কেরানির ছেলে বিখ্যাত ইংরেজ উপন্যাসিক! by ইমরান আলী
ভিক্টোরিয়ান যুগে চার্লস হাফ্যাম ডিকেন্স
(ছদ্মনাম বজ) ছিলেন অন্যতম লেখকদের একজন। বলা হয়, লেখকরা লেখেন তাদের
মনের খোরাক যোগাতে। সে খোরাক পাঠকদের মনের তৃষ্ণাও মেটায়। কিন্তু নিজের
বেঁচে থাকা যখন কঠিন থেকে কঠিনতর হয় তখন কি লেখক পারেন লেখা চালিয়ে নিতে
কিংবা লেখার মতো মানসিকতা ধারণ করতে? হ্যাঁ পারেন। কারণ তারা শত
প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও নিজেকে ছড়িয়ে রাখতে জানেন- পারেন পাঠককে প্রফুল্ল
রাখতে। তেমনই একজন ডিকেন্স। যিনি থেমে থাকেননি নানান প্রতিবন্ধকতার
সম্মুখে দাঁড়িয়েও। জীবন ধারণ করতে গিয়ে পড়েছেন নানান আর্থিক জটিলতায়। কখনও
কাজ করতে হয়েছে রুটির দোকানে। এতকিছুর পরও তার প্রতিটি লেখা শেষ হয়েছে
সুন্দর সমাপ্তি দিয়ে। অথচ তার জীবনটা শুরু হয়েছিল চরম দারিদ্র্যতা, সংকটের
মাঝে। ডিকেন্সের প্রথম জীবন শুরু হয়েছিল জেলখানায়। জেলে থাকতে হয়েছিল কারণ
তার বাবা একসময় ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন। বাবা ছিলেন নেভি পে অফিসের একজন
পিয়ন। শুধু তাই নয়, অমানুষিক পরিশ্রম করতে হয়েছিল ডিকেন্সকে। স্কুল ছেড়ে
কারখানায় কাজ করতে হয়েছিল বাবার ঋণ শোধ করতে। এতসব ভয়ানক কাজ করতে গিয়ে
ডিকেন্স কিন্তু ভেঙে পড়েননি। স্কুলজীবন শেষে সাংবাদিকতা করেছেন অনেকদিন।
কষ্ট, পরিশ্রম তার লেখাকে দিয়েছে নতুন মাত্রা নতুন উৎসাহ। বাস্তব জীবনের
কষ্টগুলোকে তিনি চিত্রিত করেছেন ব্যঙ্গ করে কৌতুক করে। কখনও সামাজিক নানা
সমস্যার সমালোচনা করেছেন কঠোরভাবে। ডিকেন্সের লেখা এতটাই জনপ্রিয় ছিল যা
তার পূর্বসূরি লেখকদের জনপ্রিয়তাকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল। যে জনপ্রিয়তা এখনও
অক্ষুণœ। উনিশ শতকের শ্রেষ্ঠ এই উপন্যাসিক লিখে গেছেন আমৃত্যু পর্যন্ত।
রচনা করেছেন একের পর এক উপন্যাস। কোন উপন্যাসে লিখেছেন নিজ জীবনের অভিজ্ঞতা
কোনটায় পারিপার্শ্বিক অবস্থার বর্ণনা।
তার উল্লেখযোগ্য রচনাসমূহের মধ্যে আছে- স্কেচেস বাই বজ, দি ওল্ড কিউরিসিটি শপ, অলিভার টুইস্ট, নিকোলাস নিকোলবি, আ টেল অব টু সিটিজ, হার্ড টাইমস, আওয়ার মিউচুয়াল ফ্রেন্ড, দ্য পিকউইক পেপারস ইত্যাদি। ইংরেজি ১৮৮২তে ইংল্যান্ডের হাম্পশ্যায়ারে জন্ম নেয়া এই উপন্যাসিকের মৃত্যু হয় ১৮৭০-এ। ফিলাডেলফিয়াতে নির্মিত আছে চার্লস ডিকেন্সের স্মরণে স্ট্যাচু অব ডিকেন্স।
No comments