ঐশীর বয়ফ্রেন্ড আর ইয়াবা জীবন
ঐশির নিষ্ঠুরতা নিয়ে তোলপাড় সর্বত্র।
পশ্চিমের দুনিয়ায় এ হয়তো অভিনব কোন ঘটনা নয়। কিন্তু বাংলাদেশে কোন সন্তানের
পরিকল্পনায় মাতা-পিতার হত্যা এমনই নির্মম যে তা হতচকিত করেছে সবাইকে।
কেন এমন নিষ্ঠুর হলো ১৭ বছর বয়সী মেয়েটি? কি কারণে সে হত্যা করলো বাবা-মাকে?
বাবা-মায়ের দু’ সন্তান ঐশী রহমান আর ওহি রহমান। ঐশী রহমান ধানমন্ডির অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ও লেভের শিক্ষার্থী। অসৎ সঙ্গই তার জীবনে ডেকে নিয়ে আসে বিপর্যয়। ইংরেজি মাধ্যম পড়–য়া বন্ধু-বান্ধবদের পাল্লায় পড়ে আসত্ত হয়ে পড়ে ইয়াবায়। অন্যান্য মাদকদ্রব্যও তার নিত্যসঙ্গী। বযফ্রেন্ডের সংখ্যাও বাড়তে থাকে তার। গভীর রাত পর্যন্ত বাসার বাইরে কাটানোও পরিণত হয় অভ্যাসে। কখনও কখনও রাতে বয়ফ্রেন্ডকেও নিয়ে আসতো বাসায়। একপর্যায়ে বিষয়টি নজরে পড়ে বামা-মায়ের। বাবা এসবি কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান এবং মা স্বপ্না রহমান চেষ্টা করেন মেয়েকে শাসনে আনার। বাইরে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন মেয়ের ওপর। দারোয়ানকে বলে দেন যেন, ঐশী একাকি বাইরে যেতে না পারে। কিন্তু সময় তখন অনেক ফেরিয়ে গেছে। এবারও ঐশীর সঙ্গে এসে জোটে নষ্ট বন্ধুরা। তারাসহ ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে থাকে ঐশী। ভয়ঙ্কর বন্ধুদের মধ্যে অন্তত দুই জনকে এরইমধ্যে চিহ্নিত করেছে গোয়েন্দারা। গ্রেপ্তার করা হয়েছে রনি আর তৃষাকে। আজ আদালতে এ তিন জনে ১০ দিনের রিমাণ্ড আবেদন করা হয়েছে।
গোয়েন্দারা এটা নিশ্চিত হয়েছেন, ঐশীর অংশগ্রহণ আর পরিকল্পনাতেই খুন করা হয়েছে তার বাবা-মাকে। তবে তারা এখনও বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন। গোয়েন্দাদের ধারণা ৬-৭ সদস্যের একটি দল অংশ নেয় কিলিং মিশনে। কিন্তু বাকীরা কিভাবে সুরক্ষিত বাসায় ঢুকলো তা এক প্রশ্ন। খাতায় নাম রেজিস্ট্রি না করে ওই বাসায় প্রবেশ করা খুবই কঠিন। কারা কারা কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছে তারও সুরাহা হয়নি এখনও।
সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, কিশোরীর হাতে পিতা-মাতা খুনের ঘটনা সমাজের ক্রমবর্ধমান অবক্ষয়েরই প্রমাণ। তবে তারা বলছেন, কিশোর বয়সে মাদকের হাতছানি ভয়াবহ। এসময় কেউ একবার মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে শুরুতেই তাকে নিবৃত করতে হবে। না হয় তাদের দ্বারা যে কোন ভয়ঙ্কর ঘটনাই ঘটা সম্ভব।
No comments