গাজায় ফিলিস্তিনিদের উল্লাস
দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে রাস্তায় নেমে উল্লাস প্রকাশ করে সাধারণ ফিলিস্তিনিরা। গত মঙ্গলবার গাজা উপত্যকার রাফা শহর থেকে তোলা ছবি। এএফপি |
হামাস ও ইসরায়েল দীর্ঘমেয়ািদ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজায় আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ করেছে। যুদ্ধবিরতির চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে গাজা উপত্যকার ওপর থেকে ইসরায়েলি অবরোধ শিথিল করা হবে—এটাই তাদের আনন্দের মূল কারণ। মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে গত মঙ্গলবার ওই সমঝোতা হয়। খবর রয়টার্স, এএফপি ও আল-জাজিরার। গাজার হাজার হাজার বাসিন্দা গতকাল বুধবার রাস্তায় নেমে বিজয়সূচক ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে যুদ্ধবিরতি সম্পাদনের সাফল্য উদ্যাপন করেছে।
এই চুক্তির মধ্য দিয়ে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলা সংঘাতের অবসান হয়েছে। চুক্তির ফলে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি অবরোধ অবিলম্বে শিথিল হবে বলে সেখানকার অধিবাসীদের জীবন-জীবিকার ওপর সরাসরি ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। চুক্তিতে গাজা উপকূলের আশপাশের এলাকায় মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞাও পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহারের কথা বলা হয়েছে। শরণার্থীরা বাড়ি ফিরলে স্কুলগুলোতে আবার লেখাপড়া শুরু করা সম্ভব হবে। মিসরের সঙ্গে সীমান্তের রাফা সীমান্তচৌকি খুলে দেওয়ার পাশাপাশি আরও পাঁচটি চৌকিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হবে। তা ছাড়া, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে আলোচনা আবার শুরু হলে দুই পক্ষের সম্মতিতে একটি সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর নির্মাণের প্রসঙ্গ নিয়েও মতবিনিময় হবে। কায়রোর আলোচনা সফল করতে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ‘ইতিবাচক ভূমিকার’ জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। মঙ্গলবার তিনি বলেন, স্বাক্ষরের দিন থেকেই অস্ত্রবিরতি কার্যকর হয়েছে।
এই চুক্তিকে একটি নতুন জাতি গঠন এবং দখলদারির অবসান ঘটানোর সুযোগ হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারাও চুক্তিতে তাঁদের সম্মতির কথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। হামাস গত ১৫ জুলাইয়ের অস্ত্রবিরতি গ্রহণ করলে রক্তপাত এড়াতে পারত বলে দাবি করেছেন ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র মার্গ রেগেভ। এদিকে হামাসের নির্বাসিত উপনেতা মুসা আবু মারজুক দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ‘প্রতিরোধের বিজয়’ আখ্যা দিয়েছেন। যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি মেনে চলার জন্য জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে। হামাসের রকেট ছোড়ার জবাব দিতে গাজায় গত ৮ জুলাই থেকে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এতে এ পর্যন্ত দুই হাজার ১৪২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে যার অধিকাংশই বেসামরিক লোকজন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৪৯০টি শিশু রয়েছে। আর ইসরায়েলি পক্ষের মোট ৬৯ জন নিহত হয়েছে। গাজায় সহায়তা দেবে কাতার: কট্টরপন্থী সংগঠন হামাসের সমর্থক কাতার গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার পর সেখানকার ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনর্গঠনে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দেশটির সরকারি এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।
No comments