লাল সবুজের রমনায় ছায়ানটের বর্ষবরণ by ইসমাইল হোসেন
প্রতিদিনের ভোর থেকে আজকের ভোরটা ভিন্ন হয়ে আবির্ভূত হয়েছে রমনার বটমূলে।
বাঙালির চিরায়ত পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ উপলক্ষে কায়মনে বাঙালি হয়ে ফুটেছে এ
দিনের ভোরের আলো।
নতুন সূর্যের আগমনের সঙ্গে সঙ্গেই পুরাতন জীর্ণতাকে বিদায়
দিয়ে রমনার বটমূলে নতুন বাংলা বর্ষকে বরণ করেছে ছায়ানট।
রোববার ভোরের সূর্যোদয়ের আগে থেকেই নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বটমূলে হাজির হতে থাকেন নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। পূর্বাকাশে নতুনের বার্তা নিয়ে হাজির হওয়া সূর্যের হাসি দেখেই সুরের আলাপের মাধ্যমে নতুন বছরকে স্বাগত জানান ছায়ানটের শিল্পীরা।এরপর শুরু হয় দেশাত্ববোধক গান ও কবিতা আবৃত্তি।
বটমূলের বেদিতে লাল-সবুজ,- শাড়ি-কাপড়ে একে একে সঙ্গীত পরিবেশন করছেন ছায়ানটের শিল্পীরা। অসাম্প্রদাযিক বাংলাদেশ গড়তে যে আন্দোলন চলছে সারা দেশে, তারই অবয়ব ফুটে উঠেছে বটমূলের বেদিতে বসা শিল্পীদের পোশাকে। যেন একখণ্ড লাল-সবুজের পতাকা বিছিয়ে সেখান থেকে বেজে উঠছে সুর-লহরী।
‘এ কী অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী জননী…’, ‘ধন-ধান্য পুস্পে ভরা…’-এমন নানান দেশাত্মবোধক গান বেজে উঠছে শিল্পীদের হৃদয় থেকে।
পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে প্রতি বছরই রাজধানীর রমনা বটমূলে ছায়ানট আয়োজন করে বর্ষবরণের উৎসব। নববর্ষের প্রথম দিন রোববার ভোর থেকে ছায়ানটের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসতে থাকে মানুষ।
কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী নিরাপদ করে তুলেছে বর্ষবরণের জন্য আসা শিশু থেকে তরুণ-তরুণী-অবাল-বৃদ্ধ-বণিতাসহ সকল বয়সের মানুষেকে। পুরুষরা সাদা পাঞ্জাবি আর নারীদের সাদা শাড়িতে লালপাড় বর্ণিল করে তুলেছে রমানার সবুজ উদ্যান।
সকালেই পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর করমকর্তারা রমনায় এসেছেন নিরাপত্তা তদারকি করতে।
শিল্পীদের গানের তালে তালে মনের সকল জীর্ণতাকে মুছে ফেলে নতুন বছরে নিজেদের নতুন করে সাজানোর গল্প আঁকতে থাকেন উপস্থিত বৈশাখ বরণকারীরাও।
No comments