বিচারপতিদের তদন্ত করবেন কারা? by সাজেদুল হক
সংবিধানের নয়া সংশোধনী চূড়ান্ত। বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা চলে যাচ্ছে সংসদের কাছে। কিন্তু বিচারপতিদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত করবেন কারা? বিচারপতিরাই কি এ তদন্তে থাকবেন? নাকি সংসদ সদস্য অথবা আমলারা এ তদন্ত করবেন। কোন সূত্র এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে না পারলেও রাজনীতিবিদদের এ তদন্ত প্রক্রিয়ায় থাকার সম্ভাবনাই বেশি। বিচারপতিদের অপসারণ সংক্রান্ত আইনে বিষয়টি খোলাসা করা হবে। তবে আইনবিদরা বলছেন, বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত প্রক্রিয়ায় রাজনীতিবিদরা থাকলে বিচারপতিদের স্বাধীনতা বলতে কিছু থাকবে না।
পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের আগে বিচারপতিদের অভিশংসন প্রশ্নে সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল সংসদীয় কমিটির কাছে নিজের মত দিয়েছিলেন। তখন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছিলেন তিনি। যুক্তি দেখিয়েছিলেন কোন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাই তা তদন্ত করে থাকেন। সে সময় আরেক সাবেক প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিমও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল রাখার পক্ষে মত দেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং শ্রীলঙ্কার মতো কিছু দেশে বিচারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তে রাজনীতিবিদরা সম্পৃক্ত থাকেন। শ্রীলঙ্কায় রাজনীতিবিদদের নিয়ন্ত্রণের কারণে বিচার বিভাগ ধবংসপ্রায়। বিচারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে রাজনীতিবিদদের সম্পৃক্ততার বিরোধিতা করেছেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। শেখ হাসিনার বিগত সরকারের আইনমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা করা ঠিক হবে না। আমি এটা অবশ্যই দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে পারি, তদন্তে রাজনীতিকেরা থাকলে বিচারকের স্বাধীনতা থাকবে না। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেনে বলেন, বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে দেয়ার যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ দলীয়করণের উদ্যেগ। ১৯৭৫ সালে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল। এবারও তারা একই উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, বিচারপতিদের ভয়ের মধ্যে রাখার জন্য এ সংশোধনী করা হচ্ছে।
সংবিধানের বর্তমান ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অসদাচারণের কোন অভিযোগ এলে তা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে পাঠানো হয়। প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বিচারপতির মধ্যে কর্মে প্রবীণ দুই বিচারপতির সমন্বয়ে এ কাউন্সিল গঠিত। এ কাউন্সিলের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট বিচারপতিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন। ১৯৭২ সালের সংবিধানে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ছিল। তবে ওই অনুচ্ছেদ কার্যকরে সে সময়ে কোন আইন তৈরি হয়নি। কোন পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় সংসদকে অভিশংসনের ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল তা স্মরণ করেছেন সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেছেন, আমরা যখন সংবিধান প্রণয়ন করেছিলাম তখন বিচারকদের অপসারণের ভার সংসদের হাতে দিয়েছিলাম। তখন বিচারকদের অভিশংসন নিয়ে এত চিন্তা করা হয়নি। আমরা ভেবেছি এমনভাবে বিচারক নিয়োগ করা হবে যে অভিশংসনের প্রয়োজনই হবে না। যেমন ভারতে বিচারকদের কখনও অভিশংসন করা হয়নি। আমাদের এখানেও করা হয়নি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংশোধনীর বিরোধিতা করেছেন প্রবীণ এ আইনজীবী। ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতির ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের কাছে অর্পণ করা হয়। পরে জিয়াউর রহমানের আমলে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে দেয়া হয়। যদিও আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক একাধিকবার দাবি করেছেন, জিয়াউর রহমান সংসদের অভিশংসন ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টকে দিয়েছিলেন। কিন্তু ইতিহাস আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করে না।
পঞ্চদশ সংশোধনী পাসের আগে বিচারপতিদের অভিশংসন প্রশ্নে সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল সংসদীয় কমিটির কাছে নিজের মত দিয়েছিলেন। তখন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছিলেন তিনি। যুক্তি দেখিয়েছিলেন কোন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাই তা তদন্ত করে থাকেন। সে সময় আরেক সাবেক প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিমও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বহাল রাখার পক্ষে মত দেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং শ্রীলঙ্কার মতো কিছু দেশে বিচারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তে রাজনীতিবিদরা সম্পৃক্ত থাকেন। শ্রীলঙ্কায় রাজনীতিবিদদের নিয়ন্ত্রণের কারণে বিচার বিভাগ ধবংসপ্রায়। বিচারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে রাজনীতিবিদদের সম্পৃক্ততার বিরোধিতা করেছেন ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। শেখ হাসিনার বিগত সরকারের আইনমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা করা ঠিক হবে না। আমি এটা অবশ্যই দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে পারি, তদন্তে রাজনীতিকেরা থাকলে বিচারকের স্বাধীনতা থাকবে না। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেনে বলেন, বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে দেয়ার যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ দলীয়করণের উদ্যেগ। ১৯৭৫ সালে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল। এবারও তারা একই উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, বিচারপতিদের ভয়ের মধ্যে রাখার জন্য এ সংশোধনী করা হচ্ছে।
সংবিধানের বর্তমান ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারপতিদের বিরুদ্ধে অসদাচারণের কোন অভিযোগ এলে তা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে পাঠানো হয়। প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বিচারপতির মধ্যে কর্মে প্রবীণ দুই বিচারপতির সমন্বয়ে এ কাউন্সিল গঠিত। এ কাউন্সিলের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট বিচারপতিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন। ১৯৭২ সালের সংবিধানে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ছিল। তবে ওই অনুচ্ছেদ কার্যকরে সে সময়ে কোন আইন তৈরি হয়নি। কোন পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় সংসদকে অভিশংসনের ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল তা স্মরণ করেছেন সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেছেন, আমরা যখন সংবিধান প্রণয়ন করেছিলাম তখন বিচারকদের অপসারণের ভার সংসদের হাতে দিয়েছিলাম। তখন বিচারকদের অভিশংসন নিয়ে এত চিন্তা করা হয়নি। আমরা ভেবেছি এমনভাবে বিচারক নিয়োগ করা হবে যে অভিশংসনের প্রয়োজনই হবে না। যেমন ভারতে বিচারকদের কখনও অভিশংসন করা হয়নি। আমাদের এখানেও করা হয়নি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবিধান সংশোধনীর বিরোধিতা করেছেন প্রবীণ এ আইনজীবী। ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতির ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের কাছে অর্পণ করা হয়। পরে জিয়াউর রহমানের আমলে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে দেয়া হয়। যদিও আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক একাধিকবার দাবি করেছেন, জিয়াউর রহমান সংসদের অভিশংসন ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টকে দিয়েছিলেন। কিন্তু ইতিহাস আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করে না।
No comments