখনই টাকার অঙ্কে পরিমাপ করা সম্ভব নয়।
এফবিসিসিআই, ঢাকা চেম্বার, বিজিএমইএসহ আর্থিক খাতের বিভিন্ন সংগঠন তাদের
ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরে বক্তব্য দিয়েছে। সূত্রগুলোর দেয়া তথ্য অনুযায়ী
দেশের সব আর্থিক সেক্টরে দৈনিক ক্ষতি অন্তত ২ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। সেই
হিসেবে গত ২৪ দিনে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৪৬৬৭ কোটি টাকা। অব্যাহত
এ ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে ও চলমান সঙ্কটের সমাধানের দাবিতে বুধবার
মানববন্ধন পালন করেছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে
স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপির চেয়ারপারসন
খালেদা জিয়ার কাছে। অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এভাবে দেশ চলতে থাকলে
উদ্যোক্তাদের পথে বসতে হবে। শ্রমিকদের বেতন দিতে পারবেন না তারা। আর এতে
শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া স্বাভাবিকের তুলনায় কম উৎপাদন হলে
দীর্ঘমেয়াদি সঙ্কটে পড়বে দেশ। তবে এ পরিস্থিতি নিরসনে অবশ্যই কার্যকর
আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় আসতে হবে। আর এর জন্য সংলাপই একমাত্র পন্থা।
শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, লাগাতার হরতাল-অবরোধ শুরু হওয়ায় সামগ্রিক অর্থনীতির বিবেচনায় উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে। এর সঙ্গে শিল্পের মূল মসলা আমদানি করা কাঁচামালের চালান বন্দর থেকে খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে উৎপাদন খাতে এক ধরনের স্থবিরতা তৈরি হয়েছে।
তত্ত্বাবধাক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেশের বড় দু’টি রাজনৈতিক দল বা জোট সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থানে রয়েছে। দেশের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দলগুলোর উচিত নিজেদের মধ্যে সমাঝোতা করা। শঙ্কায় ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ বন্ধ রয়েছে। আস্থাশীল পরিবেশ নেই। জিডিপি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। এ ছাড়া বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় সমস্যা হচ্ছে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। মূলত সার্বিক বিনিয়োগ পরিবেশ অনুকূল নয় বলে সাবেক এই উপদেষ্টা মনে করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বিভিন্ন সংগঠনের ক্ষতির চিত্র সম্পর্কে বলেন, ক্ষতি হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে না তাও না। মোট কথা কেউ স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। তবে জোর করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে কত দিন চালাবে সরকার? রাজনৈতিক নেতারদের অবশ্যই সমঝোতায় আসতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন এ অর্থনীতিবিদ। তার মতে, হরতাল-অবরোধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কর্মজীবীরা। অন্যদিকে পরিবহন ও তৈরী পোশাক খাতের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে যারা ছোট ছোট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে যারা ফুটপাতে ব্যবসা করেন, যারা মুদি দোকান করেন তারা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন।
দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর দেয়া বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে প্রতিদিন দেশের অর্থনীতি যে ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে তা ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রাক্কলিত জিডিপি-এর হিসাব অনুযায়ী ০.১৭%। অর্থাৎ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ লাখ ৫০,৯২০ কোটি টাকা। এ হিসেবে বছরের একদিনের জিডিপি ৩,৭০১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। শিল্পে প্রতিদিনের উৎপাদন সক্ষমতায় ২৫ শতাংশ ক্ষতি ধরা হলে দৈনিক ক্ষতি ২৫০০ কোটি টাকার বেশি, যা জিডিপির দৈনিক ক্ষতির পরিমাণ ২.৬৯৭% বা প্রায় ২,২৭৭.৮৬ কোটি টাকা।
বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর দেয়া ক্ষতির হিসাবে জানা গেছে, হরতাল-অবরোধে খাতভিত্তিক প্রতিদিনের সার্বিক অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ- তৈরী পোশাক রপ্তানিতে ৬৯৫ কোটি টাকা, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৩০০ কোটি টাকা, কৃষিখাতে ২৮৮ কোটি ১০ লাখ টাকা, আবাসন খাতে ২৫০ কোটি টাকা, পর্যটন খাতে ২১০ কোটি টাকা, পাইকারি বাজার, শপিং মল, শোরুম, ক্ষুদ্র ও মাঝারি দোকান খাতে ১৫০ কোটি টাকা, পোশাক খাতে ১৪৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, উৎপাদন খাতে ১০০ কোটি টাকা, স্থলবন্দর ও বঙ্গবন্ধুর সেতুর টোল আদায়ে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি ৩৩ কোটি টাকা, সিরামিক খাতে ২০ কোটি টাকা, পোল্টি শিল্পে ১৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা, প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুত ও রপ্তানি খাতে ১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, বীমা খাতে ১৫ কোটি টাকা, হকার্স খাতে ১৫ কোটি টাকা, স্থলবন্দর আমদানি পণ্য খালাসে ১০ কোটি ৫ লাখ টাকা, হিমায়িত খাদ্য খাতে ৮ কোটি টাকার অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। এসব সেক্টরে দৈনিক আর্থিক ক্ষতি হয় ২ হাজার ২৭৭ কোটি টাকার বেশি। এ ছাড়া রাজনৈতিক অচলাবস্থায় শিক্ষার প্রতিটি স্তরের সব শিডিউল ভেঙ্গে পড়েছে। এতে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে নতুন ক্লাসে উঠা ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা গ্রহণে বঞ্চিত ও সার্বিকভাবে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ মারাত্মকভাবে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। অন্যদিকে নিরাপত্তাহীনতার কারণে সাধারণ জনগণ তাদের প্রাপ্য স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে সার্বিক সেবা খাতে যে ক্ষতি হচ্ছে তার আর্থিক মূল্য নির্ধারণ না হলেও জাতীয় ক্ষেতে এটি অপূরণীয়। সেবা খাতের ক্ষতির প্রভাব আর্থিক ক্ষেত্রেও পড়তে বাধ্য।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছি আমরা। ক্রেতারা বাংলাদেশে আসতে চাচ্ছে না। আশা করব, রাজনৈতিক দলগুলো রাজনৈতিক সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবে। আমরা শান্তি চাই, কোন সহিংসতা চাই না। বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পোশাক খাত বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে শ্রীলঙ্কার মতো করুণ পরিণতি ভোগ করতে হবে। শিল্প চলে যাবে অন্য দেশে।
চলামান হরতাল/অবরোধে অর্থনৈতিক ক্ষতি কোটি টাকায়
ক্রমিক নং. খাত দৈনিক অর্থনৈতিক ক্ষতি কোটি টাকায় ২৪ দিনে
ক্ষতি কোটি টাকায়
পোষাক রপ্তানি বাধাগ্রস্থে আর্থিক ক্ষতি
৬৯৫ ১৬৬৮০
পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে আর্থিক ক্ষতি
৩০০ ৭২০০
কৃষি খাতে আর্থিক ক্ষতি
২৮৮.১ ৬৯১২
আবাসন খাতে আর্থিক ক্ষতি
২৫০ ৬০০০
পর্যটন খাতে আর্থিক ক্ষতি
২১০ ৫০৪০
পাইকারি বাজার, শপিং মল, শো-রুম, ক্ষুদ্র ও ছোট দোকান খাতে আর্থিক ক্ষতি ১৫০ ৩৬০০
পোশাক খাতে আর্থিক ক্ষতি
১৪৭.৫ ৩৫৪০
উৎপাদন খাত আর্থিক ক্ষতি
১০০ ২৪০০
স্থলবন্দর ও বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়ে সরকারের রাজস্ব আদায় আর্থিক ক্ষতি
৩৩.০৮ ৭৯০
সিরামিক খাতে আর্থিক ক্ষতি
২০ ৪৮০
পোল্ট্রি শিল্প খাতে আর্থিক ক্ষতি
১৮.২৮ ৪৩২
প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুত ও রপ্তানি খাতে আর্থিক ক্ষতি
১৭.৮৫ ৪১৯
বীমা খাতে আর্থিক ক্ষতি
১৫ ৩৬০
হকার্স খাতে আর্থিক ক্ষতি
১৫ ৩৬০
স্থলবন্দরে আমদানি পণ্য খালাসে আর্থিক ক্ষতি ১০.০৫ ২৪০
হিমায়িত খাদ্য আর্থিক ক্ষতি
৮ ১৯২
সর্বমোট আর্থিক ক্ষতি
২,২৭৭.৮৬ ৫৪৬৬৭
শিল্পের উদ্যোক্তারা বলছেন, লাগাতার হরতাল-অবরোধ শুরু হওয়ায় সামগ্রিক অর্থনীতির বিবেচনায় উৎপাদন খাতে বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে। এর সঙ্গে শিল্পের মূল মসলা আমদানি করা কাঁচামালের চালান বন্দর থেকে খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে উৎপাদন খাতে এক ধরনের স্থবিরতা তৈরি হয়েছে।
তত্ত্বাবধাক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেশের বড় দু’টি রাজনৈতিক দল বা জোট সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী অবস্থানে রয়েছে। দেশের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দলগুলোর উচিত নিজেদের মধ্যে সমাঝোতা করা। শঙ্কায় ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ বন্ধ রয়েছে। আস্থাশীল পরিবেশ নেই। জিডিপি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। এ ছাড়া বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় সমস্যা হচ্ছে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা। মূলত সার্বিক বিনিয়োগ পরিবেশ অনুকূল নয় বলে সাবেক এই উপদেষ্টা মনে করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বিভিন্ন সংগঠনের ক্ষতির চিত্র সম্পর্কে বলেন, ক্ষতি হচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে না তাও না। মোট কথা কেউ স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। তবে জোর করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে কত দিন চালাবে সরকার? রাজনৈতিক নেতারদের অবশ্যই সমঝোতায় আসতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন এ অর্থনীতিবিদ। তার মতে, হরতাল-অবরোধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কর্মজীবীরা। অন্যদিকে পরিবহন ও তৈরী পোশাক খাতের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে যারা ছোট ছোট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে যারা ফুটপাতে ব্যবসা করেন, যারা মুদি দোকান করেন তারা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন।
দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর দেয়া বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে প্রতিদিন দেশের অর্থনীতি যে ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে তা ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রাক্কলিত জিডিপি-এর হিসাব অনুযায়ী ০.১৭%। অর্থাৎ ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ লাখ ৫০,৯২০ কোটি টাকা। এ হিসেবে বছরের একদিনের জিডিপি ৩,৭০১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। শিল্পে প্রতিদিনের উৎপাদন সক্ষমতায় ২৫ শতাংশ ক্ষতি ধরা হলে দৈনিক ক্ষতি ২৫০০ কোটি টাকার বেশি, যা জিডিপির দৈনিক ক্ষতির পরিমাণ ২.৬৯৭% বা প্রায় ২,২৭৭.৮৬ কোটি টাকা।
বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর দেয়া ক্ষতির হিসাবে জানা গেছে, হরতাল-অবরোধে খাতভিত্তিক প্রতিদিনের সার্বিক অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ- তৈরী পোশাক রপ্তানিতে ৬৯৫ কোটি টাকা, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৩০০ কোটি টাকা, কৃষিখাতে ২৮৮ কোটি ১০ লাখ টাকা, আবাসন খাতে ২৫০ কোটি টাকা, পর্যটন খাতে ২১০ কোটি টাকা, পাইকারি বাজার, শপিং মল, শোরুম, ক্ষুদ্র ও মাঝারি দোকান খাতে ১৫০ কোটি টাকা, পোশাক খাতে ১৪৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, উৎপাদন খাতে ১০০ কোটি টাকা, স্থলবন্দর ও বঙ্গবন্ধুর সেতুর টোল আদায়ে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি ৩৩ কোটি টাকা, সিরামিক খাতে ২০ কোটি টাকা, পোল্টি শিল্পে ১৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা, প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুত ও রপ্তানি খাতে ১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, বীমা খাতে ১৫ কোটি টাকা, হকার্স খাতে ১৫ কোটি টাকা, স্থলবন্দর আমদানি পণ্য খালাসে ১০ কোটি ৫ লাখ টাকা, হিমায়িত খাদ্য খাতে ৮ কোটি টাকার অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। এসব সেক্টরে দৈনিক আর্থিক ক্ষতি হয় ২ হাজার ২৭৭ কোটি টাকার বেশি। এ ছাড়া রাজনৈতিক অচলাবস্থায় শিক্ষার প্রতিটি স্তরের সব শিডিউল ভেঙ্গে পড়েছে। এতে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে নতুন ক্লাসে উঠা ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা গ্রহণে বঞ্চিত ও সার্বিকভাবে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ মারাত্মকভাবে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। অন্যদিকে নিরাপত্তাহীনতার কারণে সাধারণ জনগণ তাদের প্রাপ্য স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে সার্বিক সেবা খাতে যে ক্ষতি হচ্ছে তার আর্থিক মূল্য নির্ধারণ না হলেও জাতীয় ক্ষেতে এটি অপূরণীয়। সেবা খাতের ক্ষতির প্রভাব আর্থিক ক্ষেত্রেও পড়তে বাধ্য।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছি আমরা। ক্রেতারা বাংলাদেশে আসতে চাচ্ছে না। আশা করব, রাজনৈতিক দলগুলো রাজনৈতিক সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবে। আমরা শান্তি চাই, কোন সহিংসতা চাই না। বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পোশাক খাত বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে শ্রীলঙ্কার মতো করুণ পরিণতি ভোগ করতে হবে। শিল্প চলে যাবে অন্য দেশে।
চলামান হরতাল/অবরোধে অর্থনৈতিক ক্ষতি কোটি টাকায়
ক্রমিক নং. খাত দৈনিক অর্থনৈতিক ক্ষতি কোটি টাকায় ২৪ দিনে
ক্ষতি কোটি টাকায়
পোষাক রপ্তানি বাধাগ্রস্থে আর্থিক ক্ষতি
৬৯৫ ১৬৬৮০
পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে আর্থিক ক্ষতি
৩০০ ৭২০০
কৃষি খাতে আর্থিক ক্ষতি
২৮৮.১ ৬৯১২
আবাসন খাতে আর্থিক ক্ষতি
২৫০ ৬০০০
পর্যটন খাতে আর্থিক ক্ষতি
২১০ ৫০৪০
পাইকারি বাজার, শপিং মল, শো-রুম, ক্ষুদ্র ও ছোট দোকান খাতে আর্থিক ক্ষতি ১৫০ ৩৬০০
পোশাক খাতে আর্থিক ক্ষতি
১৪৭.৫ ৩৫৪০
উৎপাদন খাত আর্থিক ক্ষতি
১০০ ২৪০০
স্থলবন্দর ও বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায়ে সরকারের রাজস্ব আদায় আর্থিক ক্ষতি
৩৩.০৮ ৭৯০
সিরামিক খাতে আর্থিক ক্ষতি
২০ ৪৮০
পোল্ট্রি শিল্প খাতে আর্থিক ক্ষতি
১৮.২৮ ৪৩২
প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুত ও রপ্তানি খাতে আর্থিক ক্ষতি
১৭.৮৫ ৪১৯
বীমা খাতে আর্থিক ক্ষতি
১৫ ৩৬০
হকার্স খাতে আর্থিক ক্ষতি
১৫ ৩৬০
স্থলবন্দরে আমদানি পণ্য খালাসে আর্থিক ক্ষতি ১০.০৫ ২৪০
হিমায়িত খাদ্য আর্থিক ক্ষতি
৮ ১৯২
সর্বমোট আর্থিক ক্ষতি
২,২৭৭.৮৬ ৫৪৬৬৭
No comments