বীরভূমে ‘শতাব্দী এক্সপ্রেস’
সম্প্রতি বীরভূমে এক নির্বাচনী সমাবেশে বক্তৃতা করেন শতাব্দী রায় ষ ছবি: ভাস্কর মুখার্জি |
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে এবারও তৃণমূল কংগ্রেস থেকে লড়াই করছেন কলকাতার অভিনেত্রী শতাব্দী রায়। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম আসনে তাঁর বিপক্ষে লড়ছেন বামফ্রন্টের কামরে এলাহি, কংগ্রেসের সৈয়দ সিরাজ ও বিজেপির জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০০৯ সালের নির্বাচনে এ আসনে ৬১ হাজার ৫১৯ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন শতাব্দী রায়। তিনি চার লাখ ৮৬ হাজার ৫৫৩ এবং তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বামফ্রন্টের ব্রজ মুখার্জি পেয়েছিলেন চার লাখ ২৫ হাজার ৩৪ ভোট। এ ছাড়া বিজেপির প্রার্থী তাপস মুখার্জি পেয়েছিলেন ৪৭ হাজার ৬৮ ভোট। গত নির্বাচনে তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে জোট ছিল। এবার দুই দলই আলাদা লড়ছে। ফলে এবার নির্বাচনে লড়াই হচ্ছে চতুর্মুখী। কারণ, এবার বিজেপির হাওয়া এখানেও লেগেছে। ফলে দলটির প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায় এবার ভালো ভোট টানবেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এসব দিক বিবেচনায় শতাব্দী রায় এবার আসনটি ধরে রাখতে পারবেন কি না, তাই নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর বিতর্ক চলছে। শতাব্দী সাংসদ হলেও এলাকায় তেমন যাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। বীরভূমের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে সম্পর্কও খুব ভালো যাচ্ছে না।
বিশেষ করে জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে তাঁর। এ নিয়ে দলের ঊর্ধ্বতন নেতাদের সঙ্গেও শতাব্দীর একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এর ওপর তৃণমূলের বিদ্রোহী সাংসদ সোমেন মিত্রের সঙ্গে কলকাতায় একটি রক্তদান শিবিরে যোগ দিয়ে মমতার বিরাগভাজন হন তিনি। রাজনৈতিক মহলে খবর রটে, শতাব্দী হয়তো এবার মনোনয়ন পাবেন না। পরে অবশ্য ক্ষমা চেয়ে রেহাই পান তিনি। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শতাব্দীকে মনোনয়ন দিলেও বীরভূমে দলের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। শতাব্দীর পক্ষে-বিপক্ষে দুটি পক্ষ তৈরি হয়। শতাব্দীর জয় ধরে রাখতে তাঁর সামনে দুটি পথ খোলা। সিপিএম প্রার্থীর ভোট কমাতে হবে এবং বিজেপির ভোট বাড়তে দেওয়া যাবে না। তৃণমূল কর্মীদের কাজে লাগিয়ে এ দুটি কাজ তিনি করতে পারলে আসনটি ধরে রাখতে পারেন তিনি। এর সঙ্গে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বও তাঁকে মেটাতে হবে। আর তা না হলে বামফ্রন্ট প্রার্থীর কাছে হার মানতে হতে পারে তাঁকে। তবে তৃণমূলের নেতারা মনে করেন, এ আসন তৃণমূলেরই থাকবে। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন শতাব্দী। প্রতিদিন তিনি বীরভূমের অলিগলিতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। বলছেন, তিনি সাংসদ না হলে মানুষের জন্য কাজ করতে পারতেন না। তাই বলতে হয়, আবার নতুন করে বীরভূমে ছুটছে শতাব্দী এক্সপ্রেস।
No comments