সংঘাত জাপটে ধরেছে মিসরকে
কায়রোর রামসেস স্কয়ারে গতকাল নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত একজনকে সরিয়ে নেন মুসলিম ব্রাদারহুডের সমর্থকেরা ষ ছবি: এএফপি |
মিসরে দুই দিন আগেই ঘটে গেছে কয়েক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী ঘটনা। সরকারি হিসাবে প্রাণহানি হয়েছে প্রায় ৭০০ মানুষের। এর পরও ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে পুনর্বহালের দাবিতে মরিয়া দলের কর্মী-সমর্থকেরা। গতকাল শুক্রবারও জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করে রাজপথে নামেন মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুডের হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক। পুলিশও জবাব দেয় কাঁদানে গ্যাস ও বুলেটে। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় কায়রো।সরকারি কর্মকর্তারা জানান, গতকাল সারা দেশে নিহত হন ৬০ জন। তবে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরা তাদের প্রতিনিধির বরাত দিয়ে জানায়, শুধু কায়রোর রামসেস স্কয়ারেই গতকালনিহত হয়েছেন ৯৫ জন। সারা দেশে নিহত হয়েছে আরও অনেক মানুষ। সংঘাত জাপটে ধরেছে মিসরকে। গতকাল জুমার নামাজের পর রাজধানী কায়রোর কেন্দ্রস্থলে রামসেস স্কয়ারে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন মুরসির দলের কর্মী-সমর্থকেরা। তবে সেনাবাহিনী বিভিন্ন স্থানে সড়ক বন্ধ করে দেয়। ‘জীবন বাঁচাতে’ তাঁদের ওপর গুলি চালাতে আগের দিন পুলিশকে ক্ষমতা দেয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া মুরসিপন্থীদের প্রতিহত করতে বিরোধী ন্যাশনাল স্যালভেশন ফ্রন্ট ও তামারুদকে রাজপথে নামার আহ্বান জানায় কর্তৃপক্ষ। জরুরি অবস্থার মধ্যেও রাজপথে এগোতে থাকেন ব্রাদারহুডের মরিয়া কর্মীরা। রামসেস স্কয়ারে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও বুলেট ছোড়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। এরপর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে পুরো কায়রোতে। রাজধানীর বাইরে আলেকজান্দ্রিয়াসহ অন্যান্য শহরেও গতকাল বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। কায়রো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপির এক সাংবাদিক জানান, সেখানকার একটি মসজিদে তিনি ১৯টি মৃতদেহ দেখেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অপর একটি মসজিদে আছে ২০টির বেশি লাশ। রাজধানীর দক্ষিণে ফাইয়ুম শহরে সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন। সুয়েজ খালের পাশের শহর ইসমাইলিয়াতে নিহত হন আরও পাঁচজন। নিরাপত্তা পরিষদের আহ্বান: সংঘাত থেকে বিরত থাকতে মিসরের অন্তর্বর্তী সরকার ও বিরোধীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। পরিষদের সদস্য ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া গত বৃহস্পতিবার রাতে এক বৈঠক থেকে ওই আহ্বান জানায়। দেশে দেশে বিক্ষোভ: মিসরে বিক্ষোভকারীদের ওপর কর্তৃপক্ষের চরম পদক্ষেপ ও শত শত প্রাণহানির ঘটনায় গতকাল বিক্ষোভ হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে জুমার নামের পর বিক্ষোভ মিছিল করে মানুষ। এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্স।
No comments