অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে ৩৮৪, মারা গেছেন দুজন by নজরুল ইসলাম
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজধানীতে
আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে অজ্ঞান পার্টি। এদের খপ্পরে পড়ে গতকাল সোমবার
পর্যন্ত চলতি মাসের ২৯ দিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ও
চিকিৎসা নিয়েছেন ৩৮৪ জন। তাঁদের মধ্যে গত সপ্তাহে দুজন মারা গেছেন।
>>অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শয্যায় অচেতন এক ব্যক্তি। গতকালই তাঁকে ভর্তি করা হয়। সঙ্গে কোনো স্বজন না থাকায় এই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি l প্রথম আলো
ঢাকা
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকা ও আশপাশে
অজ্ঞান পার্টির ১২টি চক্র সক্রিয় রয়েছে। ঈদ ও দুর্গাপূজা সামনে রেখে নগদ
টাকা বহন এবং এর ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় অজ্ঞান পার্টির তৎপরতাও বেড়েছে।
তবে কারও মৃত্যু না হলে এসব ঘটনায় মামলা তেমন হয় না বলে জানা গেছে।
পুলিশ বলেছে, অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে ডিবির চারটি দল। গত কয়েক দিনে ১১ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে গত মঙ্গলবার এক সভায় অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পুলিশ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে হাসপাতালে আসা মানুষের সংখ্যা চলতি মাসে বেড়েছে। প্রতিদিনই কয়েকজন করে এমন রোগী আসছে। গতকাল রাত নয়টা পর্যন্ত চলতি মাসের ২৯ দিনে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ঢাকা মেডিকেলে এসেছে ৩৮৪ জন। এর মধ্যে ২২ সেপ্টেম্বর গোলাপবাগে ভাইয়ের কাছে বেড়াতে এসে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে মারা যান কলেজছাত্র মো. সোহাগ (১৯)। আর ২৪ সেপ্টেম্বর প্রাণ হারান ঢাকা-চট্টগ্রাম পথের মেইল ট্রেনের চালক সোলেমান খান (৫০)। সেদিন শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনির বাসা থেকে বের হওয়ার পর বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁকে মগবাজার থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন এক পথচারী। রাতে তিনি মারা যান।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল আটটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নয়জন ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন গুলিস্তান থেকে উদ্ধার হওয়া কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ইব্রাহিম, মতিঝিলে বাসযাত্রী সাইফুল, যাত্রাবাড়ীতে ব্যবসায়ী আবদুর রহিম। অন্যরা হলেন মনির হোসেন, আবুল কাশেম, নজরুল ইসলাম, খোরশেদ আলম, মো. কালাম ও আলমগীর হোসেন।
২৫ সেপ্টেম্বর এমন চক্রের কবলে পড়াদের মধ্যে আছেন কারওয়ান বাজারের মাছের আড়তদার কামরুল ইসলাম, ফুলবাড়িয়ার ব্যবসায়ী পলাশ আহমেদ, রায়েরবাগের প্রসাধনী ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দীন ও মুগদাপাড়ার আবদুল্লাহ আল ফাহিম। অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়া কয়েকজন গতকাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল দুপুরে অচেতন সিএনজিচালিত এক অটোরিকশাচালক আবুল শেখকে (৪০) ভর্তি করা হয়। তাঁর স্ত্রী নুরুন্নাহার জানান, তাঁদের বাসা আজিমপুরের রসুলবাগে। তাঁর স্বামী সকাল আটটায় অটোরিকশা নিয়ে বের হন। বেলা ১১টার দিকে আজিমপুর বটতলায় তাঁকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়। অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তাঁকে অজ্ঞান করে অটোরিকশা নিয়ে গেছে।
এর আগে ৮ সেপ্টেম্বর শাহবাগে গরু ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে সাত লাখ টাকা খুইয়েছেন। একই দিন যাত্রাবাড়ীতে সৌদিপ্রবাসী মুজিবুর রহমান খুইয়েছেন চার লাখ টাকা।
ভুক্তভোগী, তাঁদের স্বজন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমন ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা সাধারণত মামলা করেন না। কেউ মারা গেলে মামলা হয়। যেমন সোলেমান খানের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্ত্রী নাসিমা আক্তার ২৫ সেপ্টেম্বর রমনা থানায় মামলা করেছেন। রোববার প্রথম আলোকে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তাঁর স্বামীকে হত্যার সঙ্গে জড়িত কাউকে পুলিশ এত দিনেও গ্রেপ্তার করতে পারল না।
এ বিষয়ে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান গতকাল বলেন, সোলেমান খানের মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, এসব ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা সুস্থ হয়ে থানায় মামলা না করেই বাড়ি চলে যান। তাঁদের স্বজনেরাও মামলা করেন না।
ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মাহফুজুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ঘটনার বিষয়ে মামলা না হওয়ায় তদন্তও হয় না। কেউ গ্রেপ্তারও হয় না। তাঁরা অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের গ্রেপ্তার করেন। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা টাকা ও ওষুধের ভিত্তিতে দস্যুতা ও মাদক আইনে মামলা করা হয়।
অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়া রোগীদের ওপর সম্প্রতি গবেষণা করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকদের সূত্র জানায়, গবেষণায় দেখা গেছে, এমন রোগীদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার ‘ডায়াজিপিন’ ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ সেবন করানো হয়েছে। এসব ওষুধ ডায়াবেটিস ও লিভারে সমস্যাগ্রস্ত রোগীদের জন্য মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক বিল্লাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা এখন ‘লারগেটিল’ জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করে। এজাতীয় ওষুধের পাঁচ মিলিগ্রামই মানুষকে অচেতন করতে পারে। অথচ অজ্ঞান পার্টি কারও কারও ক্ষেত্রে ১০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত প্রয়োগ করে। তিনি জানান, এমন রোগীদের কিডনি ও লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ডিএমপির কমিশনার গত রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতার বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এবার এরা আগেভাগেই তৎপর হয়েছে। এমন প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এদের খপ্পর থেকে বাঁচতে তিনি মানুষকে সতর্ক থাকার এবং ভাসমান দোকান ও ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে কিছু কিনে না খাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। পুলিশ জানায়, অজ্ঞান পার্টির তৎপরতার বিষয়ে পুলিশের উচ্চপর্যায়ে বৈঠক হয়েছে।
ডিবির সূত্র জানায়, রাজধানীতে ডিবির চার বিভাগে চারজন অতিরিক্ত উপকমিশনারের তত্ত্বাবধানে গঠন হওয়া চারটি দল অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বন্ধে অভিযান চালাচ্ছে। অভিযান পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. ছানোয়ার হোসেন ও মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ধরা পড়া দুর্বৃত্তরা বলেছে, তারা উচ্চক্ষমতার ঘুমের বড়ি পানিতে গুলে বা চা, শরবত, ডাবের পানি, ভাত, জুসের প্যাকেট, শসা, কোমলপানীয়, পান, ঝালমুড়ি, ক্রিম দেওয়া বিস্কুটে মিশিয়ে কৌশলে মানুষকে খাইয়ে অজ্ঞান করে সব লুটে নেয়।
ডিবির কর্মকর্তারা জানান, অজ্ঞান পার্টির ১২টি চক্র সক্রিয় রয়েছে। এসব চক্রে সদস্য আছে ৩০০ জন। একেক এলাকায় একেকটি চক্র সক্রিয়। গ্রেপ্তার হওয়া সদস্যদের জীবনবৃত্তান্ত ডিবি কার্যালয়ে আছে। দলনেতারা গ্রেপ্তার হলেও কিছুদিনের মাথায় জামিনে বেরিয়ে এসে তারা কিংবা তাদের সহযোগীরা আবার তৎপরতা শুরু করে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের তথ্যের ভিত্তিতে বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পুলিশ বলেছে, অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে ডিবির চারটি দল। গত কয়েক দিনে ১১ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে গত মঙ্গলবার এক সভায় অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পুলিশ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে হাসপাতালে আসা মানুষের সংখ্যা চলতি মাসে বেড়েছে। প্রতিদিনই কয়েকজন করে এমন রোগী আসছে। গতকাল রাত নয়টা পর্যন্ত চলতি মাসের ২৯ দিনে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ঢাকা মেডিকেলে এসেছে ৩৮৪ জন। এর মধ্যে ২২ সেপ্টেম্বর গোলাপবাগে ভাইয়ের কাছে বেড়াতে এসে অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে মারা যান কলেজছাত্র মো. সোহাগ (১৯)। আর ২৪ সেপ্টেম্বর প্রাণ হারান ঢাকা-চট্টগ্রাম পথের মেইল ট্রেনের চালক সোলেমান খান (৫০)। সেদিন শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনির বাসা থেকে বের হওয়ার পর বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁকে মগবাজার থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন এক পথচারী। রাতে তিনি মারা যান।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল আটটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নয়জন ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন গুলিস্তান থেকে উদ্ধার হওয়া কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ইব্রাহিম, মতিঝিলে বাসযাত্রী সাইফুল, যাত্রাবাড়ীতে ব্যবসায়ী আবদুর রহিম। অন্যরা হলেন মনির হোসেন, আবুল কাশেম, নজরুল ইসলাম, খোরশেদ আলম, মো. কালাম ও আলমগীর হোসেন।
২৫ সেপ্টেম্বর এমন চক্রের কবলে পড়াদের মধ্যে আছেন কারওয়ান বাজারের মাছের আড়তদার কামরুল ইসলাম, ফুলবাড়িয়ার ব্যবসায়ী পলাশ আহমেদ, রায়েরবাগের প্রসাধনী ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দীন ও মুগদাপাড়ার আবদুল্লাহ আল ফাহিম। অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়া কয়েকজন গতকাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল দুপুরে অচেতন সিএনজিচালিত এক অটোরিকশাচালক আবুল শেখকে (৪০) ভর্তি করা হয়। তাঁর স্ত্রী নুরুন্নাহার জানান, তাঁদের বাসা আজিমপুরের রসুলবাগে। তাঁর স্বামী সকাল আটটায় অটোরিকশা নিয়ে বের হন। বেলা ১১টার দিকে আজিমপুর বটতলায় তাঁকে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া যায়। অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তাঁকে অজ্ঞান করে অটোরিকশা নিয়ে গেছে।
এর আগে ৮ সেপ্টেম্বর শাহবাগে গরু ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে সাত লাখ টাকা খুইয়েছেন। একই দিন যাত্রাবাড়ীতে সৌদিপ্রবাসী মুজিবুর রহমান খুইয়েছেন চার লাখ টাকা।
ভুক্তভোগী, তাঁদের স্বজন ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমন ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা সাধারণত মামলা করেন না। কেউ মারা গেলে মামলা হয়। যেমন সোলেমান খানের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্ত্রী নাসিমা আক্তার ২৫ সেপ্টেম্বর রমনা থানায় মামলা করেছেন। রোববার প্রথম আলোকে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, তাঁর স্বামীকে হত্যার সঙ্গে জড়িত কাউকে পুলিশ এত দিনেও গ্রেপ্তার করতে পারল না।
এ বিষয়ে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান গতকাল বলেন, সোলেমান খানের মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, এসব ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা সুস্থ হয়ে থানায় মামলা না করেই বাড়ি চলে যান। তাঁদের স্বজনেরাও মামলা করেন না।
ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মাহফুজুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ঘটনার বিষয়ে মামলা না হওয়ায় তদন্তও হয় না। কেউ গ্রেপ্তারও হয় না। তাঁরা অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের গ্রেপ্তার করেন। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা টাকা ও ওষুধের ভিত্তিতে দস্যুতা ও মাদক আইনে মামলা করা হয়।
অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়া রোগীদের ওপর সম্প্রতি গবেষণা করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকদের সূত্র জানায়, গবেষণায় দেখা গেছে, এমন রোগীদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার ‘ডায়াজিপিন’ ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ সেবন করানো হয়েছে। এসব ওষুধ ডায়াবেটিস ও লিভারে সমস্যাগ্রস্ত রোগীদের জন্য মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক বিল্লাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা এখন ‘লারগেটিল’ জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করে। এজাতীয় ওষুধের পাঁচ মিলিগ্রামই মানুষকে অচেতন করতে পারে। অথচ অজ্ঞান পার্টি কারও কারও ক্ষেত্রে ১০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত প্রয়োগ করে। তিনি জানান, এমন রোগীদের কিডনি ও লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ডিএমপির কমিশনার গত রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও অজ্ঞান পার্টির তৎপরতার বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এবার এরা আগেভাগেই তৎপর হয়েছে। এমন প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এদের খপ্পর থেকে বাঁচতে তিনি মানুষকে সতর্ক থাকার এবং ভাসমান দোকান ও ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে কিছু কিনে না খাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। পুলিশ জানায়, অজ্ঞান পার্টির তৎপরতার বিষয়ে পুলিশের উচ্চপর্যায়ে বৈঠক হয়েছে।
ডিবির সূত্র জানায়, রাজধানীতে ডিবির চার বিভাগে চারজন অতিরিক্ত উপকমিশনারের তত্ত্বাবধানে গঠন হওয়া চারটি দল অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বন্ধে অভিযান চালাচ্ছে। অভিযান পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. ছানোয়ার হোসেন ও মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ধরা পড়া দুর্বৃত্তরা বলেছে, তারা উচ্চক্ষমতার ঘুমের বড়ি পানিতে গুলে বা চা, শরবত, ডাবের পানি, ভাত, জুসের প্যাকেট, শসা, কোমলপানীয়, পান, ঝালমুড়ি, ক্রিম দেওয়া বিস্কুটে মিশিয়ে কৌশলে মানুষকে খাইয়ে অজ্ঞান করে সব লুটে নেয়।
ডিবির কর্মকর্তারা জানান, অজ্ঞান পার্টির ১২টি চক্র সক্রিয় রয়েছে। এসব চক্রে সদস্য আছে ৩০০ জন। একেক এলাকায় একেকটি চক্র সক্রিয়। গ্রেপ্তার হওয়া সদস্যদের জীবনবৃত্তান্ত ডিবি কার্যালয়ে আছে। দলনেতারা গ্রেপ্তার হলেও কিছুদিনের মাথায় জামিনে বেরিয়ে এসে তারা কিংবা তাদের সহযোগীরা আবার তৎপরতা শুরু করে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের তথ্যের ভিত্তিতে বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
No comments