নির্মলেন্দু গুণের কবিতা by সিদ্দিকুর রহমান খান
আমার গর্ভধারিণী মাতার নাম বীণাপাণি। আমার চার বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই উনি লোকান্তরিত হন।
ফলে তাঁর কোনো সুখস্মৃতি আমার মনে নেই। শুধু একটি আবছা ছবি আছে আমার চোখে।
মা বিছানায় শুয়ে আছেন। আমার বাবা বালতি থেকে জল ঢালছেন তাঁর মাথায়। আমি আমার মাকে কখনও
কোথাও দাঁড়ানো অবস্থায় বা বসে থাকতে বা ঘরে ভিতরে বা বাইরে উঠানে হেঁটে বেড়াতে দেখিনি।
আমার প্রিয় রাবারের বলটি বুকে জড়িয়ে নিয়ে আমি ঘরের বাইরে চলে যাচ্ছিলাম। তখন আমার বাবা
আমাকে মায়ের পাশে এসে একটু বসতে বললেন। কিন্তু আমি তাঁর প্রস্তাবে রাজি হইনি। আমি দ্রুত দৌড়ে
ঘর ছেড়ে আমার বাবা-মার দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যাই।
পরে একটু বড় হয়ে জেনেছি- ঐ দিনই অল্প-সময়ের ব্যবধানে আমাকে কাছে পাবার সঙ্গতসাধ অপূর্ণ
রেখেই আমার মায়ের জীবন প্রদীপ নির্বাপিত হয়। শুনেছি বড় ভাইয়ের সঙ্গে মিলে, আমাদের গ্রামের ধনাই
নদীতীরবর্তী পারিবারিক-শশ্মানে আমি তাঁর মুখাগ্নি করেছিলাম। কিন্তু সেরকম কোনো কঠিন দৃশ্য আমার
মনে পড়ে না।
মা, তুমি কি সেদিন বুকে জড়িয়ে ধরে আমাকে আদর করতে চেয়েছিলে? তোমার খেলাপাগল এই দুরন্ত
পুত্রটিকে ক্ষমা করো। তোমার শেষ-আদর আমার ভাগ্যে ছিলো না।
দেশকে মাতৃজ্ঞান করাটা এই দিক থেকে ভালো যে, সে আমাদের গর্ভধারিণী মায়েদের মতো
মরণশীলা নয়। আমাদের অন্তরের ভালোবাসা দিয়ে আমরা তাঁকে চিরদিন বাঁচিয়ে রাখতে পারি।
ফলে তাঁর কোনো সুখস্মৃতি আমার মনে নেই। শুধু একটি আবছা ছবি আছে আমার চোখে।
মা বিছানায় শুয়ে আছেন। আমার বাবা বালতি থেকে জল ঢালছেন তাঁর মাথায়। আমি আমার মাকে কখনও
কোথাও দাঁড়ানো অবস্থায় বা বসে থাকতে বা ঘরে ভিতরে বা বাইরে উঠানে হেঁটে বেড়াতে দেখিনি।
আমার প্রিয় রাবারের বলটি বুকে জড়িয়ে নিয়ে আমি ঘরের বাইরে চলে যাচ্ছিলাম। তখন আমার বাবা
আমাকে মায়ের পাশে এসে একটু বসতে বললেন। কিন্তু আমি তাঁর প্রস্তাবে রাজি হইনি। আমি দ্রুত দৌড়ে
ঘর ছেড়ে আমার বাবা-মার দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যাই।
পরে একটু বড় হয়ে জেনেছি- ঐ দিনই অল্প-সময়ের ব্যবধানে আমাকে কাছে পাবার সঙ্গতসাধ অপূর্ণ
রেখেই আমার মায়ের জীবন প্রদীপ নির্বাপিত হয়। শুনেছি বড় ভাইয়ের সঙ্গে মিলে, আমাদের গ্রামের ধনাই
নদীতীরবর্তী পারিবারিক-শশ্মানে আমি তাঁর মুখাগ্নি করেছিলাম। কিন্তু সেরকম কোনো কঠিন দৃশ্য আমার
মনে পড়ে না।
মা, তুমি কি সেদিন বুকে জড়িয়ে ধরে আমাকে আদর করতে চেয়েছিলে? তোমার খেলাপাগল এই দুরন্ত
পুত্রটিকে ক্ষমা করো। তোমার শেষ-আদর আমার ভাগ্যে ছিলো না।
দেশকে মাতৃজ্ঞান করাটা এই দিক থেকে ভালো যে, সে আমাদের গর্ভধারিণী মায়েদের মতো
মরণশীলা নয়। আমাদের অন্তরের ভালোবাসা দিয়ে আমরা তাঁকে চিরদিন বাঁচিয়ে রাখতে পারি।
No comments