স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি দখলের লড়াই by সোলায়মান তুষার ও রোকনুজ্জামান পিয়াস
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি দখলের লড়াই শুরু হয়েছে। ক্যাম্পাস দখল, টাকা ভাগাভাগিসহ নানা বিষয়ে চলছে দ্বন্দ্ব। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি একেএম এনামুল হক শামীম গুলিবিদ্ধ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ হান্নান ফিরোজ গ্রেপ্তারের পর বিষয়টি সামনে এসেছে। হান্নান ফিরোজের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, এ সব ঘটনার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি দখলের পাঁয়তারা চলছে। তবে এনামুল হক শামীম বলেছেন, কারও নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়নি। তবে পুলিশ সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সূত্র জানায়, ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য সংখ্যা ১৩। এর মধ্যে হান্নান ফিরোজ, স্ত্রী ও কন্যাসহ এ বোর্ডে রয়েছে ৯ জন সদস্য। আর এনামুল হক শামীম, তার স্ত্রী ও বোনসহ তার পরিবারের রয়েছে ৪ জন সদস্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে একটি পারিবারিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে দু’টি ক্যাম্পাস। একটি ধানমন্ডিতে। অপরটি সিদ্ধেশ্বরীতে। আর রয়েছে একাধিক শাখা ক্যাম্পাস। প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা ড. হান্নান ফিরোজ বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন। তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা প্রতি মাসে আড়াই লাখ টাকা করে বেতন নেন। অথচ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ট্রাস্টি সদস্যরা কোন অর্থনৈতিক সুবিধা নিতে পারবেন না। তবে সভা সেমিনারে অংশ নিলে তারা নির্ধারিত একটা সুবিধা নিতে পারবেন। ইউজিসি সূত্র জানায় প্রতি সভায় অংশ নেয়ার জন্য ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা পেতে পারেন। ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী বলেন, ট্রাস্টি সদস্যরা কোন অর্থনৈতিক সুবিধা নিতে পারবেন না। তিনি বলেন, প্রতি মাসে আড়াই লাখ টাকা নেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এটা হয়ে থাকলে নিশ্চয় অনিয়ম। গত ১৯শে জুন ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে বের হওয়ার সময় ইবনে সিনা হাসপাতালের গলিতে দুর্বৃত্তের হামলার শিকার হন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য একে এম এনামুল হক শামীম। মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের গুলি তার হাতে লাগে। শামীম গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরদিন তার চাচা নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করেন। তাতে হান্নান ফিরোজ বা কারও নাম ছিল না। ঘটনার পর থেকেই র্যাব-পুলিশ তদন্তে নামে। শামীমকে গুলি করার অভিযোগে গত ৭ই জুলাই র্যাব বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হারুন, মেহেদী, মনির ও জুয়েল নামের চারজনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে হারুন ও মেহেদী মোটরসাইকেল আরোহী তিন দুর্বৃত্তের দু’জন। দু’দিন পর ৯ই জুলাই মোটরসাইকেল আরোহী অপর একজন রানা হাওলাদার, নাজিমুল হক মিঠু ও নূরে আলম সিদ্দিকী নামে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। কয়েক দফা রিমান্ড শেষে ১৫ই জুলাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় রানা। ওই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রানা বলে, শামীমকে হত্যাচেষ্টার মূল পরিকল্পনাকারী স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হান্নান ফিরোজ। শামীমকে হত্যার জন্য তিনি মিঠুকে দায়িত্ব দেন। এ জন্য ৬ লাখ টাকাও দেন। মিঠু তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে মোটরসাইকেল কেনাসহ পেশাদার কিলার ভাড়া করে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রানা বলেছে, হান্নান ফিরোজের পরিকল্পনা ও মিঠুর কথামতো তারা এ কাজ করেছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, নাজিমুল হক মিঠু হলো হান্নান ফিরোজের মালিকানাধীন ‘বাংলাদেশ সময়’-এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, রানার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও অন্য কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদে হান্নান ফিরোজের নাম আসে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৬ই জুলাই হান্নান ফিরোজকে ভোরে তার ধানমন্ডির ৯/এ’র বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তিনি রিমান্ডে আছেন।
একেএম এনামুল হক শামীম একটি ব্যাংকের পরিচালক থাকাকালে ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হন। বর্তমানে শামীম ছাড়াও তার স্ত্রী তাহমিনা খাতুন, বোন শামীম আরা হক কাকলী ও শামীমের আত্মীয় জাকির হোসেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। শামীম ইউনিভার্সিটিতে নিয়মিত অফিস করলেও অন্যরা একেবারেই অনিয়মিত। কিন্তু প্রতি মাসে তারা নিয়ে নেন কাগজে-কলমে আড়াই লাখ টাকা। এর বাইরে তো আছেই। এছাড়া শামীম ডিসিপ্লিন বোর্ডের সভাপতি। হান্নান ফিরোজের পর শামীমের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অন্যদিকে হান্নান ফিরোজ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। এর বাইরে তার স্ত্রী ফাতিনাজ ফিরোজ, ছোট ভাই মাহবুব আলম জাকির, বড় মেয়ে ফারাহনাজ ফিরোজ, ছোট মেয়ে জারাহনাজ ফিরোজ, শ্যালক তালাল রহমান, ছোট ভাই মনিরুজ্জামান মনির, চাচা সেলিম হোসেন চৌধুরী ও ছোট বোন রুমানা হক রিতা ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসায় শামীমের আধিপত্য বাড়তে থাকে ক্যাম্পাসে। তিনি রাজনীতি করলেও ক্যাম্পাসে যাতায়াত ছিল নিয়মিত। সংশ্লিষ্টরা জানান, কি কারণে শামীম গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট না হলেও স্টামফোর্ড নিয়ে শামীম আর হান্নান ফিরোজের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল এক প্রকার প্রকাশ্যে। বিশেষ করে সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসটি নিয়ে বছর খানেক আগে হান্নান ফিরোজ ও শামীমের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এছাড়া সমপ্রতি একজন ট্রাস্টি সদস্যকে সরিয়ে দেয়া নিয়ে এ দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। তখন থেকেই এক পক্ষ অপর পক্ষকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ইউনিভার্সিটির ব্যবস্থাপনা নিয়ে শামীম ও হান্নান ফিরোজের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি-দক্ষিণ) কৃষ্ণপদ রায় বলেন, গ্রেপ্তারকৃত একজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হান্নান ফিরোজের নাম আসায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছি। ইউনিভার্সিটির ব্যবস্থাপনা নিয়ে তাদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব ছিল। তদন্ত শেষ হলেই সব কিছু বলা যাবে।
ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম.এ হান্নান ফিরোজের স্ত্রী ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ফাতিনাজ ফিরোজ বলেন, শামীমের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক কোন দ্বন্দ্ব নেই। তিনিই শামীমকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে এসেছেন। কথিত অভিযোগের ভিত্তিতে শামীমের হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বয়স্ক একজন মানুষকে বারবার রিমান্ডে নেয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। আমি আমার স্বামীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। হান্নান ফিরোজের মেয়ে ফারাহনাজ ফিরোজ বলেন, সুপরিকল্পিতভাবে কতিপয় অজ্ঞাত টোকাইদের সাক্ষী বানিয়ে আরেকটি জজ মিয়া নাটকের অবতারণা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি দখলের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, কারও নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়নি। তবে পুলিশ সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করে তিনি বলেন, জড়িত কেউ যেন রেহাই না পায়। শামীম আরও বলেন, হান্নান ফিরোজের সঙ্গে আমার কোন দ্বন্দ্ব নেই। পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় দখলের অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আছি। এখানে দখলের কোন প্রশ্নই আসে না। কেউ এ ধরনের অভিযোগ করলে সেটা ভুল এবং ভিত্তি নেই। সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাস তার নিয়ন্ত্রণে নেয়ার বিষয়ে শামীম বলেন, আমি দুই ক্যাম্পাসের সঙ্গেই জড়িত। ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা প্রতি মাসে আড়াই লাখ টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে শামীম বলেন, যারা ফুলটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন তারাই ওই টাকা নিয়ে থাকেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী বলেন, সমমনা মনের ব্যক্তিরাই ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হন। এতে আইনি কোন সমস্যা নেই। তবে এ স্পিরিট আমি সমর্থন করি না। ইউজিসি চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয় তো ট্রাস্টের সম্পদ। এখান থেকে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা অর্থনৈতিক সুবিধা নিতে পারেন না। আড়াই লাখ টাকা কেন এক টাকাও নিতে পারবেন না। এটা হয়ে থাকলে নিশ্চয় অর্থনৈতিক অনিয়ম। তবে সভা বা কোন প্রোগ্রামে অংশ নিলে সভাপতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা সুবিধা নিতে পারেন। তাই বলে মাসে আড়াই লাখ টাকা? এটা নিশ্চয় বেআইনি। বিষয়টি ইউজিসি খতিয়ে দেখবে।
একেএম এনামুল হক শামীম একটি ব্যাংকের পরিচালক থাকাকালে ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হন। বর্তমানে শামীম ছাড়াও তার স্ত্রী তাহমিনা খাতুন, বোন শামীম আরা হক কাকলী ও শামীমের আত্মীয় জাকির হোসেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। শামীম ইউনিভার্সিটিতে নিয়মিত অফিস করলেও অন্যরা একেবারেই অনিয়মিত। কিন্তু প্রতি মাসে তারা নিয়ে নেন কাগজে-কলমে আড়াই লাখ টাকা। এর বাইরে তো আছেই। এছাড়া শামীম ডিসিপ্লিন বোর্ডের সভাপতি। হান্নান ফিরোজের পর শামীমের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অন্যদিকে হান্নান ফিরোজ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান। এর বাইরে তার স্ত্রী ফাতিনাজ ফিরোজ, ছোট ভাই মাহবুব আলম জাকির, বড় মেয়ে ফারাহনাজ ফিরোজ, ছোট মেয়ে জারাহনাজ ফিরোজ, শ্যালক তালাল রহমান, ছোট ভাই মনিরুজ্জামান মনির, চাচা সেলিম হোসেন চৌধুরী ও ছোট বোন রুমানা হক রিতা ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসায় শামীমের আধিপত্য বাড়তে থাকে ক্যাম্পাসে। তিনি রাজনীতি করলেও ক্যাম্পাসে যাতায়াত ছিল নিয়মিত। সংশ্লিষ্টরা জানান, কি কারণে শামীম গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট না হলেও স্টামফোর্ড নিয়ে শামীম আর হান্নান ফিরোজের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল এক প্রকার প্রকাশ্যে। বিশেষ করে সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসটি নিয়ে বছর খানেক আগে হান্নান ফিরোজ ও শামীমের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এছাড়া সমপ্রতি একজন ট্রাস্টি সদস্যকে সরিয়ে দেয়া নিয়ে এ দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। তখন থেকেই এক পক্ষ অপর পক্ষকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ইউনিভার্সিটির ব্যবস্থাপনা নিয়ে শামীম ও হান্নান ফিরোজের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি-দক্ষিণ) কৃষ্ণপদ রায় বলেন, গ্রেপ্তারকৃত একজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হান্নান ফিরোজের নাম আসায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করছি। ইউনিভার্সিটির ব্যবস্থাপনা নিয়ে তাদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব ছিল। তদন্ত শেষ হলেই সব কিছু বলা যাবে।
ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম.এ হান্নান ফিরোজের স্ত্রী ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ফাতিনাজ ফিরোজ বলেন, শামীমের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক কোন দ্বন্দ্ব নেই। তিনিই শামীমকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে এসেছেন। কথিত অভিযোগের ভিত্তিতে শামীমের হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বয়স্ক একজন মানুষকে বারবার রিমান্ডে নেয়ার বিষয়টি দুঃখজনক। আমি আমার স্বামীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। হান্নান ফিরোজের মেয়ে ফারাহনাজ ফিরোজ বলেন, সুপরিকল্পিতভাবে কতিপয় অজ্ঞাত টোকাইদের সাক্ষী বানিয়ে আরেকটি জজ মিয়া নাটকের অবতারণা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি দখলের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, কারও নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়নি। তবে পুলিশ সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করে তিনি বলেন, জড়িত কেউ যেন রেহাই না পায়। শামীম আরও বলেন, হান্নান ফিরোজের সঙ্গে আমার কোন দ্বন্দ্ব নেই। পুলিশ গ্রেপ্তারকৃতদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় দখলের অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আছি। এখানে দখলের কোন প্রশ্নই আসে না। কেউ এ ধরনের অভিযোগ করলে সেটা ভুল এবং ভিত্তি নেই। সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাস তার নিয়ন্ত্রণে নেয়ার বিষয়ে শামীম বলেন, আমি দুই ক্যাম্পাসের সঙ্গেই জড়িত। ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা প্রতি মাসে আড়াই লাখ টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে শামীম বলেন, যারা ফুলটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন তারাই ওই টাকা নিয়ে থাকেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী বলেন, সমমনা মনের ব্যক্তিরাই ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হন। এতে আইনি কোন সমস্যা নেই। তবে এ স্পিরিট আমি সমর্থন করি না। ইউজিসি চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয় তো ট্রাস্টের সম্পদ। এখান থেকে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা অর্থনৈতিক সুবিধা নিতে পারেন না। আড়াই লাখ টাকা কেন এক টাকাও নিতে পারবেন না। এটা হয়ে থাকলে নিশ্চয় অর্থনৈতিক অনিয়ম। তবে সভা বা কোন প্রোগ্রামে অংশ নিলে সভাপতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা সুবিধা নিতে পারেন। তাই বলে মাসে আড়াই লাখ টাকা? এটা নিশ্চয় বেআইনি। বিষয়টি ইউজিসি খতিয়ে দেখবে।
No comments