মিসরে পশ্চিমা দ্বৈতনীতি স্পষ্ট by গিডিওন রাশম্যান
মিসরের
রাস্তায় রক্তপাতের ঘটনা দেশটির জন্য একটি বিপর্যয় ডেকে এনেছে। এটি পশ্চিমা
বিশ্বের জন্য একটি হতাশাজনক উভয়সংকটও সৃষ্টি করেছে। এখন পর্যন্ত কেউ জানে
না নিহতের সংখ্যা কত। তবে একটি ব্রিটিশ টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান, একজন ১৭
বছর বয়সের মেয়েসহ অনেকেই নির্বিচার হামলার শিকার হওয়ায় ধারণা করা যায় মৃতের
সংখ্যাটি অনেক বড়ই হবে। তাৎক্ষণিকভাবে এটি একটি ট্রাজেডি হলেও এর চেয়েও
গুরুত্বপূর্ণ, কায়রো হত্যাকাণ্ড সামরিক বাহিনী ও মুসলিম ব্রাদারহুডের মধ্যে
যে কোনো ধরনের সমঝোতার সম্ভাবনা ধ্বংস করে দিয়েছে। ধ্বংস করে দিয়েছে একটি
গণতান্ত্রিক মিসর প্রতিষ্ঠার সব আশা, অন্তত নিকট-ভবিষ্যতে। ২০১১ সালের
শুরুতে হোসনি মোবারক উৎখাত হওয়ার পর যে দূরকল্প প্রায় অবশ্যম্ভাবী হয়ে
উঠেছিল, তা এখন শেষ হয়ে গেছে। মিসরে কোনো এক পর্যায়ে হয়তো নির্বাচনও হবে।
তবে সেনাবাহিনী তাতে আবারও মুসলিম ব্রাদারহুডকে জয়ী হতে দেয়ার ঝুঁকি নেবে,
এটা অচিন্তনীয়। তাদের বিরুদ্ধে তো সেনাবাহিনী যুদ্ধই ঘোষণা করেছে। অনেক
মিসরীয় বিশ্লেষক যুক্তি দিয়ে থাকেন, প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি যখন
নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন, তখনকার চেয়ে ব্রাদারহুডের জনপ্রিয়তা এখন অনেক কম।
তবে সেনাবাহিনী তা ব্যালট বাক্সের মাধ্যমে পরীক্ষা করার ঝুঁকি নেবে, এটা
খুবই অসম্ভব মনে হয়।
মিসরে নিকট ভবিষ্যতে যদি কোনো নির্বাচন হয়, সেটা হবে একটি ধোঁকাবাজি। গণগ্রেফতার ও সেন্সরশিপের মাধ্যমে মুসলিম ব্রাদারহুডের ওপর দমনপীড়ন চালানো হবে। এ মাসের প্রথমদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, সামরিক হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। কিন্তু একটি উদারপন্থী ক্যুয়ের ধারণা সব সময়ই বিভ্রান্তিমূলক।
তবে একটি নতুন অবয়বের মোবারক সরকারকে ফিরিয়ে আনাও খুবই কঠিন হবে। এটাকে ‘ন্যায়সঙ্গত’ করার জন্য গত দু’বছরে অনেক কিছু করা হয়েছে। মোবারকের আমলে ব্রাদারহুডকে ভালোভাবেই প্রকৃত ক্ষমতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা গেলেও তারা মিসরীয় সমাজের অংশই ছিল। তারা বস্তি এলাকাগুলোয় সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সংগঠিত হয়েছে।
ভবিষ্যতে তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া হবে এমন সম্ভাবনা কম। একজন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে উৎখাত করা এবং রাস্তায় গণহত্যা চালানোর পর ইসলামপন্থীরা সামরিক শাসনের সঙ্গে সমঝোতা করবে বলেও মনে হয় না। বরং তাদের ওপর আরও দমনপীড়ন চালানো হলে সহিংস জিহাদিবাদের পুনরুত্থানের আশংকাই বেশি। মিসরের উদারপন্থীরা, যারা মূল তাহরির আন্দোলনের জন্য খ্যাত, তারা জানে না ফিরে আসার পথ কী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপও হয়ে পড়েছে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তাদের এই উভয়সংকট দেখা দিয়েছে নীতি ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব হিসেবে। পশ্চিমা নীতি হল গণতন্ত্রকে সমর্থন এবং সামরিক সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা। আর একটি ইসলামপন্থী সরকারের ওপর দমননীতি চালানোর প্রতি নীরব সমর্থন করার মাঝেই পশ্চিমা স্বার্থ নিহিত।
কিন্তু বাস্তবতা এর চেয়েও বেশি জটিল। দমননীতির কারণে যদি আল কায়দা ও ইসলামপন্থী হুমকি ফিরে আসে, তাহলে তা কোনোভাবেই পশ্চিমা স্বার্থ রক্ষা করবে না। একটি সহিংস, গণতন্ত্রবিরোধী অভ্যুত্থানের প্রতি সমর্থন মধ্যপ্রাচ্যে এমনকি গোটা বিশ্বেই যে কোনো পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গিকে অগ্রহণযোগ্য করে তুলবে।
মিসরে যা ঘটছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ যদি তীব্র ভাষায় তার নিন্দা না জানায়, তাহলে তারা কিভাবে সিরিয়ায় চলমান যুদ্ধে আল আসাদ সরকারের প্রতি নিন্দা প্রকাশ অব্যাহত রাখবে? এটা ঠিক, এখানে সংখ্যা বা মাত্রার একটি প্রশ্ন আছে। সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ। অন্যদিকে মিসরে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা সম্ভবত শ’য়ের ঘরে। তবে সহিংস দমননীতির প্রকৃতি একই রকম বলেই মনে হয়।
মিসরের সামরিক সরকারের প্রতি সমর্থন বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রত্যাহারে ব্যর্থতাও মধ্যপ্রাচ্যে উভয়সংকট সৃষ্টি করবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ যদি মিসরের ঘটনাবলী সহ্য করে নেয়, তাহলে তারা রাশিয়া ও চীনে তুলনামূলক কম দমনপীড়নের নিন্দা জানাতে পেরেছিল কিভাবে?
অবশ্য মিসরের সামরিক সরকারের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্ব সম্পর্ক ছিন্ন করলেও তারা উভয়সংকটে পড়বে। মিসরের অর্থনীতি টলটলায়মান এবং দেশটি মারাত্মক গৃহবিবাদ, এমনকি গৃহযুদ্ধের সুস্পষ্ট ঝুঁকিতে রয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো যদি এখন সামরিক সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে কি তারা প্রভাব খাটানোর ক্ষেত্রে সিরিয়ার মতোই ক্ষমতাহীন হয়ে পড়বে না? যদি তাই হয়, তাহলে বাইরের প্রভাবের শূন্যস্থানটি পূরণ করবে কে বা কী? সৌদি আরব, কাতার নাকি আল কায়দা?
এসব প্রশ্নের কোনো সহজ-সরল উত্তর নেই। কারণ পশ্চিমা রাজধানীগুলো থেকে যা শোনা গেছে এবং কায়রোয় যেসব ঘটনা উন্মোচিত হয়েছে সেগুলো বিভ্রান্তিমূলক।
ব্রিটেনের ফিনান্সিয়াল টাইমস পত্রিকা থেকে অনূদিত
গিডিওন রাশম্যান : ফিনান্সিয়াল টাইমসের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান বিশ্লেষক
মিসরে নিকট ভবিষ্যতে যদি কোনো নির্বাচন হয়, সেটা হবে একটি ধোঁকাবাজি। গণগ্রেফতার ও সেন্সরশিপের মাধ্যমে মুসলিম ব্রাদারহুডের ওপর দমনপীড়ন চালানো হবে। এ মাসের প্রথমদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, সামরিক হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। কিন্তু একটি উদারপন্থী ক্যুয়ের ধারণা সব সময়ই বিভ্রান্তিমূলক।
তবে একটি নতুন অবয়বের মোবারক সরকারকে ফিরিয়ে আনাও খুবই কঠিন হবে। এটাকে ‘ন্যায়সঙ্গত’ করার জন্য গত দু’বছরে অনেক কিছু করা হয়েছে। মোবারকের আমলে ব্রাদারহুডকে ভালোভাবেই প্রকৃত ক্ষমতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা গেলেও তারা মিসরীয় সমাজের অংশই ছিল। তারা বস্তি এলাকাগুলোয় সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সংগঠিত হয়েছে।
ভবিষ্যতে তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া হবে এমন সম্ভাবনা কম। একজন নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে উৎখাত করা এবং রাস্তায় গণহত্যা চালানোর পর ইসলামপন্থীরা সামরিক শাসনের সঙ্গে সমঝোতা করবে বলেও মনে হয় না। বরং তাদের ওপর আরও দমনপীড়ন চালানো হলে সহিংস জিহাদিবাদের পুনরুত্থানের আশংকাই বেশি। মিসরের উদারপন্থীরা, যারা মূল তাহরির আন্দোলনের জন্য খ্যাত, তারা জানে না ফিরে আসার পথ কী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপও হয়ে পড়েছে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তাদের এই উভয়সংকট দেখা দিয়েছে নীতি ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব হিসেবে। পশ্চিমা নীতি হল গণতন্ত্রকে সমর্থন এবং সামরিক সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা। আর একটি ইসলামপন্থী সরকারের ওপর দমননীতি চালানোর প্রতি নীরব সমর্থন করার মাঝেই পশ্চিমা স্বার্থ নিহিত।
কিন্তু বাস্তবতা এর চেয়েও বেশি জটিল। দমননীতির কারণে যদি আল কায়দা ও ইসলামপন্থী হুমকি ফিরে আসে, তাহলে তা কোনোভাবেই পশ্চিমা স্বার্থ রক্ষা করবে না। একটি সহিংস, গণতন্ত্রবিরোধী অভ্যুত্থানের প্রতি সমর্থন মধ্যপ্রাচ্যে এমনকি গোটা বিশ্বেই যে কোনো পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গিকে অগ্রহণযোগ্য করে তুলবে।
মিসরে যা ঘটছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ যদি তীব্র ভাষায় তার নিন্দা না জানায়, তাহলে তারা কিভাবে সিরিয়ায় চলমান যুদ্ধে আল আসাদ সরকারের প্রতি নিন্দা প্রকাশ অব্যাহত রাখবে? এটা ঠিক, এখানে সংখ্যা বা মাত্রার একটি প্রশ্ন আছে। সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ। অন্যদিকে মিসরে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা সম্ভবত শ’য়ের ঘরে। তবে সহিংস দমননীতির প্রকৃতি একই রকম বলেই মনে হয়।
মিসরের সামরিক সরকারের প্রতি সমর্থন বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রত্যাহারে ব্যর্থতাও মধ্যপ্রাচ্যে উভয়সংকট সৃষ্টি করবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ যদি মিসরের ঘটনাবলী সহ্য করে নেয়, তাহলে তারা রাশিয়া ও চীনে তুলনামূলক কম দমনপীড়নের নিন্দা জানাতে পেরেছিল কিভাবে?
অবশ্য মিসরের সামরিক সরকারের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্ব সম্পর্ক ছিন্ন করলেও তারা উভয়সংকটে পড়বে। মিসরের অর্থনীতি টলটলায়মান এবং দেশটি মারাত্মক গৃহবিবাদ, এমনকি গৃহযুদ্ধের সুস্পষ্ট ঝুঁকিতে রয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো যদি এখন সামরিক সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে কি তারা প্রভাব খাটানোর ক্ষেত্রে সিরিয়ার মতোই ক্ষমতাহীন হয়ে পড়বে না? যদি তাই হয়, তাহলে বাইরের প্রভাবের শূন্যস্থানটি পূরণ করবে কে বা কী? সৌদি আরব, কাতার নাকি আল কায়দা?
এসব প্রশ্নের কোনো সহজ-সরল উত্তর নেই। কারণ পশ্চিমা রাজধানীগুলো থেকে যা শোনা গেছে এবং কায়রোয় যেসব ঘটনা উন্মোচিত হয়েছে সেগুলো বিভ্রান্তিমূলক।
ব্রিটেনের ফিনান্সিয়াল টাইমস পত্রিকা থেকে অনূদিত
গিডিওন রাশম্যান : ফিনান্সিয়াল টাইমসের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান বিশ্লেষক
মিসরের
রাস্তায় রক্তপাতের ঘটনা দেশটির জন্য একটি বিপর্যয় ডেকে এনেছে। এটি পশ্চিমা
বিশ্বের জন্য একটি হতাশাজনক উভয়সংকটও সৃষ্টি করেছে। এখন পর্যন্ত কেউ জানে
না নিহতের সংখ্যা কত। তবে একটি ব্রিটিশ টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান, একজন ১৭
বছর বয়সের মেয়েসহ অনেকেই নির্বিচার হামলার শিকার হওয়ায় ধারণা করা যায় মৃতের
সংখ্যাটি অনেক বড়ই হবে।
তাৎক্ষণিকভাবে
এটি একটি ট্রাজেডি হলেও এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, কায়রো হত্যাকাণ্ড সামরিক
বাহিনী ও মুসলিম ব্রাদারহুডের মধ্যে যে কোনো ধরনের সমঝোতার সম্ভাবনা ধ্বংস
করে দিয়েছে। ধ্বংস করে দিয়েছে একটি গণতান্ত্রিক মিসর প্রতিষ্ঠার সব আশা,
অন্তত নিকট-ভবিষ্যতে। ২০১১ সালের শুরুতে হোসনি মোবারক উৎখাত হওয়ার পর যে
দূরকল্প প্রায় অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল, তা এখন শেষ হয়ে গেছে।মিসরে
কোনো এক পর্যায়ে হয়তো নির্বাচনও হবে। তবে সেনাবাহিনী তাতে আবারও মুসলিম
ব্রাদারহুডকে জয়ী হতে দেয়ার ঝুঁকি নেবে, এটা অচিন্তনীয়। তাদের বিরুদ্ধে তো
সেনাবাহিনী যুদ্ধই ঘোষণা করেছে। অনেক মিসরীয় বিশ্লেষক যুক্তি দিয়ে থাকেন,
প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি যখন নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন, তখনকার চেয়ে
ব্রাদারহুডের জনপ্রিয়তা এখন অনেক কম। তবে সেনাবাহিনী তা ব্যালট বাক্সের
মাধ্যমে পরীক্ষা করার ঝুঁকি নেবে, এটা খুবই অসম্ভব মনে হয়।মিসরে
নিকট ভবিষ্যতে যদি কোনো নির্বাচন হয়, সেটা হবে একটি ধোঁকাবাজি।
গণগ্রেফতার ও সেন্সরশিপের মাধ্যমে মুসলিম ব্রাদারহুডের ওপর দমনপীড়ন চালানো
হবে। এ মাসের প্রথমদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, সামরিক
হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। কিন্তু একটি উদারপন্থী
ক্যুয়ের ধারণা সব সময়ই বিভ্রান্তিমূলক।তবে
একটি নতুন অবয়বের মোবারক সরকারকে ফিরিয়ে আনাও খুবই কঠিন হবে। এটাকে
‘ন্যায়সঙ্গত’ করার জন্য গত দু’বছরে অনেক কিছু করা হয়েছে। মোবারকের আমলে
ব্রাদারহুডকে ভালোভাবেই প্রকৃত ক্ষমতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা গেলেও তারা
মিসরীয় সমাজের অংশই ছিল। তারা বস্তি এলাকাগুলোয় সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে
এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সংগঠিত হয়েছে।ভবিষ্যতে
তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া হবে এমন সম্ভাবনা কম। একজন নির্বাচিত
প্রেসিডেন্টকে উৎখাত করা এবং রাস্তায় গণহত্যা চালানোর পর ইসলামপন্থীরা
সামরিক শাসনের সঙ্গে সমঝোতা করবে বলেও মনে হয় না। বরং তাদের ওপর আরও
দমনপীড়ন চালানো হলে সহিংস জিহাদিবাদের পুনরুত্থানের আশংকাই বেশি। মিসরের
উদারপন্থীরা, যারা মূল তাহরির আন্দোলনের জন্য খ্যাত, তারা জানে না ফিরে
আসার পথ কী।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও
ইউরোপও হয়ে পড়েছে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তাদের এই উভয়সংকট দেখা দিয়েছে নীতি ও
স্বার্থের দ্বন্দ্ব হিসেবে। পশ্চিমা নীতি হল গণতন্ত্রকে সমর্থন এবং সামরিক
সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা। আর একটি ইসলামপন্থী সরকারের ওপর দমননীতি
চালানোর প্রতি নীরব সমর্থন করার মাঝেই পশ্চিমা স্বার্থ নিহিত।কিন্তু
বাস্তবতা এর চেয়েও বেশি জটিল। দমননীতির কারণে যদি আল কায়দা ও ইসলামপন্থী
হুমকি ফিরে আসে, তাহলে তা কোনোভাবেই পশ্চিমা স্বার্থ রক্ষা করবে না। একটি
সহিংস, গণতন্ত্রবিরোধী অভ্যুত্থানের প্রতি সমর্থন মধ্যপ্রাচ্যে এমনকি গোটা
বিশ্বেই যে কোনো পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গিকে অগ্রহণযোগ্য করে তুলবে।মিসরে
যা ঘটছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ যদি তীব্র ভাষায় তার নিন্দা না জানায়,
তাহলে তারা কিভাবে সিরিয়ায় চলমান যুদ্ধে আল আসাদ সরকারের প্রতি নিন্দা
প্রকাশ অব্যাহত রাখবে? এটা ঠিক, এখানে সংখ্যা বা মাত্রার একটি প্রশ্ন আছে।
সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ। অন্যদিকে মিসরে এখন পর্যন্ত নিহতের
সংখ্যা সম্ভবত শ’য়ের ঘরে। তবে সহিংস দমননীতির প্রকৃতি একই রকম বলেই মনে হয়।মিসরের
সামরিক সরকারের প্রতি সমর্থন বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রত্যাহারে ব্যর্থতাও
মধ্যপ্রাচ্যে উভয়সংকট সৃষ্টি করবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ যদি মিসরের
ঘটনাবলী সহ্য করে নেয়, তাহলে তারা রাশিয়া ও চীনে তুলনামূলক কম দমনপীড়নের
নিন্দা জানাতে পেরেছিল কিভাবে?অবশ্য
মিসরের সামরিক সরকারের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্ব সম্পর্ক ছিন্ন করলেও তারা
উভয়সংকটে পড়বে। মিসরের অর্থনীতি টলটলায়মান এবং দেশটি মারাত্মক গৃহবিবাদ,
এমনকি গৃহযুদ্ধের সুস্পষ্ট ঝুঁকিতে রয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো যদি এখন সামরিক
সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে কি তারা প্রভাব খাটানোর
ক্ষেত্রে সিরিয়ার মতোই ক্ষমতাহীন হয়ে পড়বে না? যদি তাই হয়, তাহলে বাইরের
প্রভাবের শূন্যস্থানটি পূরণ করবে কে বা কী? সৌদি আরব, কাতার নাকি আল কায়দা?এসব
প্রশ্নের কোনো সহজ-সরল উত্তর নেই। কারণ পশ্চিমা রাজধানীগুলো থেকে যা শোনা
গেছে এবং কায়রোয় যেসব ঘটনা উন্মোচিত হয়েছে সেগুলো বিভ্রান্তিমূলক।ব্রিটেনের ফিনান্সিয়াল টাইমস পত্রিকা থেকে অনূদিতগিডিওন
রাশম্যান : ফিনান্সিয়াল টাইমসের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান বিশ্লেষক - See
more at:
http://www.jugantor.com/sub-editorial/2013/08/17/21123#sthash.udV6XHtC.dpuf
<a
href='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/ck.php?n=acd94d5f'
target='_blank'><img
src='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/avw.php?zoneid=780&amp;n=acd94d5f'
border='0' alt='' /></a>
মিসরের
রাস্তায় রক্তপাতের ঘটনা দেশটির জন্য একটি বিপর্যয় ডেকে এনেছে। এটি পশ্চিমা
বিশ্বের জন্য একটি হতাশাজনক উভয়সংকটও সৃষ্টি করেছে। এখন পর্যন্ত কেউ জানে
না নিহতের সংখ্যা কত। তবে একটি ব্রিটিশ টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান, একজন ১৭
বছর বয়সের মেয়েসহ অনেকেই নির্বিচার হামলার শিকার হওয়ায় ধারণা করা যায় মৃতের
সংখ্যাটি অনেক বড়ই হবে।
তাৎক্ষণিকভাবে
এটি একটি ট্রাজেডি হলেও এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ, কায়রো হত্যাকাণ্ড সামরিক
বাহিনী ও মুসলিম ব্রাদারহুডের মধ্যে যে কোনো ধরনের সমঝোতার সম্ভাবনা ধ্বংস
করে দিয়েছে। ধ্বংস করে দিয়েছে একটি গণতান্ত্রিক মিসর প্রতিষ্ঠার সব আশা,
অন্তত নিকট-ভবিষ্যতে। ২০১১ সালের শুরুতে হোসনি মোবারক উৎখাত হওয়ার পর যে
দূরকল্প প্রায় অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছিল, তা এখন শেষ হয়ে গেছে।মিসরে
কোনো এক পর্যায়ে হয়তো নির্বাচনও হবে। তবে সেনাবাহিনী তাতে আবারও মুসলিম
ব্রাদারহুডকে জয়ী হতে দেয়ার ঝুঁকি নেবে, এটা অচিন্তনীয়। তাদের বিরুদ্ধে তো
সেনাবাহিনী যুদ্ধই ঘোষণা করেছে। অনেক মিসরীয় বিশ্লেষক যুক্তি দিয়ে থাকেন,
প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি যখন নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন, তখনকার চেয়ে
ব্রাদারহুডের জনপ্রিয়তা এখন অনেক কম। তবে সেনাবাহিনী তা ব্যালট বাক্সের
মাধ্যমে পরীক্ষা করার ঝুঁকি নেবে, এটা খুবই অসম্ভব মনে হয়।মিসরে
নিকট ভবিষ্যতে যদি কোনো নির্বাচন হয়, সেটা হবে একটি ধোঁকাবাজি।
গণগ্রেফতার ও সেন্সরশিপের মাধ্যমে মুসলিম ব্রাদারহুডের ওপর দমনপীড়ন চালানো
হবে। এ মাসের প্রথমদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, সামরিক
হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। কিন্তু একটি উদারপন্থী
ক্যুয়ের ধারণা সব সময়ই বিভ্রান্তিমূলক।তবে
একটি নতুন অবয়বের মোবারক সরকারকে ফিরিয়ে আনাও খুবই কঠিন হবে। এটাকে
‘ন্যায়সঙ্গত’ করার জন্য গত দু’বছরে অনেক কিছু করা হয়েছে। মোবারকের আমলে
ব্রাদারহুডকে ভালোভাবেই প্রকৃত ক্ষমতা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা গেলেও তারা
মিসরীয় সমাজের অংশই ছিল। তারা বস্তি এলাকাগুলোয় সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে
এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সংগঠিত হয়েছে।ভবিষ্যতে
তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া হবে এমন সম্ভাবনা কম। একজন নির্বাচিত
প্রেসিডেন্টকে উৎখাত করা এবং রাস্তায় গণহত্যা চালানোর পর ইসলামপন্থীরা
সামরিক শাসনের সঙ্গে সমঝোতা করবে বলেও মনে হয় না। বরং তাদের ওপর আরও
দমনপীড়ন চালানো হলে সহিংস জিহাদিবাদের পুনরুত্থানের আশংকাই বেশি। মিসরের
উদারপন্থীরা, যারা মূল তাহরির আন্দোলনের জন্য খ্যাত, তারা জানে না ফিরে
আসার পথ কী।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও
ইউরোপও হয়ে পড়েছে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তাদের এই উভয়সংকট দেখা দিয়েছে নীতি ও
স্বার্থের দ্বন্দ্ব হিসেবে। পশ্চিমা নীতি হল গণতন্ত্রকে সমর্থন এবং সামরিক
সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা। আর একটি ইসলামপন্থী সরকারের ওপর দমননীতি
চালানোর প্রতি নীরব সমর্থন করার মাঝেই পশ্চিমা স্বার্থ নিহিত।কিন্তু
বাস্তবতা এর চেয়েও বেশি জটিল। দমননীতির কারণে যদি আল কায়দা ও ইসলামপন্থী
হুমকি ফিরে আসে, তাহলে তা কোনোভাবেই পশ্চিমা স্বার্থ রক্ষা করবে না। একটি
সহিংস, গণতন্ত্রবিরোধী অভ্যুত্থানের প্রতি সমর্থন মধ্যপ্রাচ্যে এমনকি গোটা
বিশ্বেই যে কোনো পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গিকে অগ্রহণযোগ্য করে তুলবে।মিসরে
যা ঘটছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ যদি তীব্র ভাষায় তার নিন্দা না জানায়,
তাহলে তারা কিভাবে সিরিয়ায় চলমান যুদ্ধে আল আসাদ সরকারের প্রতি নিন্দা
প্রকাশ অব্যাহত রাখবে? এটা ঠিক, এখানে সংখ্যা বা মাত্রার একটি প্রশ্ন আছে।
সিরিয়ায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ। অন্যদিকে মিসরে এখন পর্যন্ত নিহতের
সংখ্যা সম্ভবত শ’য়ের ঘরে। তবে সহিংস দমননীতির প্রকৃতি একই রকম বলেই মনে হয়।মিসরের
সামরিক সরকারের প্রতি সমর্থন বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রত্যাহারে ব্যর্থতাও
মধ্যপ্রাচ্যে উভয়সংকট সৃষ্টি করবে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ যদি মিসরের
ঘটনাবলী সহ্য করে নেয়, তাহলে তারা রাশিয়া ও চীনে তুলনামূলক কম দমনপীড়নের
নিন্দা জানাতে পেরেছিল কিভাবে?অবশ্য
মিসরের সামরিক সরকারের সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্ব সম্পর্ক ছিন্ন করলেও তারা
উভয়সংকটে পড়বে। মিসরের অর্থনীতি টলটলায়মান এবং দেশটি মারাত্মক গৃহবিবাদ,
এমনকি গৃহযুদ্ধের সুস্পষ্ট ঝুঁকিতে রয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো যদি এখন সামরিক
সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে কি তারা প্রভাব খাটানোর
ক্ষেত্রে সিরিয়ার মতোই ক্ষমতাহীন হয়ে পড়বে না? যদি তাই হয়, তাহলে বাইরের
প্রভাবের শূন্যস্থানটি পূরণ করবে কে বা কী? সৌদি আরব, কাতার নাকি আল কায়দা?এসব
প্রশ্নের কোনো সহজ-সরল উত্তর নেই। কারণ পশ্চিমা রাজধানীগুলো থেকে যা শোনা
গেছে এবং কায়রোয় যেসব ঘটনা উন্মোচিত হয়েছে সেগুলো বিভ্রান্তিমূলক।ব্রিটেনের ফিনান্সিয়াল টাইমস পত্রিকা থেকে অনূদিতগিডিওন
রাশম্যান : ফিনান্সিয়াল টাইমসের পররাষ্ট্রবিষয়ক প্রধান বিশ্লেষক - See
more at:
http://www.jugantor.com/sub-editorial/2013/08/17/21123#sthash.udV6XHtC.dpuf
<a
href='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/ck.php?n=acd94d5f'
target='_blank'><img
src='http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/avw.php?zoneid=780&amp;n=acd94d5f'
border='0' alt='' /></a>
No comments