রাজনৈতিক অচলাবস্থা- আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায় by এ কে এম জাকারিয়া

বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চেয়েছে হংকংভিত্তিক এশীয় হিউম্যান রাইটস কমিশন (এএইচআরসি)।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি অনেক দিন ধরেই জাতিসংঘের মনোযোগের মধ্যে রয়েছে। এই বিশ্ব সংস্থাটির মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে দেশটির দুই নেত্রীর সঙ্গে নিয়মিতই যোগাযোগ রাখছেন। সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো এরই মধ্যে তিন দফা বাংলাদেশে এলেন। দৌড়ঝাঁপ করে গেলেন বিরোধ মেটানোর সূত্র খুঁজতে। কিন্তু কার্যত ব্যর্থ হয়েই ফিরতে হলো বেচারাকে। এই মিশন ব্যর্থ হওয়ার পর জাতিসংঘ বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পরবর্তী ভূমিকার বিষয়টি সম্ভবত আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল।

তারানকো ৬ ডিসেম্বর যখন তৃতীয় দফা বাংলাদেশে এলেন, তার ঠিক আগের দিন এক খোলা চিঠি লিখেছে এএইচআরসি। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বিজো ফ্রান্সিসের লেখা এই চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এখন গভীর রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকটের মুখোমুখি। তারানকোকে উদ্দেশ করেই চিঠিতে সরাসরি বলা হয়েছে, ‘রাজধানী ঢাকায় পৌঁছানোর পর আপনি নিশ্চিতভাবেই পুড়ে যাওয়া যানবাহনের কঙ্কাল রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখবেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় প্রতিদিন সাধারণ মানুষ যে নিষ্ঠুর সহিংসতার মুখোমুখি হচ্ছে, তা আপনি দেখতে পাবেন। হাসপাতালগুলোয় শুনতে পাবেন অসংখ্য আহত নিরীহ লোকের চিৎকার, যারা প্রায়ই সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত।’

চিঠিতে দেশব্যাপী বোমা ও পেট্রলবোমা হামলা, সহিংসতা, সাধারণ মানুষের পুড়ে যাওয়া ও মৃত্যু এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। রয়েছে বিরোধী দলের কর্মীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ‘এলোপাতাড়ি’ গুলি এবং টানা অবরোধে পুরো দেশ থেকে ‘বিচ্ছিন্ন’ রাজধানী ঢাকার প্রসঙ্গও। বলা হয়েছে, ‘ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ দেশে এতই কমে এসেছে যে বিরোধীদলীয় নেতারা গোপন স্থান থেকে তাঁদের বক্তব্য ভিডিও রেকর্ড করে গণমাধ্যমগুলোয় পাঠাচ্ছেন।’ এসব বিবেচনায় নিয়ে দেশের জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় এবং স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে জাতিসংঘের জরুরি হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘের সর্বশেষ উদ্যোগটি ব্যর্থ হলো, এখন তবে কী? আর এএইচআরসি জাতিসংঘের যে হস্তক্ষেপ চেয়েছে, সে বিষয়টিই বা কী? এএইচআরসির নির্বাহী পরিচালক বিজো ফ্রান্সিস চিঠিটি শেষ করেছেন এভাবে, ‘গত দশকে গৃহযুদ্ধের মধ্যে থাকা কেনিয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের প্রশংসনীয় ভূমিকার বিষয়টি আমরা জানি। কেনিয়া ও অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানে জাতিসংঘকে অবশ্যই একটি মূল ভূমিকা পালন করতে হবে।’

এএইচআরসির এই খোলা চিঠির সূত্র ধরে তাদের কাছে আরও পরিষ্কারভাবে বিষয়টি জানতে চেয়েছিলাম। মেইল করে প্রশ্ন করেছিলাম, তারা আসলে জাতিসংঘের কী ধরনের হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করে। এর জবাবে সংস্থাটির প্রোগ্রাম কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান খোলা চিঠিতে উল্লেখ করা কেনিয়ায় জাতিসংঘের ভূমিকার কথা আবারও উল্লেখ করলেন। তিনি আরও লিখলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে যে বহুমাত্রিক সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এর কেন্দ্রে রয়েছে একটি গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি। এএইচআরসি আশা করে যে জাতিসংঘের এ ধরনের হস্তক্ষেপই (কেনিয়ার মতো) পারে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে। এ ধরনের হস্তক্ষেপ বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে পারে প্রাসঙ্গিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে। এতে ভবিষ্যতে গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচনের পথ তৈরি করবে এবং বর্তমান অচলাবস্থারও অবসান ঘটবে।

কেনিয়ায় আসলে কী ভূমিকা পালন করেছিল জাতিসংঘ? ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর নির্বাচনের পর বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীতে বিভক্ত কেনিয়াজুড়ে যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল, তা বছর পার করার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আর বসে থাকতে পারেনি। হাজার খানেক মৃত্যু ও পাঁচ লাখ লোক বাড়িঘরছাড়া হওয়ার পর ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ইউরোপীয় অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রী বার্নার্ড কাউচনার ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি ‘রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট’-এর (যা আরটুপি নামে বিশেষ পরিচিত) অধীনে কেনিয়ার জাতিগত সহিংসতা বন্ধে হস্তক্ষেপ করার
আহ্বান জানানো হয়।

রুয়ান্ডার গণহত্যায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোনো ভূমিকা রাখতে না পারায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের ভূমিকা ও একটি রাষ্ট্রের প্রচলিত সার্বভৌমত্বের ধারণার বিষয়টি আলোচনায় আসে। কানাডা সরকারের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন ইন্টারভেনশন অ্যান্ড স্টেট সভরেনটি (আইসিআইএসএস)। ২০০১ সালে এই কমিশন প্রকাশ করে তাদের প্রতিবেদন ‘দ্য রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট’।

এই প্রতিবেদনের দুটি ধারা জাতিসংঘে গৃহীত হয় ২০০৫ সালে, যেখানে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত শুদ্ধি অভিযান ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ—এই চারটি প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এই অপরাধগুলো রোধ করার দায়িত্ব প্রথমত সংশ্লিষ্ট দেশের। কিন্তু যদি দেশটি তা করতে ব্যর্থ হয়, তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অধিকার রয়েছে পদক্ষেপ নেওয়ার এবং এ ব্যাপারে জাতিসংঘের উদ্যোগের প্রতি সমর্থন ও সহায়তা করা। কঠোর পদক্ষেপ হিসেবে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ এবং প্রয়োজনে সামরিক হস্তক্ষেপের বিধানও রয়েছে।

কেনিয়ায় সহিংসতা বন্ধে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ও সমঝোতার চেষ্টা চলছিল নিরাপত্তা পরিষদে নেওয়া প্রস্তাব গ্রহণের আগেই। দক্ষিণ আফ্রিকার শান্তিতে নোবেল বিজয়ী আর্চ বিশপ ডেসমন্ড টুটু থেকে শুরু করে তানজানিয়া, মোজাম্বিক ও জাম্বিয়ার তিন সাবেক প্রেসিডেন্টও শামিল হয়েছিলেন শান্তি প্রক্রিয়ায়। কিন্তু এসব উদ্যোগ কোনো কাজে আসেনি।

২০০৮ সালের ১০ জানুয়ারি জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) একটি প্যানেল কাজ শুরু করে। এইউর এই মধ্যস্থতা প্রক্রিয়ায় সহায়তা শুরু করে জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক বিভাগ (ডিপিএ)। বিশিষ্ট আফ্রিকান ব্যক্তিত্বদের নিয়ে এইউর এই প্যানেলে আরও ছিলেন তানজানিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন এমকাপা ও মোজাম্বিকের সাবেক ফার্স্ট লেডি গ্রাসা ম্যাশেল ম্যান্ডেলা। বিবদমান দুটি প্রধান রাজনৈতিক দল অরেঞ্জ ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (ওডিএম) ও পার্টি অব ন্যাশনাল ইউনিটি (পিএনইউ) এই সমঝোতা উদ্যোগকে মেনে নেয়।

আফ্রিকান ইউনিয়নের এই মধ্যস্থতাকারী প্যানেলকে পুরো কর্মী বাহিনী দিয়ে এবং বিভিন্ন কারিগরি পরামর্শ-সুবিধা দিয়ে সহায়তা করেছে ডিপিএ। এই প্যানেল এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার পর দুই পক্ষকে একটি জায়গায় আনতে সক্ষম হয়। তাদের উদ্যোগ রাজনৈতিক সংকট দূর করতে বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে ক্ষমতার ভাগাভাগি চুক্তি এবং এর মধ্য দিয়ে একটি ব্যাপকভিত্তিক কোয়ালিশন সরকার গঠনের পথ তৈরি করেছিল। নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা, নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে সমস্যাগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং সত্য উদ্ঘাটন, বিচারব্যবস্থা ও জাতীয় সমঝোতা সৃষ্টির মতো অন্য দীর্ঘমেয়াদি ইস্যুগুলো বিবেচনায় নিতেও রাজনৈতিক দল দুটি একমত হয়।

জাতিসংঘ ও আফ্রিকান ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় এই যে রাজনৈতিক সমঝোতা হয়েছে ২০০৮ সালে, এরপর সেখানে বড় যে অগ্রগতি হয়েছে, তা হচ্ছে ২০১০ সালে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত একটি গণভোটের মাধ্যমে কেনিয়ার জনগণ তা ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে। একটি গ্রহণযোগ্য গণভোট অনুষ্ঠানের জন্য ডিপিএ নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করার জন্য একজন নির্বাচন বিশেষজ্ঞকে নিযুক্ত করেছিলেন, তিনি ভোটার নিবন্ধন ও নির্বাচন পরিচালনায় বিশেষজ্ঞ। নতুন সংবিধানের সন্ধানে যে ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ পথে হাঁটছিল কেনিয়া, এই গণভোট তার অবসান ঘটিয়েছে। তবে জাতিসংঘের উদ্যোগে সেখানে যে সংস্কার কর্মসূচি চলছে, তা দীর্ঘমেয়াদি, অনেক কিছুই এখনো বাকি রয়েছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগে ‘রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট’-এর অধীনে একটি সফল কূটনৈতিক তৎপরতার মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে কেনিয়ার রাজনৈতিক সমঝোতার উদ্যোগ।

প্রতিটি দেশের রাজনৈতিক সমস্যাই অনন্য। যে বাস্তবতা বা পরিস্থিতিতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেনিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছিল, সেই পরিস্থিতি বাংলাদেশে হয়েছে কি না, সেটা নিয়ে বহুমুখী বিতর্ক হতে পারে। বাংলাদেশ কেনিয়ার মতো অসংখ্য জাতি ও গোত্রে বিভক্ত নয়; এখানকার গণতন্ত্রকে জোরালো বলেই গর্ব করে দেশটির রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও জনগণ। এখানে যে সহিংসতা চলছে, সেটা শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিকও নয়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতেও নির্বিচার সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী শক্তি। আর ‘রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট’-এ যে চারটি অপরাধের কথা বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতাকে সেই কাতারে ফেলার আদৌ কোনো সুযোগ আছে কি? ফলে কেনিয়ার সঙ্গে তুলনা করে বাংলাদেশেও একই ধরনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে, সেটা এখনই মেনে নেওয়া আমাদের জন্য সম্ভব নয়।

আর কেনিয়ার বিরোধ মেটাতে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ থাকলেও সেখানে দৃশ্যমান সক্রিয় শক্তি ছিল আফ্রিকান ইউনিয়ন। আঞ্চলিক এই সংগঠনের সঙ্গে কফি আনান বা গ্রাসা ম্যাশেলের মতো ব্যক্তিত্বরা যুক্ত হয়েছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা, সেখানকার বিবদমান দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলই এইউর মধ্যস্থতাকারী প্যানেলকে আন্তরিকভাবে মেনে নিয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বাস্তবতা বলছে, সে ধরনের কোনো জোরালো বা গ্রহণযোগ্য আঞ্চলিক কোনো শক্তির এখানে অস্তিত্ব নেই। জাতিসংঘ কোনো উদ্যোগ নিলেও এর পেছনে ব্যাপক আন্তর্জাতিক সমর্থন ও উদ্যোগের প্রয়োজন পড়ে। ফলে তারানকোর মতো কাউকে পাঠিয়ে একটি সমঝোতার চেষ্টাই ছিল জাতিসংঘের সামনে সবচেয়ে কার্যকর পথ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তারানকো মিশন ব্যর্থ হওয়ার পর জাতিসংঘ বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন কী করবে?

গত ২৬ নভেম্বর থেকে দফায় দফায় টানা অবরোধ কর্মসূচি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণহানির সংখ্যা শতাধিক। ৬ ডিসেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিন তারানকো যখন দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টায় ছোটাছুটি করছিলেন, সেই সময়গুলোতেও সহিংসতা ও প্রাণহানি থেমে থাকেনি। বিরোধী দলও কর্মসূচি প্রত্যাহার করেনি। এখনো অবরোধ কর্মসূচি চলছে।

দেশের সহিংস ও সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে গত ২০ নভেম্বর দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এর সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছিল, এভাবে চলতে থাকলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দেশটির ওপর অবরোধ আরোপ করতে পারে। তারানকো চলে যাওয়ার পর দুই পক্ষ একবার বৈঠকে বসেছিল, কিন্তু সমঝোতার পরিস্থিতি দৃশ্যমান নয়। এদিকে সরকার যে নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, তা এক হাস্যকর বিষয়ে পরিণত হয়েছে এবং এটাকে আর নির্বাচন হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই। এ নিয়ে দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সমঝোতায় না আসার অর্থ হচ্ছে আরও সংঘাত এবং আরও সহিংসতা। এর সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করাকে কেন্দ্র করে সহিংসতা। নিজেদের সমস্যা নিজেরা সমাধান করতে না পারলেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নাক গলানোর সুযোগ ও পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আমাদের দেশের জন্য তা হবে খুবই লজ্জাজনক ও বিপজ্জনক। আমরা চাই সমাধান রাজনীতিবিদেরই করুন। কোনো বিদেশি শক্তি নয়, ‘তৃতীয় শক্তিও’ নয়। প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল বিষয়টি বিবেচনায় নেবে কবে?

এ কে এম জাকারিয়া: সাংবাদিক

akmzakaria@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.