কুতুবদিয়া চ্যানেলে ট্রলারডুবি
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর মাঝির ঘাট থেকে মাছ ধরার ট্রলারে করে অবৈধ পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় ৮০ জনেরও বেশি আরোহী নিয়ে একটি ট্রলার মহেশখালীর অদূরে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া চ্যানেলে ডুবে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কুতুবদিয়ার খুদিয়ার টেক এলাকায় ট্রলারটি ডুবে যায়। অর্ধডুবন্ত ট্রলার আঁকড়ে থাকা এবং ভাসমান অবস্থায় কোস্টগার্ড এবং স্থানীয় জেলেরা ওই ট্রলারের ৪২ আরোহীকে জীবিত উদ্ধার করলেও অন্তত ৩৫-৪০ জন আরোহী নিখোঁজ রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা নাগাদ কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ ডুবে যাওয়া ট্রলারটি কুতুবদিয়া উপকূলে টেনে নিয়ে যায়। তবে ট্রলারের ভেতরে তাৎক্ষণিকভাবে তল্লাশি চালিয়ে জীবিত বা মৃত কাউকে পাওয়া যায়নি বলে কোস্টগার্ড নিশ্চিত করেছে। উদ্ধার হওয়া জেলেদের ভাষ্যমতে, ওই ট্রলারে ৮০ জনেরও বেশি আরোহী ছিলেন। ৪২ জন উদ্ধার হলেও আরও ৩৫ থেকে ৪০ জন আরোহী নিখোঁজ রয়েছেন। এদের সলিল সমাধি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওভারলোডিংয়ের কারণেই ট্রলারটি ডুবে যায় বলে উদ্ধার হওয়া যাত্রীরা অভিযোগ করেন। কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর চারটি উদ্ধারকারী জাহাজ ও চারটি মেটাল সার্ক উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে সাতজনকে অসুস্থ অবস্থায় কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত চার দালালের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে কুতুবদিয়া থানায় মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন কুতুবদিয়া থানার ওসি এএস থোয়াই মারমা।
কোস্টগার্ড কুতুবদিয়ার কন্টিনজেন্ট কমান্ডার তারেক মোস্তাফা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যুগান্তরকে জানান, কুতুবদিয়া চ্যানেলে ট্রলারডুবির খবর পাওয়ার পর তিনি একটি কান্ট্রিবোট নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় তারা ৪২ আরোহীকে উদ্ধার করেন। তারা কেউ কেউ সাগরে ভেসেছিলেন কেউবা ডুবন্ত ট্রলার আঁকড়ে ছিলেন। ডুবে যাওয়া ট্রলারটি টেনে বিকাল ৫টার দিকে কুতুবদিয়া উপকূলে ভেড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। উদ্ধার হওয়া আরোহীদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, তাদের ভাষ্যমতে, আরও অন্তত ৩৫-৪০ জন আরোহী নিখোঁজ রয়েছেন। তবে কোনো লাশ তারা পাননি বা ডুবে যাওয়া ট্রলারের ভেতরেও কোনো লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এরপরও সাগরে তারা নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রাখবেন।
কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, পুলিশ ও উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার গভীর রাত ৩টার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর মাঝির ঘাট থেকে ৭৫-৮০ জন যাত্রী নিয়ে এফভি ইদ্রিস নামে একটি মাছ ধরার ট্রলার বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশে যাত্রা করে। মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত দালালরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনকে অর্থ উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য চট্টগ্রামে এনে মাছ ধরার ট্রলারে তুলে দেয়। ট্রলারটি মহেশখালীর মাতারবাড়ি ও কুতুবদিয়ার অদূরে বঙ্গোপসাগরের খুদিয়ার টেক এলাকার কুতুবদিয়া চ্যানেলে হঠাৎ ডুবে যায়। ধারণক্ষমতার অধিক লোক তোলার কারণেই চ্যানেলে গিয়ে মাঝি নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারায় ট্রলারটি ডুবে যায়। এর আরোহীরা অর্ধডুবন্ত ট্রলারের ওপর, কেউবা সাঁতরে আশপাশের অন্য জেলে নৌকায় ওঠে প্রাণ রক্ষা করেন। ট্রলারডুবির খবর পাওয়ার পর কোস্টগার্ডের কুতুবদিয়া কন্টিনজেন্ট কমান্ডার তারেক মোস্তাফা একটি কান্ট্রিবোট নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। নিজেদের টিম ছাড়াও স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় ১০ জনকে উদ্ধার করেন। পরে সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে কোস্টগার্ডের উদ্ধারকারী জাহাজ ‘তৌহিদ’ ও ‘তানভির’ এবং নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ ‘অপরাজেয়’ ও ‘অতন্দ্র’ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। অতন্দ্র নিয়ে উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দেন ওই জাহাজের সিইও লে. কমান্ডার হামজা। নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজের পাশাপাশি চারটি মেটাল সার্ক বা দ্রুতগামী এক ধরনের উড়ন্ত স্পিডবোটও উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। দুপুর দেড়টার মধ্যে যৌথ অভিযানে অর্ধডুবন্ত ট্রলার আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা এবং সাগরে ভেসে থাকা আরও ৩২ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় জেলে ও কোস্টগার্ডের হাতে উদ্ধার হওয়া একজন হলেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার মো. কাওসার (৪২)। যুগান্তর প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, রিটন ও রহিম নামে দুই দালাল তাদের মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য প্রচুর অর্থ উপার্জনের প্রলোভন দিয়ে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে। মাঝির ঘাট থেকে একটি ট্রলারে তাদের তুলে দেয়া হয়। আগাম কোনো টাকা-পয়সা না নিলেও মালয়েশিয়া যাওয়ার পর প্রত্যেকে ২ লাখ টাকা করে দালালদের দেয়ার জন্য প্রতিশ্র“তিবদ্ধ হন। ছোট্ট একটি ট্রলারে ৮০ জনের বেশি লোককে গাদাগাদি করে তোলা হয়। সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৭টার দিকে ট্রলারটি বঙ্গোপসাগরের মাঝে গেলে হঠাৎ কাত হয়ে ডুবে যায়। এ সময় তারা প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার শুরু করেন। ট্রলারটি উল্টে ভেসে থাকলে অর্ধডুবন্ত ট্রলারের ওপর ওঠে ভেসে থাকেন অনেকে। কেউ কেউ সাঁতরে আশপাশে থাকা জেলে নৌকা ও ট্রলারে ওঠে প্রাণ বাঁচান। তাকে কোস্টগার্ড ও জেলেরা উদ্ধার করেন। কাওসার বলেন, তারা সাতজন আড়াইহাজার উপজেলার কলাগাছিয়া থেকে আসেন এবং ওই বোটে ছিলেন। কিন্তু ৫ জন উদ্ধার হলেও তাদের সঙ্গী মাহফুজ ও সাদ্দামের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। যশোরের পণ্ডিতপুর থেকে দালালের খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ওই ট্রলারে ওঠেন ১১ জন। ইয়াসিন জানান, তারা ৫ জন উদ্ধার হলেও সঙ্গী আরও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তিনিও দাবি করেন, ডুবে যাওয়া ওই ট্রলারে কমপক্ষে ৮০ জন আরোহী ছিলেন। তাদের বঙ্গোপসাগরে নিয়ে অপর একটি জাহাজে তুলে দেয়ার কথা ছিল বলে জানান ইয়াসিন। ট্রলারের আরোহীদের অধিকাংশরই বাড়ি নারায়ণগঞ্জ, যশোর, বগুড়া, মাদারীপুর ও নরসিংদী বলে জানা গেছে। কক্সবাজারের খরুশকুলের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ, ওবায়দুল হক, ইসমাইল ও ইয়াসিন মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ তথ্য পেয়েছে। উদ্ধার হওয়া আরোহীদের সঙ্গে এই চার দালালও ছিল। আরোহীরা তাদের দালাল হিসেবে শনাক্ত করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যদিও এ চারজনও নিজেদের অন্যদের মতো মালয়েশিয়াগামী যাত্রী বলে দাবি করছে।
সূত্র জানায়, আগে কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূল থেকে এভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া মানব পাচারের ঘটনা ঘটলেও সেখানে অভিযান জোরদার হওয়ায় পাচারকারীরা রুট পরিবর্তন করে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ এর আগে নগরীর বিভিন্ন হোটেল ও বাসাবাড়ি থেকে এভাবে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এনে জড়ো করা লোকজনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বৃহস্পতিবার নগরীর সদরঘাট থানাধীন মাঝির ঘাট এলাকা থেকে কর্ণফুলী নদীপথে মাছ ধরার ট্রলারে উঠিয়ে দেয়া হয় এসব লোকজনকে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা নাগাদ কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ ডুবে যাওয়া ট্রলারটি কুতুবদিয়া উপকূলে টেনে নিয়ে যায়। তবে ট্রলারের ভেতরে তাৎক্ষণিকভাবে তল্লাশি চালিয়ে জীবিত বা মৃত কাউকে পাওয়া যায়নি বলে কোস্টগার্ড নিশ্চিত করেছে। উদ্ধার হওয়া জেলেদের ভাষ্যমতে, ওই ট্রলারে ৮০ জনেরও বেশি আরোহী ছিলেন। ৪২ জন উদ্ধার হলেও আরও ৩৫ থেকে ৪০ জন আরোহী নিখোঁজ রয়েছেন। এদের সলিল সমাধি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওভারলোডিংয়ের কারণেই ট্রলারটি ডুবে যায় বলে উদ্ধার হওয়া যাত্রীরা অভিযোগ করেন। কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর চারটি উদ্ধারকারী জাহাজ ও চারটি মেটাল সার্ক উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে সাতজনকে অসুস্থ অবস্থায় কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত চার দালালের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে কুতুবদিয়া থানায় মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন কুতুবদিয়া থানার ওসি এএস থোয়াই মারমা।
কোস্টগার্ড কুতুবদিয়ার কন্টিনজেন্ট কমান্ডার তারেক মোস্তাফা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যুগান্তরকে জানান, কুতুবদিয়া চ্যানেলে ট্রলারডুবির খবর পাওয়ার পর তিনি একটি কান্ট্রিবোট নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় তারা ৪২ আরোহীকে উদ্ধার করেন। তারা কেউ কেউ সাগরে ভেসেছিলেন কেউবা ডুবন্ত ট্রলার আঁকড়ে ছিলেন। ডুবে যাওয়া ট্রলারটি টেনে বিকাল ৫টার দিকে কুতুবদিয়া উপকূলে ভেড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। উদ্ধার হওয়া আরোহীদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, তাদের ভাষ্যমতে, আরও অন্তত ৩৫-৪০ জন আরোহী নিখোঁজ রয়েছেন। তবে কোনো লাশ তারা পাননি বা ডুবে যাওয়া ট্রলারের ভেতরেও কোনো লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এরপরও সাগরে তারা নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রাখবেন।
কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, পুলিশ ও উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার গভীর রাত ৩টার দিকে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর মাঝির ঘাট থেকে ৭৫-৮০ জন যাত্রী নিয়ে এফভি ইদ্রিস নামে একটি মাছ ধরার ট্রলার বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশে যাত্রা করে। মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত দালালরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনকে অর্থ উপার্জনের প্রলোভন দেখিয়ে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য চট্টগ্রামে এনে মাছ ধরার ট্রলারে তুলে দেয়। ট্রলারটি মহেশখালীর মাতারবাড়ি ও কুতুবদিয়ার অদূরে বঙ্গোপসাগরের খুদিয়ার টেক এলাকার কুতুবদিয়া চ্যানেলে হঠাৎ ডুবে যায়। ধারণক্ষমতার অধিক লোক তোলার কারণেই চ্যানেলে গিয়ে মাঝি নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারায় ট্রলারটি ডুবে যায়। এর আরোহীরা অর্ধডুবন্ত ট্রলারের ওপর, কেউবা সাঁতরে আশপাশের অন্য জেলে নৌকায় ওঠে প্রাণ রক্ষা করেন। ট্রলারডুবির খবর পাওয়ার পর কোস্টগার্ডের কুতুবদিয়া কন্টিনজেন্ট কমান্ডার তারেক মোস্তাফা একটি কান্ট্রিবোট নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। নিজেদের টিম ছাড়াও স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় ১০ জনকে উদ্ধার করেন। পরে সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে কোস্টগার্ডের উদ্ধারকারী জাহাজ ‘তৌহিদ’ ও ‘তানভির’ এবং নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ ‘অপরাজেয়’ ও ‘অতন্দ্র’ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। অতন্দ্র নিয়ে উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দেন ওই জাহাজের সিইও লে. কমান্ডার হামজা। নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজের পাশাপাশি চারটি মেটাল সার্ক বা দ্রুতগামী এক ধরনের উড়ন্ত স্পিডবোটও উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। দুপুর দেড়টার মধ্যে যৌথ অভিযানে অর্ধডুবন্ত ট্রলার আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা এবং সাগরে ভেসে থাকা আরও ৩২ যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় জেলে ও কোস্টগার্ডের হাতে উদ্ধার হওয়া একজন হলেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার মো. কাওসার (৪২)। যুগান্তর প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, রিটন ও রহিম নামে দুই দালাল তাদের মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য প্রচুর অর্থ উপার্জনের প্রলোভন দিয়ে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে। মাঝির ঘাট থেকে একটি ট্রলারে তাদের তুলে দেয়া হয়। আগাম কোনো টাকা-পয়সা না নিলেও মালয়েশিয়া যাওয়ার পর প্রত্যেকে ২ লাখ টাকা করে দালালদের দেয়ার জন্য প্রতিশ্র“তিবদ্ধ হন। ছোট্ট একটি ট্রলারে ৮০ জনের বেশি লোককে গাদাগাদি করে তোলা হয়। সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৭টার দিকে ট্রলারটি বঙ্গোপসাগরের মাঝে গেলে হঠাৎ কাত হয়ে ডুবে যায়। এ সময় তারা প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার শুরু করেন। ট্রলারটি উল্টে ভেসে থাকলে অর্ধডুবন্ত ট্রলারের ওপর ওঠে ভেসে থাকেন অনেকে। কেউ কেউ সাঁতরে আশপাশে থাকা জেলে নৌকা ও ট্রলারে ওঠে প্রাণ বাঁচান। তাকে কোস্টগার্ড ও জেলেরা উদ্ধার করেন। কাওসার বলেন, তারা সাতজন আড়াইহাজার উপজেলার কলাগাছিয়া থেকে আসেন এবং ওই বোটে ছিলেন। কিন্তু ৫ জন উদ্ধার হলেও তাদের সঙ্গী মাহফুজ ও সাদ্দামের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। যশোরের পণ্ডিতপুর থেকে দালালের খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ওই ট্রলারে ওঠেন ১১ জন। ইয়াসিন জানান, তারা ৫ জন উদ্ধার হলেও সঙ্গী আরও ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তিনিও দাবি করেন, ডুবে যাওয়া ওই ট্রলারে কমপক্ষে ৮০ জন আরোহী ছিলেন। তাদের বঙ্গোপসাগরে নিয়ে অপর একটি জাহাজে তুলে দেয়ার কথা ছিল বলে জানান ইয়াসিন। ট্রলারের আরোহীদের অধিকাংশরই বাড়ি নারায়ণগঞ্জ, যশোর, বগুড়া, মাদারীপুর ও নরসিংদী বলে জানা গেছে। কক্সবাজারের খরুশকুলের বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ, ওবায়দুল হক, ইসমাইল ও ইয়াসিন মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ তথ্য পেয়েছে। উদ্ধার হওয়া আরোহীদের সঙ্গে এই চার দালালও ছিল। আরোহীরা তাদের দালাল হিসেবে শনাক্ত করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। যদিও এ চারজনও নিজেদের অন্যদের মতো মালয়েশিয়াগামী যাত্রী বলে দাবি করছে।
সূত্র জানায়, আগে কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূল থেকে এভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া মানব পাচারের ঘটনা ঘটলেও সেখানে অভিযান জোরদার হওয়ায় পাচারকারীরা রুট পরিবর্তন করে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ এর আগে নগরীর বিভিন্ন হোটেল ও বাসাবাড়ি থেকে এভাবে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এনে জড়ো করা লোকজনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বৃহস্পতিবার নগরীর সদরঘাট থানাধীন মাঝির ঘাট এলাকা থেকে কর্ণফুলী নদীপথে মাছ ধরার ট্রলারে উঠিয়ে দেয়া হয় এসব লোকজনকে।
No comments