ইউক্রেনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন
ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘হস্তক্ষেপ’ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে অভিযোগ করেছে জার্মানি। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক ওয়াল্টার স্টাইনমেয়ার গত শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এই অভিযোগ করেন। এদিন ভাষণ দেওয়া ইউরোপের অন্য কয়েকজন নেতাও ইউক্রেনে রাশিয়ার কথিত হস্তক্ষেপ এবং সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) উত্থানে বিশ্বব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। খবর জাতিসংঘ ওয়েবসাইটের। জাতিসংঘে শনিবার অন্যান্যের মধ্যে চীন, আফগানিস্তান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, গ্রিস ও কিউবার নেতারা ভাষণ দেন। জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টাইনমেয়ার বলেন, ‘অনেকেই মনে করতে পারেন, ইউক্রেন সংকট একটি আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব মাত্র। কিন্তু আমি মনে করি, এই সংকট আমাদের সবার ওপরই প্রভাব ফেলবে। রাশিয়া শুধু একটি দেশ নয়, তারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যও বটে। তারা ইউক্রেন থেকে ক্রিমিয়াকে নিজের ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করেছে। একতরফাভাবে ইউরোপের মানচিত্র বদলে ফেলেছে এবং এটা করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।’ জার্মানির মন্ত্রী এই ‘বিপজ্জনক সংকেতের’ বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা অবশ্যই পূর্ব-পশ্চিমের পুরোনো বিভক্তিকে সমর্থন দেব না।’ তিনি এই সংকটকে শুধু ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ সংশ্লিষ্ট হিসেবে বিবেচনা না করে ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক আইনের কার্যকারিতার প্রশ্ন হিসেবে বিবেচনা করার ওপর গুরুত্ব দেন।
ইরাক, সিরিয়া ও আফ্রিকায় চলমান পরিস্থিতিও নিছক আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব নয় বলে মন্তব্য করেন স্টাইনমেয়ার। অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেবাস্টিয়ান কুর্জও বলেন, ইউক্রেনে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সীমান্ত পরিবর্তন হয়েছে। এসবই ইউরোপের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে এসেছে। ...কোনোভাবেই স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতায় ফিরে যাওয়া যাবে না। রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে স্থিতিশীল অখণ্ড ইউক্রেন নিশ্চিত করতে হবে।’স্যান মেরিনোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্যাসকুয়েলি ভ্যালেন্টিনি সিরিয়ায় মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের নিন্দা জানান। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। একই দিনে দেওয়া ভাষণে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ইউক্রেনে তাদের হস্তক্ষেপের অভিযোগ নাকচ করে দেন। তিনি সিরিয়া, ইরাক ও লিবিয়ায় পশ্চিমা হামলার নিন্দা জানান। বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে লাভরভ বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের উচিত মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় চলমান সহিংসতার তদন্ত করা। আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জারার আহমাদ ওসমানী সহিংসতার মধ্যেও তাঁর দেশের নানা অর্জনের কথা তুলে ধরেন। এসব অর্জন ধরে রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। কিউবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রদ্রিগেজ পারিল্লা তাঁর ভাষণে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জাতিসংঘের মূলনীতি রক্ষার জন্যই সংস্কার প্রয়োজন, যেখানে জাতিসংঘের মহাসচিব বিশ্বশান্তির নিশ্চয়তা দেবেন।
No comments