ইইউ রাষ্ট্রদূতরা আমার বিজয় দিবসকে অপমান করেছেন by মহিউদ্দিন আহমদ
মঙ্গলবার
সকালে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূতদের সাভারে
জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভোরবেলার অনুষ্ঠান বর্জনের খবরটি আমাকে ভীষণভাবে মর্মাহত
করেছে। আমার ধারণা, ইইউ’র কয়েকজন রাষ্ট্রদূত সংঘবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে
মহান এই দিনটির শুরুর অনুষ্ঠানটি বর্জন করেছেন; আর বর্জন করেছে জামায়াতে
ইসলামী। এ অনুষ্ঠানে প্রত্যাশিতভাবেই ফুল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি
শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দেশের সব দল-মত-গোষ্ঠীর মানুষ। সাভারের এই
স্মৃতিসৌধে পাকিস্তানের জুলফিকার আলী ভুট্টো, জিয়াউল হক, পারভেজ মোশাররফ,
বেনজির ভুট্টো, নওয়াজ শরিফসহ পাকিস্তানের সব রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানও সম্মান
জানিয়েছেন। কিন্তু যাননি ইইউ’র এই লোকগুলো। লাখো কণ্ঠে এদেশের মানুষ গত
পরশু বিজয় দিবসে আমাদের জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছেন; প্রায় ৩০ হাজার মানুষ
আমাদের পতাকা মাথায় তুলে ধরে সম্মান জানিয়েছেন। কিন্তু সম্মান জানাননি
ঢাকাস্থ রাষ্ট্রদূতদের কয়েকজন। সকাল পৌনে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে জাতীয়
স্মৃতিসৌধের অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যায়। ইইউ’র রাষ্ট্রদূতরা সকাল সাড়ে ৭টার
মধ্যেই তাদের অফিস-বাসায় ফিরে গিয়ে তাদের তথাকথিত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকটি শুরু
করতে পারতেন। কিন্তু মনে হচ্ছে তারা ইচ্ছা করেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাদের
এই বিজয় দিবসটিকে অপমান করলেন। আর বাংলাদেশে যখন সকাল ৭টা, তখন ইউরোপে
গভীর রাত- রাত ২টা বা ৩টা। ইইউ’র সদর দফতর ব্রাসেলসে স্থানীয় সময় রাত ৩টায়
ঢাকা থেকে ইইউ’র রাষ্ট্রদূতদের সকালের বৈঠকের সিদ্ধান্ত-সুপারিশের জন্য কেউ
সেখানে অপেক্ষা করছেন, বিশ্বাসযোগ্য নয়।
বিকালে এই রাষ্ট্রদূতরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির বিজয় দিবসের সংবর্ধনায় যে উপস্থিত ছিলেন, তা কোনো সান্ত্বনার বিষয় হতে পারে না। মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতদের দাওয়াত করলে রাষ্ট্রদূত অথবা ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতরা সেসব অনুষ্ঠানে যাবেন, এটাই নিয়ম। বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক জীবনে তাই দেখেছি, তাই করেছি।
ইইউ’র এ কয়েকজন রাষ্ট্রদূতের এমন অশিষ্টাচারের কোনো কঠোর প্রতিক্রিয়া প্রকাশ্যে সরকারিভাবে দেখানো সম্ভব হবে না। তাই বেসরকারিভাবে এবং যতভাবে সম্ভব এই রাষ্ট্রদূতদের এমন অসদাচরণের নিন্দা জানানো দরকার। তাদের অনুপস্থিতি দ্বারা তারা আমাদের বিজয় দিবসকে ‘কনটেম্পট’ দেখিয়েছেন। আমাদের বেসরকারি প্রতিক্রিয়াগুলোর কয়েকটি এমন হতে পারে :
এক. আমাদের অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতরা যৌথ বা এককভাবে তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে নিন্দা জানাতে পারেন; দুই. আমাদের বিভিন্ন পেশার মানুষজন এই রাষ্ট্রদূতদের জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান, রাষ্ট্রদূতদের আগে লিখিতভাবে জানিয়ে বর্জন করতে পারেন; তিন. আমাদের মিডিয়া এই রাষ্ট্রদূতদের বয়কট করতে পারে। আমাদের কোনো কোনো মিডিয়া কোনো কোনো রাষ্ট্রদূতকে মিডিয়া-হাউসে দাওয়াত করে সম্মান দিয়ে থাকে। এই চিহ্নিত রাষ্ট্রদূতদের এমন সম্মান-মর্যাদা দেয়ার ক্ষেত্রে মিডিয়া-হাউসগুলো বিরত থাকতে পারে; চার. সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, গণজাগরণ মঞ্চ এবং অন্যসব অরাজনৈতিক সংগঠন এই কয়েকজন রাষ্ট্রদূত এবং তাদের দূতাবাসের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়ে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ, মিছিল-মানববন্ধন করতে পারে; বিশিষ্টজনরা এ নিয়ে লেখালেখি করতে পারেন। এমন অশিষ্ট আচরণ, মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় দিবসের প্রতি অবজ্ঞা, উপেক্ষার প্রতিবাদ ও নিন্দা আমাদের জানাতেই হবে। বিষয়টি আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টির নয়; বিষয়টি আপনার, আমার, আমাদের সবার।
বিকালে এই রাষ্ট্রদূতরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির বিজয় দিবসের সংবর্ধনায় যে উপস্থিত ছিলেন, তা কোনো সান্ত্বনার বিষয় হতে পারে না। মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতদের দাওয়াত করলে রাষ্ট্রদূত অথবা ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতরা সেসব অনুষ্ঠানে যাবেন, এটাই নিয়ম। বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক জীবনে তাই দেখেছি, তাই করেছি।
ইইউ’র এ কয়েকজন রাষ্ট্রদূতের এমন অশিষ্টাচারের কোনো কঠোর প্রতিক্রিয়া প্রকাশ্যে সরকারিভাবে দেখানো সম্ভব হবে না। তাই বেসরকারিভাবে এবং যতভাবে সম্ভব এই রাষ্ট্রদূতদের এমন অসদাচরণের নিন্দা জানানো দরকার। তাদের অনুপস্থিতি দ্বারা তারা আমাদের বিজয় দিবসকে ‘কনটেম্পট’ দেখিয়েছেন। আমাদের বেসরকারি প্রতিক্রিয়াগুলোর কয়েকটি এমন হতে পারে :
এক. আমাদের অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতরা যৌথ বা এককভাবে তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে নিন্দা জানাতে পারেন; দুই. আমাদের বিভিন্ন পেশার মানুষজন এই রাষ্ট্রদূতদের জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান, রাষ্ট্রদূতদের আগে লিখিতভাবে জানিয়ে বর্জন করতে পারেন; তিন. আমাদের মিডিয়া এই রাষ্ট্রদূতদের বয়কট করতে পারে। আমাদের কোনো কোনো মিডিয়া কোনো কোনো রাষ্ট্রদূতকে মিডিয়া-হাউসে দাওয়াত করে সম্মান দিয়ে থাকে। এই চিহ্নিত রাষ্ট্রদূতদের এমন সম্মান-মর্যাদা দেয়ার ক্ষেত্রে মিডিয়া-হাউসগুলো বিরত থাকতে পারে; চার. সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, গণজাগরণ মঞ্চ এবং অন্যসব অরাজনৈতিক সংগঠন এই কয়েকজন রাষ্ট্রদূত এবং তাদের দূতাবাসের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়ে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ, মিছিল-মানববন্ধন করতে পারে; বিশিষ্টজনরা এ নিয়ে লেখালেখি করতে পারেন। এমন অশিষ্ট আচরণ, মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় দিবসের প্রতি অবজ্ঞা, উপেক্ষার প্রতিবাদ ও নিন্দা আমাদের জানাতেই হবে। বিষয়টি আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টির নয়; বিষয়টি আপনার, আমার, আমাদের সবার।
No comments