ফরাসি মন্ত্রিসভার পদত্যাগ
ফ্রান্সে সরকারের অর্থনীতিবিষয়ক নীতি নিয়ে বিরোধের জেরে গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন প্রধানমন্ত্রী মানুয়েল ওয়াইয়ুস। প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলাদকে তিনি নতুন সরকার গঠন করতে বলেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে তাঁকে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট। খবর বিবিসি ও এএফপির। বেশ কিছুদিন ধরে সরকারের নীতির সমালোচনা করে আসছিলেন মানুয়েলের মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রী আরন মঁতেবু। গত শনিবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে সরকারের অর্থনীতিবিষয়ক নীতির তীব্র সমালোচনা করে মঁতেবু বলেন, এই নীতি দেশটির প্রবৃদ্ধির গলা টিপে ধরেছে। পরদিন রোববার তিনি আরেক দফা সরকারকে আক্রমণ করেন। ওই দিন এক বক্তব্যে দেশটির অর্থনৈতিক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার জন্য প্রেসিডেন্ট ওঁলাদ ও প্রধানমন্ত্রী মানুয়েলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ সময় মঁতেবু বলেন, অর্থমন্ত্রী হিসেবে তাঁর দায়িত্ব হলো দেশের অর্থনীতির গুরুতর অবস্থায় বিকল্প সমাধানের পথ বাতলে দেওয়া। আর ঠিক এই কারণেই সরকারের বর্তমান নীতির সমালোচনা করছেন তিনি।
গত মার্চে স্থানীয় নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ওঁলাদের নেতৃত্বাধীন সমাজতান্ত্রিক দল বাজে ফলাফল করার পর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন মানুয়েল। তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়ে আসছিলেন, মন্ত্রীদের মধ্যে অবাধ্যতা বরদাশত করা হবে না। তা সত্ত্বেও ব্যক্তিগতভাবে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনার কোনো জবাব তিনি দেননি। যদিও এর জেরে গতকাল মন্ত্রিসভাসহ তিনি পদত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একজন অবশ্য বলেছেন, মঁতেবু সীমা লঙ্ঘন করেছেন। আজ মঙ্গলবার নতুন মন্ত্রিসভার ঘোষণা আসতে পারে। তবে নতুন মন্ত্রিসভায় মঁতেবুকে রাখা হবে কি না ঠিক নেই। ধারণা করা হচ্ছে, এতে তাঁর ঠাঁই হবে না। ফ্রান্সে মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করল। ক্ষমতাসীন সমাজতান্ত্রিক দল দেশটির নিশ্চল অর্থনীতিকে চাঙা করার চেষ্টা করছে। তবে তাদের নীতি নিয়ে সরকারের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব আছে। ছয় মাস ধরে ফরাসি অর্থনীতি স্থবির হয়ে আছে। চলতি মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে, এ বছরের মধ্যে প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ বৃদ্ধির ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ওঁলাদের আশা পূর্ণ না-ও হতে পারে।
No comments